উলানবাটর
উলান বাটর বা উলান বাতার (মঙ্গোলীয়: Улаанбаатар, ᠤᠯᠠᠭᠠᠨᠪᠠᠭᠠᠲᠤᠷ আ-ধ্ব-ব [ʊɮɑnpɑːtʰɑ̆r] উল্বান্পাথার্, অর্থাৎ "লাল বীর") (প্রাক্তন উর্গা বা নিসলেল খুরেরে) পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্র মঙ্গোলিয়ার রাজধানী ও প্রধান শহর। শহরটি সমুদ্র সমতল থেকে ১৩৫০ মিটার উচ্চতায় একটি ঝঞ্ঝাপীড়িত মালভূমির উপরে তুল নদীর তীরে অবস্থিত। মঙ্গোলীয় রাজপুত্রেরা এটিকে একটি মৌসুমী অভিবাসনমূলক আবাসস্থল হিসেবে পত্তন করেছিলেন। পরে ১৬৩৯ সালে দা খুরে মঠ নির্মাণের মাধ্যমে শহরটি বর্তমান অবস্থানে স্থায়ী হয়। এই ভবনটি তিব্বতি বৌদ্ধ ধর্মের (মঙ্গোলরা যে ধর্মের অনুসারী) বোদগো-গেগেন তথা উচ্চ যাজকের বাসভবনে পরিণত হয় এবং আরও প্রায় ২০০ বছর এ কাজে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু তখনও এটি যাযাবর এক মঠের শহর হিসেবেই বিদ্যমান ছিল। রুশরা দা খুরে মঠটিকে উর্গা নামে ডাকত; তারা চীন ও রাশিয়ার মধ্যে একটি বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে এখানে একটি শহর গড়ে তোলে। ১৯১১ সালে বহির্দেশীয় মঙ্গোলিয়া নিজেকে স্বাধীন ঘোষণা করলে শহরটিকে নিসলেল খুরেরে (অর্থাৎ "মঙ্গোলিয়ার রাজধানী")। ১৯২১ সালে সোভিয়েত লাল বাহিনী এবং মঙ্গোলিয়ার বিপ্লবী নেতা দামদিনি স্যুবাতার শহরটির নিয়ন্ত্রণ হাতে নেন। উলান বাতারের ধর্মীয় ভবনগুলিকে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯২৪ সালে মঙ্গোলিয়াকে একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে ঘোষণা করা হলে শহরটিকে উলান বাতার নাম দেওয়া হয়, যার অর্থ "লাল নেতা"।
উলানবাটর Улаанбаатар উর্গা | |||
---|---|---|---|
Municipality | |||
![]() View of Ulan Bator | |||
| |||
ডাকনাম: УБ (UB), Нийслэл (capital), Хот (city) | |||
স্থানাঙ্ক: ৪৭°৫৫′ উত্তর ১০৬°৫৫′ পূর্ব | |||
দেশ | মঙ্গোলিয়া | ||
current location | 1778 | ||
Ulan Bator | 1924 | ||
আয়তন | |||
• মোট | ৪৭০৪.৪ কিমি২ (১৮১৬.৩ বর্গমাইল) | ||
উচ্চতা | ১৩৫০ মিটার (৪৪২৯ ফুট) | ||
জনসংখ্যা (২০১৫) | |||
• মোট | ১৩,৮০,০০০ | ||
• জনঘনত্ব | ২৩৫/কিমি২ (৬০৩/বর্গমাইল) | ||
সময় অঞ্চল | H (ইউটিসি+৮) | ||
Postal code | 210 xxx | ||
এলাকা কোড | +976 (0)11 | ||
License plate | УБ_ (_ variable) | ||
ISO 3166-2 | MN-1 | ||
ওয়েবসাইট | http://www.ulaanbaatar.mn/ |
সোভিয়েত সাহায্য নিয়ে একটি নতুন শহর পরিকল্পনা করা হয়, যার কেন্দ্রে ছিল স্যুবাতার চত্বর (বর্তমান চেঙ্গিস খান চত্বর)। এই চত্বরে একটি নব্য-ধ্রুপদী স্থাপত্যশৈলীর সরকারী ভবন, একটি ইতিহাস জাদুঘর এবং জাতীয় মঞ্চশালা নির্মাণ করা হয়। ১৯৪২ সালে এখানে মঙ্গোলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। এছাড়াও এখানে বেশ কিছু পেশাজীবী ও কারিগরি উচ্চবিদ্যালয় এবং মঙ্গোলিয়ার বিজ্ঞান আকাদেমিও প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে শহরটির জনজীবনে আধুনিক ২১শ শতকের ছোঁয়া লেগেছে। চেঙ্গিস খান চত্বরে মঙ্গোলিয়ার বিভিন্ন নেতার মূর্তি আছে। গান্দান ও চৈজিন মঠগুলি সোভিয়েত যুগের অপসারণ প্রক্রিয়া থেকে রক্ষা পায়। গান্দান মঠে বর্তমানে সন্ন্যাসী-ভিক্ষুরা বাস করেন; এখানে ২৬ মিটার দীর্ঘ একটি সোনার পাতার মূর্তি আছে। অন্যদিকে চৈজিন লামা বর্তমানে একটি জাদুঘর। মঙ্গোলিয়ার শেষ রাজা বোগদ খানের শীতকালীন প্রাসাদটিও বর্তমানে একটি জাদুঘরে রূপান্তরিত। জাইসান হল থেকে শহর ও পর্বতের সুন্দর দৃশ্যাবলি অবলোকন করা যায়। শহরের বাইরে ঘোড়া বা উটে চড়ে গোরখি তেরেলজ জাতীয় উদ্যানে ভ্রমণ করা ও তাঁবু খাটানোর ব্যবস্থা আছে।
উলান বাতার মঙ্গোলিয়ার প্রধান শিল্পকেন্দ্র। এখানে অবস্থিত শিল্প এলাকাটিতে বিভিন্ন ধরনের ভোগদ্রব্য প্রস্তুত করা হয়। এখানে সিমেন্ট, লোহা ও ইট প্রস্তুত, জুতা ও বস্ত্র প্রস্তুত, যানবাহন মেরামত, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও অন্যান্য কারখানা আছে। শহরটি একটি রেলপথ[1] এবং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মাধ্যমে চীন ও রাশিয়ার সাথে সংযুক্ত। শহরের উত্তর-পূর্বে হেনতিন পর্বতমালার সুদৃশ্য অরণ্যাবৃত শৃঙ্গগুলি এসে মিলেছে।
এখানে প্রায় ১৪ লক্ষ লোকের বাস।
তথ্যসূত্র
- "Ulaanbaatar Official Web Portal"। Ulaanbaatar.mn। সংগ্রহের তারিখ ২৪ নভেম্বর ২০১৩।