ওমান

ওমান (আরবি: سلطنة عُمان সাল্‌ত্বানাৎ উমান আ-ধ্ব-ব [sʌltˤʌnʌt ʕʊmaːn]) আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোনাতে অবস্থিত রাষ্ট্র। এটি একটি মরুময় দেশ, যেখানে সুউচ্চ পর্বতমালার ঠিক পাশেই রয়েছে উজ্জ্বল শুভ্র বালুর সমুদ্র সৈকত। এখানে সংখ্যালঘু মুসলমান গোত্র ইবাদি জাতির লোকেরা বাস করে। এরা শিয়া ও সুন্নীদের চেয়ে স্বতন্ত্র। বহু শতাব্দী ধরে ওমান ভারত মহাসাগরীয় বাণিজ্যের একটি অন্যতম কেন্দ্র ছিল। ১৭শ থেকে ১৯শ শতক পর্যন্ত এটি একটি ঔপনিবেশিক শক্তি ছিল। ওমানের রাজা সুলতান উপাধি ব্যবহার করেন এবং দেশটির সরকারি নাম ওমান সুলতানাত।

Sultanate of Oman
سلطنة عُمان
পতাকা National Emblem
নীতিবাক্য: none
জাতীয় সঙ্গীত: Nashid as-Salaam as-Sultani
Oman অবস্থান
রাজধানী
এবং বৃহত্তম নগরী
মাস্কাট
২৩°৩৬′ উত্তর ৫৮°৩৩′ পূর্ব
সরকারি ভাষা আরবি
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ Omani
সরকার Absolute monarchy
   Sultan Qaboos bin Said Al Said
Independence
   পর্তুগিজদের বিতাড়ন 1651 
   মোট ৩,০৯,৫০০ কিমি (70th)
১,১৯,৪৯৮ বর্গ মাইল
   জল/পানি (%) নগণ্য
জনসংখ্যা
   ২০১৫ আনুমানিক ৪২,৯৮,৩২০জন[1] (126th)
   2010 আদমশুমারি ২৭,৭৩,৪৭৯জন[2]
   ঘনত্ব 13/কিমি (216th)
৩৪/বর্গ মাইল
মোট দেশজ উৎপাদন
(ক্রয়ক্ষমতা সমতা)
2007 আনুমানিক
   মোট $52.3 billion (81th)
   মাথা পিছু $19,879 (44th)
মোট দেশজ উৎপাদন (নামমাত্র) 2006 আনুমানিক
   মোট $35.992 billion (70th)
   মাথা পিছু $13,846 (40st)
মানব উন্নয়ন সূচক (2004) 0.810
ত্রুটি: মানব উন্নয়ন সূচক-এর মান অকার্যকর · 56th
মুদ্রা Rial (OMR)
সময় অঞ্চল (ইউটিসি+4)
   গ্রীষ্মকালীন (ডিএসটি)  (ইউটিসি+4)
কলিং কোড 968
ইন্টারনেট টিএলডি .om

ওমানের পশ্চিমে ইয়েমেন, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত, পূর্বে আরব সাগর, উত্তরে ওমান উপসাগর। ওমানের সবচেয়ে উত্তরের অংশ মুসান্দাম উপদ্বীপ হর্মুজ প্রণালীর দক্ষিণ তীর গঠন করেছে। পারস্য উপসাগরে ওমানের কয়েক কিলোমিটার তটরেখা আছে। মাসকাত ওমানের রাজধানী এবং বৃহত্তম নগর।

ইতিহাস

খ্রিস্টপূর্ব তিন হাজার বছর আগেকার একটি সুমারীয় উৎকীর্ণ লিপিতে ওমানকে “ নাজান ’ বা ‘ নাগান ’ ভূমি বলে উল্লেখ করা হয়েছে । ওমানের সমুদ্রবন্দরসমূহের সঙ্গে । সেকালে সুমারীয় নগরী ভূমি বলে উল্লেখ করা হয়েছে । ওমানের সমুদ্রবন্দরসমূহের সঙ্গে । সেকালে সুমারীয় নগরী উর ও কালদিয়ার নিয়মিত ব্যবসা - বাণিজ্য চলত । ধূনা তথা । লেবানের জন্য তখন বিখ্যাত ছিল ওমানের দোফার অঞ্চল । ইরাক , সিরিয়া , ফিলিস্তীন , । মিসর এবং ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ইউরােপীয় দেশসমূহে লােবান রফতানী হত এখান থেকে । গ্রীক ও রােমানদের কাছেও সুপরিচিত ছিল প্রাচীন ওমান । রােমান ভৌগােলিক বিব্রণে । ‘ ওমানা ' নগরীরর উল্লেখ রয়েছে । রােমান নাবিকদের কাছে মস্কট বন্দর ‘ পাের্টাস মস্কাস নামে পরিচিত ছিল । রােমান ভূগােলবেত্তা ও প্রকৃতি বিজ্ঞানী প্লিনি দি এল্ডার ওমানের মাসিরা দ্বীপের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন , এই দ্বীপটিতে অসংখ্য কচ্ছপ দেখতে পাওয়া যায় । | আলেকজান্ডারের নৌ - সেনাপতি নিয়ারকাস - এর বর্ণনায় রয়েছে এই উপসাগরীয় । অঞ্চল সম্পর্কে অনেক বিশদ এবং চিত্তাকর্ষক তথ্য । খ্রিস্টপূর্ব চতুর্থ শতকে নিয়ারকাস সিন্ধুনদের মােহনা থেকে তার নৌবহর নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন পারস্য - উপসাগর । তার পথে পড়ে বেলুচিস্তানের লাসবেলার সােমিয়ানি উপসাগর । তার বিবরণে সােনমিয়ানি | উপসাগরকে ‘ ওরিইতাই উপসাগর ' বলে উল্লেখ করা হয় । মাকরান উপকূল ধরে তিনি । হরমুজ প্রণালীর পশ্চিম প্রান্ত পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছিলেন । প্রণালীর পশ্চিম পাশ ঘেঁষেই | | ওমানের উপকূল । নিয়ারকাস কারমানিয়া তথা বর্তমান লারিস্তান উপকূল ধরে খুজিস্তান । | হয়ে বার কাছে তাইগ্রিস বা দজলা নদীর মােহনায় পৌঁছান । তিনি মাকরানকে ইকথিওফাসি ’ , ফার্স বা ইরানকে ‘ পারসিস ’ , খুজিস্তানকে ‘ সুইসিস এবং তাইগ্রিস নদী বা জদলাকে ‘ পাসিটিগরেস ' বলে উল্লেখ করেন । পরবর্তী যুগের গ্রীক ভূগােলবেত্তা । ইরাসেস্থিনিস্ আরব সাগর ও পারস্য উপসাগরের তীরবর্তী দেশসমূহের বর্ণনা দিয়েছেন । | খ্রিস্টীয় প্রথম শতকের একজন লেখক ওমানের দোফার উপকূলভূমিকে ‘ লােবানের দেশ বলে অভিহিত করেছেন । তিনি মুসানদাম উপদ্বীপের পর্বতমালা , জাবাল আখদার , হরমুজ | প্রণালী এবং প্রণালীর উত্তরের কুহ - ই - মুবারক বাস আল কুহ এর কথা বলেছেন । তাঁর বর্ণনায় আছে — উপসাগরের পূর্বতীরে পারসিতাই বা পার্থিয়ানদের ( পারসিক ) দেশ । | ১৯৭০ সালে পরিচালিত প্রত্নতাত্ত্বিক অভিযানে ওমানের সুপ্রাচীন অতীতের অনেক মুল্যবান নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়েছে। ওমানের 'ফালাই' সেচব্যবস্থা দক্ষিণ আরবের প্রাচীন হিমারীয়দের সময় থেকে প্রচলিত। সুলায়মান  (আঃ) এ-ব্যবস্থার প্রচলন করেছিলেন বলে ওমানের কৃষকদের ধারণা । খ্রিস্টপূর্ব যুগে দক্ষিণ আরবের কাহতান ও উত্তর আরবের । নিষার গােত্রের লােকেরা ওমান উপকূলে এসে বসবাস শুরু করে । খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকের দিকে ইয়ামেনের ঐতিহাসিক মারিব বাধ বন্যায় বিধ্বস্ত হলে সে অঞ্চল থেকে মালিক বিন ফাহদের নেতৃত্বে ওমানে এসে বসবাস শুরু করে আয্দ গােত্রের লােকেরা । নাসর বিন - আয্দ ছিলেন এই গােত্রের প্রধান । এরাই ওমানীদের পূর্বপুরুষ । | ইসলামের প্রথম যুগে আমর বিন স - এর নেতৃত্বে মুসলিম বাহিনী ওমানে প্রবেশ । কবে । এবং তখন থেকেই এখানে ইসলামী সভ্যতা ও সংস্কৃতি দমল হয় । উমাইয়া শাসন । আমলে ওমানের জনসাধারণ বিদ্রোহ ঘােষণা করে । পরবর্তীকালে তারা গ্রহণ করে ইবাদী । মতবাদ । এই মতবাদের মূল কথা হল — খিলাফত বংশানুক্রমিক কিংবা উত্তরাধিকারভিত্তিক হতে পারে না । খ্রিস্টীয় আঠারাে শতকে এই মতবাদের ভিত্তিতে ওমানীরা নিজস্ব ইবাদী ইমামত প্রতিষ্ঠা করে । বর্তমান শাসকবংশ এই ইমাম পরিবারেরই অন্তর্গত । | খ্রিস্টীয় অষ্টম শতক থেকে গােটা মধ্যযুগ পর্যন্ত ওমানে নৌবাণিজ্যের ব্যাপক প্রসার । ঘটে । মুহাম্মদ বিন কাসিম আল - সাকাফী ওমান হয়ে মাকরান উপকূলের মধ্য দিয়ে সিন্ধুর মােহনায় উপনীত হন এবং সেখানে প্রথম ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন । সিন্ধুর । উপকূলভূমিই ছিল দক্ষিণ - পূর্ব এশিয়ায় ইসলামের আদি কেন্দ্র । সে যুগেই ওমানের সাথে । ভারতের দক্ষিণ - পশ্চিমের মালাবার উপকূলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয় । আরবদের । কাছে কুলাম - মালে ’ নামে পরিচিত ছিলাে মালাবার উপকূল । ৭৫৮ খ্রিষ্টাব্দে মুসলিম বণিকরা । ওমান উপকূল হয়ে সমুদ্র পথে চীনের ক্যান্টন বন্দরে গমন করেন । ক্যান্টন তখন খানকু নামে পরিচিত ছিল । চীনে ছিল তখন তাং - বংশের শাসন । হুদুদুল আলম ’ নামক ভূগােল ও ইতিহাস বিষয়ক বিখ্যাত গ্রন্থে সেকালের একটি চীন - আরব ও মালয়ী বংশােদ্ভূত তাসিহ ও । পাে - সে বণিকদের তাং - শাসন বিরােধী সেকালের একটি অভ্যুত্থানের উল্লেখ রয়েছে । পর্যটক । ও ভূগােলবিদ ইসতাখারি মাসুদী , আবু যুলাফ আল - খারাজি , ইবনে হাওকিল এবং মুকাদ্দিসী । তাদের বিবরণে ওমান ও সিন্ধুসহ এই উপকূল অঞ্চলের বিশদ বর্ণনা দিয়েছেন । ৮৫১ সালে লিখিত ‘ আখবার আলমিন ওয়াল হিন্দ ’ গ্রন্থে আরব সাগর , পারস্য উপসাগর এবং ভারতীয় । উপকূলে আরব নাবিকদের ভ্রমণ অভিজ্ঞতার কাহিনী সন্নিবেশিত । আরবদের কাছে ভারত । মহাসাগর ‘ বাহরুল আকবর ’ , আটলান্টিক মহাসাগর ‘ বাহরুল মুহিত এবং পারস্য উপসাগর । “ খালিজ ’ বা ‘ লিসান ’ ( আরব সাগরের জিহবা ) নামে পরিচিত । উমাইয়া , আব্বাসী , ইরানী , মােঙ্গল । ও ইউরােপীয় আধিপত্যের যুগেও ওমান মােটামুটি তার স্বাধীনতা রক্ষা করতে সক্ষম হয় ।

রাজনীতি

ওমানের রাজনীতি একটি পরম রাজতন্ত্রের কাঠামোতে সংঘটিত হয়। ওমানের সুলতান হলেন একাধারে রাষ্ট্রের প্রধান ও সরকারের প্রধান। ওমানের সুলতানেরা বংশানুক্রমে ক্ষমতায় আসেন। বর্তমানে কাবুস ইবন সাইদ আস-সাইদ দেশটির সুলতান এবং তাকে সহায়তা করার জন্য একটি মন্ত্রীসভা আছে।

২০০৩ সালের অক্টোবরে প্রায় ২ লক্ষ ওমানি প্রথমবারের মত আইনসভার সদস্যদের নির্বাচিত করে। মোট ৮৩জন সদস্য নির্বাচিত হন এবং এদের মধ্যে ২জন মহিলা সদস্যও ছিলেন।

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

  • মাছকাট] [নিঝুয়া] [সোহার] [দুখুম] [সালালাহ্] [ইব্রি] [রুস্তাক] [হাইমা]

ভূগোল

ওমানের ভূসংস্থানিক মানচিত্র

ওমান আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব চতুর্থাংশে অবস্থিত। ওমানের শতকরা ৮০ ভাগেরও বেশি এলাকা মরুভূমি, ১৫% পর্বত এবং মাত্র ৩% উপকূলীয় সমভূমি। বেশির ভাগ লোকালয় সমুদ্র উপকূলে অবস্থিত।

ওমান উপসাগর, আরব সাগর, এবং আর রাব আল খালি মরুভূমি ওমানকে বাকি সব দেশ থেকে পৃথক করে রেখেছে।

অর্থনীতি

ওমানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ দেশটির উত্তর-পশ্চিম থেকে দক্ষিণ-পূর্বে বিস্তৃত আল হাজর পর্বতমালা। ৩০১০ মিটার উঁচু জেবেল শামস এর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। সোহার ও মাস্কটের মধ্যবর্তী স্থানে ওমান উপসাগরের উপকূল ধরে রয়েছে বিস্তৃত সৈকত, যেগুলিতে ডাইভিং, পানির নিচে ডুব দেওয়া, এবং ডলফিন ও কচ্ছপদের সাথে খেলার ব্যবস্থা আছে। এছাড়াও পক্ষীপ্রিয় মানুষদের জন্যও ওমান জনপ্রিয়। এখানে স্থানীয় প্রায় ৮০ প্রজাতির এবং অতিথি প্রায় আরও ৪০০ প্রজাতির পাখি দেখা যায়। ইউরোপ, আফ্রিকা ও এশিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে অতিথি পাখিরা নির্দিষ্ট ঋতুতে ওমানে ফিরে ফিরে আসে। ওমানের মরুভূমি এর বিশালাকার বালিয়াড়িগুলি ঘুরে দেখতেও অনেকে পছন্দ করেন। ওমানের চুনাপাথরের পাহাড়ী গুহাগুলিও বিখ্যাত। পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম গুহা মাজলিস আল জিন এখানে অবস্থিত।

জনসংখ্যা

আদর্শ আরবি ভাষা ওমানের সরকারি ভাষা। ওমানের আরবিভাষীদের মধ্যে দ্বিভাষিকতা (diglossia) বিদ্যমান। আনুষ্ঠানিক ও সরকারি কর্মকাণ্ডে কথ্য ও লিখিত ভাষা হিসেবে আদর্শ আরবি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু অনানুষ্ঠানিক কথাবার্তায় ভাবের আদান-প্রদানে স্থানীয় আরবি উপভাষাগুলিই বেশি ব্যবহৃত হয়। স্থানীয় আরবি উপভাষাগুলির মধ্যে আছে ওমানি আরবি ভাষা, উপসাগরীয় আরবি ভাষা এবং জোফারি আরবি ভাষা। অনেক ওমানি আরবি ছাড়াও দ্বিতীয় আরেকটি ভাষায় কথা বলতে পারেন।

ওমানের সাক্ষরতার হার এক সময় নিচু ছিল (১৯৯০ সালে ৫৪.৭%)। সম্প্রতি (২০০২) এটি বেড়ে ৭৫%-এ দাঁড়িয়েছে। তবে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ ও নারীদের মধ্যে সাক্ষরতার বৈষম্য এখনও রয়ে গেছে।

আরবি ছাড়াও ওমানের দক্ষিণাংশে অনেকগুলি আধুনিক দক্ষিণী আরবি ভাষা প্রচলিত। এদের মধ্যে আছে জিব্বালি ভাষা, মেহরি ভাষা, হার্সুসি ভাষা এবং হবিয়ত ভাষা। এগুলি আরবির মতোই সেমিটীয় ভাষা, কিন্তু আরবি থেকে আলাদা।

হর্মুজ প্রণালীর উপর অবস্থিত পর্বতময় মুসান্দাম উপদ্বীপে শিহু গোত্রের লোকেরা শিহ্‌হি নামের একটি ইরানীয় ভাষায় কথা বলে। ভাষাটিতে আরবির বড় প্রভাব দেখা যায়।

১৯৬০-এর দশকে প্রচুর জানজিবারি লোক পূর্ব আফ্রিকা থেকে ওমানের রাজধানী মুস্কাত এবং উপকূলীয় শহর এলাকাগুলিতে আশ্রয় নেয়। এদের মধ্যে সোয়াহিলি ভাষা বহুল প্রচলিত।

ওমানে বহু বিদেশীর বাস। এখানকার ৩৫ লক্ষ লোকের মধ্যে প্রায় ১০ লক্ষ লোক ওমানি নাগরিক নন, মূলত ভারত,বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ইরান থেকে আগত বিদেশী কর্মী। এই বিদেশীরা ওমানে ভাষাগত বৈচিত্র্যের সৃষ্টি করেছেন। দক্ষিণ এশিয়া থেকে আগত ওমানিদের মধ্যে অনেকে বালুচি ভাষায় কথা বলেন। সাম্প্রতিককালে বিদেশ থেকে আগত নতুন কর্মীরা বাংলা, হিন্দি, উর্দু, ও ফার্সি ভাষায় কথা বলেন।

ইংরেজি ভাষা ওমানে সবচেয়ে বেশি শেখানো বিদেশী ভাষা। মাধ্যমিক স্তরের পরবর্তী সমস্ত লেখাপড়া ইংরেজিতেই ঘটে। ওমানের বেতার সংস্থার ইংরেজি চ্যানেল আছে। এছাড়াও দেশে অনেকগুলি ইংরেজি সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়।

সংস্কৃতি

ওমানের পুরুষেরা সাধারনত নিজেদের কাধ থেকে গোড়ালি পর্যন্ত দীর্ঘ হাতা দিয়ে এক প্রকার জামা পরিধান করে যাকে ডিশডশা বা বাংলায় আমরা জুব্বা বলে থাকি।নারীরা সকালেই মাথা থেকে পা এর গোড়ালি পর্যন্ত সকল অঙ্গ ঢাকা কালো কাপড়ের আবাইয়া বা জাকে আমারা বোরকা বলে থাকি সেটি পরিধান করে।

সমুদ্রগামী দেশ হওয়ায় ওমানের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক হ'ল ধাও (যেটাকে পাল তোলা নৌকা বলা হয়ে থাকে) । এই নৌবহর গুলো শত শত বছর ধরে আরব উপদ্বীপ, ভারত এবং পূর্ব আফ্রিকা বরাবর ব্যবসায়ের উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। প্রকৃতপক্ষে, ওমানি ধাও প্রাচীনতম ব্যবহারের বিষয়টি অষ্টম শতাব্দীতে চীন পৌঁছেছিল। আধুনিক দিনের ব্যবহারে এই ধাও গুলো বাণিজ্য, পর্যটন এবং মাছ ধরার লক্ষ্যে কাজ করে এবং ওমানের উপকূলরেখার পাশেই এগুলি দেখা যায়।

শিক্ষা

প্রাপ্তবয়স্কদের স্বাক্ষরতার হার ২০১০ সালে ছিল ৮৬.৯%।[3] ১৯৭০ সালের আগে দেশে ৩টি মাত্র স্কুল এবং তাতে ১০০০জন মত ছাত্র ছিল। সুলতান কাবুস এর সময় থেকে শিক্ষার বিস্তার ঘটতে থাকে। বর্তমানে ১০০০টি স্কুল এবং সেগুলোতে প্রায় ৬৫০,০০০জন ছাত্র ছাত্রী আছে। ওমানের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় সুলতান কাবুস বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৮৬সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

স্বাস্থ্য

২০১০সাল অনুযায়ী ওমানের গড় আয়ু ৭৬বছর। [4] প্রতি ১০০০জন লোকের জন্য ২.১জন ডাক্তার ও ২.১টি হাসপাতালের শয্যা আছে।

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Oman"। CIA – The World Factbook। অজানা প্যারামিটার |2016 এর গণনা অনুসারে 44,24,765 ইউআরএল= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য);
  2. "Final Results of Census 2010" (PDF)। National Center for Statistics & Information। ১৮ মে ২০১৩ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৭ জানুয়ারি ২০১২
  3. "National adult literacy rates (15+), youth literacy rates (15–24) and elderly literacy rates (65+)"। UNESCO Institute for Statistics।
  4. "Major Economic & Social Indicators" (PDF)। National Center for Statistics & Information। ১৪ মে ২০১৪ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুলাই ২০১৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.