নারায়ন চট্টোপাধ্যায়

নারায়ন চট্টোপাধ্যায় (১৯০৮ - ২২ জানুয়ারি ১৯৮৯) বাঙালি ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী ও রাজনৈতিক নেতা।

নারায়ন চট্টোপাধ্যায়
জন্ম১৯০৮
মৃত্যু২২ জানুয়ারি ১৯৮৯
আন্দোলনব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন

প্রারম্ভিক জীবন

নারায়ন চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম বর্তমান বাংলাদেশের খুলনার খানকা গ্রামের চট্টোপাধ্যায় জমিদার বংশে। পিতার নাম গৌরীনাথ চট্টোপাধ্যায়। পরিবারে বৈপ্লবিক ঐতিহ্য ছিল। উচ্চ সামন্ত বংশে জন্ম হলেও ব্রিটিশবিরোধী বিপ্লবী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন পরিবারের অনেকেই। তুতো ভাই বিষ্ণু চট্টোপাধ্যায় ওরফে বিষ্টু ঠাকুর ছিলেন বাংলার অবিসংবাদিত কৃষক নেতা ও শহীদ। দিদি বিপ্লবী ভানু দেবী যশোর খুলনা যুব সংঘের কর্মী ছিলেন।[1]

বিপ্লবী আন্দোলন

নারায়ন চট্টোপাধ্যায় নৈহাটি আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র স্কুলে পড়াকালীন প্রমথ ভৌমিকের সাহচর্যে বিপ্লবী আন্দোলনে আকৃষ্ট হন এবং 'কিশোর সমিতি'র সাথে যুক্ত হন। এই সমিতি প্রকাশ্যে জনহিতকর কাজের সাথে জড়িত থাকত ও গোপনে তরুনদের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষা দিত। খালিশপুর স্বরাজ আশ্রমে কৃষিকাজ, স্বাস্থ্য চর্চা পঠনপাঠনের আড়ালে বৈপ্লবিক কাজকর্মের প্রস্তুতি চলতো। ভাই বিষ্ণুর সাথে তিনিও ছিলেন স্বরাজ আশ্রমে। পরে এই আশ্রমটিই যশোর খুলনা যুব সংঘের অন্যতম আখড়া হয়ে যায়। ১৯২৮-২৯ সারা বাংলা ছাত্র আন্দোলনে নারায়ন চট্টোপাধ্যায় ছিলেন খুলনা জেলার নেতা। ১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে ২৪ আগস্ট আইন অমান্য আন্দোলনে যোগ দিয়ে বেংগল অর্ডিন্যান্স বলে গ্রেপ্তার হন।[1] আট বছর কারাদণ্ড হয় তার। মুক্তি পেয়ে খুলনা জেলা কংগ্রেস কমিটির সম্পাদক হয়েছিলেন।[2]

ফরওয়ার্ড ব্লক

১৯৩৯ সালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু খুলনায় এলে তার সাথে পরিচয় হয়। খুলনার ফরওয়ার্ড ব্লক জেলা কমিটির সম্পাদকের দায়িত্ব তার ওপর ন্যস্ত করেন সুভাষচন্দ্র। ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে সুভাষচন্দ্রের নেতৃত্বে হলওয়েল মনুমেন্ট অপসারনের দাবীতে আন্দোলনে যোগ দিয়ে পূনরায় বন্দী হন এবং নয় মাস সশ্রম কারাদণ্ড হয়। ১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পরেই গ্রেপ্তার হয়ে ৩ বছর কারারুদ্ধ থাকেন। ১৯৪৫ সালে মুক্তি পান।[2]

শেষ জীবন

জেল থেকে মুক্তিলাভ করে জেলা কংগ্রেসে পূনরায় যোগ দিয়েছিলেন। বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটি ও নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির সভ্য ছিলেন। সামাজিক কাজে নিয়োজিত ছিলেন শেষ জীবনে। দেশবিভাগের পর খুলনায় দুর্গতদের জন্যে কাজ করেছেন বহুদিন। পাক সরকারের অত্যাচার ও উৎপীড়নে পশ্চিমবঙ্গে চলে আসেন নারায়ন চট্টোপাধ্যায়।[2]

মৃত্যু

২২ জানুয়ারি, ১৯৮৯ তিনি মারা যান নারায়ণ চট্টোপাধ্যায়।[2]

তথ্যসূত্র

  1. সূচনা পর্ব, অমিতাভ চন্দ্র (১৯৯২)। অবিভক্ত বাংলায় কমিউনিস্ট আন্দোলন। কলকাতা: পুস্তক বিপণি। পৃষ্ঠা ১১৪, ১১৭। আইএসবিএন 81-85471-08-8।
  2. দ্বিতীয় খন্ড, অঞ্জলি বসু সম্পাদিত (মে,২০০৪)। সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান। কলকাতা: সাহিত্য সংসদ। পৃষ্ঠা ১৫৩। আইএসবিএন 81-86806-99-7। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.