ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত

ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত (৮ অক্টোবর ১৮৯৪ - ২৯ ডিসেম্বর ১৯৭৯)[1] ছিলেন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী এবং ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী। ব্রিটিশ শাসন থেকে ভারতের স্বাধীনতার জন্য তিনি যুদ্ধ করেন। যুগান্তর দলের প্রধান হিসাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে তার গভীর অবদান ছিল। ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে বিলাসপুর জেলে তার ৭৮ দিন অনশন ধর্মঘটের রেকর্ড রয়েছে।

ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত
ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত
জন্ম(১৮৯৪-১০-০৮)৮ অক্টোবর ১৮৯৪
ঠাকুরপুর, যশোর, বেঙ্গল, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু২৯ ডিসেম্বর ১৯৭৯(1979-12-29) (বয়স ৮৫)
জাতীয়তাভারতীয়
পেশাবিপ্লবী

প্ররম্ভিক জীবন

ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত ৮ অক্টোবর ১৮৯২ সালে বাংলাদেশের সালে যশোর জেলার ঠাকুরপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা কৈশাল চন্দ্র দত্ত পার্শবর্তী ফরিদপুর জেলার পর্চার ম্যানেজার ছিলেন। তার মাতা বিমলাসুন্দরী একজন দানশীল মহিলা ছিলেন। কামালিনী, যাদুগোপাল, স্নেহলতা, সুপ্রভা নামে তার চার সহদোর ছিল।

কথিত আছে (?) একবার রামায়ণ পড়ার সময় সে লক্ষণের বিরত্বের কাহিনী জানতে পারে এবং ব্রহ্মচর্যে তার দখল সম্পর্কে পড়ে। এরপরে সে তার মার কাছ থেকে ব্রহ্মচর্য সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিজে সেই পথ অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। এবং তার সম্পূর্ণ জীবনেই অবিবাহিত ছিল এবং সৃষ্টিকর্তার সেবায় নিয়জিত ছিলেন। ফরিদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়ে তিনি অনুশীলন সমিতিতে যোগ দেন এবং পরবর্তীতে সে বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রম এবং ১৯০৫ সালের দেশ বিভাগের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ভগবদ্গীতা পড়ে এবং বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়স্বামী বিবেকানন্দের সাথে কাজ করে নিজেকে তাদের মত একজন অনুসরণীয় ব্যক্তি হিসাবে গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করে।

বিপ্লবী জীবন

বিপ্লবী বাঘা যতীনের মন্ত্রশিষ্য ছিলেন। জার্মান অস্ত্রসাহায্যে ভারতে সশস্ত্র বৈপ্লবিক অভ্যুত্থানের প্রস্তুতিতে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। খুলনা ও যশোর কেন্দ্রে বিপ্লবের দায়িত্ব ন্যস্ত ছিল তারই ওপর। বাঘা যতীনের মৃত্যুর পরেও আত্মগোপন অবস্থায় কাজ চালিয়ে যান। আর্মেনিয়ান স্ট্রীটে ডাকাতিতে জড়িত ছিলেন। ১৯১৭ তে গ্রেপ্তার। বিলাসপুর জেলে ৭৮ দিন অনশন করেছিলেন। ১৯২০ সালে মুক্তি পেয়ে গান্ধীজির সংগে দেখা করেন। গণসংযোগের উদ্দেশ্যে কংগ্রেসে যোগদান। তারপর দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের স্বরাজ্য পার্টিতে কাজ করেছেন। ১৯২৩ সালে ব্রহ্মদেশে (মায়ানমার) তাকে জেলবন্দী করা হয়। মুক্তি পেয়েও সশস্ত্র বিপ্লবের পথ পরিত্যাগ করেননি। অস্ত্র সংগ্রহ, বোমা তৈরি ইত্যাদিতে যুক্ত থাকায় পুলিশ তাকে বহুবার গ্রেপ্তার করেছে। চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুন্ঠনের ঘটনা নিয়ে স্বাধীনতা পত্রিকায় 'ধন্য চট্টগ্রাম' নিবন্ধটি লিখলে সরকার তাকে পূনরায় কারারুদ্ধ করে এবং টানা ৮ বছর জেল খাটেন।

লেখালিখি

ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত সুলেখক ছিলেন। তার রচিত গ্রন্থ বিপ্লবের পদচিহ্ন, রেভলিউশন এন্ড দ্যা কনস্ট্রাকটিভ প্রোগ্রাম। এছাড়াও বহু বিপ্লবীর জীবনী লিখেছেন তিনি।

তথ্যসূত্র

  1. সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, সম্পাদনাঃ সুবোধচন্দ্র সেনগুপ্ত এবং অঞ্জলি বসু, ১ম খণ্ড, সংশোধিত পঞ্চম সংস্করণ, সাহিত্য সংসদ, ২০১০, কলকাতা
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.