বারীন্দ্রকুমার ঘোষ

বারীন্দ্রকুমার ঘোষ (৫ জানুয়ারি ১৮৮০ - ১৮ এপ্রিল, ১৯৫৯) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিযুগের বিপ্লবী।

বারীন্দ্রকুমার ঘোষ
বারীন্দ্রকুমার ঘোষ
জন্ম৫ জানুয়ারি ১৮৮০
মৃত্যু১৮ এপ্রিল, ১৯৫৯
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন

কলকাতার ৩২ নং মুরারিপুকুরের বাগানবাড়ি তার পরিকল্পনায় বোমা তৈরির কারখানারূপে ব্যবহৃত হতো। আলিপুর বোমা মামলায় তার প্রথমে প্রাণদণ্ডাদেশ ও পরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়। ১৯০৯ সাল থেকে ১৯২০ সাল পর্যন্ত বন্দি ছিলেন।[1]

আলিপুর বোমা মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিগণ

৩০ এপ্রিল ১৯০৮-এ মুজাফফরপুর, বিহারে রাত সাড়ে আটটায় ইওরোপিয়ান ক্লাবের সামনে বোমা ছুড়ে তিনজনকে হত্যা করেন ক্ষুদিরাম বসু। সেই ঘটনার পর আলিপুর বোমা মামলা শুরু হয়। ১৯০৯ সালের ৬ মে আলিপুর বোমা মামলার রায় দেয়া হয়। রায়ে বিচারক বারীন্দ্রকুমার ঘোষ, ও উল্লাসকর দত্তকে মৃত্যুদণ্ড দেন। উপেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, হেমচন্দ্র কানুনগো, বিভূতিভূষণ সরকার, বীরেন্দ্র সেন, সুধীর ঘোষ, ইন্দ্রনাথ নন্দী, অবিনাশচন্দ্র ভট্টাচার্য, শৈলেন্দ্রনাথ বসু, হৃষিকেশ কাঞ্জিলাল, ইন্দুভূষণ রায়ের, দ্বীপান্তর দণ্ড হয়। পরেশ মৌলিক, শিশির ঘোষ, নিরাপদ রায় ১০ বছর দ্বীপান্তর দণ্ড, অশোক নন্দী, বালকৃষ্ণ হরিকোণে, শিশির কুমার সেন ৭ বছর দ্বীপান্তর দণ্ড এবং কৃষ্ণ জীবন সান্যাল ১ বছর কারাদণ্ড প্রাপ্ত হন। আপিলে বারীন্দ্রকুমার ঘোষ ও উল্লাসকর দত্তের মৃত্যুদণ্ড রহিত হয় এবং তার বদলে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তর দণ্ড হয়।বারীন্দ্রকুমারের অগ্রজ অরবিন্দ ঘোষ মুক্তি পান এবং অনেকের সাজা হ্রাস করা হয়।[2]

শেষ জীবন

শেষ জীবনে তার রাজনৈতিক ও বিপ্লবী মতাদর্শ বিতর্কিত হয়ে পড়ে। বাংলায় সশস্ত্র বিপ্লববাদী আন্দোলনের প্রানপুরুষ বারীন্দ্রকুমার ১৯৩৬ সালে পূর্বতন কাজের সমালোচনা করে 'ভারত কোন পথে' পুস্তিকা লেখেন। পৌঢ় বয়েসে বিবাহ করেছিলেন। ১৯৫০ সাল থেকে দৈনিক বসুমতী পত্রিকার সম্পাদক হন। কলিকাতা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'রামানন্দ' লেকচারার হিসেবে নিযুক্ত হয়েছিলেন।

রচনা

বারীন্দ্রকুমার ঘোষ সুলেখক ছিলেন। তার প্রবন্ধ ও নানা লেখা ইংরেজি ও বাংলায় বই আকারে প্রকাশিত হয়েছে। দ্বীপান্তরের বাঁশি, পথের ইঙ্গিত, আমার আত্মকথা, অগ্নিযুগ, ঋষি রাজনারায়ণ ইত্যাদি তার উল্লেখযোগ্য রচনা।

তথ্যসূত্র

  1. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৪৬০-৪৬১, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  2. ত্রৈলোক্যনাথ চক্রবর্তী, জেলে ত্রিশ বছর, পাক-ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম, ধ্রুপদ সাহিত্যাঙ্গন, ঢাকা, ঢাকা বইমেলা ২০০৪, পৃষ্ঠা ৭৯।
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.