চন্দ্রগ্রহণ (চলচ্চিত্র)
চন্দ্রগ্রহণ এটি ২০০৮ সালের একটি বাংলাদেশী বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র।[1] চলচ্চিত্রটি পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় লেখক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ এর একটি ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মাণ করেছেন চলচ্চিত্রকার মুরাদ পারভেজ। এবং এটি তার পরিচলিত প্রথম চলচ্চিত্র।[2] ছবিতে গুরুপ্তপুর্ণ তিনটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন রিয়াজ, সোহানা সাবা ও চম্পা।
চন্দ্রগ্রহণ | |
---|---|
![]() ছবির গানের ভিসিডি কভার | |
পরিচালক | মুরাদ পারভেজ |
প্রযোজক | আজম ফারুক |
রচয়িতা | মুরাদ পারভেজ |
শ্রেষ্ঠাংশে | রিয়াজ সোহানা সাবা চম্পা দিলারা জামান শহিদুজ্জামান সেলিম |
সুরকার | ইমন সাহা হাবিব ওয়াহিদ |
চিত্রগ্রাহক | মাহফুজুর রহমান খান |
সম্পাদক | তৌহিদ হোসেন চৌধুরী |
মুক্তি | ২৯ নভেম্বর ২০০৮ (বলাকা সিনেওয়ার্ল্ড) ৫ ডিসেম্বর, ২০০৮ |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
চন্দ্রগ্রহণ চলচ্চিত্রটি ২০০৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক সহ মুরাদ পারভেজ তিনটি ও অন্যান্য বিভাগে চারটি এই মোট সাতটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।
কাহিনী সংক্ষেপ
মারোয়ারী ঘাটের সাথেই গড়ে উঠেছে এলাকার একমাত্র বাজার। এবং এই বাজারে প্রায় সকল পেশার লোকেরই যাওয়া-আসা। সেই বাজারে একজন 'পাগলী' (চম্পা) থাকত। দিনের আলোর ভালো মানুষ গুলো রাতের আঁধারে সেই পাগলীর সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। এর কলশ্রুতিতে- কিছুদিন পর দেখা যায় পাগলী গর্ভবতী। প্রশ্ন দাড়ায় এমন কাজ করলো কে? কোনো উপায় না দেখে 'ময়রা মাসী' (দিলারা জামান) পাগলীর দেখাশোনা শুরু করে। বৃষ্টি ভেঁজা একরাতে পাগলীর কোলজুড়ে আসে এক ফুটফুটে কন্যাসন্তান। এবং এই সন্তান জন্ম দেওয়ার সময় পাগলি মারা যায়। ময়রা মাসী সেই কন্যাসন্তান লালন পালন করে। কিন্তু মেয়েটির কোনো নাম দেয়া হয়নি। সবাই ওকে ফালানি বলে ডাকতো, এবং ফালানিকে সবাই বেশ আদর করতো, বিশেষ করে- রাতের আঁধারের সেই দুষ্ট লোকগুলো ফালানিকে বেশি আদর করতো।
এভাবে চলতে চলতে একসময় মারোয়ারী ঘাটের গাঙ্গের উপর দিয়ে তৈরী হয় ব্রিজ, গাং পারাপারে আর নৌকা প্রয়জন হয়না। এদিকে একজন অষ্টাদশী হয়ে উঠলো 'ফালানি' (সোহানা সাবা)। একই স্থানে বসবাসকারী আবুলের (কে. এস. ফিরোজ) পুত্র কাসু (রিয়াজ) বড় হয়ে 'ইসমাইল' (শহিদুজ্জামান সেলিম) ড্রাইভারের আদর্শে একজন পাকা ড্রাইভার হিসেবে। আগে থেকেই কাসুর প্রনয় ছিল ফালানির সাথে, এবং ভালোলাগা থেকে ভালবাসা পর্যন্ত গড়ায় ওদের সম্পর্ক। ঘর বাঁধার রঙিন স্বপ্ন ওদের চোখে। একদিন কাসু ফালানিকে নিয়ে শহরে ঘুরতে যায়। ঢাকা এসে কাসু ফালানিকে নিয়ে একটি খাবার হোটেলে গেলে- হোটেলের মালিক (পূর্বের ডাকাত) প্রশ্ন করে জানতে পারে; ফালানি মারোয়ারী ঘাটের সেই পাগলীর মেয়ে, এবং ফালানিকে তার ঔরস-জাত সন্তান ভেবে কি রেখে কি খাওয়াবে দিশা হারিয়ে ফেলেছে। এতে ফালানির মনে কষ্টের সীমারেখা আরো বেড়ে যায় এবং হোটেলের মালিককে ধিক্কার দিয়ে কাসুর হাত দরে চলে আসে।
ওরা ঢাকা থেকে গ্রামে ফিরে আসে। ওদের সম্পর্কের কথা অনেকেই জানতো, একদিন ইসমাইল ড্রাইভার ওদের একসাথে দেকে এবং কাসু আর ফালানির মত নিয়ে ওদের বিয়ের আশ্বাস দেয়। এতে ওদের স্বপ্ন আরো গভীর হতে থাকে, মনের বাসনা আরো তীব্র হতে থাকে। এবং এই বিয়েতে সবাই যখন একমত পোষণ করছে ঠিক তখনি কাসুর বাবা আবুল ছেলেকে ফালানির সাথে বিয়ে দিতে রাজি হচ্ছেনা. সবাই যখন রাজি না হওয়ার কারণ জানতে চায়? তিনি এর উত্তরও দেয়না, শুধু বলে এ হয়না কিছুতেই না। এই বলে সে চলে যায় কাসুকে খুঁজতে। এবং খুঁজতে খুঁজতে একসময় প্রাচীন কালে নির্মিত একটি বাড়িতে ওদের দুজনকেই পেয়ে যায় আবুল।
শ্রেষ্ঠাংশে
- রিয়াজ - কাসু
- সোহানা সাবা - ফালানি
- শহিদুজ্জামান সেলিম - ইসমাইল ড্রাইভার
- কেএস ফিরোজ - আবুল
- দিলারা জামান - ময়রা মাসী
- কহিনুর - মদন
- গাজী রাকায়াত - শম্ভু
- আজাম ফারুক - মারোয়ারী ঘাটের মালিক চৌবেজি
সম্মাননা
রেইনবো ফিল্ম ফেস্টিভাল
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ২০০৯[3]
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
চন্দ্রগ্রহণ চলচ্চিত্রটি ২০০৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-এর মোট সাতটি বিভাগে পুরস্কার লাভ করে।
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ পরিচালক - মুরাদ পারভেজ
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ সংলাপ - মুরাদ পারভেজ
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ চিত্রনাট্যকার - মুরাদ পারভেজ
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ প্রযোজক - আজম ফারুক
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ সঙ্গীত পরিচলক - ইমন সাহা ও হাবিব ওয়াহিদ
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ খল অভিনেতা - জহিরউদ্দিন পিয়ার
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ সহকারী অভিনেত্রী - দিলারা জামান ও চম্পা
মেরিল-প্রথম আলো পূরস্কার
- বিজয়ী শ্রেষ্ঠ পরিচালক - মুরাদ পারভেজ[4]
বাচসাস চলচ্চিত্র ও সংস্কৃতি পুরস্কার
- বিজয়ী: শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র - আজম ফারুক[5]
সঙ্গীত
চন্দ্রগ্রহণ | |
---|---|
হাবিব ওয়াহিদ ও ইমন সাহা কর্তৃক গান | |
মুক্তির তারিখ | ২০০৮ |
ঘরানা | চলচ্চিত্রের গান |
প্রযোজক | লেজার ভিশন |
চন্দ্রগ্রহণ ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন হাবিব ওয়াহিদ ও ইমন সাহা। আর গানগুলো লিখেছেন কবির বকুল, জুয়েল মাহমুদ ও অর্ক মোস্তফা। ছবিতে গান থাকছে ৮টি।[6] গানে কণ্ঠ দিয়েছেন হাবিব ওয়াহিদ, ন্যান্সি, সামিনা চৌধুরী, মুন্নি ও সুবির নন্দী।
গানের তালিকা
Track | Song’s | Singer’s | Note’s |
---|---|---|---|
১ | তোমারে দেখিল | হাবিব ওয়াহিদ ও ন্যান্সি | |
২ | মনের জোরে চলছে দেহ | হাবিব ওয়াহিদ | |
৩ | দে দোল দে দোল দোলা | মুন্নি | |
৪ | কোন শহরে জাবি | সামিনা চৌধুরী | |
৫ | ' |
তথ্যসূত্র
- Ershad Kamol (২৭ ডিসেম্বর ২০০৮)। "Film "Chandragrohon" aesthetically rich presentation of an unconventional plot"। The Dailystar। Dhaka, Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১১।
- Ershad Kamol (১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১০)। "The story of an Unexpected Success"। The Dailystar। Dhaka, Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ১ আগস্ট ২০১১।
- Arts & Entertainment (জুলাই ১৬, ২০০৯)। ""Chandragrahan" receives top award at Rainbow Film Festival"। The Daily Star। Dhaka, Bangladesh।
- Metropolitan (April 11, 2009)। "Meril-Prothom Alo Award ceremony held"। The Dailystar। Dhaka, Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ February, 15, 2012। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|সংগ্রহের-তারিখ=
(সাহায্য) - সমকাল প্রতিবেদক (১৪ নভেম্বর ২০০৯)। "জমজমাট বাচসাস সন্ধ্যা"। দৈনিক সমকাল। ঢাকা, বাংলাদেশ।
- 'চন্দ্রগ্রহণ' ছবির প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হল
বহিঃসংযোগ
- ইন্টারনেট মুভি ডেটাবেজে চন্দ্রগ্রহণ
(ইংরেজি)