পথের পাঁচালী

পথের পাঁচালী ১৯৫৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত পশ্চিমবঙ্গ সরকার প্রযোজিত ও সত্যজিৎ রায় পরিচালিত একটি বাংলা চলচ্চিত্র। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস পথের পাঁচালী অবলম্বনে নির্মিত এই ছবিটি সত্যজিৎ রায়ের পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র । অপু ত্রয়ী চলচ্চিত্র-সিরিজের প্রথম চলচ্চিত্র পথের পাঁচালীর মুখ্য চরিত্র অপুর শৈশবকে কেন্দ্র করে বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকে বাংলার একটি প্রত্যন্ত গ্রামের জীবনধারা চিত্রায়িত করা হয়েছে।

পথের পাঁচালী
ডিভিডি প্রচ্ছদ
পরিচালকসত্যজিৎ রায়
প্রযোজকপশ্চিমবঙ্গ সরকার
রচয়িতাবিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়
চিত্রনাট্যকারসত্যজিৎ রায়
উৎসবিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় কর্তৃক 
পথের পাঁচালী
শ্রেষ্ঠাংশেকানু বন্দ্যোপাধ্যায়
করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়
সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়
উমা দাশগুপ্ত
চুনীবালা দেবী
রেবা দেবী
তুলসী চক্রবর্তী
সুরকাররবিশঙ্কর
চিত্রগ্রাহকসুব্রত মিত্র
সম্পাদকদুলাল দত্ত
প্রযোজনা
কোম্পানি
পরিবেশকঅরোরা ফিল্ম কর্পোরেশন(১৯৫৫)
এডওয়ার্ড হ্যারিসন (১৯৫৮)
মার্চেন্ট আইভরি প্রোডাকশন্স
সনি পিকচার্স ক্লাসিকস (১৯৯৫)[1]
মুক্তি
  • ২৬ আগস্ট ১৯৫৫ (1955-08-26) (ভারত)
দৈর্ঘ্য১১২-১২৬ মিনিট[lower-alpha 1]
দেশভারত
ভাষাবাংলা
নির্মাণব্যয়৭০,০০০-১,৫০,০০০[lower-alpha 2] (US$১৪,৬০০–৩১,৩০০)[lower-alpha 3]
আয় ১১ কোটি

এই চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সমস্যা থাকায় নির্মাণকার্য্য ব্যাহত হয় এবং দীর্ঘ তিন বছর পরে তা সম্পূর্ণ হয়। স্বল্প বাজেটে অপেশাদার অভিনেতা ও অনভিজ্ঞ শিল্পীদের নিয়ে এই চলচ্চিত্র নির্মিত হয়। সেতার বাদক রবিশঙ্কর এই ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রাগ ব্যবহার করে চলচ্চিত্রের সঙ্গীতাবহ নির্মাণ করেন। সুব্রত মিত্র চিত্রগ্রহণ ও দুলাল দত্ত সম্পাদনার দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দের ৩রা মে নিউ ইয়র্ক শহরের মিউজিয়াম অব মডার্ণ আর্টের একটি প্রদর্শনীতে চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায় ও পরে সেই বছর কলকাতা শহরে মুক্তি লাভ করলে দর্শকদের প্রশংসা লাভ করে। সমালোচকরা চলচ্চিত্রটিতে প্রদর্শিত বাস্তববাদ, মানবতা ও গুণমানকে প্রশংসা করলেও অনেকে এর মন্থর লয়কে চলচ্চিত্রটির খামতি বলে মনে করেন।

অপুর জীবন সত্যজিৎ রায়ের অপরাজিত (১৯৫৬) এবং অপুর সংসার (১৯৫৯) নামক অপু ত্রয়ী চলচ্চিত্র-সিরিজের পরবর্তী দুইটি চলচ্চিত্রে দেখানো হয়। পথের পাঁচালী ভারতীয় চলচ্চিত্র জগতে সামাজিক বাস্তবতার ওপর ভিত্তি করে সমান্তরাল চলচ্চিত্রের ধারা তৈরি করে। স্বাধীন ভারতে নির্মিত পথের পাঁচালী ছিল প্রথম চলচ্চিত্র যা আন্তর্জাতিক মনোযোগ টানতে সক্ষম হয়। এটি ১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, ১৯৫৬ কান চলচ্চিত্র উৎসবে শ্রেষ্ঠ মানবিক দলিল পুরস্কার সহ বহু পুরস্কার লাভ করে, যার ফলে সত্যজিৎ রায় ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র-নির্মাতাদের মধ্যে একজন বলে গণ্য হয়।

কাহিনীসংক্ষেপ

বিংশ শতাব্দীর বিশের দশকে নিশ্চিন্তপূর নামক বাংলার এক প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে অপু (সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায়) ও তার পরিবারের জীবনযাত্রার কথাই পথের পাঁচালী ছবির মুখ্য বিষয়। অপুর বাবা পুরোহিত হরিহর রায় (কানু বন্দ্যোপাধ্যায়) নিশ্চিন্দিপুরের পৈতৃক ভিটেয় তার নাতিবৃহৎ পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তিনি পেশায় পুরোহিত। আয় সামান্য। লেখাপড়া জানেন। তাই কিছু ভাল যাত্রাপালা লিখে অধিক উপার্জনের স্বপ্ন দেখেন। বাস্তবে তিনি অত্যন্ত ভালমানুষ এবং লাজুক প্রকৃতির লোক। সকলে সহজেই তাকে ঠকিয়ে নেয়। পরিবারের তীব্র অর্থসংকটের সময়েও তিনি তার প্রাপ্য বেতন আদায় করার জন্য নিয়োগকর্তাকে তাগাদা দিতে পারেন না। হরিহরের স্ত্রী সর্বজয়া (করুণা বন্দ্যোপাধ্যায়) তার দুই সন্তান দুর্গা (উমা দাশগুপ্ত) ও অপু এবং হরিহরের দূর সম্পর্কের বিধবা পিসি ইন্দির ঠাকরুণের (চুনীবালা দেবী) দেখাশোনা করেন। দরিদ্রের সংসার বলে নিজের সংসারে বৃদ্ধা ন্যুব্জদেহ ইন্দির ঠাকরুনের ভাগ বসানোটা ভাল চোখে দেখেন না সর্বজয়া। সর্বজয়ার অত্যাচার অসহ্য বোধ হলে ইন্দির মাঝে মাঝে অন্য এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন। দুর্গা তার ধনী প্রতিবেশীর বাগান থেকে ফলমূল চুরি করে আনে ও ইন্দির ঠাকরুনের সঙ্গে ভাগাভাগি করে খায়। একদিন, সেই প্রুতিবেশীর স্ত্রী এসে দুর্গাকে একটি পুঁতির মালা চুরির দায়ে অভিযুক্ত করেন ও এই চুরির প্রবণতাকে উৎসাহ দেওয়ার অপরাধে সর্বজয়াকে দোষী সাব্যস্ত করেন।

ভাইবোন অপু ও দুর্গার মধ্যে খুব ভাব। দুর্গা দিদি। সেও মায়ের মতোই অপুকে ভালবাসে। তবে মাঝেমধ্যে তাকে খেপিয়ে তুলতেও ছাড়ে না। তারা কখনও কখনও চুপচাপ গাছতলায় বসে থাকে, কখনও মিঠাইওয়ালার পিছু পিছু ছোটে, কখনও ভ্রাম্যমাণ বায়োস্কোপ-ওয়ালার বায়োস্কোপ দেখে বা যাত্রাপালা দেখে। সন্ধ্যাবেলা দু'জনে দূরাগত ট্রেনের বাঁশি শুনতে পেয়ে আনন্দ পায়। একদিন তারা বাড়িতে না বলে অনেক দূরে চলে আসে ট্রেন দেখবে বলে। কাশের বনে ট্রেন দেখার জন্য অপু-দুর্গার ছোটাছুটির দৃশ্যটি এই ছবি'র এক স্মরণীয় ক্ষণ। বাড়ি ফিরে এসে তারা ইন্দির ঠাকরুনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পায়।

গ্রামে ভাল উপার্জন করতে সক্ষম না হয়ে হরিহর একটা ভাল কাজের আশায় শহরে যান। সর্বজয়াকে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান যে, ভাল উপার্জন হলে ফিরে এসে ভাঙা বসতবাড়িটা সারিয়ে তুলবেন। হরিহরের অনুপস্থিতিতে তাদের অর্থসংকট তীব্রতর হয়। সর্বজয়া অত্যন্ত একা বোধ করতে থাকেন ও খিটখিটে হয়ে যেতে থাকেন। বর্ষাকালে একদিন দুর্গা অনেকক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজে জ্বর বাধায়। ওষুধের অভাবে তার জ্বর বেড়েই চলে ও শেষে এক ঝড়ের রাতে দুর্গা মারা যায়। এরপর একদিন হরিহর ফিরে আসেন। শহর থেকে যা কিছু এনেছেন, তা সর্বজয়াকে বের করে দেখাতে থাকেন। সর্বজয়া, প্রথমে চুপ করে থাকেন, পরে স্বামীর পায়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। হরিহর বুঝতে পারেন যে, তিনি তার একমাত্র কন্যাকে হারিয়েছে। তারা গ্রাম ও পৈতৃক ভিটে ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যাত্রার তোড়জোড় শুরু হলে, অপু দুর্গার চুরি করা পুঁতির মালাটা আবিষ্কার করে। সে মালাটা ডোবার জলে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। ছবির শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, অপু বাবা-মায়ের সঙ্গে গোরুর গাড়িতে চড়ে নতুন এক গন্তব্যের উদ্দেশ্যে চলেছে।

শ্রেষ্ঠাংশে

নির্মাণ

উপন্যাস

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথের পাঁচালী বাংলা সাহিত্যের একটি ধ্রুপদী জীবনীমূলক উপন্যাস[11]:১৭৩[12]:২৭৭ ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে একটি সাময়িকপত্রে ধারাবাহিকভাবে উপন্যাসটি প্রকাশিত হতে শুরু করে[13]:৭৪ এবং ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয় ।[14] উপন্যাসটিতে একটি দরিদ্র পরিবারের নিজের গ্রামের ভিটেতে টিকে থাকার লড়াই এবং সেই পরিবারের ছেলে অপুর বেড়ে ওঠা বর্ণিত হয়েছে। উপন্যাসের পরবর্তী অংশে বাবা-মায়ের সঙ্গে অপুর গ্রাম ছেড়ে যাত্রা ও কাশীবাসের কাহিনী রয়েছে, যা সত্যজিৎ রায়ের অপরাজিত নামক পরবর্তী চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে।[13]:৭৫

১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে সিগনেট প্রেসের চিত্রলেখ নকশাকার হিসেবে কাজ করার সময়, পথের পাঁচালী উপন্যাসটির একটি নতুন অখণ্ড সংস্করণের অলঙ্করণ করার সময়[13]:৫৮ বইটি পড়েন।[15]:২২-২৩ প্রেসের মালিক ডি. কে. গুপ্ত তাকে বলেন যে এই বইটি থেকে একটি অসাধারণ চলচ্চিত্র নির্মাণ করা সম্ভব।[15]:২৩ ১৯৪৬-৪৭ খ্রিষ্টাব্দে সত্যজিৎ যখন চলচ্চির বানানোর কথা চিন্তাভাবনা শুরু করেন,[9]:৩৯ তখন তিনি এই উপন্যাসের মানবতা ও গীতিধর্মিতার প্রভাবে এটিকে চলচ্চিত্র রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন।[16]:৩৩

চিত্রনাট্য

পথের পাঁচালী চলচ্চিত্রের কোন চিত্রনাট্য লেখা হয়নি। সত্যজিৎ রায়ের আঁকা ছবি ও টীকাগুলি থেকে এই চলচ্চিত্র নির্মিত হয়।[15]:৪৪ তিনি ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে লন্ডনের উদ্দেশ্যে সমুদ্রযাত্রার সময় এই সকল নোটগুলি লেখেন।[15]:৪২

অপুর পাঁচালী বইতে সত্যজিৎ লিখেছেন যে তিনি চলচ্চিত্রের প্রয়োজনে তিনি উপন্যাসের বেশ কিছু চরিত্রকে সরিয়ে দিয়েছিলেন ও গল্পটিকেও কিছুতা রদবদল করেছিলেন।[15]:৪৫ উপন্যাসের শুরুর দিকেই গ্রামের মন্দিরে সকলের সামনেই ইন্দির ঠাকরুণের মৃত্যু ঘটে, কিন্তু চলচ্চিত্রে অপু ও দুর্গা তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে। চলচ্চিত্রের অপু ও দুর্গার ট্রেন দেখার জন্য দৌড়নোর দৃশ্যটিও উপন্যাসে নেই। বর্ষায় ভিজে প্রচণ্ড জ্বর বাঁধিয়ে দুর্গার মৃত্যু ঘটে বলে চলচ্চিত্রে দেখানো হলেও উপন্যাসে মৃত্যুর কারণ অজানাই রাখা হয়েছে। হরিহর রায়ের পরিবারের গ্রাম ত্যাগ দিয়ে চলচ্চিত্র শেষ হলেও উপন্যাস সেই ভাবে শেষ হয়নি।[13]:৭৫

অভিনয়

পথের পাঁচালী চলচ্চিত্র নির্মাণ হওয়ার আগেই কানু বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা চলচ্চিত্র জগতের একজন প্রতিষ্ঠিত অভিনেতা ছিলেন। সত্যজিতের বন্ধু-পত্নী করুণা বন্দ্যোপাধ্যায় একজন ভারতীয় গণনাট্য সংঘের একজন অপেশাদার অভিনেত্রী ছিলেন। দুর্গার ভূমিকায় অভিনয় করার পূর্বে উমা দাশগুপ্ত কয়েকটি নাটকে অভিনয় করেছিলেন। অপুর চরিত্রে অভিনয় করার জন্য সত্যজিৎ পাঁচ থেকে সাত বছরের শিশুর সন্ধানে সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেন, কিন্তু কোন বিজ্ঞাপনের মারফত আসা কোন ছেলেকেই তার পছন্দ হয়নি, কিন্তু সত্যজিতের স্ত্রী বিজয়া রায় তাদের বাড়ির নিকটে সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় নামে একটি ছেলেকে লক্ষ্য করেন এবং অবশেষে অপুর চরিত্রে তাকেই পছন্দ করা হয়। ইন্দির ঠাকরুণের চরিত্রে অভিনয়ের জন্য সত্যজিৎ কলকাতার নিষিদ্ধ পল্লী থেকে চুনীবালা দেবী নামক একজন পুরাতন নাট্যাভিনেত্রীকে খুঁজে বের করেন। অন্যান্য বিভিন্ন অনুল্লেখ্য চরিত্রে বড়াল গ্রামের বাসিন্দারা অভিনয় করেন।[13]:৭৮-৮০

সম্মাননা

’পথের পাঁচালী’ দেশী বিদেশী অনেক পুরস্কার অর্জন করে ।

সালপুরস্কারচলচ্চিত্র উৎসবদেশ
১৯৫৫শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (স্বর্ণকমল পুরস্কার)
শ্রেষ্ঠ বাংলা ভাষার চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (রজতকমল পুরস্কার)
৩য় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার (ভারত) ভারত
১৯৫৬পাল্ম দর[17]
শ্রেষ্ঠ মানবিক দলিল
ওসিআইসি পুরস্কার - বিশেষ উল্লেখ
১৯৫৬ ৯ম কান চলচ্চিত্র উৎসব ফ্রান্স
১৯৫৬ভ্যাটিকান পুরস্কার, রোম-- ইতালি
১৯৫৬গোল্ডেন কারবাও, ম্যানিলা-- ফিলিপাইন
১৯৫৬মেধার ডিপ্লোমাএডিনবরা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব স্কটল্যান্ড
১৯৫৭শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য ‘সাজনিক গোল্ডেন লরেল’বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব জার্মানি
১৯৫৭শ্রেষ্ঠ পরিচালক জন্য গোল্ডেন গেট
শ্রেষ্ঠ ছবি জন্য গোল্ডেন গেট
সান ফ্রান্সিসকো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব যুক্তরাষ্ট্র
১৯৫৮শ্রেষ্ঠ ছায়াছবিভ্যানকুভার আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উত্সব কানাডা
১৯৫৮শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জন্য ক্রিটিকস অ্যাওয়ার্ড[18]স্ট্র্যাটফোর্ড ফিল্ম ফেস্টিভাল কানাডা
১৯৫৮সেরা বিদেশী ভাষার চলচ্চিত্র, জাতীয় বোর্ড পর্যালোচনা পুরস্কার ১৯৫৮[19]-- যুক্তরাষ্ট্র
১৯৫৯সেরা বিদেশী চলচ্চিত্রনিউইয়র্ক চলচ্চিত্র উত্সব যুক্তরাষ্ট্র
১৯৬৬কিনেমা জাম্পু পুরস্কার সেরা বিদেশী চলচ্চিত্র জন্য-- জাপান
১৯৬৯শ্রেষ্ঠ অইউরোপীয় ছায়াছবির জন্য বদিল পুরস্কার[20]-- ডেনমার্ক

উত্তরাধিকার

পথের পাঁচালী ছবিটি সত্যজিৎ রায়ের পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র তথা তার প্রসিদ্ধ চলচ্চিত্র-সিরিজ অপু ত্রয়ী-র প্রথম ছবি। অপর দুটি ছবি হল অপরাজিত (১৯৫৬) ও অপুর সংসার (১৯৫৯) । তিনটি ছবি একত্রে অপু ত্রয়ী হিসাবে পরিচিত।

পাদটীকা

  1. বিভিন্ন উৎসে এই চলচ্চিত্রের বিভিন্ন রকম দৈর্ঘ্য উল্লেখ করেছে। মিউজিয়াম অব মডার্ণ আর্টের মতে চলচ্চিত্রের দৈর্ঘ্য ১১২ মিনিট,[2]:২০৪ এলএ উইকিলির একতি বিজ্ঞপ্তিতে ১১৫ মিনিট,[3] দ্য গার্ডিয়ানের স্টুয়ার্ট জেফ্রিসের ২০১০ সালের একটি রিপোর্টে ১২৫ মিনিট,[4] দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের রোভি হ্যাল এরিকসন তাঁর একটি সমালোচনায় ১২৬ মিনিট[5] ও ডগ প্র্যাট ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ১২৫ মিনিট বলে বর্ণনা করেছেন।[6]:৯০৮ ব্রিটিশ বোর্ড অব ফিল্ম ক্লাসিফিকেশন চলচ্চিত্র সংস্করণের জন্য ১০০ মিনিট ৫৫ সেকেন্ড এবং ভিডিও সংস্করনের জন্য ১১৯ মিনিট ৩১ সেকেন্ড বলে দ্যটি ভিন্ন দৈর্ঘ্য বলে উল্লেখ করেছে।[7]
  2. সত্যজিৎ রায় ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে মাই ইয়ার্স উইথ অপু:এ মেমোয়্যার গ্রন্থে লেখেন যে এই চলচ্চিত্র নির্মাণে ৭০,০০০ খরচ হয়[8]:৩৬, এবং পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিকট ৭০,০০০ ঋণ ছিল।[8]:৬০ ১৯৭০ খ্রিস্টাব্দের একটি সাক্ষাতকারে সত্যজিৎ রায় বলেন যে, এই চলচ্চিত্র নির্মাণে ১৫০,০০০ খরচ হয়।[9]:৪০
  3. ১৯৫৫ খ্রিস্টাব্দে বিনিময় হার ছিল ১ মার্কিন ডলারে ৪.৭৯[10]:৪০৮

তথ্যসূত্র

  1. Sengoopta, Chandak (১৬ নভেম্বর ২০০৯)। "Apu-In-The-Word"Outlook। পৃষ্ঠা 2/5। ২৪ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ এপ্রিল ২০১৪
  2. Bee, Harriet Schoenhotz; Hellczer, Cassandra; McFadden, Sarah, সম্পাদকগণ (২০১৩)। MoMA Highlights: 350 Works from The Museum of Modern Art, New York (ইংরেজি ভাষায়)। দ্য মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্ট। আইএসবিএন 978-0-87070-846-6।
  3. "Pather Panchali"LA Weekly। ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৩
  4. Jeffries, Stuart (১৯ অক্টোবর ২০১০)। "Pather Panchali: No 12 best arthouse film of all time"The Guardian। ১৭ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৩
  5. Hal Erickson, Rovi। "Pather Panchali (1955)"The New York Times। ৮ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ ডিসেম্বর ২০১৩
  6. Pratt, Douglas (২০০৫)। Doug Pratt's DVD: Movies, Television, Music, Art, Adult, and More! (ইংরেজি ভাষায়)। UNET 2 Corporation। আইএসবিএন 978-1-932916-01-0।
  7. "Pather Panchali (1957)"British Board of Film Classification। ২৭ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ এপ্রিল ২০১৪
  8. রায়, সত্যজিত (১৯৯৬)। My Years with Apu [অপুর সাথে আমার বছরগুলি] (ইংরেজি ভাষায়)। পেঙ্গুইন বুকস ইন্ডিয়া। আইএসবিএন 978-0-14-024780-0।
  9. Isaksson, Folke (২০০৭)। "Conversation with Satyajit Ray"। Cardullo, Bert। Satyajit Ray: Interviews [সত্যজিৎ রায়: ইন্টারভিউ] (ইংরেজি ভাষায়)। University Press of Mississippi। আইএসবিএন 978-1-57806-937-8।
  10. Kalra, Bhawna (ফেব্রুয়ারি ২০১২)। "Devaluation of Indian Rupee against US $: A Historical Perspective" (PDF)International Journal of Research in Economics & Social Sciences (ইংরেজি ভাষায়)। Euro Asia Research and Development Association। 2 (2)। আইএসএসএন 2249-7382। ১৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ ডিসেম্বর ২০১৩
  11. Gugelberger, Georg M. (১৯৯৬)। The Real Thing: Testimonial Discourse and Latin America (ইংরেজি ভাষায়)। Duke University Press। আইএসবিএন 978-0-8223-1844-6।
  12. Gokulsing, K. Moti; Dissanayake, Wimal (২০১৩)। Routledge Handbook of Indian Cinemas (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। আইএসবিএন 978-1-136-77284-9।
  13. Robinson, Andrew (১৯৮৯)। Satyajit Ray: The Inner Eye (ইংরেজি ভাষায়)। University of California Press। আইএসবিএন 978-0-520-06946-6।
  14. Sekhar, Saumitra (২০১২)। "Pather Panchali"BanglapediaAsiatic Society of Bangladesh। ৩ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩
  15. Ray, Satyajit (২০১০)। অপুর পাঁচালী (ইংরেজি ভাষায়)। আনন্দ পাবলিশার্স। আইএসবিএন 81-7215-367-8।
  16. Ray, Satyajit (২০০৫)। Our Films, Their Films (ইংরেজি ভাষায়)। Orient Longman। আইএসবিএন 81-250-1565-5।
  17. "Festival de Cannes: Pather Panchali"festival-cannes.com (ইংরেজি ভাষায়)।
  18. "Indian Film Honored; Pather Panchali Wins Prize at Stratford, Ont., Fete"New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। ১৯৫৮-০৭-১৪। পৃষ্ঠা 16।
  19. "Awards 1958, National Board of Review Awards" (ইংরেজি ভাষায়)। ২৯ সেপ্টেম্বর ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৩
  20. "Awards 1969, Bodil Awards" (ইংরেজি ভাষায়)। ২ নভেম্বর ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ মার্চ ২০১৩

গ্রন্থপঞ্জি

  • Bergan, Ronald (২০০৬)। Film [চলচ্চিত্র] (ইংরেজি ভাষায়)। Dorking Kindersley। আইএসবিএন 978-1-4053-1280-6।
  • Biswas, Moinak (২০০৭)। "In the mirror of an alternative globalism: the neorealist encounter in India"। Ruberto, Laura E.; Wilson, Kristi M.। Italian Neorealism and Global Cinema (ইংরেজি ভাষায়)। Wayne State University Press। আইএসবিএন 978-0-8143-3324-2।
  • Chapman, James (২০০৩)। Cinemas of the World: Film and Society from 1895 to the Present [বিশ্বের চলচ্চিত্র: ১৮৯৫ থেকে বর্তমান চলচ্চিত্র ও সোসাইটি] (ইংরেজি ভাষায়)। Reaktion Books। আইএসবিএন 1-86189-162-8।
  • Cooper, Darius (২০০০)। The Cinema of Satyajit Ray: Between Tradition and Modernity [সত্যজিৎ রায়ের চলচ্চিত্র: ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মধ্যে] (ইংরেজি ভাষায়)। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস। আইএসবিএন 0-521-62980-2।
  • Corrigan, Timothy; White, Patricia (২০১২)। The Film Experience: An Introduction (ইংরেজি ভাষায়)। Bedford/St. Martin's। আইএসবিএন 978-0-312-68170-8।
  • Cousins, Mark (২০০৪)। The Story of Film: A Worldwide History of Film from the Host of the BBC's Scene by Scene (ইংরেজি ভাষায়)। Thunder's Mouth Press। আইএসবিএন 1-56025-612-5।
  • Das Gupta, Chidananda (Autumn ১৯৮০)। "New Directions in Indian Cinema" [ভারতীয় চলচ্চিত্রে নতুন দিকনির্দেশ]। Film Quarterly (ইংরেজি ভাষায়)। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া প্রেস। ৩৪ (১): 32। doi:10.1525/fq.1980.34.1.04a00070আইএসএসএন 0015-1386ওসিএলসি 1569205
  • Ettedgui, Peter (১৯৯৯)। Cinematography: Screencraft (ইংরেজি ভাষায়)। ফোকাল প্রেস। আইএসবিএন 0-240-80382-5।
  • Gokulsing, K. Moti; Dissanayake, Wimal (২০০৪)। Indian Popular Cinema: A Narrative of Cultural Change [ভারতীয় জনপ্রিয় চলচ্চিত্র: সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের একটি আখ্যান] (ইংরেজি ভাষায়)। Trentham Books। আইএসবিএন 1-85856-329-1।
  • Gooptu, Sharmistha (২০১০)। Bengali Cinema: 'An Other Nation'। Routledge। আইএসবিএন 978-0-203-84334-5।
  • Gulzar; Nihalni, Govind; Chatterjee, Saibal (২০০৩)। "Biographies"। Encyclopaedia of Hindi Cinema [হিন্দি চলচ্চিত্রের বিশ্বকোষ] (ইংরেজি ভাষায়)। পপুলার প্রকাশন। আইএসবিএন 81-7991-066-0।
  • Kael, Pauline (২০১১)। 5001 Nights at the Movies [চলচ্চিত্রে ৫০০১ রাত] (ইংরেজি ভাষায়)। Henry Holt and Company। আইএসবিএন 978-1-250-03357-4।
  • Khair, Tabish (২০০৫)। Amitav Ghosh : A Critical Companion (ইংরেজি ভাষায়)। Orient Longman। আইএসবিএন 81-7824-113-7।
  • Lavezzoli, Peter (২০০৬)। The Dawn of Indian Music in the West (ইংরেজি ভাষায়)। Continuum International Publishing Group। আইএসবিএন 0-8264-1815-5।
  • Leng, Simon (২০০৬)। While My Guitar Gently Weeps: The Music of George Harrison (ইংরেজি ভাষায়)। Hal Leonard Corporationআইএসবিএন 1-4234-0609-5।
  • Lyden, John (২০০৯)। The Routledge Companion to Religion and Film (ইংরেজি ভাষায়)। Taylor & Francis। আইএসবিএন 978-0-415-44853-6।
  • Mehta, Ved (১৯৯৮)। "City of Dreadful Night"। A Ved Mehta Reader: The Craft of the Essay (ইংরেজি ভাষায়)। Yale University Press। আইএসবিএন 0-300-07561-8।
  • Pati, Mitali; Ganguly, Suranjan (১৯৯৬)। "Perspectives on Bengali film and literature"। Natarajan, Nalini; Nelson, Emmanuel Sampath। Handbook of Twentieth-century Literatures of India (ইংরেজি ভাষায়)। Greenwood Publishing Group। আইএসবিএন 978-0-313-28778-7।
  • Ruberto, Laura E.; Wilson, Kristi M. (২০০৭)। Italian Neorealism and Global Cinema (ইংরেজি ভাষায়)। Wayne State University Press। আইএসবিএন 0-8143-3324-9।
  • Santas, Constantine (২০০২)। Responding to film: A Text Guide for Students of Cinema Art (ইংরেজি ভাষায়)। Rowman & Littlefield। আইএসবিএন 0-8304-1580-7।
  • Seton, Marie (২০০৩)। Portrait of a Director: Satyajit Ray (ইংরেজি ভাষায়)। Penguin Books India। আইএসবিএন 978-0-14-302972-4।
  • Teo, Stephen (২০১৩)। The Asian Cinema Experience: Styles, Spaces, Theory (ইংরেজি ভাষায়)। Routledge। আইএসবিএন 978-0-415-57146-3।
  • Wood, R (১৯৭২)। The Apu trilogy [অপু ত্রয়ী] (ইংরেজি ভাষায়)। নভেম্বর বুকস লিমিটেড। আইএসবিএন 0-85631-003-4।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.