শ্রীশচন্দ্র মিত্র

শ্রীশচন্দ্র মিত্র বা হাবু মিত্র (ইংরেজি: Shrishchandra Mitra) (? - ১৯১৫) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব। ১৯১৪ সালে ২৬ আগস্ট বিপ্লবের প্রয়োজনে রডা কোম্পানির অস্ত্রলুণ্ঠন করবার কাজে তিনি প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা করেন। হাওড়া জেলার আমতা থানার অন্তর্গত দামোদর নদী তীরবর্তী গ্রাম রসপুরে শ্রীশ মিত্র জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রডা কোম্পানির ম্যানেজার ছিলেন। দলের নির্দেশে তৎকালীন রংপুর জেলার কুড়িগ্রামে আত্মগোপন করে থাকেন। পরে পুলিসের হাত এড়িয়ে চীন দেশে প্রবেশের সময় সম্ভবত সীমান্ত রক্ষীবাহিনীর গুলিতে মারা যান।[1]

শ্রীশ চন্দ্র মিত্রর স্মৃতিতে জন্মস্থানে শহীদ স্মৃতিসৌধ
শ্রীশ চন্দ্র মিত্রর স্মৃতিতে জন্মস্থানে শহীদ স্মৃতিসৌধ

রডা কোম্পানির পিস্তল চুরি

১৯১৪ সনের ২৬ আগস্ট বিপিন গাঙ্গুলির দলের সভ্য শ্রীশচন্দ্র মিত্র বন্দুক ব্যবসায়ী রডা এন্ড কোম্পানির ৫০টি মশার পিস্তল এবং ৪৬ হাজার কার্তুজ সুকৌশলে অপহরণ করেন। খিদিরপুর বন্দর এলাকায় এই অভিনব অস্ত্র অপহরনে তার অন্যতম সাথী ছিলেন বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্সের আরেক বিপ্লবী শ্রীশ পাল। শ্রীশ মিত্র বিপ্লবী দলের জন্য চাকুরির মায়া ত্যাগ করে ফেরার হন। এই পিস্তল ও কার্তুজ বিভিন্ন স্থানে সরিয়ে ফেলা হয়। কতক পিস্তল ও কার্তুজ পুলিস হস্তগত করতে সক্ষম হয়। অবশিষ্ট পিস্তল ও কার্তুজ অনুশীলন সমিতিসহ বিভিন্ন বিপ্লবী দলের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। শ্রী হরিদাস দত্ত, শ্রীশচন্দ্র পাল গাড়োয়ান সেজে গরুর গাড়িতে করে পিস্তল ও কার্তুজ অতুল কৃষ্ণ ঘোষের বাড়িতে নিয়ে যান। রডা কোম্পানির পিস্তল অপসারণ প্রসঙ্গে অতুল কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, নরেন্দ্র ভট্টাচার্য কয়েকজন সঙ্গীসহ সমস্ত পিস্তল ও কার্তুজ তার বাড়িতে রাত ৯টার সময় নিয়ে আসে। এরপর ২৬ আগস্ট দিবাগত রাত ৩টার দিকে মালামাল পুরোহিতের মারফৎ ময়মনসিংহের জমিদার গোপালদাস চৌধুরীর বাড়িতে সরান হয়। শেষ রাত্রে পুলিস অতুল বাবুর বাড়ি খানা তল্লাশি করে কিছু পেল না। এই পিস্তলগুলি হস্তগত হওয়ায় বাংলার বিপ্লবী দলগুলির ভেতরে সেসময় নতুন প্রাণের সঞ্চার হয়। পুলিস এই উপলক্ষে খানা তল্লাশি করে অনুকূল মুখার্জি, গিরিন্দ্র মুখার্জি, কালিদাস বসু, ভুজঙ্গভূষণ ধর, হরিদাস দত্ত, নরেন্দ্র ব্যানার্জিসহ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে।[2]

তথ্যসূত্র

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৭৩৮, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গন, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ১৮৬-১৮৭।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.