সৈয়দ আব্দুল হাদী

সৈয়দ আব্দুল হাদী (জন্ম ১ জুলাই ১৯৪০) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সঙ্গীত শিল্পী। তিনি পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

সৈয়দ আব্দুল হাদী
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পেশাসঙ্গীতশিল্পী
পরিচিতির কারণসঙ্গীতশিল্পী
পুরস্কারজাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার

প্রারম্ভিক জীবন

সৈয়দ আব্দুল হাদী ১৯৪০ সালের ১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়ীয়া জেলার কসবা উপজেলার শাহপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।[1] বেড়ে উঠেছেন আগরতলা, সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া এবং কলকাতায়। তবে তার কলেজ জীবন কেটেছে রংপুর আর ঢাকায়। তার পিতার নাম সৈয়দ আবদুল হাই। তার বাবা ছিলেন ইপিসিএস (ইস্ট পাকিস্তান সিভিল সার্ভিস) অফিসার। তার পিতা গান গাইতেন আর কলেরগানে গান শুনতে পছন্দ করতেন। বাবার শখের গ্রামোফোন রেকর্ডের গান শুনে কৈশোরে তিনি সঙ্গীত অনুরাগী হয়ে উঠেন। ছোটবেলা থেকে গাইতে গাইতে গান শিখেছেন।

১৯৫৮ সালে সৈয়দ আবদুল হাদী ভর্তি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন।[2]

কর্ম জীবন

সৈয়দ আব্দুল হাদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রযোজক হিসেবেও তিনি কাজ করেছেন। সর্বশেষে তিনি লন্ডনে ওয়েল্স ইউনিভার্সিটিতে প্রিন্সিপাল লাইব্রেরীয়ান হিসেবে কাজ করেছেন।[2]

সঙ্গীত জীবন

সৈয়দ আবদুল হাদী দেশাত্ববোধক গানের জন্য জনপ্রিয়। পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় ধরে তিনি সঙ্গীত করছেন। ১৯৬০ সালে ছাত্রজীবন থেকেই চলচ্চিত্রে গান গাওয়া শুরু করেন। ১৯৬৪ সালে সৈয়দ আবদুল হাদী একক কণ্ঠে প্রথম বাংলা সিনেমায় গান করেন। সিনেমার নাম ছিল ‘ডাকবাবু’। মো. মনিরুজ্জামানের রচনায় সঙ্গীত পরিচালক আলী হোসেনের সুরে একটি গানের মাধ্যমে সৈয়দ আবদুল হাদীর চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু।

বেতারে গাওয়া তার প্রথম জনপ্রিয় গান ‘কিছু বলো, এই নির্জন প্রহরের কণাগুলো হৃদয়মাধুরী দিয়ে ভরে তোলো’। সালাউদ্দিন জাকি পরিচালিত ঘুড্ডি চলচ্চিত্রের গানে সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছিলেন লাকী আখ্‌ন্দ। এই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় গান ‘সখি চলনা, সখি চলনা জলসা ঘরে এবার যাই’- গেয়েছেন সৈয়দ আবদুল হাদী।

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত হয় সৈয়দ আবদুল হাদীর প্রথম রবীন্দ্র সংগীতের একক অ্যালবাম ‘যখন ভাঙলো মিলন মেলা’। সৈয়দ আবদুল হাদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা নিয়ে অনার্স পড়ার সময় সুবল দাস, পি.সি গোমেজ, আবদুল আহাদ, আবদুল লতিফ প্রমুখ তাকে গান শেখার ক্ষেত্রে সহায়তা ও উৎসাহ যুগিয়েছেন।

উল্লেখযোগ্য গান

  • যেও না সাথী, ও যেও না সাথী, চলেছো একেলা কোথায়
  • চক্ষের নজর এমনি কইরা একদিন খইয়া যাবে
  • একবার যদি কেউ ভালোবাসতো
  • চলে যায় যদি কেউ বাঁধন ছিঁড়ে কাঁদিস কেন মন
  • জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো আর কতদিন বল সইবো
  • আছেন আমার মোক্তার আছেন আমার ব্যারিস্টার
  • এমনওতো প্রেম হয়
  • সতী মায়ের সতী কন্যা
  • চোখ বুঝিলে দুনিয়া আন্ধার
  • যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে
  • চোখ বুঝিলে দুনিয়া আন্ধার

কিছু অবিস্মরনীয় কাজ

  • ১৯৭৮ সালের সেরা চলচ্চিত্র গোলাপী এখন ট্রেনে চলচ্চিত্রে সঙ্গীত শিল্পী হিসেবে তিনি অসাধারণ কয়েকটি গান উপহার দিয়েছেন।
  • একবার যদি কেউ ভালোবাসতো / আমার নয়ন দুটি জলে ভাসতো
  • আছেন আমার মোক্তার / আছেন আমার বারেস্টার

সম্মাননা

  • জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (গোলাপী এখন ট্রেনে - ১৯৭৮, সুন্দরী - ১৯৭৯, কসাই - ১৯৮০, গরীবের বউ - ১৯৯০, ক্ষমা- ১৯৯২) ঢাকা ৮৬ চলচ্চিত্রের 'আউল-বাউল লালনের দেশে মাইকেল জ্যাকসন এলোরে' গানটির জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন৷ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার হাত থেকে তিনি পুরস্কার গ্রহণ করেন৷ গানটি বেশ জনপ্রিয় হয়েছিল৷

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

তথ্যসূত্র

  1. "জন্মদিন এলে বাড়তি ভালোবাসা পাই: সৈয়দ আব্দুল হাদী"banglanews24.com। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০৮-২৫
  2. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ১২ জুন ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ জানুয়ারি ২০১৩
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.