বালিয়া জেলা
বালিয়া জেলা হল ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যেরর জেলাগুলির একটি। বালিয়া জেলা আজমগড় বিভাগের একটি অংশ এবং এটি উত্তরপ্রদেশের পূর্ব অংশে অবস্থিত। এখানকার প্রধান আয়ের উৎস হল কৃষি। বালিয়া শহরটি এই জেলার জেলা সদর এবং বাণিজ্যিক বাজার। এই জেলায় মোট ছটি তহশিল রয়েছে: ১. বালিয়া, ২. বৈরিয়া, ৩. বাঁশদিহ, ৪. বেলথারা রোড, ৫. রসরা এবং ৬. সিকান্দারপুর। রসরা এই জেলার দ্বিতীয় বড় বাণিজ্যিক অঞ্চল, এখানে একটি সরকারী চিনি কল এবং একটি সুতি বয়ন শিল্প রয়েছে। যদিও বালিয়ার মূল পেশা কৃষি, এখানে আরো কিছু কুটির শিল্প আছে। মানিয়ার বিন্দি শিল্পের জন্য পরিচিত এবং এটি একটি প্রধান সরবরাহকারী।
বালিয়া জেলা | |
---|---|
উত্তর প্রদেশের জেলা | |
![]() উত্তরপ্রদেশে বালিয়া জেলার অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | উত্তরপ্রদেশ |
বিভাগ | আজমগড় |
সদর দপ্তর | বালিয়া |
তহশিল | ১. বালিয়া ২. বৈরিয়া ৩. বাঁশদিহ ৪. বেলথারা রোড ৫. রসরা ৬. সিকান্দারপুর |
সরকার | |
• লোকসভা কেন্দ্রগুলি | বালিয়া, সালেমপুর এবং ঘোসি |
আয়তন | |
• মোট | ২৯৮১ কিমি২ (১১৫১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৩২,৩৯,৭৭৪ |
• জনঘনত্ব | ১১০০/কিমি২ (২৮০০/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ১,০৪,৪২৪ |
জনসংখ্যার উপাত্ত | |
• সাক্ষরতা | ৭৩.৮২ % |
• যৌন অনুপাত | ৯৩৩ |
সময় অঞ্চল | আইএসটি (ইউটিসি+০৫:৩০) |
প্রধান মহাসড়ক | ইউপি এসএইচ ১, ইউপি এসএইচ -১ বি, এনএইচ ৩১, ইউপি এসএইচ ৩৪ |
গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত | ১৬০৮.৯ মিমি |
ওয়েবসাইট | http://ballia.nic.in/ |
জনসংখ্যার উপাত্ত
ঐতিহাসিক জনসংখ্যা | ||
---|---|---|
বছর | জন. | ব.প্র. ±% |
১৯০১ | ৯,৪২,২৩৪ | — |
১৯১১ | ৮,০৭,৯১২ | −১.৫৩% |
১৯২১ | ৭,৯৩,৭৫৯ | −০.১৮% |
১৯৩১ | ৮,৭২,১৭৭ | +০.৯৫% |
১৯৪১ | ১০,০৭,৩১৮ | +১.৪৫% |
১৯৫১ | ১১,৪১,৭৩৯ | +১.২৬% |
১৮৬১ | ১২,৮০,৫১৭ | +০.১৩% |
১৯৭১ | ১৫,০৯,১৭২ | +০.১৫% |
১৯৮১ | ১৮,৪৯,৬৭৩ | +২.০৬% |
১৯৯১ | ২২,৬১,৫০২ | +২.০৩% |
২০০১ | ২৭,৬০,৬৬৭ | +২.০১% |
২০১১ | ৩২,৩৯,৭৭৪ | +১.৬১% |
সূত্র:[1] |
২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে বালিয়া জেলারজনসংখ্যা ৩,২৩৯,৭৭৪ জন,[2] মৌরিতানিয়া[3] বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া রাজ্যের জনসংখ্যার প্রায় সমান।[4] জনসংখ্যার ভিত্তিতে এটি ভারতে ১০৮ তম স্থানে আছে (মোট ৬৪০ জেলার মধ্যে)।[2] জেলার জনসংখ্যার ঘনত্ব ১,০৮৭ জন প্রতি বর্গকিলোমিটার (২,৮২০ জন/বর্গমাইল)।[2] এর জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২০০১ - ২০১১ এর দশকে ১৬.৭৩% ছিল।[2] বালিয়াতে প্রতি ১০০০ পুরুষের জন্য ৯৩৭ জন্য মহিলা (যৌন অনুপাত) রয়েছে,[2] এবং সাক্ষরতার হার এর ৭৩.৯৪%।[2]
ভাষা সমূহ
২০১১ সালে ভারতের আদমশুমারি অনুসারে, জেলার ৯৮.৯৭% লোক তাদের প্রথম ভাষা হিসাবে হিন্দিতে এবং ০.৯৪% উর্দুতে কথা বলে।[5]
এখানে ভাষার মধ্যে আছে হিন্দি, উর্দু এবং ভোজপুরি, প্রায় ৫১,০০,০০০ মানুষের ইন্দো-আর্য ভাষাসমূহর বিভাগে একটি কথ্য ভাষা, দেবনাগরী এবং কাইথি উভয় লিপিতেই লিখিত।[6]
হিন্দি এই জেলার সর্বাধিক কথ্য ভাষা। অনেক মানুষ ভোজপুরিকে তাদের প্রাথমিক ভাষা হিসাবে ব্যবহার করে।
ইংরেজি হল ফেসবুক, ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, লিঙ্কডইন, হোয়াটসঅ্যাপ, গুগলের মত বৈদ্যুতিন এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় যোগাযোগের মূল ভাষা।
সংস্কৃতি
হিন্দি সাহিত্যে বালিয়ার অবদান অপরিসীম। অনেক বিশিষ্ট পণ্ডিত বালিয়াতে জন্মেছেন, যেমন হাজারী প্রসাদ দ্বিবেদী, ভৈরব প্রসাদ গুপ্ত এবং অমর কান্ত। জেলার অন্যান্য উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন দুই ভাই বলদেব উপাধ্যায়, যিনি বিখ্যাত সংস্কৃতের সমালোচক এবং কৃষ্ণদেব উপাধ্যায়, যিনি ভোজপুরি পণ্ডিত এবং ভোজপুরি লোকসাহিত্যে রচয়িতা। এছাড়া আছেন হিন্দি সাহিত্যের দুধনাথ সিং এবং ডাঃ রামবিচার পান্ডে।[7]
রাজনৈতিক
বালিয়া হল বিখ্যাত কয়েকজন স্বাধীনতা সংগ্রামীর আবাসস্থল, যাঁরা অত্যাচারী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং চিত্তু পান্ডে এবং অন্যদের নেতৃত্বে ১৯শে আগস্ট ১৯৪২ থেকে কিছু দিনের জন্য ব্রিটিশ ভারতের শাসন থেকে বালিয়া অঞ্চলকে মুক্ত করে ছিলেন। এ কারণে বালিয়া অঞ্চলটি বাগী বালিয়া (বিদ্রোহী বালিয়া) নামেও পরিচিত।
এই জেলা থেকে উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মধ্যে রাম নাগিনা সিংহ রয়েছেন, যিনি ১৯৫২ সালে প্রজাতন্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক দল (পিএসপি) থেকে বালিয়ায় প্রাক্তন এমপি। চন্দ্র শেখর, যিনি 'তরুণ তুর্কী' নামেও পরিচিত, ১৯৯০ সালের ১০ই নভেম্বর ভারতের ৮ম প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এবং ১৯৯১ সালের ২১ শে জুন পর্যন্ত (২২৪ দিন) প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বালিয়া জেলার ইব্রাহিমপট্টি গ্রামে জন্মেছিলেন ও বড় হয়েছেন। তিনি বালিয়া লোকসভা আসনে সর্বোচ্চ সময় লোকসভার সদস্য থাকার রেকর্ডটি করেছেন। সুপরিচিত মুক্তিযোদ্ধা মঙ্গল পাণ্ডেও ছিলেন এই শহরের অধিবাসী এবং তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বিরুদ্ধে ভারতের ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহে সশস্ত্র লড়াইয়ে অংশ নিয়েছিলেন।
চিত্তু পান্ডে, মুরলি মনোহর, তারকেশ্বর পান্ডে, ত্রিপুরারী মিশ্র, গৌরী শঙ্কর রায় এবং আরো শত শত নেতা সেই সময়ে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছিলেন। মুরলি মনোহর, তারকেশ্বর পান্ডে, এবং গৌরী শঙ্কর রাই লোকসভার সদস্য ছিলেন। গৌরী শঙ্কর রাই- ইউপি পরিষদ, ইউপি কাউন্সিলের সদস্য এবং ভারতীয় সংসদ সদস্য ছিলেন।[8]
ভূগোল
জলবায়ু
বলিয়ারতে আর্দ্র গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু দেখতে পাওয়া যায়, ( কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস) (Cwa): মার্চের শেষ থেকে জুনের শুরুতে অত্যন্ত গরম থাকে, বর্ষা থাকে জুনের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের শেষের দিক পর্যন্ত এবং নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারী পর্যন্ত রাতে কনকনে ঠান্ডা এবং দিন কুয়াশাচ্ছন্ন বা রৌদ্রোজ্জ্বল থাকে।
তথ্যসূত্র
- Decadal Variation In Population Since 1901
- "District Census 2011"। Census2011.co.in। ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০।
- US Directorate of Intelligence। "Country Comparison:Population"। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১০-০১।
Mauritania 3,281,634 July 2011 est.
- "2010 Resident Population Data"। U. S. Census Bureau। ১৯ অক্টোবর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০।
Iowa 3,046,355
- 2011 Census of India, Population By Mother Tongue
- M. Paul Lewis, সম্পাদক (২০০৯)। "Bhojpuri: A language of India"। Ethnologue: Languages of the World (16th সংস্করণ)। Dallas, Texas: SIL International। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-৩০।
- "BHojpuri Gram-geet"। The Eastern Anthropologist। 4–6। ১৯৫০। সংগ্রহের তারিখ ২৫ মে ২০১৫।
- "57 Res. re. Demise of Rajiv Gandhi and Obituary References"। parliamentofindia.nic.in। সংগ্রহের তারিখ ২০১৯-০১-০৭।
আরো পড়ুন
বহিঃসংযোগ
টেমপ্লেট:Ballia district
টেমপ্লেট:Azamgarh division topics