স্ট্যানলি কুবরিক

স্ট্যানলি কুবরিক (/ˈkbrɪk/; জুলাই ২৬, ১৯২৮ – মার্চ ৭, ১৯৯৯) ছিলেন মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, চিত্রগ্রাহক, সম্পাদক, এবং আলোকচিত্রী। তিনি একাডেমি পুরস্কার বিজয়ী মার্কিন চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক। তাকে চলচ্চিত্রের ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা সৃজনশীল ও প্রভাবশালী নির্মাতাদের একজন হিসাবে গণ্য করা হয়। কুবরিকের চলচ্চিত্রের অধিকাংশই বিশ্ববিখ্যাত সাহিত্যকর্মের চিত্ররূপ। তার চলচ্চিত্রে নিখুঁত কারিগরি কৌশল প্রকাশ পেয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তিনি চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত অনেক কারিগরি কৌশল উদ্ভাবন করেছেন। তার চলচ্চিত্রের একটি প্রধান বৈশিষ্ট হল খুব কাছ থেকে তোলা ক্লোজ-আপ , যাতে অভিনেতার মুখভঙ্গি ও আবেগ প্রকাশ পায়। এছাড়া তিনি তার ছবিতে জুম লেন্স, এবং উচ্চাঙ্গ যন্ত্রসঙ্গীতের ব্যাপক প্রয়োগ ঘটিয়েছেন। তিনি সুদীর্ঘ চলচ্চিত্র জীবনে মাত্র ১৬টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। তার প্রায় সবগুলো সিনেমাই বিশ্ব চলচ্চিত্রে বিশেষ প্রভাব বিস্তার করেছে। তার সিনেমা ক্যারিয়ারের মূল বৈশিষ্ট্য বলা যায় বিভিন্নতাকে। বিভিন্ন ধরনের ছবি বানিয়েছেন এবং প্রায় সবগুলোই যার যার জনরে শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখেছে।

স্ট্যানলি কুবরিক
১৯৭০-এর দশকে কুবরিক
জন্ম (1928-07-26) জুলাই ২৬, ১৯২৮
নিউ ইয়র্ক সিটি, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
মৃত্যু৭ মার্চ ১৯৯৯(1999-03-07) (বয়স ৭০)
হার্পেন্ডেন, হার্টফোর্ডশায়ার, ইংল্যান্ড
জাতীয়তামার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
পেশা
  • পরিচালক
  • প্রযোজক
কার্যকাল১৯৫১১৯৯৯
দাম্পত্য সঙ্গী
  • টোবা মেট্‌জ (১৯৪৮-১৯৫১)
  • রাথ সোবোটকা (১৯৫৪-১৯৫৭)
  • ক্রিশ্চিয়ান হার্লেন (১৯৫৮-১৯৯৯)
সন্তান
  • অ্যানিয়া কুবরিক (জন্ম: ১৯৫৯)
  • ভিভিয়ান কুবরিক (জন্ম: ১৯৬০)

জীবনী

প্রাথমিক জীবন

স্ট্যানলি কুবরিকের জন্ম ম্যানহাটন এর লাইং-ইন হসপিটালে ১৯২৮ সালের ২৬শে জুলাই। জ্যাক লিওনার্ড কুবরিক (১৯০১ - ৮৫) ও Gertrude (১৯০৩ - ৮৫) এর প্রথম সন্তান ছিলেন তিনি। কুবরিক ও Gertrude এর ঘরে দুই সন্তানের জন্ম হয়েছিল। বড় ছেলে কুবরিকের জন্মের ৬ বছর পর অর্থাৎ ১৯৩৪ সালে মেয়ে বারবারার জন্ম হয়। জ্যাক কুবরিকের বাবা-মা দুজনেই ইহুদী ছিলেন, তাদের পেশা ছিল চিকিৎসক। বংশের দিক দিয়ে তাদের মধ্যে অ্যাস্ট্রো-রোমানীয় ও পোল্যান্ডীয়দের সংমিশ্রণ ঘটেছিল। স্ট্যানলির যখন জন্ম হয় তখন কুবরিক পরিবার ব্রংক্সের ২১৬০ ক্লিনটন অ্যাভিনিউয়ের একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকতো।

১২ বছর বয়সে বাবার কাছে কুবরিক দাবা খেলা শেখেন। দাবার প্রতি তার অন্যরকম অনুরাগ ছিল। তার দ্বিতীয় অনুরাগের বিষয় বলা যায় ছবি তোলাকে। ১৩ বছর বয়সে বাবার কাছ থেকেই একটি গ্র্যাফলেক্স ক্যামেরা পেয়েছিলেন। ক্যামেরা হাতে ছবি তুলে বেরানো সে সময় তার শখের মধ্যে ছিল। এছাড়া কৈশোরে জ্যাজ সঙ্গীতের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। পরবর্তীতে ড্রামার হিসেবে একটি ব্যান্ড দলে জায়গাও করে নিয়েছিলেন। অবশ্য চালিয়ে যাওয়া হয়নি।

১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত কুবরিক উইলিয়াম হাওয়ার্প ট্যাফ্ট স্কুলে পড়াশোনা করেন। পড়াশোনায় বেশ খারাপ ছিলেন। তার গ্রেড ১০০-র মধ্যে কখনই ৬৭ এর উপরে উঠেনি। ১৯৪৫ সালে হাই স্কুল পাশ করার পর উচ্চ শিক্ষা নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু একে তো তার রেজাল্ট খারাপ, তার উপর তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে ফিরে আসা অসংখ্য হাই স্কুল পাশ ছাত্রের চাপ। সব মিলিয়ে তাই আর উচ্চ শিক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। পরবর্তী জীবনে কুবরিক স্কুলে তার তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। স্কুলের কোনকিছুই তাকে আকৃষ্ট করতে পারেনি সেটাও বলেছেন। সব মিলিয়ে স্কুল শিক্ষারও সমালোচনা করেছেন। উচ্চ শিক্ষা সম্ভব না হওয়ায় তার বাবা তাকে এক বছরের জন্য লস এঞ্জেলেসে পাঠিয়েছিলেন, এক আত্মীয়ের বাসায় থাকতে। ভেবেছিলেন দূরে গেলে পুত্রের মধ্যে কিছুটা দায়িত্বজ্ঞান তৈরি হবে।

হাই স্কুলে থাকতেই অবশ্য তার ছবি তোলার শখটা প্রশংসা পেয়েছিল। তিনি স্কুলের অফিসিয়াল আলোকচিত্রীর সম্মান পেয়েছিলেন। ১৯৪৬ সালে কুবরিক কিছুদিনের জন্য সিটি কলেজ অফ নিউ ইয়র্ক-এ পড়াশোনা করেন। সেখানেও তার মন বসেনি। অচিরেই ফ্রিল্যান্স আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ শুরু করেন। গ্র্যাজুয়েট হওয়ার আগেই তার বেশ কিছু ছবি লুক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছিল। এর মধ্যে আবার ওয়াশিংটন স্কয়ার পার্ক ও ম্যানহাটনের দাবা ক্লাবগুলোতে দাবা খেলে কিছু অর্থ উপার্জন করতেন। ১৯৪৬ সালেই লুক ম্যাগাজিনের নবিস আলোকচিত্রীর চাকরি পান। কিছুদিন পর তার চাকরিটা স্থায়ী হয়ে যায়। সে সময়ে (১৯৪৫-৫০) কুবরিকের তোলা অনেকগুলো ছবি "ড্রামা অ্যান্ড শ্যাডোস" (২০০৫) বইটিতে প্রকাশিত হয়েছে। ২০০৭ সালে প্রকাশিত ২০০১: আ স্পেস অডিসির বিশেষ ডিভিডি সংস্করণেও কিছু ছবি স্থান পেয়েছে।

লুক ম্যাগাজিনে কাজ করার সময়ই কুবরিক টোবা মেৎস-কে বিয়ে করেন। বিয়ের দিনটি ছিল ১৯৪৮ সালের ২৯শে মে। তারা গ্রিনিচ ভিলেজে থাকতেন, ১৯৫১ সালে অবশ্য তাদের বিবাহ-বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এই সময় থেকেই প্রচুর সিনেমা দেখা শুরু করেন। মিউজিয়াম অফ মডার্ন আর্ট এর চলচ্চিত্র প্রদর্শনীথে নিয়মিত যেতেন। এছাড়া নিউ ইয়র্ক সিটিতে মুক্তি পাওয়া কোন সিনেমাই বাদ যেতো না। এ সময় তিনি সবচেয়ে বেশী প্রভাবিত হয়েছিলেন জার্মান পরিচালক মাক্স ওফুল্‌সের কমপ্লেক্স ও ফ্লুইড ক্যামেরার কাজ দেখে। তার সিনেমার ভিজুয়াল স্টাইলের অনেক কিছুই ওফুল্‌স দ্বারা প্রভাবিত।

চলচ্চিত্র কর্মজীবন

পারিবারিক জীবন

মৃত্যু

চলচ্চিত্র তালিকা

প্রামাণ্য ও স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র

  • ডে অফ দ্য ফাইট (১৯৫১)
  • ফ্লাইং পাদ্রে (১৯৫১)
  • দ্য সিফেয়ারার্স (১৯৫৩)

পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র

  • ফিয়ার অ্যান্ড ডিজায়ার (১৯৫৩)
  • কিলার'স কিস (১৯৫৫)
  • দ্য কিলিং (১৯৫৬)
  • প্যাথ্‌স অফ গ্লোরি (১৯৫৭)
  • স্পার্টাকাস (১৯৬০)
  • লোলিটা (১৯৬২)
  • ড. স্ট্রেঞ্জলাভ অর: হাও আই লার্নড টু স্টপ ওরিয়িং অ্যান্ড লাভ দ্য বম (১৯৬৪)
  • ২০০১: আ স্পেস অডিসি (১৯৬৮)
  • আ ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ (১৯৭১)
  • ব্যারি লিন্ডন (১৯৭৫)
  • দ্য শাইনিং (১৯৮০)
  • ফুল মেটাল জ্যাকেট (১৯৮৭)
  • আইস ওয়াইড শাট (১৯৯৯)

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

    উৎস

    বহিঃসংযোগ

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.