পর্যায় সারণী

পর্যায় সারণী হচ্ছে বিভিন্ন মৌলিক পদার্থকে একত্রে উপস্থাপনের একটি আন্তর্জাতিকভাবে গৃহীত ছক। আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত মৌলসমূহকে তাদের ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে, ধর্মাবলী বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীতে ও পর্যায়ে বিভক্ত করে মৌলসমূহেের পারমানবিক সংখ্যার ক্রমানুসারে পর্যায় সারণীতে সাজানো হয়েছে।


    পর্যায় সারণি

    পর্যায় সারণীর রূপ

    সংযোজিত তথ্য, বিন্যাস ও জটিলতার ভিত্তিতে পর্যায় সারণীর বেশ কয়েকটি রূপ রয়েছে যথা:

    সর্বাধুনিক পর্যায় সারণী

    ১৯৮৯ সালে ইউপ্যাকের (IUPAC - International Union Of Pure And Applied Chemistry)সিদ্ধান্তক্রমে মৌলের সর্ববহিঃস্থস্তরের ইলেক্ট্রন সংখ্যা অনুযায়ী মৌলের শ্রেণীসংখ্যা নির্ধারণ করা হয়। আর এভাবেই সর্বাধুনিক পর্যায় সারণীর পত্তন ঘটে। এতে মোট ১৮টি শ্রেণী এবং ৭টি পর্যায় রয়েছে। এতে পর্যায়সমূহকে ইংরেজি 1,2,3,4,5,6,7 সংখ্যা দ্বারা এবং শ্রেণীসমূহকে রোমান হরফের বদলে ইংরেজি 1,2,3,4,5,6,7,8,9,10,11,12,13,14,15,16,17,18 সংখ্যাগুলো দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে।

    কোন মৌল সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে উক্ত মৌলের নামের উপর ক্লিক করুন

    শ্রেণী  ১০ ১১ ১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
     পর্যায়

    H


    He

    Li

    Be


    B

    C

    N

    O

    F
    ১০
    Ne
    ১১
    Na
    ১২
    Mg

    ১৩
    Al
    ১৪
    Si
    ১৫
    P
    ১৬
    S
    ১৭
    Cl
    ১৮
    Ar
    ১৯
    K
    ২০
    Ca
    ২১
    Sc
    ২২
    Ti
    ২৩
    V
    ২৪
    Cr
    ২৫
    Mn
    ২৬
    Fe
    ২৭
    Co
    ২৮
    Ni
    ২৯
    Cu
    ৩০
    Zn
    ৩১
    Ga
    ৩২
    Ge
    ৩৩
    As
    ৩৪
    Se
    ৩৫
    Br
    ৩৬
    Kr
    ৩৭
    Rb
    ৩৮
    Sr
    ৩৯
    Y
    ৪০
    Zr
    ৪১
    Nb
    ৪২
    Mo
    ৪৩
    Tc
    ৪৪
    Ru
    ৪৫
    Rh
    ৪৬
    Pd
    ৪৭
    Ag
    ৪৮
    Cd
    ৪৯
    In
    ৫০
    Sn
    ৫১
    Sb
    ৫২
    Te
    ৫৩
    I
    ৫৪
    Xe
    ৫৫
    Cs
    ৫৬
    Ba
    *
    ৭২
    Hf
    ৭৩
    Ta
    ৭৪
    W
    ৭৫
    Re
    ৭৬
    Os
    ৭৭
    Ir
    ৭৮
    Pt
    ৭৯
    Au
    ৮০
    Hg
    ৮১
    Tl
    ৮২
    Pb
    ৮৩
    Bi
    ৮৪
    Po
    ৮৫
    At
    ৮৬
    Rn
    ৮৭
    Fr
    ৮৮
    Ra
    **
    ১০৪
    Rf
    ১০৫
    Db
    ১০৬
    Sg
    ১০৭
    Bh
    ১০৮
    Hs
    ১০৯
    Mt
    ১১০
    Ds
    ১১১
    Rg
    ১১২
    Cn
    ১১৩
    Nh
    ১১৪
    Fl
    ১১৫
    Mc
    ১১৬
    Lv
    ১১৭
    Ts
    ১১৮
    Og

    * ল্যান্থানাইড সারি ৫৭
    La
    ৫৮
    Ce
    ৫৯
    Pr
    ৬০
    Nd
    ৬১
    Pm
    ৬২
    Sm
    ৬৩
    Eu
    ৬৪
    Gd
    ৬৫
    Tb
    ৬৬
    Dy
    ৬৭
    Ho
    ৬৮
    Er
    ৬৯
    Tm
    ৭০
    Yb
    ৭১
    Lu
    ** অ্যাক্টিনাইড সারি ৮৯
    Ac
    ৯০
    Th
    ৯১
    Pa
    ৯২
    U
    ৯৩
    Np
    ৯৪
    Pu
    ৯৫
    Am
    ৯৬
    Cm
    ৯৭
    Bk
    ৯৮
    Cf
    ৯৯
    Es
    ১০০
    Fm
    ১০১
    Md
    ১০২
    No
    ১০৩
    Lr

    বিশেষ দ্রষ্টব্য

    • অ্যাক্টিনাইডল্যান্থানাইড সিরিজের মৌলসমূহকে একত্রে "বিরল মৃত্তিকা ধাতু" নামে অভিহিত করা হয়। এই মৌলগুলোর শ্রেণী সম্বন্ধে বিস্তারিত তথ্যের জন্য এখানে ক্লিক করুন।
    • ক্ষার ধাতু, মৃৎক্ষার ধাতু, অবস্থান্তর মৌল, অন্তঃঅবস্থান্তর মৌল, ল্যান্থানাইড, অ্যাক্টিনাইড এবং দুর্বল ধাতু এই সবগুলোকে একত্রে ধাতু বলা হয়।
    • হ্যালোজেন এবং নিষ্ক্রিয় গ্যসসমূহও অধাতু।

    অবস্থা

    আদর্শ তাপমাত্রা ও চাপ (0°সে. এবং ১ atm) ধর্তব্য

    • যে সমস্ত মৌলের ব্লক red রংয়ের সেগুলো বায়বীয়
    • যে সমস্ত মৌলের ব্লক green রংয়ের সেগুলো তরল
    • যে সমস্ত মৌলের ব্লক black রংয়ের সেগুলো কঠিন

    প্রকৃতিগত সাংগঠনিক বৈশিষ্ট্যসমূহ

    • যে মৌলগুলোর ব্লকে অবিচ্ছিন্ন সীমারেখা আছে সেগুলো আদিম মৌল, অর্থাৎ তাদের যেকোন একটি স্থিতিশীল আইসোটোপের বয়স পৃথিবীর বয়সের চেয়ে বেশী।
    • যে মৌলগুলোর ব্লকে ড্যাশ আকারের সীমারেখা আছে সেগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে অন্যান্য মৌলের তেজস্ক্রিয় ভাঙনের মাধ্যমে সৃষ্টি হয় এবং এগুলোর এমন কোন স্থিতিশীল আইসোটোপ নেই যেটির বয়স পৃথিবীর বয়সের চেয়ে বেশী। তবে এগুলোর মধ্যে কয়েকটিকে কিছু তেজস্ক্রিয় আকরিকের মধ্যে খুব সামান্য পরিমাণে পাওয়া যায়।
    • যে সমস্ত মৌলের ব্লকে ডট আকারের সীমারেখা রয়েছে সেগুলো কৃত্রিম মৌল হিসেবে পরিচিত, অর্থাৎ এগুলো প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়না।

    দ্রষ্টব্য: ক্যালিফোর্নিয়াম (Cf) নামক মৌলটি যদিও পৃথিবীতে প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্টি হয়না, তথাপি ক্যালিফোর্নিয়াম এবং এর তেজস্ক্রিয় ভাঙনের মাধ্যমে সৃষ্ট অন্যান্য কিছু মৌল মহাবিশ্বের অন্যান্য স্থানে পাওয়া যায়। বিভিন্ন সুপারনোভা থেকে প্রাপ্ত * বর্ণালীতে এ মৌলসমূহের তাড়িতচৌম্বক বিকিরণ রেখার অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

    • যে মৌলগুলোর ব্লকে কোন সীমারেখা নেই সেগুলো প্রকৃতিতেও পাওয়া যায় না এবং কৃত্রিমভাবেও সেগুলোকে এখন পর্যন্ত তৈরি করা সম্ভব হয়নি।

    মৌলের অবস্থান চিহ্নিতকরণ

    উপশক্তিস্তর:SGFDP
    পর্যায়
    11s
    22s2p
    33s3p
    44s3d4p
    55s4d5p
    66s4f5d6p
    77s5f6d7p
    88s5g6f7d8p
    99s6g7f8d9p

    ইতিহাস

    ১৭৮৯ সনে, অ্যান্তনি ল্যভয়সিয়ে ৩৩ টি রাসায়নিক উপাদান এর সারণী প্রকাশ করেন। যদিও ল্যভয়সিয়ে উপাদান সমূহকে বায়বীয়, ধাতব, অ-ধাতব এবং শিলা -তে বিভক্ত করেন, সমসাময়ীক রসায়নবিদগণ আরও উন্নত শ্রেণীবিণ্যাসকরণ পদ্ধতির সন্ধান করছিলেন।ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণকারী বিজ্ঞানী জন নিউল্যান্ড ১৮৬৪ সালে মৌলগুলোকে তাদের ভর অনুসারে সাজিয়ে মৌলগুলোর প্রতি অষ্টম মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মের মধ্যে মিল পান । পরবর্তিকালে ১৮৬৯ সালে রুশ বিজ্ঞানী ম্যান্ডেলিফ এবং জার্মান বিজ্ঞানী লুথার মেয়র মিলে আধুনিক পর্যায় সারণি প্রকাশ করেন । তখন ৬৭ টি মৌল নিয়ে পর্যায় সারণি গঠিত হয়েছিল যার মধ্যে ৬৩ টি আবিষ্কৃত হয়েছিলো । ১৯০০ সালের মধ্যে আরও ৩০ টি মৌল পর্যায় সারণিতে যুক্ত হয় । এভাবেই সূচনা হয় আধুনিক পর্যায় সারণির । [চলবে]

    নিবন্ধের উৎস

    • উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন প্রথম পত্র - প্রফেসর মো. মহির উদ্দিন, লায়লা মুসতারিন, ড. তানভীর মুসলিম, হাছিনা বেগম মাছুমা।
    • উচ্চ মাধ্যমিক রসায়ন প্রথম পত্র - ড. সরোজ কান্তি সিংহ হাজারী, হারাধন নাগ।
    • রসায়ন - নবম দশম শ্রেণী ।

    প্রাসঙ্গিক নিবন্ধসমূহ

    বহিঃসংযোগ

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.