মার্সেলো ভিয়েরা
মার্সেলো ভিয়েরা ডা সিলভা জুনিয়র (পর্তুগিজ: Marcelo Vieira da Silva Júnior; জন্ম: ১২ মে, ১৯৮৮) রিউ দি জানেইরোতে জন্মগ্রহণকারী ব্রাজিলীয় ফুটবলার। সচরাচর তিনি মার্সেলো নামেই সমধিক পরিচিত। ব্রাজিল জাতীয় ফুটবল দলের অন্যতম খেলোয়াড় মার্সেলো মূলতঃ লেফট উইঙ্গার হিসেবে খেলছেন। এছাড়াও ক্লাব ফুটবলে তিনি রিয়াল মাদ্রিদে প্রতিনিধিত্ব করছেন। চমৎকার কৌশল পরিচালনা, দূর্দান্ত শট ও সুন্দরভাবে বল পাসের জন্য তিনি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। সাবেক খেলোয়াড় রবার্তো কার্লোসের সাথে তাকে তুলনা করা হয়।[2] তার সম্বন্ধে কার্লোস কলেছেন, “মার্সেলো তার উত্তরসূরী ও বিশ্বের অন্যতম লেফট ব্যাক। তার খেলোয়াড়ী দক্ষতা আমার চেয়েও বেশী”। অবিসংবাদিত ফুটবলার পাওলো মালদিনি[3] ও দিয়েগো ম্যারাডোনার[4] কাছ থেকেও এ অবস্থানে অংশগ্রহণ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
![]() ২০১৭ সালে রিয়াল মাদ্রিদে মার্সেলো | |||||||||||||
ব্যক্তিগত তথ্য | |||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | মার্সেলো ভিয়েরা ডা সিলভা জুনিয়র | ||||||||||||
জন্ম | ১২ মে ১৯৮৮ | ||||||||||||
জন্ম স্থান | রিও ডি জেনেইরো, ব্রাজিল | ||||||||||||
উচ্চতা | ১.৭৪ মিটার (৫ ফুট ৮ ১⁄২ ইঞ্চি)[1] | ||||||||||||
মাঠে অবস্থান | লেফট ব্যাক | ||||||||||||
ক্লাবের তথ্য | |||||||||||||
বর্তমান ক্লাব | রিয়াল মাদ্রিদ | ||||||||||||
জার্সি নম্বর | ১২ | ||||||||||||
যুব পর্যায়ের খেলোয়াড়ী জীবন | |||||||||||||
২০০২-২০০৫ | ফ্লুমিনিজ | ||||||||||||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ী জীবন* | |||||||||||||
বছর | দল | উপস্থিতি† | (গোল)† | ||||||||||
২০০৫–২০০৬ | ফ্লুমিনিজ | ৩০ | (৬) | ||||||||||
২০০৭– | রিয়াল মাদ্রিদ | ৩২৭ | (২৫) | ||||||||||
জাতীয় দল‡ | |||||||||||||
২০০৫ | ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-১৭ | ৩ | (১) | ||||||||||
২০০৭ | ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২০ | ৪ | (০) | ||||||||||
২০০৮–২০১২ | ব্রাজিল অনূর্ধ্ব-২৩ | ১২ | (১) | ||||||||||
২০০৬– | ব্রাজিল | ৫৮ | (৬) | ||||||||||
সম্মাননা
| |||||||||||||
† উপস্থিতি(গোল সংখ্যা)। |
প্রারম্ভিক জীবন
নয় বছর বয়সে ফুটসাল খেলায় অংশগ্রহণ করেন মার্সেলো। তেরো বছর বয়সে রিও ডি জেনেইরো’র ফ্লুমিনিজ দলে চুক্তিবদ্ধ হন। তবে, খারাপ ফলাফল প্রদর্শনের দরুন ফুটবল খেলা ছেড়ে দিতে চাইছিলেন। কিন্তু তার ক্লাব মুকুটধারী রত্ন হিসেবে বিবেচনা করে তাকে খেলা চালিয়ে যেতে পরামর্শ দেয়। ২০০৭ সালের জানুয়ারিতে তিনি রিয়াল মাদ্রিদ দলে যোগ দেন। তার আগমন উপলক্ষে ক্লাবের সভাপতি রামোন কালডেরন বলেছিলেন যে, তিনি গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। তরুণ খেলোয়াড় হিসেবে তিনি দলে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনবেন ও দলে তরুণ খেলোয়াড়দেরকে নিয়ে আসার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে তিনি এসেছেন। আমরা অত্যন্ত খুশি কারণ তিনি এমন ধরনের মুক্তো যাকে ইউরোপের অর্ধাংশ নিতে চাইছিল।[5] অনেক দর্শকই তাকে রবার্তো কার্লোসের সাথে তুলনা করতে থাকেন ও উপযুক্ত উত্তরাধিকারীরূপে লেফট-ব্যাকে যুৎসই হিসেবে বর্ণনা করেন। ৭ জানুয়ারি, ২০০৭ তারিখে অতিরিক্ত খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামেন যাতে তার দল ২-০ ব্যবধানে ডিপোর্টিভো লা করুনাকে পরাজিত করে।[6] ১৪ এপ্রিল, ২০০৭ তারিখে তৎকালীন কোচ ফাবিও কাপেলো মার্সেলোকে প্রথমবারের মতো রেসিং দ্যঁ সানটেন্ডারের বিপক্ষে মাঠে নামান। ঐ খেলায় বিতর্কিতভাবে রিয়াল মাদ্রিদ ২-১ গোলে পরাজিত হয়।[7] ২০০৭-০৮ মৌসুমে নতুন ম্যানেজার বার্নড সাস্টারের পরিচালনায় মাদ্রিদের পক্ষে লীগের প্রায় সব খেলাতেই অংশ নেন। তার সক্ষমতা, মাঠে ক্ষিপ্রগতিতে দৌঁড়ানো, আক্রমণ এবং প্রতিরক্ষার কাজে সম্পৃক্ত হয়ে রিয়াল মাদ্রিদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
আন্তর্জাতিক ফুটবল
ব্রাজিল দলের হয়ে ওয়েলস দলের বিরুদ্ধে তিনি অভিষিক্ত হন। টটেনহ্যাম হটসপারের হোয়াইট হার্ট লেনে অনুষ্ঠিত ঐ খেলায় তার দল ২-০ ব্যবধানে জয়লাভ করেছিল। ২০০৬-০৭ মৌসুমে রবার্তো কার্লোসের সাথে তিনিও একত্রে রিয়াল মাদ্রিদে খেলেন। ২০০৮ সালে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে অংশ নিয়ে দলকে ব্রোঞ্জপদক জয়ে সহায়তা করেন। মে, ২০১০ সালে ফিফা বিশ্বকাপে ব্রাজিলের মূল দলের বাইরে অবস্থানকারী সাতজন সহায়তাকারী খেলোয়াড়ের একজনরূপে মনোনীত হন।[8] ব্রাজিলীয় কোচ দুঙ্গা তাকে খেলতে আমন্ত্রণ না জানালেও নতুন ম্যানেজার মানো মেনেজেসে’র আমন্ত্রণ পান ও ১০ আগস্ট, ২০১০ তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে প্রীতিখেলায় অংশ নেন। ১১ অক্টোবর, ২০১১ তারিখে মেক্সিকো’র বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জয়ী দলের পক্ষে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার পান তিনি। ২০১৩ সালের কনফেডারেশন্স কাপে ব্রাজিলের পক্ষে ৫ খেলার সবগুলোতেই অংশ নেন। তন্মধ্যে চূড়ান্ত খেলায় স্পেনের বিপক্ষে ৩-০ গোলে জয়ী দলেও ছিলেন ভিয়েরা।
১২ জুন, ২০১৪ তারিখে ২০১৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী খেলায় ১১ মিনিটের সময় আত্মঘাতী গোল করেন তিনি। ক্রোয়েশিয়ার নিকিচা জেলাভিচের শট মোকাবেলা করতে গিয়ে প্রতিযোগিতার প্রথম গোল করে বসেন মার্সেলো।[9] বিশ্বকাপের ইতিহাসে ব্রাজিলের পক্ষে এটিই ছিল প্রথম আত্মঘাতী গোল।[10] তারপরও তার দল এ খেলায় ৩-১ ব্যবধানে জয়ী হয়, যাতে নেইমার জোড়া গোল করেছিলেন।
তথ্যসূত্র
- "Player Profile"। Real Madrid C.F Official Web Site। সংগ্রহের তারিখ ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৪।
- La Liga Headlines: Roberto Carlos: Marcelo best in world ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৩১ মার্চ ২০১২ তারিখে. Adifferentleague.co.uk (29 March 2012). Retrieved on 2012-06-21.
- Paolo Maldini: Tottenham Hotspur's Gareth Bale only knows how to attack. Goal.com (16 December 2011). Retrieved on 2012-06-21.
- Diego Maradona tips Tottenham target Sergio Aguero to join Real Madrid one day. Goal.com (24 February 2011). Retrieved on 2012-06-21.
- C.F./12069.html Brazilian Marcelo to join Real Madrid ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৭ ডিসেম্বর ২০০৭ তারিখে SportsNews24h.com Retrieved 27 October 2007
- "Sky Sports – Football – Match Facts – Deportivo v Real Madrid – 7th January 2007"। Sky Sports। ১৪ জানুয়ারি ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুন ২০১৪।
- put-the-brakes-on-nine-man-madrids-title-bid/ AFP. Soccerway.com (14 April 2007). Retrieved on 2012-06-21.
- "Comissão técnica da Seleção Brasileira divulga a lista complementar enviada à FIFA"। CBF.com.br (Portuguese ভাষায়)। ১১ মে ২০১০। ২০১০-০৫-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১০-০৫-১২।
- "Brazil 3-1 Croatia"। BBC Sport। ১২ জুন ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪।
- "Neymar fires Brazil to comeback victory"। FIFA। সংগ্রহের তারিখ ১২ জুন ২০১৪।
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে মার্সেলো ভিয়েরা সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
- রিয়াল মাদ্রিদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে মার্সেলো ভিয়েরা
- ইএসপিএন সকারনেটে মার্সেলো ভিয়েরা
- বিডিফুটবলে মার্সেলো ভিয়েরা (ইংরেজি)
- National-Football-Teams.com-এ মার্সেলো ভিয়েরা (ইংরেজি)
- মার্সেলো ভিয়েরা – ফিফা প্রতিযোগিতার রেকর্ড (ইংরেজি)