স্টিভ স্মিথ

স্টিভেন পিটার ডেভেরিউক্স স্টিভ স্মিথ (ইংরেজি: Steven Peter Devereux "Steve" Smith; জন্ম: ২ জুন, ১৯৮৯) সিডনিতে জন্মগ্রহণকারী অস্ট্রেলিয়ার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার। মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবেই অস্ট্রেলিয়া জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট ও একদিনের আন্তর্জাতিক দলের অধিনায়ক। ডানহাতে ব্যাটিং করার পাশাপাশি ডানহাতে লেগ স্পিন বোলিং করে থাকেন। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি নিউ সাউথ ব্লুজ এবং ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগে রাজস্থান রয়্যালস দলের হয়ে খেলছেন। এছাড়াও ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত মাতার সন্তান[3] স্টিভ স্মিথ কেন্টের দ্বিতীয় একাদশ, নিউ সাউথ ওয়েলস, সাদারল্যান্ড ক্রিকেট ক্লাব এবং ইলাওং ম্যানাই ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে খেলেছেন।

স্টিভেন স্মিথ
২০১৪ সালে স্মিথ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামস্টিভেন পিটার ডেভেরিউক্স স্মিথ
জন্ম (1989-06-02) ২ জুন ১৯৮৯
সিডনি, অস্ট্রেলিয়া
ডাকনামস্মিথি বয়, স্মাজ[1]
উচ্চতা১.৭৫ মি.[2]
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি লেগ ব্রেক
ভূমিকাঅল-রাউন্ডার
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় পার্শ্ব
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪১৫)
১৩ জুলাই ২০১০ বনাম পাকিস্তান
শেষ টেস্ট২৫ মার্চ ২০১৭ বনাম ভারত
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ১৮২)
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই২৬ জানুয়ারি ২০১৭ বনাম পাকিস্তান
ওডিআই শার্ট নং৪৯
টি২০আই অভিষেক
(ক্যাপ ৪৩)
৫ ফেব্রুয়ারি ২০১০ বনাম পাকিস্তান
শেষ টি২০আই২৭ মার্চ ২০১৬ বনাম ভারত
টি২০আই শার্ট নং৪৯
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
২০০৭-বর্তমাননিউ সাউথ ওয়েলস ব্লুজ (দল নং ১৯)
২০০৯রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর
২০১০ওরচেস্টারশায়ার
২০১১কোচি তুস্কার্স কেরালা
২০১১-বর্তমানসিডনি সিক্সার্স
২০১২-২০১৩পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়া
২০১৩অ্যান্টিগুয়া হক্সবিলস
২০১৪-২০১৫রাজস্থান রয়্যালস
২০১৬-বর্তমানরাইসিং পুনে সুপারজায়ান্টস
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই টি২০আ এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৬৫ ১১৮ ৩০ ১১৯
রানের সংখ্যা ৬,৪৮৫ ৩,৮১০ ৪৩১ ১০,৭১০
ব্যাটিং গড় ৬২.৯৬ ৪১.৪১ ২১.৫৫ ৫৮.২০
১০০/৫০ ২৫/২৪ ৮/২৩ ০/২ ৩৯/৪৪
সর্বোচ্চ রান ২৩৯ ১৬৪ ৯০ ২৩৯
বল করেছে ১,৩৫৭ ১,০৭০ ২৯১ ৫,০৭৫
উইকেট ১৭ ২৮ ১৭ ৬৭
বোলিং গড় ৫৫.৪১ ৩৪.৩৯ ২২.১৭ ৫৩.০০
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/১৮ ৩/১৬ ৩/২০ ৭/৬৪
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ৯৯/– ৬৫/– ১৭৭/–
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ৫ আগস্ট ২০১৯

শুরুতে তিনি অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে অল-রাউন্ডার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলেও বর্তমানে তিনি মূলতঃ ব্যাটসম্যান হিসেবে অংশ নিচ্ছেন। ১৬ জুলাই, ২০১৫ তারিখে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় টেস্ট ব্যাটিংয়ে ৯৩৬ রেটিং নিয়ে ১০ম স্থানে পৌঁছেন।[4]

প্রারম্ভিক জীবন

২৪ জানুয়ারি, ২০০৮ তারিখে নিউ সাউথ ওয়েলসের পক্ষে তার প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অনুষ্ঠিত একমাত্র ইনিংসে ৩৩ রান করেছিলেন।[5]

২০০৮ সালের কেএফসি ২০/২০ প্রতিযোগিতায় তিনি সর্বাধিক উইকেট লাভকারী বোলার ছিলেন। কুইন্সল্যান্ডের বিপক্ষে ৪/১৫-সহ সর্বমোট ৫ খেলার চারটিতে অংশগ্রহণ করে ৯ উইকেট লাভ করেন তিনি।[6] তিনি প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সেরা খেলোয়াড় ছিলেন।[7]

২০০৯ সালের টুয়েন্টি২০ চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শিরোপা জয়ী নিউ সাউথ ওয়েলস দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।

২০০৮ অনুর্ধ ১৯ বিশ্বকাপ

২০০৮ এর যুব বিশ্বকাপ খেলেন তিনি। যদিও সে বিশ্বকাপে কোয়াটার ফাইনালে হেরে যায় অস্ট্রেলিয়া। তার তৎকালীন প্রতিদন্দীরা ছিলেন বিরাট কোহলি , দীনেশ চান্দিমাল , রবীন্দ্র জাদেজা প্রমুখ।

খেলোয়াড়ী জীবন

২০১০ সালে স্টিভ স্মিথ অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট দলে ডাক পান। স্পিনার নাথান হারিৎজের অনুপস্থিতিজনিত কারণেই তাকে ডাকা হয়। কিন্তু বক্সিং ডে টেস্টের পূর্বক্ষণে হারিৎজ সুস্থ হয়ে ফিরে আসলে তাকে হতাশ হতে হয়।[8] ইংল্যান্ডের ওভালে অনুষ্ঠিত ২০১৩ সালের অ্যাশেজ সিরিজের শেষ ও ৫ম টেস্টের প্রথম ইনিংসে তিনি অভিষেক টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। তন্মধ্যে অন্যতম বিষয় ছিল জোনাথন ট্রটের বলে ৬ষ্ঠ অস্ট্রেলীয় টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে শতকের ঘরে পৌঁছান।

অধিনায়কত্ব

ডিসেম্বর, ২০১৪ সালে দলে স্থায়ীভাবে সহঃ অধিনায়ক মনোনীত হন। ২০১৪-১৫ মৌসুমে সফরকারী ভারতের বিপক্ষে অনুষ্ঠিত টেস্ট সিরিজে অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্কের আহত হওয়া ও এ প্রেক্ষিতে সিরিজ থেকে বাদ পড়ার প্রেক্ষিতে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।[9] এছাড়াও তিনি ক্লার্কের ফিল্ডিং অবস্থান স্লিপে দাঁড়ান।

১৮ জানুয়ারি, ২০১৫ তারিখে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত কার্লটন মিড ত্রি-দেশীয় সিরিজের ২য় খেলায় ধীরগতিতে ওভার করার ফলে নিয়মিত অস্ট্রেলীয় অধিনায়ক জর্জ বেইলিকে ম্যাচ ফি'র ২০% জরিমানাসহ এক খেলার জন্য নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়।[10] এরফলে হোবার্টে অনুষ্ঠিত সিরিজের ৪র্থ খেলায় স্টিভ স্মিথ দলের অধিনায়কত্ব করেন।[11]

সম্মাননা

২০১২ সালে মাইকেল ক্লার্কের পর প্রথম অস্ট্রেলীয় হিসেবে স্টিভেন স্মিথ আইসিসি’র টেস্ট ব্যাটিং র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে প্রবেশ করেন। ২০১৫ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পূর্বে তার অবস্থান ছিল ৪। কিন্তু ঐ সফরে বেশ ভাল ব্যাটিং করে কুমার সাঙ্গাকারা, এবি ডি ভিলিয়ার্সহাশিম আমলাকে টপকিয়ে শীর্ষস্থানে চলে যান।

কিংস্টনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯৯ রান তোলেন। তার এ রান অস্ট্রেলিয়ার বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ও তিনি ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হন। ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের ঐ সিরিজে তিনি প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং অর্ডারের ৩ নম্বরে নামেন। ডি ভিলিয়ার্সকে সরিয়ে এ বছরের জানুয়ারি থেকে সাঙ্গাকারা ১ নম্বরে অবস্থান করছিলেন। এর পূর্বের মাসেই সাঙ্গাকারার কাছ থেকে ভিলিয়ার্স শীর্ষস্থানে প্রবেশ করেছিলেন।[12]

২৩ জুন, ২০১৫ তারিখে আইসিসি বর্ষসেরা ক্রিকেটার হিসেবে স্যার গারফিল্ড সোবার্স ট্রফি লাভ করেন। পাশাপাশি ২০১৪-১৫ মৌসুমে আইসিসি’র বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটার মনোনীত হন তিনি।[13]

২০১৪ সালে মার্টিন ক্রো টেস্ট ক্রিকেটের তরুণ চার ফ্যাবের অন্যতম হিসেবে জো রুট, কেন উইলিয়ামসনবিরাট কোহলি’র সাথে তাকেও অন্তর্ভূক্ত করেন।[14][15]

আন্তর্জাতিক শতকসমূহ

  • কলামের রান, * চিহ্ন দ্বারা অপরাজিত' বোঝান হয়েছে
  • কলামের শিরোনাম ম্যাচ কর্মজীবনের ম্যাচ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে

টেস্ট শতকসমূহ

স্টিভ স্মিথের টেস্ট শতকসমূহ
#রানম্যাচপ্রতিপক্ষশহর/দেশমাঠবছরফলাফল
১৩৮*১২ ইংল্যান্ড লন্ডন, ইংল্যান্ড, যুক্তরাজ্যদি ওভাল২০১৩ড্র
১১১১৫ ইংল্যান্ড পার্থ, অস্ট্রেলিয়াওয়াকা গ্রাউন্ড২০১৩বিজয়ী
১১৫১৭ ইংল্যান্ড সিডনি, অস্ট্রেলিয়াসিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড২০১৪বিজয়ী
১০০১৮ দক্ষিণ আফ্রিকা সেঞ্চুরিয়ন, দক্ষিণ আফ্রিকাসুপারস্পোর্ট পার্ক২০১৪বিজয়ী
১৬২*২৩ ভারত এডিলেড, অস্ট্রেলিয়াএডিলেড ওভাল২০১৪বিজয়ী
১৩৩২৪ ভারত ব্রিসবেন, অস্ট্রেলিয়াগাব্বা২০১৪বিজয়ী
১৯২২৫ ভারত মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়ামেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড২০১৪ড্র
১১৭২৬ ভারত সিডনি, অস্ট্রেলিয়াসিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড২০১৫ড্র
১৯৯২৮ ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংস্টন, জামাইকাসাবিনা পার্ক২০১৫জয়

একদিনের আন্তর্জাতিক শতকসমূহ

স্টিভ স্মিথের একদিনের আন্তর্জাতিক শতকসমূহ
#রানম্যাচপ্রতিপক্ষশহর/দেশমাঠবছরফলাফল
১০১ পাকিস্তান শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাতশারজাহ ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম২০১৪বিজয়ী
১০৪ দক্ষিণ আফ্রিকা মেলবোর্ন, অস্ট্রেলিয়ামেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ড২০১৪বিজয়ী
১০২*৪৮ ইংল্যান্ড হোবার্ট, অস্ট্রেলিয়াবেলেরিভ ওভাল২০১৫বিজয়ী
১০৫৫৭ ভারত সিডনি, অস্ট্রেলিয়াসিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড২০১৫বিজয়ী

পুরস্কার

টেস্ট পুরস্কার

সিরিজ সেরা পুরস্কার

ক্রমিক প্রতিপক্ষ ম্যাচ সেরা পুরস্কার তারিখ সিরিজ পারফরমেন্স ফলাফল
 ভারত ২য় খেলা: গাব্বা, ব্রিসবেন
ম্যাচ ৪: এসসিজি, সিডনি
ডিসেম্বর ২০১৪ – জানুয়ারী ২০১৫ রান: ৭৬৯ (১,১৩৫ বল: ৮৩×৪, ৫x৬), এভারেজ – ১২৮.১৭, স্ট্রাইক রেট – ৬৭.৭৫
ফিল্ড: ১৭–০–৮৬–০, ৬ ক্যাচ
বিজয়ী; ২–০ [16]

তথ্যসূত্র

  1. "Steve Smith pushes through shyness to become Australia's 45th Test captain" by Chris Barrett, The Age, 15 December 2014
  2. "Steve Smith"cricket.com.auCricket Australia। সংগ্রহের তারিখ ১৫ জানুয়ারি ২০১৪
  3. Steve Smith spins from England's grasp to boost Australia's attack. The Guardian. Retrieved 24 March 2011
  4. "Reliance ICC Best-Ever Test Championship Rating"Relliance ICC Rankings। সংগ্রহের তারিখ ৮ আগস্ট ২০১৫
  5. Bollinger bowls Blues to Pura Cup win
  6. "Cricinfo profile"। Cricinfo.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৮-০৯
  7. Katich crowned Pura Cup Player of the Year Cricinfo. Retrieved 13 March 2008
  8. "Smith called up to Boxing Day Test"। Foxsports.com.au। ২০০৯-১২-২৪। সংগ্রহের তারিখ ২০১৩-০৮-০৯
  9. "Smith to captain Australia for Test series against India" Cricket Australia
  10. "David Warner defends 'speak English' comment to Rohit Sharma"BBC Sport। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জানুয়ারি ২০১৫
  11. "Warner rested, White and Marsh called up"। ২০ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২০ জানুয়ারি ২০১৫
  12. "Smith takes No. 1 Test batting ranking"Cricinfo। ১৫ জুন ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুন ২০১৫
  13. "Steven Smith claims top ICC awards"ESPN Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫
  14. "Test cricket's young Fab Four"। ESPNcricinfo।
  15. "Virat Kohli, Joe Root, Steven Smith, Kane Williamson 'Fab Four' of Tests: Martin Crowe"। The Indian Express।
  16. "Australia v India, 2014/15 Series"ESPNcricinfo। ১০ জানুয়ারি ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৪ জানুয়ারি ২০১৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.