ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল
ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল বাংলাদেশের অন্যতম প্রথাবিরোধী লেখক হুমায়ুন আজাদ রচিত একটি উপন্যাস।[1] ফেব্রুয়ারি ২১, ১৯৯৪ সালে[2] (ফাল্গুন, ১৪০০ বঙ্গাব্দ) একুশে গ্রন্থমেলায় বাংলাদেশের আগামী প্রকাশনী, ঢাকা থেকে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।[3] এই উপন্যাস প্রকাশের মধ্য দিয়ে হুমায়ুন আজাদের ঔপন্যাসিক হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটে।[4]
![]() প্রথম সংস্করণের প্রচ্ছদ | |
লেখক | হুমায়ুন আজাদ |
---|---|
মূল শিরোনাম | ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল |
প্রচ্ছদ শিল্পী | সমর মজুমদার |
দেশ | বাংলাদেশ |
ভাষা | বাংলা |
বিষয় | মুক্তিযুদ্ধ |
ধরন | উপন্যাস |
প্রকাশিত | ১৯৯৪, ফেব্রুয়ারি ২১ |
প্রকাশক | আগামী প্রকাশনী |
মিডিয়া ধরন | ছাপা (শক্তমলাট) |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ৪০৮ (প্রথম সংস্করণ) |
আইএসবিএন | 9847000600622 |
ওসিএলসি | 60043495 |
পরবর্তী বই | সব কিছু ভেঙে পড়ে (১৯৯৫) |
আজাদ উপন্যাসটি উৎসর্গ করেছেন উপন্যাসের প্রধান চরিত্র রাশেদকে।[5]
চরিত্রসমূহ
- রাশেদ
- মৃদু - রাশেদের কন্যা, বয়স পাঁচ
কাহিনীসংক্ষেপ
কোনো এক বসন্তের ভোরে ঘুম ভেঙে রাশেদ দেখতে পায় ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল জুড়ে নেমে এসেছে অন্ধকার— ঘোষিত হয়েছে সামরিক শাসন; সেদিন সকালেই তার পাঁচ বছরের মেয়ে মৃদু বিদ্যালয়ে যেতে চাইলে মিলিটারিরা রাইফেল উঁচিয়ে তাকে বাধা দেয়, সে এই অদ্ভুত মানুষদের দেখে রাস্তা থেকে চোখ আর বুক ভরে দুঃস্বপ্ন নিয়ে ঘরে ফিরে আসে। রাশেদের হৃদয়ের মতো ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল আর মৃদুর কজিলাদিদি লুপ্ত হয়ে যায় কর্কশ অশ্লীল সামরিক অন্ধকারে। তবে এই প্রথম সামরিক গ্রাসে পড়েনি তার নষ্টভ্রষ্ট দেশটি, রাশেদের বাল্যকালে আর যৌবন নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো পাকিস্থানি সামরিক গ্রাসে, এখন তার উত্তরাধিকারীর জীবনও পড়ে সামরিক গ্রাসে। রাশেদ জেগে ওঠে এত দূষিত বাস্তবতার মধ্যে, দিকে দিকে সে বুটের শব্দ শুনতে পায়, সে শুনতে পায় একনায়কের চাবুকের শব্দে নাচছে তার মাতৃভূমি, দেখতে পায় তার আত্মার মতো প্রিয় দেশটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একনায়কের গ্রাসে প'ড়ে; তবে রাশেদ শুধু এ-দৃশ্যই দেখে না—দেখে ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইলের সবুজ দাবাগ্নিদগ্ধ দেশটিকে কেউ ভালোবাসে না, যদিও সম্ভোগ করতে চায় সবাই। রাশেদ দেখতে পায় তার দেশটিকে নষ্ট ক'রে চলছে সামরিক একনায়কেরা, ভ্রষ্ট ক'রে চলছে রানীতিকেরা; এবং প্রতিটি মানুষ হয়ে উঠছে বিপন্ন, একদিন রাশেদও বিপন্ন হয়ে ওঠে ভয়ংকরভাবে, নিজের চোখের সামনে দেখে পুড়েছে ছাই হচ্ছে ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল—পুড়ছে গাছের পাতা, নদী, মেঘ, ধানক্ষেত, লাঙ্গল, সড়ক, গ্রাম, শহর, পুড়ে যাচ্ছে ছাই হয়ে যাচ্ছে একটি জাতি, পুড়ে যাচ্ছে ছাই হয়ে যাচ্ছে বর্তমান, পুড়ে যাচ্ছে ছাই হয়ে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ।[5]
আরও দেখুন
- হুমায়ুন আজাদের গ্রন্থতালিকা
- বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
তথ্যসূত্র
- জাহেদ মোতালেব (ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৩)। "৫৬ হাজার বর্গমাইল"। দৈনিক আজাদী। ২০১৬-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৫।
- মুহম্মদ সাইফুল ইসলাম (২০১২)। "আজাদ, হুমায়ুন"। ইসলাম, সিরাজুল; মিয়া, সাজাহান; খানম, মাহফুজা; আহমেদ, সাব্বীর। বাংলাপিডিয়া: বাংলাদেশের জাতীয় বিশ্বকোষ (২য় সংস্করণ)। ঢাকা, বাংলাদেশ: বাংলাপিডিয়া ট্রাস্ট, বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি। আইএসবিএন 9843205901। ওসিএলসি 883871743।
- "ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল"। রকমারি.কম। সংগ্রহের তারিখ জুন ১, ২০১৪।
- "বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদ"। বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। এপ্রিল ২৮, ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ আগস্ট ১৪, ২০১৭।
- আজাদ, হুমায়ুন (ফেব্রুয়ারি ১৯৯৪)। ছাপ্পান্নো হাজার বর্গমাইল। আগামী প্রকাশনী। পৃষ্ঠা ৫।