পাণ্ডু রাজার ঢিবি
পাণ্ডু রাজার ঢিবি হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বর্ধমান জেলার সদর উত্তর মহকুমার অন্তর্গত আউসগ্রাম ব্লকের একটি প্রত্নক্ষেত্র। এটিই পশ্চিমবঙ্গে আবিষ্কৃত প্রথম তাম্রযুগীয় প্রত্নক্ষেত্র। পাণ্ডু রাজার ঢিবির প্রধান ধ্বংসস্তুপটির সঙ্গে মহাভারত-এর রাজা পাণ্ডুর নামের যোগসূত্র পাওয়া যায়।[1][2] এই প্রত্নক্ষেত্রটি অজয় নদের দক্ষিণ তীরে অবস্থিত। পাণ্ডু রাজার ঢিবি-সংলগ্ন রাজপোতডাঙা ও পাণ্ডুক গ্রামে খননকাজ চালানো হয়েছে।[1][2]
![]() ![]() পশ্চিমবঙ্গে এর অবস্থান দেখাচ্ছে | |
অবস্থান | পশ্চিমবঙ্গ, ভারত |
---|---|
স্থানাঙ্ক | ২৩°৩৪′১৯″ উত্তর ৮৭°৩৮′৫৯″ পূর্ব |
ধরন | পত্নস্থল |
ইতিহাস | |
প্রতিষ্ঠিত | ১৬০০ থেকে ৭৫০ খ্রিস্ট পূর্বে |
সময়কাল | Chalcolithic period |
খননকার্য
১৯৫৪-৫৭ সালে বি. বি. লাল এই ক্ষেত্রে প্রথম খননকার্য চালান।[2] পাণ্ডু রাজার ঢিবি রাজ্যের প্রথম আবিষ্কৃত ক্যালকোলিথিক বা তাম্রযুগীয় প্রত্নক্ষেত্রথলেও বীরভূম, বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ব্রাহ্মণী, ময়ূরাক্ষী, কোপাই, অজয়, কুনুর, দামোদর, দ্বারকেশ্বর, শিলাবতী ও রূপনারায়ণ নদনদী বিধৌত অঞ্চলে আরও অনেক প্রত্নক্ষেত্রের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।[2]
এখানে প্রাপ্ত ধ্বংসাবশেষ মূলত দুই সময়পর্বের – তাম্রযুগীয় (খ্রিস্টপূর্ব ১৬০০ – ৭৫০ অব্দ) এবং লৌহযুগীয়।[2]
গুরুত্ব
পাণ্ডু রাজার ঢিবিতে খননকার্য চালিয়ে অব্রাহ্মণ বাঙালিদের অনার্য উৎস সম্পর্কে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। পূর্ব ভারতের তাম্রযুগীয় সভ্যতার সঙ্গে মধ্য ভারত ও রাজস্থান অঞ্চলের অনুরূপ সভ্যতার মিল পাওয়া গিয়েছে। সেযুগের লোকজন সুপরিকল্পিত শহর নির্মাণ করতে পারত। তারা শহরের পথে ফুটপাথ রাখত। তাদের অর্থনীতির ভিত্তি ছিল কৃষি ও বাণিজ্য। পাণ্ডু রাজার ঢিবিকে একটি বাণিজ্য নগরীর ধ্বংসাবশেষ মনে করা হয়। এখানকার মানুষের সঙ্গে যে শুধু ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিল, তাই নয়; এরা ক্রিট ও ম্যাসিডোনিয়ান দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখত। এরা ছিল মূলত সমুদ্রচারী বণিক জাতি।[3]
পাদটীকা
- Chattopadhyay, Akkori, Bardhaman Jelar Itihas O Lok Sanskriti (History and Folklore of Bardhaman District.), (বাংলা), Vol I, pp. 125-130, Radical Impression. আইএসবিএন ৮১-৮৫৪৫৯-৩৬-৩
- Mukherjee, Shyam Chand। "Pandu Rajar Dhibi"। Banglapedia। Asiatic Society of Bangladesh। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০৫-০৪।
- Majumdar, R.C., History of Ancient Bengal, 2005 edition, pp. 20-22