উল্লাসকর দত্ত
উল্লাসকর দত্ত (জন্ম: ১৬ এপ্রিল ১৮৮৫ - মৃত্যু: ১৭ মে ১৯৬৫) ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব।
উল্লাসকর দত্ত | |
---|---|
জন্ম | ১৬ এপ্রিল, ১৮৮৫ |
মৃত্যু | ১৭ মে, ১৯৬৫ |
আন্দোলন | ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন |
যুগান্তর দল |
---|
তালিকা
|
তালিকা |
তালিকা |
প্রাথমিক জীবন
উল্লাসকরের জন্ম হয় তদানিন্তন অবিভক্ত বাংলার ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামে। তার পিতার নাম দ্বিজদাস । তিনি কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ এর ছাত্র ছিলেন, এবং পরে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় হতে কৃষিবিদ্যায় ডিগ্রি অর্জন করেন। তবে কলেজে পড়ার সময় ইংরেজ অধ্যাপক রাসেল বাঙালিদের সম্পর্কে কটূক্তি করার দরুন উল্লাসকর তাকে আঘাত করেন, এজন্য উল্লাসকরকে কলেজ হতে বহিষ্কার করা হয়েছিল । এই সময় থেকে তার জীবনে পরিবর্তন আসে।
বিপ্লবী কর্মকান্ড
উল্লাসকর যুগান্তর দলে যোগ দেন। তিনি বিস্ফোরক নির্মাণে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তার ফরমূলায় তৈরী বোমা পরীক্ষা করার জন্যে একদল বিপ্লবী বেছে নেন দেওঘরের নিকট নির্জন দীঘারিয়া পাহাড়। ১ মে, ১৯০৮ সালে সেই পরীক্ষার দিন বোমা ছোড়ার সময় আহত হয়ে মারা যান বিপ্লবী প্রফুল্ল চক্রবর্তী ও উল্লাসকর মারাত্মক জখম হন। গোপনে কলকাতায় তার চিকিৎসা করেন ডাক্তার ও বিজ্ঞানী ইন্দুমাধব মল্লিক। উল্লাসকরের তৈরি বোমাই ক্ষুদিরাম বসু ও হেমচন্দ্র দাস ম্যাজিস্ট্রেট কিংসফোর্ডকে আক্রমণে ব্যবহার করেছিলেন।[1] তবে এই হামলা বানচাল হয়ে যায়, এবং পুলিশ উল্লাসকর দত্ত সহ যুগান্তর দলের অনেক সদস্যকে গ্রেফতার করে।
বিচার ও সাজা
উল্লাসকর ২ মে ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে মুরারিপুকুর বাগানে ধরা পড়েন । ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে আলিপুর বোমা মামলা নামের এই বিখ্যাত মামলায় উল্লাসকর এবং বারীন ঘোষকে ফাঁসীর আদেশ দেয়া হয়। তবে পরবর্তীকালে এই সাজা রদ করে তাকে আন্দামানের সেলুলার জেলে যাবজ্জ্বীবন দ্বীপান্তরের সাজা দেয়া হয়।
জেল খাটা
আন্দামানের কুখ্যাত সেলুলার জেলে উল্লাসকর দত্তকে শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হতে হয়। এর ফলে তিনি সাময়িকভাবে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। ১৯২০ সালে তাকে মুক্তি দেয়া হলে তিনি কলকাতা শহরে ফেরৎ আসেন।
পরবর্তী জীবন
উল্লাসকরকে পরে ১৯৩১ সালে আবারও গ্রেফতার করা হয়, ও ১৮ মাসের কারাদন্ড দেয়া হয়। ১৯৪৭ এর ভারত বিভাগের পর তিনি গ্রামের বাড়ি কালিকচ্ছ ফেরৎ যান।
১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দে ৬৩ বছর বয়েসে বিশিষ্ট নেতা বিপিনচন্দ্র পালের বিধবা মেয়েকে বিয়ে করেন । সেখানে ১০ বছর কাটানোর পর তিনি ১৯৫৭ সালে কলকাতায় প্রত্যাবর্তন করেন। উল্লাসকর তার শেষ জীবন শিলচরে কাটান এবং সেখানেই ১৯৬৫ সালের ১৭ই মে মৃত্যুবরণ করেন। [2][3] [4][5]
প্রকাশিত গ্রন্থ
উল্লাসকর দত্ত রচিত দুটি গ্রন্থ হল,
- দ্বীপান্তরের কথা এবং
- আমার কারাজীবন ।
তথ্যসূত্র
- Government of India, Home Political Department A. Proceedings, May 1908, Nos. 112-150 ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৫ মার্চ ২০১৮ তারিখে
- Official report, Assam Legislative Assembly
- সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ১০২, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
- "অগ্নিযুগের বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত"। Dhaka,Bangladesh। line feed character in
|শিরোনাম=
at position 19 (সাহায্য) - "বিপ্লবী উল্লাসকর দত্ত : ইতিহাসের স্মৃতি-বিস্মৃতি"। Dhaka,Bangladesh।