শ্রীশ পাল

শ্রীশ পাল (আনুমানিক ১৮৮৭ - ১৩ এপ্রিল, ১৯৩৯) একজন বাঙালি সশস্ত্র বিপ্লবী ও ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনকারী।

শ্রীশ পাল
জন্ম
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন

বিপ্লবী তৎপরতা

তার আসল নাম ছিল শ্রীশচন্দ্র পাল। জন্ম মূলবর্গ, ঢাকায়। ১৯০৫ সালে গুপ্ত বিপ্লবী দলের সাথে তার যোগাযোগ হয়। ঢাকায় হেমচন্দ্র ঘোষ স্থাপিত মুক্তি সংঘের সাথে যুক্ত (পরে বেংগল ভলান্টিয়ার্স দল) ছিলেন। এই বিপ্লবী সংগঠনের অনুগত সৈনিক শ্রীশ পাল বহু দুঃসাহসীক কর্মের হোতা ছিলেন। তিনি নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন।[1]

নন্দলাল হত্যা

শ্রীশ পালের প্রধান কৃতিত্ব বিশ্বাসঘাতক পুলিশ ইনস্পেকটর নন্দলাল ব্যানার্জী হত্যা। বন্ধুর মুখোশে প্রফুল্ল চাকীকে ধরিয়ে দিয়েছিলো বাঙালী পুলিশ অফিসার নন্দলাল ব্যানার্জী। বিপ্লবীরা সিদ্ধান্ত নেন নন্দলাল ব্যানার্জীকে হত্যা করে প্রফুল্ল চাকীর মৃত্যুর বদলা নেওয়া হবে। সেইমত কাজের ভার পড়েছিল তরুন বিপ্লবী শ্রীশচন্দ্র ও আত্মোন্নতি সমিতির রনেণ গাঙ্গুলির ওপর। ৯ নভেম্বর, ১৯০৮ সালে কলকাতার সার্পেন্টাইন লেনে সন্ধ্যেবেলায় তারা গুলি করে হত্যা করেন নন্দলালকে। পুলিশ বহুদিন পর্যন্ত তাদের খোঁজ পায়নি।[2][3]

অন্যান্য বৈপ্লবিক কাজ

রডা অস্ত্র অপহরণ অভিযানে অভিনব ভূমিকা ছিল তার। আরেক বিপ্লবী শ্রীশচন্দ্র মিত্র ওরফে হাবু মিত্রর নেতৃত্বে ২৬ আগস্ট রডা কোম্পানির মাউজার পিস্তলের বাক্স অপহরণ করা হয়। শ্রীশচন্দ্র পাল, হরিদাস দত্ত গরুর গাড়ীর গাড়োয়ান সেজে অস্ত্র আনার জন্য হাজির হন খিদিরপুরে। যাবতীয় মাল তুলে দেওয়া হয় অন্যান্য গরুর গাড়ীতে, আর অস্ত্রের বাক্সগুলো কৌশলে তোলা হয় শ্রীশচন্দ্রের গাড়ীতে। গাড়ী গুলোকে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বিপ্লবীদের আস্তানায়। মুক্তি সংঘের অপর বিপ্লবী খগেন্দ্রনাথ দাস ওরফে খগেন দাস একাজে তাকে সহায়তা করেন। এছাড়া মুরারী হত্যা, ও' ব্রায়েন হত্যা প্রচেষ্টা ইত্যাদিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন তিনি। জগদ্দল অঞ্চলের আলেকজান্ডার জুট মিলের অত্যাচারী ইঞ্জিনিয়ার রবার্ট ও ব্রায়ান মজুর হত্যা করলে তার প্রতিশোধ স্বরূপ ১৯২২ সালে ও'ব্রায়েন হত্যা চেষ্টা করেন শ্রীশ পাল ও খগেন দাস। কিন্তু একাজে ব্যার্থ হলে তিনি গা ঢাকা দেন। বহুদিন পলাতক জীবন কাটিয়েছেন। নিরীহ অসুস্থ মানুষ সেজে পুলিশের চোখে ধুলো দিলেও গোপনে যোগাযোগ রেখেছেন বেংগল ভলান্টিয়ার্স সদস্যদের সাথে। ১৯১৬ সালে গ্রেপ্তার হন। ১৯১৯ এ অসুস্থ অবস্থায় মুক্তি পান।[1]

মৃত্যু

১৩ এপ্রিল, ১৯৩৯ সালে মারা যান বিপ্লবী শ্রীশচন্দ্র পাল।[1]

তথ্যসূত্র

  1. প্রথম খন্ড, সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (২০০২)। বাঙালি সংসদ চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ৫৪১।
  2. শৈলেশ দে (১৩৯৬ বঙ্গাব্দ)। ক্ষমা নেই। কলকাতা: বিশ্বাস পাবলিশিং হাউস। পৃষ্ঠা ১৬। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  3. ভূপেন্দ্রকিশোর রক্ষিত রায় (১৫.০৮.২০১৬)। "বাংলার বিপ্লববাদ ও গীতা- ২ পর্ব"। এইবেলা। সংগ্রহের তারিখ ১৬.০১.২০১৭ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ=, |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.