রাবণ
রাবণ ভারতীয় মহাকাব্য রামায়ণের অন্যতম প্রধান চরিত্র ও প্রধান খলনায়ক। তিনি মহাকাব্য ও পুরাণে বর্ণিত লঙ্কা (বর্তমানে শ্রীলঙ্কা) দ্বীপের রাজা। রামচন্দ্রের পত্নী সীতাকে হরণ করে তিনি লঙ্কায় নিয়ে যান। সীতার উদ্ধারকল্পে কিষ্কিন্ধ্যার বানরসেনার সাহায্যে রামচন্দ্র লঙ্কা আক্রমণ করলে রাবণের সঙ্গে তার যুদ্ধ হয়। এই ঘটনা রামায়ণ মহাকাব্যের মূল উপজীব্য। রামায়ণের উত্তরকাণ্ডে তার পূর্বজীবনের কথা বলা হয়েছে।

রাবণের প্রকৃত নাম দশগ্রীব। তার রাবণ নামটি শিবের দেওয়া। জনপ্রিয় শিল্পে তার দশটি মাথা, দশটি হাত ও দশটি পা দর্শিত হয়। মহাকাব্যে কামুক ও ধর্ষকামী বলে নিন্দিত হলেও রাবণকে মহাজ্ঞানী ও তাপসও বলা হয়েছে। উত্তর ভারতে দশেরা উৎসবে রাবণের কুশপুত্তলিকা দাহ আজও এক জনপ্রিয় প্রথা। রাবণ আদি যুগে সর্বপ্রথম মর্তে উড়ন্ত যান পুষ্পক রথ ব্যবহার করেন।
রাবণের জীবনী
মহর্ষি পুলস্তের পুত্র বিশ্রবাঃ ছিলেন এক ব্রহ্মর্ষি। দৈত্যরাজকন্যা পুষ্পৎকটা ছলনা করে ব্রহ্ম ঋষি বিশ্রবাঃ কে নিজের ছলনা সেবা দ্বারা মুগ্ধ করেন।
মহর্ষির সঙ্গে পুষ্পৎটার বিবাহ হয়। যার ফলে পুষ্পৎকটার গর্ভে দশপুত্রের তুল্য দশানন রাবণের জন্ম হয়। পুষ্পৎকটার নিজের পুত্রকে অসুরী শিক্ষা দিয়ে অসুর বানায়। তাই সে একদিকে যেমন তেজস্বী ছিলেন। অন্য দিকে মহা প্রতাপি ও অত্যাচারী। রাবণ শিবের ভক্ত ছিলেন ও শিবতান্ডব স্তোত্র রচনা করেন। ব্রহ্মার বরে ইনি মানুষ ভিন্ন আর কারুর হাতে অবধ্য ছিলেন। । রাবণ তার বৈমাত্রেয় ভাই কুবেরের কাছ থেকে পুষ্পক রথ হরণ করেন । প্রথম জীবনে রাবণ শিবের সাথে যুদ্ধ করে পরাজিত হয়ে পরে শিবের ভক্ত হন । রাবণ পুরব্যন্মে ছিলেন অভিশাপগ্রস্ত বিষ্ণুভক্ত বিজয়। রাবণ তার নিজশক্তিতে ত্রিলোকের অধিপতি হন । শ্রী রাম অবতারিত হন এবং রাবণকে বধ করেন । কথিত আছে ,রাম রাবণকে হত্যা করে ১ বৎসর ব্রহ্ম হত্যার অনুশোচনায় হিমালয়ের তপস্যা করেন। কারণ রাম ছিলেন পুরুষোত্তম।