সিঙ্গুর

সিঙ্গুর ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলী জেলার একটি শহর।

সিঙ্গুর
সিঙ্গুর
স্থানাঙ্ক: ২২.৮১° উত্তর ৮৮.২৩° পূর্ব / 22.81; 88.23
জনসংখ্যা (২০০১)
  মোট১৯,৫৩৯

ভৌগোলিক উপাত্ত

শহরটির অবস্থানের অক্ষাংশ ও দ্রাঘিমাংশ হল ২২.৮১° উত্তর ৮৮.২৩° পূর্ব / 22.81; 88.23[1] সমূদ্র সমতল হতে এর গড় উচ্চতা হল ১৪ মিটার (৪৫ ফুট)।

জনসংখ্যার উপাত্ত

ভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে সিঙ্গুর শহরের জনসংখ্যা ১৯,৫৩৯[2]। এর মধ্যে পুরুষ ৫১% এবং নারী ৪৯%।

এখানে সাক্ষরতার হার ৭৬%। পুরুষদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ৮১% এবং নারীদের মধ্যে এই হার ৭১%। সারা ভারতের সাক্ষরতার হার ৫৯.৫%, তার চাইতে সিঙ্গুর এর সাক্ষরতার হার বেশি।

এই শহরের জনসংখ্যার ৯% হল ৬ বছর বা তার কম বয়সী।

টাটা মোটর কারখানা

সিঙ্গুরের শতকরা ৯০% জমি চাষাবাদে নিযুক্ত। এর মধ্যে ১০০০ একর জমি নিয়ে ২০০৬ সালে [3] টাটা মোটর কোম্পানীর কে দেওয়া হয়। ২০০৭-০১-এ এখানে টাটা ন্যানোর কারখানা নির্মাণ শুরু হয়। সেই সময়ে জানা যায় যে কিছু চাষীকে পুরো ক্ষতিপুরণ দেওয়া হয়নি, এবং জুন মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোর্টে জানান যে প্রায় ৩০% চাষী ক্ষতিপূরনের চেক নিতে রাজী হন নি [4]। এই নিয়ে ২০০৭ থেকে তৃণমূল কংগ্রেসএর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-এর নেতৃত্বে প্রবল গণআন্দোলন আরম্ভ হয়।

আগস্ট ২০০৮ সালে এই ব্যাপক গণআন্দোলন এবং কোম্পানীতে চাকুরীজীবিদের ওপর হামলার মুখে টাটা মোটরস কারখানায় কাজ স্থগিত রাখেন এবং পরবর্তীকালে রতন টাটা তার কারখানা গুজরাটে স্থানান্তরিত করেন।

বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত

সম্প্রতি ৩১ শে আগষ্ট ২০১৬-তে সুপ্রীম কোর্টে সিঙ্গুর মামলার ঐতিহাসিক রায় ঘোষণা হয়। বিচারপতি অরুণ কুমার মিশ্র ও বিচারপতি ভি. গোপাল গৌড়া-র ডিভিশন বেঞ্চ, ২০০৬ সালের জমি অধিগ্রহণ অবৈধ ঘোষণা করে, টাটাগোষ্ঠীকে চাষীদের জমি ফেরত দেবার নির্দেশ দেয় এবং ১২ সপ্তাহের মধ্যে অনিচ্ছুক চাষীদের জমি ফিরিয়ে দেবার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয়।

ঐতিহাসিক এই কারনে, হয়ত ভারতবর্ষের আর কোন রাজ্যে ভূমি আন্দোলন এরূপ প্রাধান্য লাভ করেনি। মূলতঃ এই মামলাই ৩৪ বৎসরের বামফ্রন্ট সরকারের ভিতকে উৎপাটিত করতে ও বর্তমান সরকারকে ক্ষমতায় আসার পথকে প্রসারিত করেছিল। তবে এই মামলার প্রভাব কিন্তু রাজনৈতিক ব্যাপ্তি ছাড়িয়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিসরেও বিস্তৃত। যেখানে সিঙ্গুরের ন্যানো কারখানা কয়েক হাজার বেকার যুবকযুবতীর স্বপ্নপূরনের প্রত্যাশা পূরনের প্রতিশ্রুতি ছিল, অন্যদিকে কৃষিপ্রধান রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের ১০০০ একর আবাদী জমি অধিগ্রহণে ন্যানো কারখানা গড়ে উঠলে কৃষিক্ষেত্রে অপূরনীয় ক্ষতির সম্মুখীন হত, এটাকেও অস্বীকার করা যায় না।

বর্তমান সরকারের কৃষিনীতি ও শিল্পনীতি এখন কোন অভিমুখে পরিচালিত হয়, এখন সেটাই লাখ টাকার প্রশ্ন।

তথ্যসূত্র

  1. "Singur"Falling Rain Genomics, Inc (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৫, ২০০৬
  2. "ভারতের ২০০১ সালের আদমশুমারি" (ইংরেজি ভাষায়)। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১৫, ২০০৬
  3. The Telegraph 14 October 2006
  4. http://www.business-standard.com/india/storypage.php?autono=287336
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.