ভরত (রামায়ণ)
ভরত হিন্দু মহাকাব্য রামায়ণের নায়ক রামচন্দ্রের দ্বিতীয় ভ্রাতা। তিনি অযোধ্যার সূর্যবংশীয় রাজা দশরথ ও তার দ্বিতীয়া স্ত্রী কৈকেয়ীর সন্তান। হিন্দু বিশ্বাস অনুযায়ী, রামের ন্যায় তিনিও ধর্মের প্রতীক ও আদর্শ চরিত্র এবং বিষ্ণুর পঞ্চায়ূধের অন্যতম সুদর্শন চক্রের প্রতিভূ।
ভরত | |
---|---|
![]() ভরত রামের খড়ম তার কাছ থেকে চাইছেন | |
দেবনাগরী | भरत |
সংস্কৃত লিপ্যন্তর | Bharata |
সহোদর | রাম, লক্ষ্মণ, শত্রুঘ্ন (বৈমাত্রেয় ভাইয়েরা) শান্তা (বৈমাত্রেয় বোন) |
সন্তান | তক্ষ পুষ্কল [1] |
সঙ্গী | মাণ্ডবী |
মাতাপিতা |


ব্যাকরণ
ভরত হলো একটি বৈদিক সংস্কৃত শব্দ। মনিয়ের মনিয়ের-উইলিয়াম বিবৃতি দেন যে এর মানে হলো "নিজেকে বজায় রাখা"।
পৌরাণিক উপাখ্যান
রামায়ণ অনুসারে, ভরত ছিলেন দশরথের দ্বিতীয় পুত্র। তারা চার ভাই পরস্পরের অত্যন্ত অনুরক্ত ছিলেন। ভরত রাজা জনকের ভ্রাতা কুশধ্বজের কন্যা মাণ্ডবীকে বিবাহ করেন। তক্ষ ও পুষ্কল নামে তাদের দুই পুত্রের জন্ম হয়।
রাম যৌবরাজ্যে অভিষিক্ত হওয়ার পর ভরতের মাত্রা কৈকেয়ীর চক্রান্তে পিতৃসত্য পালনে চোদ্দো বছরের জন্য বনে গমন করেন রামচন্দ্র। কৈকেয়ী রামের বদলে ভরতকে অযোধ্যার সিংহাসনে বসাতে চাইলেও, ভরত রাজপদ অস্বীকার করেন। তিনি বনে গিয়ে রামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং রামকে অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনের অনুরোধ জানান। কিন্তু পিতৃসত্য পালনে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাম অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনে অসম্মত হলে, ভরত রামের পাদুকাদ্বয় নিয়ে রাজ্যে ফেরেন। তবে অযোধ্যায় না ফিরে মাতুলালয় নন্দীগ্রাম থেকে রামের নামে রাজপ্রতিনিধিরূপে রাজ্যশাসন করতে থাকেন। উল্লেখ্য, ভরত রামকে সিংহাসনের প্রকৃত অধিকারী মনে করে, সিংহাসনে আরোহণ করতেও অস্বীকার করেছিলেন। এই কারণে অযোধ্যার রাজগুরু বশিষ্ট তাকে ধর্মের প্রতীক বলে উল্লেখ করেন।
রামের প্রত্যাবর্তনের পর তিনি রাজ্যের ভার রামের হস্তে তুলে দেন। রাম লক্ষ্মণকে অযোধ্যার যুবরাজ করার ইচ্ছা পোষণ করলেও, লক্ষ্মণ ভরতের গুণাবলির কথা স্মরণ করে তাকেই যুবরাজ করার প্রস্তাব দেন। এই জন্য রাম ভরতকে অযোধ্যার যুবরাজ ঘোষণা করেন।
রাজত্বের শেষে রাম আত্মবিসর্জনের সিদ্ধান্ত নিলে ভরত ও শত্রুঘ্ন তার সঙ্গ নেন। সরযূ নদীর জলে আত্মবিসর্জনের পর রাম মহাবিষ্ণুর অংশে মিলিত হন। এই সময় ভরত ও শত্রুঘ্নও তার অংশে বিলীন হয়ে যান।
বহিঃসংযোগ
- Ramayana - Conclusion, translated by Romesh C. Dutt (1899)