সরযূ নদী

সরযূ (সংস্কৃত লিপ্যন্তরের আন্তর্জাতিক বর্ণমালায় - saráyu) হল একটি নদী, যেটি ভারতের উত্তর প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যদুটির মধ্য দিয়ে প্রবাহিত। বেদ এবং রামায়ণে উল্লিখিত এই নদীটির প্রাচীন তাৎপর্য রয়েছে। ভারতের বাহরাইচ জেলার করণালী (বা ঘাঘরা) এবং মহাকালী (বা সারদা নদীর সঙ্গম স্থলে সরযু নদীর উৎপত্তি হয়েছে। মহাকালী বা সারদা পশ্চিম ভারত ও নেপালের মধ্যে সীমান্ত গঠন করেছে। অযোধ্যা সরযু নদীর তীরে অবস্থিত। কিছু মানচিত্র প্রস্তুতকারীর[1] মতে, সরয়ু নদী শুধুমাত্র নিম্ন ঘাঘরা নদীর একটি অংশ।

সরযূ নদী
অযোধ্যায় সরযূ নদী
অন্য নামকালী নদী, সারদা নদী
অববাহিকার বৈশিষ্ট্য
মূল উৎসহিমালায় পর্বতমালা
৪,১৫০ মি (১৩,৬২০ ফু)
মোহনাগঙ্গার উপনদী
অববাহিকার আকারপূর্ব কুমায়ুন - পশ্চিম নেপাল
প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য
দৈর্ঘ্য৩৫০ কিমি (২২০ মা)

রাম নবমীর দিন, যেদিন রামের জন্মদিনের উৎসব উদযাপন করা হয়, হাজার হাজার লোক অযোধ্যার সরযু নদীতে অবগাহন করে।[2]

ব্যুৎপত্তি

সরযু নামটি মূল সংস্কৃত শব্দ 'सर्' এর স্ত্রীলিঙ্গ, সর হল পুংলিঙ্গে "প্রবাহিত"; সরযুর অর্থ "বায়ু" বা "বাতাস" অর্থাৎ, "যা প্রবাহিত হয়"।

উৎস এবং যাত্রাপথ

উত্তরাখণ্ডের বাগেশ্বরে সরযু নদী।

সরযুর উৎপত্তি সরমুলে (বা সরমূল)। এটি উত্তরাখণ্ডের এর জেলা বাগেশ্বরের উত্তরতম প্রান্তে অবস্থিত। সেখানে হিমালয়ের নন্দ কোট পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে এই নদীর উৎপত্তি। এটি কুমায়ুনের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত, পঞ্চেশ্বরে মহাকালী নদীতে পড়ার আগে এটি কাপকোট, বাগেশ্বর এবং সেরাঘাট শহরগুলির পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।[3]

সরযু নদী আবার ২৭°৪০′২৭″ উত্তর ৮১°১৬′৩৯″ পূর্ব স্থানাঙ্কে, বাহরাইচ জেলার করণালী নদী (বা ঘাঘরা) এবং মহাকালী (বা সারদা) নদীর সঙ্গম স্থলে, গঠিত হয়েছে। রামনগর পৌঁছোনোর আগে, এটি প্রথমে দক্ষিণ পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়, এরপর এটি পশ্চিম দিকে ঘুরে এবং ফৈজাবাদ এবং অযোধ্যা শহরের দিকে প্রবাহিত হয়েছে। পশ্চিম দিকে চলতে চলতে এটি টান্দা এবং বারহালগঞ্জ শহরগুলির মধ্য প্রবাহিত হয়েছে, এরপর ২৬°১৬′৩৪.০৫″ উত্তর ৮৩°৩৭′৪৯.৫১″ পূর্ব স্থানাঙ্কে এর বাম দিক থেকে রাপ্তি নদী এসে এর সঙ্গে মিলিত হয়েছে। এটি ছাপরা শহরের কাছে ২৫°৪৪′৩৬″ উত্তর ৮৪°৪০′০১″ পূর্ব স্থানাঙ্কে গঙ্গা নদীর সঙ্গে মিলেছে।

তাৎপর্য

ঐতিহ্যগত

ঋগ্বেদে এই নদীর কথা তিনবার উল্লেখ করা হয়েছে। ঋগ্বেদ ৪.৩০.১৮ অনুসারে, সরাইয়ের তীরে ইন্দ্রের হাতে দুজন আর্য মানুষের হত্যা সংঘটিত হয়েছিল। ঋগ্বেদ ৫.৫৩.৯ অনুসারে, সিন্ধুর পশ্চিম উপনদীগুলি, যেগুলি হল: রস, অনিতাভা, কুভা, ক্রুমু, এবং সিন্ধু নিজেই, যাদের বাধা মরুৎ পার হয়েছিল, এই নদী সেগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এই শ্লোক অনুসারে, এর বিশেষণ হিসাবে পুরিসিনি বলা হয়। প্রাচীন ঋগ্বেদের এই পর্যায়ে, সম্ভবত এটি সিন্ধু নদী ব্যবস্থার পশ্চিমদিকের একটি নদী ছিল যার, ইরানী হারাইয়ু (আবেস্তান হারিয়িয়াম, প্রাচীন পার্সিয়ান হরাইভা, আধুনিক হরে বা হরি), হরি নদীর সাথে মিল আছে। প্রাচীন ঋগ্বেদের ১০.৬৪ শ্লোকে এটি সিন্ধু এবং সরস্বতীর (ঋগ্বেদে সর্বাধিক উল্লেখিত দুটি নদী) সাথে একত্রে উচ্চারিত হয়েছে।

আরো দেখুন

টীকা

  1. "Plate 30: India, Plains : Nepal : Mt. Everest"। The Times Atlas of the World (seventh সংস্করণ)। Edinburgh: John Bartholomew & Sons, Ltd. and Times Books, Ltd.। আইএসবিএন 978-0-8129-1298-2।
  2. At Ayodhya, Ram Navami celebrated amid religious harmony ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৭ এপ্রিল ২০০৯ তারিখে Indian Express, 15 April 2008.
  3. Negi, Sharad Singh। Himalayan Rivers, Lakes, and Glaciers (ইংরেজি ভাষায়)। Indus Publishing। পৃষ্ঠা 120। আইএসবিএন 9788185182612।

তথ্যসূত্র

  • The Ramayana, by Ramesh Menon (2001)

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Hydrography of Uttar Pradesh টেমপ্লেট:Waters of South Asia

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.