অলৌকিক ইস্টিমার

অলৌকিক ইস্টিমার বাংলাদেশের অন্যতম প্রথাবিরোধী কবি হুমায়ুন আজাদ রচিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ।[1] ১৯৭৩ সালে খান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোং কর্তৃক ঢাকা থেকে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।[2] পরবর্তীতে আগামী প্রকাশনী থেকে এর পুনসংস্করণ প্রকাশিত হয়।[1] এই গ্রন্থের রচনাগুলি আজাদের পরবর্তী জীবনের কবিতা বিস্তৃত ভাবনার প্রধান স্রোত এবং শৈলীর পূর্বভাস দিতে সক্ষম।[3]

অলৌকিক ইস্টিমার
আগামী প্রকাশনীর সংস্করণের প্রচ্ছদ
লেখকহুমায়ুন আজাদ
মূল শিরোনামঅলৌকিক ইস্টিমার
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
বিষয়কবিতা
ধরনআধুনিক
প্রকাশকখান ব্রাদার্স অ্যান্ড কোং (১৯৭৩), আগামী প্রকাশনী
প্রকাশনার তারিখ
১৯৭৩
মিডিয়া ধরনছাপা (শক্তমলাট)
আইএসবিএন9-844-01799-8
পরবর্তী বইজ্বলো চিতাবাঘ 

বিশ্লেষণ

এই কবিতার বইটি হুমায়ুন আজাদ তার নিজের জীবনের কাটানো ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত সময়কালকে উৎসর্গ করে লিখেছিলেন; বইটির কবিতাগুলো তার ঐ সময়গুলোতে লিখা।।[4] "স্নানের জন্য" শিরোনামে গ্রন্থের প্রথম কবিতায় তার উক্তি: "আমি কি ক'রে ভাসাই নৌকো জলে নামি স্নান করি …… পেছনে স্বভাব কবির কন্ঠনিঃসৃত পদ্যের মতোন ধুঁয়ো ওঠে কারখানার চিমনি চিরে …বড্ডো ময়লা জমে গেছে এ-শরীরে স্নান তাই অতি আবশ্যক…" বাক্যদ্বয় দ্বারা মূলত প্রতীকী স্নানের মাধ্যমে সে সময়ের প্রচলিত কবিতার প্রতি আজাদের কটুক্তির প্রকাশ পেয়েছে।[3] কাব্যগ্রন্থে এই ভাবধারার একাধিক কবিতা রয়েছে। স্ত্রী, পুত্র, কন্যাদের জীবনের মধ্যেকার সামাজিক সমস্যা, অনিরাপত্তা, ভবিষ্যৎ সংকটের প্রেক্ষাপটে তিনি রচনা করেছেন "জল দাও বাতাস", যার অধীনে "জননী", "আমার সন্তান", এবং "আমার কন্যার জন্য প্রার্থনা" শিরোনামে স্বতন্ত্র তিনটি কবিতা অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।[3] "জননী" কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত সনেট, অন্যদিকে "আমার সন্তান", এবং "আমার কন্যার জন্য প্রার্থনা" দুইটি গদ্যছন্দে রচিত।[3]

কাব্যগ্রন্থে কিছু পরাবাস্তব ধরনের কবিতা রয়েছে যার কিচুটা আবদুল মান্নান সৈয়দের কাব্যধারার সঙ্গে সামজ্ঞস্য রয়েছে বলে মনে করা হয়।[3] আজাদের "আজ রাতে", "টয়লেট", "মধ্যরাতে অত্যাচার", "রাত্রি", "জ‍্যাোস্নার অত্যাচার", "বিবস্ত্র চাঁদ", "চিত্রিত শহর" এ ঘরনার কবিতার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। পুনরাবৃত্তি গাথুনির কয়েকটি কবিতা হলো "যদি তুমি আসো", "আমার ছাত্র ও তার প্রেমিকার জন্য এলিজি", "বৃষ্টি নামে" প্রভৃতি। এ কবিতাগুলোর একাধিক শব্দ এবং বাক্যের পুনরাবৃত্তি রয়েছে।[3]

তার "ছাদআরোহীর কবিতা" এবং "সেই এক বেহালা-বেহালা" কবিতায় লোরকার কবিতার ছাপ রয়েছে। যেখানে 'বেহালা' কবিতাটি আধুনিক স্প্যানিশ সাহিত্যের অন্যতম কবি ফেদেরিকো গারসিয়া লোরকার "গিটার" শিরোনামের কবিতার আদলে গঠিত যার বিষয়বস্তুও প্রায় সমার্থক।[3]

কাব্যগ্রন্থে আজাদের তিরিশের দশকের কবিদের অধ্যয়ন, কিছু বিদেশী কবিদের পাঠ, পাশাপাশি সমকালীন কবিদের কবিতা সম্পর্কে অবগতি প্রকাশ পায়। পাকা ছন্দের ব্যবহার রয়েছে একাধিক কবিতায়। এবং ২২ মাত্রার অক্ষরবৃত্ত ছন্দে লিখেছেন:

নাচো, নাচো, হে নর্তকী, এই বক্ষে, এই স্টেজে, নাচো চিরদিন।
বাজাও নুপূর ঘন, আবর্তিত হও, শব্দ তোল উদ্ভিদবিদ্যার,
পায়ের আঘাতে হোক রক্তবীথি ছিন্নভিন্ন, মাংসরা মলিন,
নাচো, নাচো, হে নর্তকী, এই বক্ষ, এই স্টেজ সর্বদা তোমার।

স্টেজ

কবিতাসূচী

এই কাব্যগ্রন্থে মোট ৪২টি কবিতা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

আরো দেখুন

  • হুমায়ুন আজাদের গ্রন্থতালিকা

তথ্যসূত্র

  1. "অলৌকিক ইস্টিমার"। karigor.com। ২ এপ্রিল ২০১৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৪
  2. "১১ আগস্ট হুমায়ুন আজাদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী"সমকাল। ৫ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১১ এপ্রিল ২০১৪
  3. ওসমান সামস। "হুমায়ুন আজাদ-এর কবিতা"arts.bdnews24.com। arts.bdnews24.com। ৩১ জুলাই ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৯
  4. Gourab Chakma (২২ এপ্রিল ২০১৭)। "Recalling Humayun Azad, and his works"দ্য ডেইলি অবজার্ভার। ২৯ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১০ জুন ২০১৯

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.