হযরত আলী (বীর প্রতীক)

হযরত আলী (জন্ম: ১৯৪৫) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [1]

হযরত আলী
জন্ম১৯৪৫
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব ব্রিটিশ ভারত (১৯৪৭ সাল পর্যন্ত)
 পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক
দাম্পত্য সঙ্গীনূর জাহান

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

হযরত আলী'র জন্ম মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের বাউশিয়া গ্রামে। তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম এবং মায়ের নাম হাসেবান বিবি। তার স্ত্রীর নাম বেগম নূরজাহান। এ দম্পতির চার ছেলে। [2]

কর্মজীবন

হযরত আলী ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। সে সময়ে এই রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল যশোর সেনানিবাসে। ৩০ মার্চ পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ২৫ বালুচ এবং ২২ এফএফ রেজিমেন্ট তাদের আক্রমণ করে। তখন তারা প্রতিরোধের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তারা সেনানিবাস থেকে বেরিয়ে চৌগাছায় সমবেত হন। এরপর ক্যাপ্টেন হাফিজের নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

হযরত আলী লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম, জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলার কামালপুরসহ আরও কয়েকটি স্থানে যুদ্ধ করেছেন। তিনি মূলত মেশিনগান চালাতেন। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম এক ঘটনা সিলেট জেলার কানাইঘাটের যুদ্ধ। জৈন্তাপুর-জকিগঞ্জ সংযোগ সড়কে সুরমা নদীর তীরেএ উপজেলা সদরের অবস্থান। সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়ায় মুক্তিবাহিনী ও পাকিস্তানি বাহিনী উভয়ের কাছেই কানাইঘাট ছিল সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।এ যুদ্ধে হযরত আলী অংশ নেন। তিনি প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সৈনিক ছিলেন। ১৯৭১ সালের ২২ নভেম্বর থেকে ৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত কানাইঘাটে যুদ্ধ হয়। এখানে ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর ৩১ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের আলফা কোম্পানি, পাকিস্তানি স্কাউটস দলের এক প্লাটুন মিলিশিয়া এবং তাদের সহযোগী বেশ কিছু রাজাকার। ২২ নভেম্বর জেড ফোর্সের অধীন প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও গণবাহিনীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে গড়া মুক্তিবাহিনী কানাইঘাট-সংলগ্ন গৌরীপুরে পৌঁছে। তখন পাকিস্তানি বাহিনী তাদের ডিফেন্স ছেড়ে এগিয়ে এসে মুক্তিযোদ্ধাদের ঘেরাও করে। এরপর তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। কয়েক দিন ধরে এখানে যুদ্ধ চলে। পাকিস্তানি বাহিনী প্রচণ্ড প্রতিরোধ করেও শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়। কানাইঘাটের যুদ্ধে হযরত আলী যথেষ্ট সাহস, দক্ষতা ও রণকৌশল প্রদর্শন করেন। এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর পক্ষে ১১ জন শহীদ এবং হযরত আলীসহ ২০ জন আহত হন। অন্যদিকে পাকিস্তানিদের পক্ষে ৫০ জন নিহত, ২০ জন আহত এবং ২৫ জন আত্মসমর্পণ করে। কানাইঘাট মুক্ত হওয়ায় মিত্রবাহিনীর সিলেটের দিকে চূড়ান্ত অভিযান পরিচালনা করা সহজ হয়। [3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না", দৈনিক প্রথম আলো, তারিখ: ০৪-০৫-২০১১
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৫০৯। আইএসবিএন 9789843351449।
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (প্রথম খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। এপ্রিল ২০১২। পৃষ্ঠা ৩১৬। আইএসবিএন 9789843338884।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.