এফ. ডব্লিউ. ডি ক্লার্ক
ফ্রেদেরিক উইলেম ডি ক্লার্ক (ইংরেজি: Frederik Willem de Klerk; জন্ম: ১৮ মার্চ, ১৯৩৬) দক্ষিণ আফ্রিকার বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৯৯৩ সালে অবিসংবাদিত নেতা নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে তিনিও শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। দক্ষিণ আফ্রিকায় গণতন্ত্রের নতুন যুগের সূচনা করেন ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের প্রেক্ষাপটে তারা এ পুরস্কারে মনোনীত হন।[1] ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি উপ-রাষ্ট্রপতিরও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেন।
মহামান্য এফ. ডব্লিউ. ডি ক্লার্ক | |
---|---|
![]() মার্চ, ২০১২ সালে ফ্রেদেরিক উইলেম ডি ক্লার্ক | |
দক্ষিণ আফ্রিকার স্টেট প্রেসিডেন্ট | |
কাজের মেয়াদ ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৮৯ – ৯ মে ১৯৯৪ | |
পূর্বসূরী | পি. ডব্লিউ. বোথা |
উত্তরসূরী | নেলসন ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি |
দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ১০ মে ১৯৯৪ – ৩০ জুন ১৯৯৬ Serving with থাবো এমবেকি | |
রাষ্ট্রপতি | নেলসন ম্যান্ডেলা |
পূর্বসূরী | দপ্তর প্রতিষ্ঠা |
উত্তরসূরী | থাবো এমবেকি (একাকী) |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ফ্রেদেরিক উইলেম ডি ক্লার্ক ১৮ মার্চ ১৯৩৬ জোহানেসবার্গ, ট্রান্সভাল প্রদেশ, দক্ষিণ আফ্রিকা ইউনিয়ন |
জাতীয়তা | দক্ষিণ আফ্রিকান |
রাজনৈতিক দল | ন্যাশনাল পার্টি |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | নিউ ন্যাশনাল পার্টি |
দাম্পত্য সঙ্গী | মারিক ডি ক্লার্কবিবাহ-পূর্ব উইলিমস (১৯৫৯-১৯৯৮) এলিতা জর্জিয়াদেস(১৯৯৮-বর্তমান) |
সম্পর্ক | জোহানেস ডি ক্লার্ক |
সন্তান | জেন ডি ক্লার্ক উইলেম ডি ক্লার্ক সুজান ডি ক্লার্ক |
বাসস্থান | কেপটাউন, ওয়েস্টার্ন কেপ, দক্ষিণ আফ্রিকা |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | পটশেফস্ট্রম বিশ্ববিদ্যালয় |
পেশা | রাজনীতিবিদ |
জীবিকা | অ্যাটর্নি |
ধর্ম | ডাচ রিফর্মড |
স্বাক্ষর | ![]() |
ব্যক্তিগত জীবন
ডি ক্লার্ক ১৮ মার্চ, ১৯৩৬ তারিখে দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে জন্মগ্রহণ করেন।[2] লি ক্লার্ক এবং ডি ক্লার্ক থেকে তার নামের অংশবিশেষ যুক্ত হয়েছে। নামের এ অংশটি ফ্রান্সের প্রোটেষ্ট্যান্ট ধর্মাবলম্বী সদস্যদের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকায় ব্যুৎপত্তি ঘটেছে।[3] সাহিত্যে ফরাসী ও ডাচ ভাষায় এ গোত্রনামটির অর্থ দাঁড়ায় দ্য ক্লার্ক। ডি ক্লার্ক উল্লেখ করেছেন যে তিনিও ডাচ বংশোদ্ভূত।[4][5] তার পূর্বপুরুষ কেপে ডাচদের মাধ্যমে ভারতীয়-দক্ষিণ আফ্রিকান হিসেবে দাসত্ব করেছেন।[6]
ক্রুজার্সডর্প এলাকার মনুমেন্ট হাই স্কল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। ১৯৫৮ সালে পটশেফস্ট্রুম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ ও এলএলবি ডিগ্রী অর্জন করেন। স্নাতক ডিগ্রী অর্জন শেষে তিনি ট্রান্সভাল প্রদেশের ভেরেনিগিং এলাকায় আইন ব্যবসা শুরু করেন। অধ্যয়নকালীন সময়ে তিনি অ্যাটর্নি হতে চেয়েছিলেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি ন্যাশনাল পার্টিতে যোগ দেন। ১৯৫৮ সালে পড়াশোনা শেষ করেন। পড়াশোনা শেষে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত তিনি দলের আইনী পরামর্শক ছিলেন।
ক্লার্ক দুইবার বিয়ে করেন। মারিক উইলমসে নামীয় রমণীকে প্রথম বিয়ে করেন। এ সংসারে দুই পুত্র ও এক কন্যা সন্তান রয়েছে।[7] পরবর্তীতে ১৯৯৮ সালে এলিতা জর্জিয়াদেস নাম্নী রমণীকে বিয়ে করে সংসারধর্ম পালন করছেন।
রাজনৈতিক জীবন
১৯৬৯ সালে ভেরেনিগিং এলাকা থেকে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধি পরিষদে প্রথমবারের মতো সদস্যরূপে নির্বাচিত হন। দক্ষিণ আফ্রিকার সংসদে দায়িত্বপালনকালীন সময়ে ১৯৭২ সালে পটশেফস্ট্রুমে প্রশাসকত্ব আইন বিষয়ে অধ্যাপনার প্রস্তাবনা পান। কিন্তু তিনি তা নাকচ করে দেন। ১৯৭৮ সালে ক্যাবিনেট সদস্য হন। ১৯৭৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ভোর্স্টারের শাসনামলে ডাক, তার, সমাজকল্যাণ ও অবসরভাতাবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রধান হন। ১৯৭৮-৭৯ সালে প্রধানমন্ত্রী পি.ডব্লিউ. বোথার অধীনে ডাক, টেলিযোগাযোগ, ক্রীড়া ও বিনোদনবিষয়ক মন্ত্রী হন। ১৯৮০-৮২ সালে খনিজ ও শক্তিসম্পর্কীয়; ১৯৮২-৮৫ সালে অভ্যন্তরীণ বিষয়ক এবং ১৯৮৪-৮৯ মেয়াদকালে জাতীয় শিক্ষা ও পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮২ সালে ট্রান্সভাল প্রদেশের ন্যাশনাল পার্টি প্রধান হন। প্রতিনিধি সভার মন্ত্রী সভায় সভাপতিরও দায়িত্ব পালন করেন ডি ক্লার্ক।
২০০৪ সালে তিনি নিউ ন্যাশনাল পার্টি ত্যাগ করেন। এর প্রধান কারণ ছিল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সাথে নিউ ন্যাশনাল পার্টির একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়া। ডি ক্লার্ক দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বৈষম্য নীতি অপসারণ ও জাতিগত সংঘর্ষ দূর করে বৈশ্বিকভাবে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন। এরফলে দক্ষিণ আফ্রিকায় বহুজাতিভিত্তিক গণতন্ত্রের সূচনা হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠী তাদের ন্যায্য ভোটাধিকারসহ অন্যান্য অধিকার পায়।
সম্মাননা
ক্লার্ক ১৯৯১ সালে হুফুয়েত-বোইগনি শান্তি পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯২ সালে প্রিন্স অব অ্যাজটুরিয়াস অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। এরপর বর্ণবাদ বৈষম্য নীতি অপসারণ ও জাতিগত সহিংসতা দূর করার ক্ষেত্রে সবিশেষ অবদান রাখায় ১৯৯৩ সালে নেলসন ম্যান্ডেলার সাথে যৌথভাবে নোবেল শান্তি পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৯৬ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নেলসন ম্যান্ডেলার শাসনামলে দক্ষিণ আফ্রিকার দুজন উপ-রাষ্ট্রপতির একজনরূপে দায়িত্ব পালন করেন। তিনিই সর্বশেষ শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি হিসেবে এ দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৭ সালে তিনি রাজনীতি থেকে অব্যহতি নেন। ২০১১ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে সক্রিয়ভাবে বক্তৃতা দিয়ে আসছেন।[8]
তথ্যসূত্র
- "The Nobel Peace Prize 1993"। nobelprize.org। ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ১৬ আগস্ট ২০১২।
- "F.W. de Klerk - Biography"। nobelprize.org। 2012 [last update]। সংগ্রহের তারিখ 16 August 2012। এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন:
|তারিখ=
(সাহায্য) - Lugan, Bernard (১৯৯৬)। Ces Français qui ont fait l'Afrique du Sud (The French People Who Made South Africa)। Bartillat। আইএসবিএন 2-84100-086-9।
- 'Diplomatic' FW to cheer for Dutch
- "Frederik en Marike de Klerk vinden hun wortels in Zeeland – Trouw"। Trouw.nl। ১৩ নভেম্বর ১৯৯৫। সংগ্রহের তারিখ ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১১।
- FW de Klerk Reveals Colourful Ancestry
- Abrams, Irwin, Nobelstiftelsen. Peace 1991–1995, 1999. Page 71.
- Changing the Course of History Description of a March 2011 lecture in Walnut Creek, California
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে এফ. ডব্লিউ. ডি. ক্লার্ক সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
- The FW de Klerk Foundation
- Video of F.W. de Klerk's November 2005 visit to Richmond Hill High School on Google Video
- Photos & Recordings of his visit to the College Historical Society in March 2008
- Ubben Lecture at DePauw University (includes video, audio and photos)
- Extensive Interview in the Huffington Post
- The Global Panel Foundation
রাজনৈতিক দপ্তর | ||
---|---|---|
পূর্বসূরী পিটার উইলেম বোথা |
দক্ষিণ আফ্রিকার স্টেট প্রেসিডেন্ট ১৯৮৯-১৯৯৪ |
উত্তরসূরী নেলসন ম্যান্ডেলা দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি হিসেবে |
নতুন পদবী | দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-রাষ্ট্রপতি ১৯৯৪-১৯৯৬ Served alongside: থাবো এমবেকি |
উত্তরসূরী থাবো এমবেকি |
টেমপ্লেট:SAPresidents টেমপ্লেট:MandelaGovernment টেমপ্লেট:Leaders of the Opposition (South Africa) টেমপ্লেট:SouthAfricaHomeMinisters টেমপ্লেট:SAEducationMinisters