মোহাম্মদ শরীফ
শহীদ মোহাম্মদ শরীফ (জন্ম: অজানা - মৃত্যু: ১৯৭১) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [1]
মোহাম্মদ শরীফ | |
---|---|
মৃত্যু | ১৯৭১ |
জাতীয়তা | বাংলাদেশী |
নাগরিকত্ব | |
পরিচিতির কারণ | বীর প্রতীক |
জন্ম ও শিক্ষাজীবন
শহীদ মোহাম্মদ শরীফের জন্ম নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলার ছয়আনী টগবা গ্রামে। তারা তিন ভাই ও এক বোন। ভাইদের মধ্যে তিনি সবার ছোট ও অবিবাহিত ছিলেন। তার বাবার নাম সুলতান আলী এবং মায়ের নাম ছবুরা বেগম।
কর্মজীবন
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
১৯৭১ সালের মার্চ-এপ্রিলে প্রতিরোধযুদ্ধ শেষে মোহাম্মদ শরীফসহ একদল মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান নেন কুমিল্লার বিবিরবাজারে। তারা ইপিআর ও ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সেনা এবং স্থানীয় ছাত্র-যুবক সমন্বয়ে গড়া মুক্তিযোদ্ধা। এপ্রিল মাসের শেষে তারা বিবিরবাজারে প্রতিরক্ষাব্যূহ তৈরি করেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ছোট ছোট গেরিলা দলের সদস্যরা এখান থেকে গোমতী নদী অতিক্রম করে কুমিল্লা শহরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে পাকিস্তানি সেনাদের ব্যতিব্যস্ত রাখতেন। তারা অনেক সময় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কুমিল্লা শহরের অবস্থানের ওপর মর্টার হামলাও চালাতেন। এতে পাকিস্তানি সেনারা হতাহত হতো। এ জন্য পাকিস্তান সেনাবাহিনী মুক্তিযোদ্ধাদের এই প্রতিরক্ষা অবস্থানে মে মাসের শুরু থেকে বারবার আক্রমণ চালাতে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ মে সন্ধ্যার সময় মুক্তিযোদ্ধাদের এই প্রতিরক্ষা অবস্থানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ৩৯ বালুচ রেজিমেন্ট তাদের গোলন্দাজ বাহিনী এবং ট্যাংকের সাহায্যে অতর্কিতে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। সেনাবাহিনী প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানের পূর্ব দিকে আক্রমণ করে। এই আক্রমণ মোহাম্মদ শরীফসহ মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে নস্যাৎ করে দেন। তাঁদের পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অনেকে নিহত ও আহত হয়। এরপর পাকিস্তানি সেনারা পিছু হটে যায়। পরদিন ৯ মে সকালে পাকিস্তানি সেনারা দক্ষিণ দিক থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থানে আবার আক্রমণ করে। এ দিনের যুদ্ধ ছিল ভয়াবহ এবং চার-পাঁচ ঘণ্টা ধরে যুদ্ধ হয়। মোহাম্মদ শরীফসহ মুক্তিযোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেও শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হন। তারা তাঁদের এই প্রতিরক্ষা অবস্থান ধরে রাখতে পারেননি। যুদ্ধে শহীদ হন তিনিসহ কয়েকজন। যুদ্ধ চলাবস্থায় মোহাম্মদ শরীফের বুকে ও মাথায় গুলি লাগে। সঙ্গে সঙ্গে নিভে যায় তার জীবন প্রদীপ। সহযোদ্ধারা তার মরদেহ উদ্ধার করে ভারতের মাটিতে নিয়ে যান। পরে তাকে সেখানেই সমাহিত করা হয়।