দিয়েগো মারাদোনা

দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা (উচ্চারিত: [ˈdjeɣo maɾaˈðona], জন্ম ৩০ অক্টোবর ১৯৬০) একজন আর্জেন্টিনীয় ফুটবল কোচ সেইসাথে একজন ম্যানেজার এবং প্রাক্তন খেলোয়াড়। অনেক বিশেষজ্ঞ, ফুটবল সমালোচক, প্রাক্তন ও বর্তমান খেলোয়াড় এবং ফুটবল সমর্থক তাকে সর্বকালের সেরা ফুটবলার হিসেবে গন্য করেন।[5][6][7][8][9][10][11][12][13][14][15] তিনি ফিফার বিংশ শতাব্দীর সেরা খেলোয়াড়ে পেলের সাথে যৌথভাবে ছিলেন।[16][17]

দিয়েগো মারাদোনা
২০১২ সালে আল ওয়াসলের সাথে মারাদোনা
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম দিয়েগো আর্মান্দো মারাদোনা
জন্ম (1960-10-30) ৩০ অক্টোবর ১৯৬০
জন্ম স্থান লানুস, বুয়েনোস আইরেস, আর্জেন্টিনা
উচ্চতা ১.৬৫ মিটার (৫ ফুট ৫ ইঞ্চি)[1]
মাঠে অবস্থান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার
সেকেন্ড স্ট্রাইকার[1][2][3][4]
যুব পর্যায়ের খেলোয়াড়ী জীবন
১৯৬৮–১৯৬৯ এস্ত্রেয়া রোজা
১৯৭০–১৯৭৪ লস কেবোইতাস
১৯৭৫–১৯৭৬ আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্স
জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের খেলোয়াড়ী জীবন*
বছর দল উপস্থিতি (গোল)
১৯৭৬–১৯৮১ আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্স ১৬৭ (১১৫)
১৯৮১–১৯৮২ বোকা জুনিয়র্স ৪০ (২৮)
১৯৮২–১৯৮৪ বার্সেলোনা ৩৬ (২২)
১৯৮৪–১৯৯১ নাপোলি ১৮৮ (৮১)
১৯৯২–১৯৯৩ সেভিয়া ২৬ (৫)
১৯৯৩–১৯৯৪ নিওয়েলস ওল্ড বয়েজ (০)
১৯৯৪–১৯৯৭ বোকা জুনিয়র্স ৩০ (৭)
মোট ৪৯২ (২৫৮)
জাতীয় দল
১৯৭৭–১৯৯৪ আর্জেন্টিনা ৯১ (৩৪)
দলসমূহ পরিচালিত
১৯৯৪ ম্যান্দিইউ দি করিয়েন্টেস
১৯৯৫ মন্টেনেগ্রো
২০০৮–২০১১ আর্জেন্টিনা
২০১১–২০১২ আল ওয়াসল
  • পেশাদারী ক্লাবের উপস্থিতি ও গোলসংখ্যা শুধুমাত্র ঘরোয়া লিগের জন্য গণনা করা হয়েছে।
† উপস্থিতি(গোল সংখ্যা)।

মারাদোনাই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি দুইবার স্থানান্তর ফি এর ক্ষেত্র বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন। প্রথমবার বার্সেলোনায় স্থানান্তরের সময় ৫ মিলিয়ন ইউরো এবং দ্বিতীয়বার নাপোলিতে স্থানান্তরের সময় ৬.৯ মিলিয়ন ইউরো। নিজের পেশাদার ক্যারিয়ারে মারাদোনা আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্স, বোকা জুনিয়র্স, বার্সেলোনা, নাপোলি, সেভিয়া এবং নিওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে খেলেছেন। ক্লাব পর্যায়ে তিনি তার নাপোলিতে কাটানো সময়ের জন্য বিখ্যাত, যেখানে তিনি অসংখ্য সম্মাননা জিতেন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্জেন্টিনার হয়ে তিনি ৯১ খেলায় ৩৪ গোল করেন।

তিনি চারটি ফিফা বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে ছিল ১৯৮৬ বিশ্বকাপ, যেখানে তিনি আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন এবং দলকে বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেন। প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় হিসেবে স্বর্ণ গোলক জিতেন তিনি। প্রতিযোগিতার কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা ২–১ গোলে জয় লাভ করে। আর্জেন্টিনার পক্ষে উভয় গোলই করেন মারাদোনা। দুইটি গোলই ফুটবল ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে দুইটি ভিন্ন কারণে। প্রথম গোলটি ছিল হ্যান্ডবল যা “হ্যান্ড অফ গড” নামে খ্যাত। দ্বিতীয় গোলটি মারাদোনা প্রায় ৬০ মিটার দূর থেকে ড্রিবলিং করে পাঁচজন ইংরেজ ডিফেন্ডারকে পাশ কাটিয়ে করেন। ২০০২ সালে ফিফাডটকম এর ভোটাররা গোলটিকে শতাব্দীর সেরা গোল হিসাবে নির্বাচিত করে।[18]

মারাদোনাকে ক্রীড়া জগতের সবচেয়ে বিতর্কিত এবং সংবাদ হিসেবে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের অন্যতম মনে করা হয়। ১৯৯১ সালে ইতালিতে ড্রাগ টেস্টে কোকেইনের জন্য ধরা পড়ায় ১৫ মাসের জন্য ফুটবল থেকে নিষিদ্ধ হন তিনি। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে ইফিড্রিন টেস্টে ইতিবাচক ফলাফলের জন্য তাকে প্রতিযোগিতা থেকে বাদ দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে তিনি তার কোকেইন নেশা ত্যাগ করেন। তার কড়া রীতি মাঝেমাঝে সাংবাদিক এবং ক্রীড়া সংশ্লিষ্টদের সাথে তার মতভেদের সৃষ্টি করে। ম্যানেজার হিসেবে খুব কম অভিজ্ঞতাসম্পন্ন হওয়া সত্ত্বেও ২০০৮ সালের নভেম্বরে তাকে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০১০ বিশ্বকাপের পর চুক্তি শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি আঠারো মাস এই দায়িত্বে ছিলেন।

প্রারম্ভিক জীবন

দিয়েগো মারাদোনা ১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর বুয়েনোস আইরেস প্রদেশের লানুস শহরের পলিক্লিনিকো এভিতা হাসপাতালে একটি দরিদ্র পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তবে তিনি বেড়ে ওঠেন ভিয়া ফিওরিতোতে, যা বুয়েনোস আইরেসের দক্ষিণ প্রান্তের একটি শান্তিটাউন।[19] তিন কন্যা সন্তানের পর তিনিই ছিলেন বাবা-মা’র প্রথম পুত্র সন্তান। তার ছোট দুই ভাই ররেছে হুগো (এল তুর্কো) এবং রাউল (লালো), যাদের উভয়েই পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড়।

মারাদোনা হলেন ‘চিতরো’ দিয়েগো মারাদোনা এবং ‘দোনা তোতা’ দালমা সালভাদর ফ্রাঙ্কোর পঞ্চম সন্তান।

১০ বছর বয়সে, যখন তিনি এস্ত্রেয়া রোজার হয়ে খেলছিলেন তখন তাকে খুঁজে বের করেন একজন স্কাউট। তিনি দ্য লিটল অনিঅনের (আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের যুব দল) একজন মূল খেলোয়াড়ে পরিণত হন। ১২ বছর বয়সে বল-বয় হিসেবে, প্রথম বিভাগের খেলার অর্ধ বিরতির সময় বল দিয়ে জাদুকরী কারুকার্য দেখিয়ে তিনি দর্শকদের সন্তুষ্ট করতেন।[20]

ক্লাব ক্যারিয়ার

আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্স এবং বোকা জুনিয়র্স

১৯৭৬ সালের ২০ অক্টোবর, নিজের ষোলতম জন্মদিনের দশ দিন আগে আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের হয়ে মারাদোনার অভিষেক হয়।[21] সেখানে তিনি ১৯৮১ সাল পর্যন্ত ছিলেন এবং ১৬৭ খেলায় ১১৫টি গোল করেন। এরপর তিনি ১ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে বোকা জুনিয়র্সে পাড়ি জমান। ১৯৮১ মৌসুমের মাঝামাঝি সময় বোকায় যোগ দিয়ে ১৯৮২ সালে তিনি প্রথম লীগ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেন।

বার্সেলোনা

১৯৮২ বিশ্বকাপের পর ৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে বার্সেলোনায় যোগ দেন মারাদোনা।[21] ১৯৮৩ সালে, কোচ সিজার লুইস মেনত্তির অধীনে বার্সেলোনা এবং মারাদোনা রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে কোপা দেল রে এবং অ্যাথলেতিক বিলবাওকে হারিয়ে স্পেনীয় সুপার কাপ জিতে। তবে, বার্সায় মারাদোনা কিছুটা খারাপ সময় কাটিয়েছেন।[22] প্রথমে তাকে হেপাটাইটিসের সাথে লড়তে হয় এরপর তাকে পড়তে হয় গোড়ালির ইনজুরিতে।[21] অবশ্য, চিকিত্‍সা শেষে দ্রুতই মাঠে ফিরে আসেন মারাদোনা।

বার্সেলোনায় মারাদোনা ৫৮ খেলায় ৩৮টি গোল করেন।[23] বার্সেলোনায় থাকাকালে মারাদোনা ক্লাব পরিচালকদের সাথে ঘনঘন বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন, বিশেষ করে ক্লাব প্রেসিডেন্ট ইয়োসেপ লুইস নুনেজের সাথে। ১৯৮৪ সালে, আরেকটি রেকর্ড স্থানান্তর ফি-তে (৬.৯ মিলিয়ন ইউরো) সিরি এ ক্লাব নাপোলিতে যোগ দেন তিনি।[24]

নাপোলি

নাপোলিতে মারাদোনা তার পেশাদার ক্যারিয়ারের শিখরে পৌছান। তিনি খুব দ্রুত ক্লাবের সমর্থকদের মধ্যে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এবং সেই সময়টিই ছিল নাপোলির ইতিহাসের সফলতম যুগ। মারাদোনার অধীনে নাপোলি ১৯৮৬–৮৭ ও ১৯৮৯–৯০ মৌসুমে সিরি এ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে এবং ১৯৮৯–৮৮ ও ১৯৮৮–৮৯ মৌসুমে তারা রানার-আপ হয়। এছাড়া মারাদোনার সময়ে নাপোলি একবার কোপা ইতালিয়া জিতে (১৯৮৭) এবং একবার রানার-আপ (১৯৮৯) হয় এবং ১৯৯০ সালে ইতালীয় সুপার কাপ জিতে। ১৯৮৭–৮৮ মৌসুমের সিরি এ-তে মারাদোনা সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন।

ইতালিতে থাকাকালে মারাদোনার ব্যক্তিগত সমস্যা বৃদ্ধি পায়। তার কোকেইন নেশা বহাল থাকে। অনুশীলনে অনুপস্থিত থাকায় ক্লাবের পক্ষ হতে তাকে ৭০,০০০ মার্কিন ডলার জরিমানা করা হয়।[25] ইতালিতে মারাদোনাকে পুত্র সন্তান সংক্রান্ত কেলেঙ্কারির মুখোমুখি হতে হয়।

পরবর্তীতে, মারাদোনা এবং নাপোলিতে থাকাকালে তার অর্জনসমূহের প্রতি সম্মান জানিয়ে নাপোলির ১০ নম্বর জার্সিটি দাপ্তরিকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।[26]

সেভিয়া, নিওয়েলস ওল্ড বয়েজ এবং বোকা জুনিয়র্স

ড্রাগ টেস্টে ধরা পড়ে ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞা থেকে ফিরে ১৯৯২ সালে মারাদোনা নাপোলি ছেড়ে দেন। স্পেনীয় ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ এবং ফরাসি ক্লাব অলিম্পিকে মার্শেই তার প্রতি আগ্রহী হলেও তিনি স্পেনীয় ক্লাব সেভিয়াতে যোগ দেন। সেখানে তিনি এক বছর ছিলেন।[27] ১৯৯৩ সালে তিনি লিওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে খেলেন এবং ১৯৯৫ সালে তিনি বোকা জুনিয়র্সে ফিরে আসেন এবং সেখানে দুই বছর খেলেন। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কিছু পূর্বে মারাদোনা টটেনহাম হটস্পারের হয়েও মাঠে নামেন ইন্টারন্যাজিওনালের বিপক্ষে। খেলায় টটেনহাম ২–১ গোলে জয় লাভ করে। তিনি গ্লেন হোডেলের সাথে খেলেন, যিনি মারাদোনার জন্য তার ১০ নম্বর জার্সিটি ছেড়ে দিয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার

আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের হয়ে মারাদোনা টানা চারটি বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে ১৯৮৬-এ আর্জেন্টিনা বিজয়ী হয় এবং ১৯৯০-এ হয় রানার-আপ।

১৯৭৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি, ১৬ বছর বয়সে হাঙ্গেরির বিপক্ষে মারাদোনার অভিষেক হয়। ১৯৭৯ সালে ১৮ বছর বয়সে তিনি আর্জেন্টিনার হয়ে ফিফা বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতার ফাইনালে সোভিয়েত ইউনিয়নকে ৩–১ গোলে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। ১৯৭৯ সালের ২ জুন, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সিনিয়র দলের হয়ে প্রথম গোল করেন মারাদোনা।[28] তিনিই একমাত্র খেলোয়াড় যিনি ফিফা অনূর্ধ্ব ২০ বিশ্বকাপ (১৯৭৯) ও ফিফা বিশ্বকাপ (১৯৮৬) উভয় প্রতিযোগিতায় গোল্ডেন বল জিতেছেন।

১৯৮২ বিশ্বকাপ

মারাদোনার ক্যারিয়ারের প্রথম বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা ছিল ১৯৮২ সালের বিশ্বকাপ। প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী খেলায় ক্যাম্প ন্যু-তে আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয় বেলজিয়ামের। কাতালান দর্শকরা তাদের ক্লাব বার্সেলোনায় নতুন যোগ দেওয়া মারাদোনার চমক দেখার জন্য আগ্রহী ছিলেন, কিন্তু তিনি আশানুরূপ নৈপূন্য প্রদর্শনে ব্যর্থ হন।[29] আর্জেন্টিনা বেলজিয়ামের বিপক্ষে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়। গ্রুপ পর্বের অপর দুই খেলায় হাঙ্গেরি এবং এল স্যালভাদরের বিপক্ষে আর্জেন্টিনা জয় লাভ করে এবং দ্বিতীয় পর্বে পৌছায়। কিন্তু, দ্বিতীয় পর্বে ইতালি এবং ব্রাজিলের বিপক্ষে পরাজিত হয়ে প্রতিযোগিতা থেকে বিদায় নিতে হয় তাদের। প্রতিযোগিতায় আর্জেন্টিনার সবকয়টি খেলায় পুরো সময় মাঠে ছিলেন মারাদোনা। হাঙ্গেরির বিপক্ষে তিনি দুইটি গোল করেন, তবে ব্রাজিলের বিপক্ষে খেলা শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে ফাউল করার দায়ে তাকে লাল কার্ড দেখানো হয়।[30]

১৯৮৬ বিশ্বকাপ

১৯৮৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মারাদোনা। প্রতিযোগিতার ফাইনালে পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় আর্জেন্টিনা। প্রতিযোগিতার পুরোটা জুড়েই ছিল মারাদোনার আধিপত্য। তিনি আর্জেন্টিনার প্রত্যেকটি খেলায় পুরোটা সময়ই মাঠে ছিলেন। পুরো প্রতিযোগিতায় তিনি পাঁচটি গোল করেন এবং সতীর্থদের দিয়ে করান আরও পাঁচটি। প্রতিযোগিতায় তিনি প্রথম গোল করেন ইতালির বিপক্ষে, গ্রুপ পর্বে আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় খেলায়।[31] কোয়ার্টার-ফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জোড়া গোল করে নিজেকে কিংবদন্তী হিসেবে প্রমাণ করেন তিনি।

আর্জেন্টিনা এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যকার ফকল্যাণ্ড যুদ্ধের কারণে খেলায় উত্তেজনার কমতি ছিলনা। প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্যভাবে। দ্বিতীয়ার্ধে, খেলার ৫১তম মিনিটে মারাদোনা একটি গোল করেন। রিপ্লেতে দেখা যায় গোলটি করার সময় তিনি হাত দিয়ে বলে আঘাত করেছেন। পরবর্তীতে এই গোলের নাম দেওয়া হয় “দ্য হ্যান্ড অফ গড”। ২০০৫ সালের ২২ আগস্ট একটি টেলিভিশন শোতে মারাদোনা শিকার করেন যে তিনি গোলটি ইচ্ছাকৃতভাবেই হাত দিয়ে করেছিলেন, তার মাথা বল স্পর্শ করেনি এবং সে মূহুর্তে তিনি জানতেন গোলটি অবৈধ। ইংরেজ খেলোয়াড়রা প্রতিবাদ করলেও রেফারি গোলের বাঁশি বাজান।[32]

Maradona, turns like a little eel, he comes away from trouble, little squat man... comes inside Butcher and leaves him for dead, outside Fenwick and leaves him for dead, and puts the ball away... and that is why Maradona is the greatest player in the world.

— ব্রায়ন বাটলার (বিবিসি রেডিও)[33]

এর চার মিনিট পরেই মারাদোনা দ্বিতীয় গোল করেন, যেটিকে ফিফা পরবর্তীতে বিশ্বকাপের ইতিহাসের সেরা গোল হিসেবে নির্বাচিত করে। মাঠে নিজেদের অর্ধে তিনি বল গ্রহণ করেন, ইংল্যান্ডের গোলপোস্টের দিকে ঘুরে দাড়ান এবং মাঠের অর্ধেকেরও বেশি অংশ দৌড়িয়ে, পাঁচ জন ইংরেজ ডিফেন্ডার (পিটার বেয়ার্ড্‌স্‌লি, স্টিভ হজ, পিটার রেইড, টেরি বাচারটেরি ফেনউইক) এবং গোলরক্ষক পিটার শিলটনকে কাটিয়ে গোল করেন। ২০০২ সালে, ফিফা অনলাইনে ভোটের আয়োজন করলে এই গোলটি “শতাব্দীর সেরা গোল” হিসেবে নির্বাচিত হয়।[34]

সেমি-ফাইনালে বেলজিয়ামের বিপক্ষেও তিনি জোড়া গোল করেন। ফাইনালে, প্রতিপক্ষ পশ্চিম জার্মানি তাকে ডাবল-মার্কিং করে রাখে। তা সত্ত্বেও, তারই বাড়িয়ে দেওয়া পাসে আর্জেন্টিনার পক্ষে জয়সূচক গোল করেন হোর্হে বুরুচাগা। ইস্তাদিও অ্যাজতেকার ১১৫,০০০ দর্শকের সামনে পশ্চিম জার্মানির বিপক্ষে ৩–২ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে আর্জেন্টিনা।

প্রতিযোগিতায় আর্জেন্টিনার ১৪টি গোলের ১০টিতেই মারাদোনার অবদান ছিল, গোলপোস্টে আর্জেন্টিনার পুরো দলের নেয়া মোট শটের অর্ধেকেরও বেশি ছিল তার তৈরি করা।[35][36] পুরো প্রতিযোগিতা জুড়ে ছিল তার দাপট। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের আতঙ্কের কারণ ছিলেন তিনি। প্রতিযোগিতায় দূর্দান্ত নৈপূন্য প্রদর্শনের মাধ্যমে ফুটবল কিংবদন্তিদের খাতায় নিজের নাম লিখিয়ে নেন মারাদোনা।[36]

প্রতিযোগিতা শেষে বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে মারাদোনাকে গোল্ডেন বল পুরস্কার দেওয়া হয়। তাকে একক প্রচেষ্টায় বিশ্বকাপ জয়ী হিসেবে ব্যাপকভাবে গন্য করা হয়।[36][37][38][39]

তার প্রতি সম্মান জানিয়ে স্তাদিও অ্যাজতেকা কর্তৃপক্ষ স্টেডিয়ামটির সামনে মারাদোনার গোল অফ দ্য সেঞ্চুরীর একটি প্রতিমূর্তি নির্মাণ করেছে। প্রতিমূর্তিটি স্টেডিয়ামের প্রবেশ পথের সামনে স্থাপিত।[40]

১৯৯০ বিশ্বকাপ

১৯৯০ বিশ্বকাপে পুনরায় আর্জেন্টিনার অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন মারাদোনা। কিন্তু, গোড়ালির ইনজুরির কারণে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের মত নৈপূন্য তিনি দেখাতে পারেননি। প্রথম পর্বে গ্রুপে তৃতীয় স্থানে থেকেও কোনরকমে দ্বিতীয় পর্বের টিকিট পায় আর্জেন্টিনা। ১৬ দলের পর্বে ব্রাজিলের বিপক্ষে ক্লদিও ক্যানিজিয়ার একমাত্র গোলে জয় পায় তারা, গোলটি মারাদোনারই বানিয়ে দেওয়া ছিল। কোয়ার্টার-ফাইনালে আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয় ইয়োগোস্লাভিয়ার। খেলাটি ১২০ মিনিট পর্যন্ত ০–০ সমতায় শেষ হলে পেনাল্টি পর্যন্ত গড়ায়। গোলরক্ষকের ডান পাশে নেওয়া মারাদোনার দূর্বল শটটি গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দেন। তবুও আর্জেন্টিনা ৩–২ ব্যবধানে পেনাল্টিতে জয় লাভ করে। সেমি-ফাইনালে, ইতালির বিপক্ষে ১২০ মিনিট পর্যন্ত স্কোর ছিল ১–১, ফলে এবারও খেলা গড়ায় পেনাল্টিতে। এবারও মারাদোনা একই ধরনের শট নেন। তবে এবার বলটি ঠিকটি গোলপোস্টের জালে জড়ায়। ফাইনালে এবারও আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হয় পশ্চিম জার্মানির। খেলায় রুডি ফোলারকে ফাউল করার কারণে দেওয়া বিতর্কিত পেনাল্টিতে আনড্রেয়াস ব্রেহমার করা একমাত্র গোলে জয় পায় পশ্চিম জার্মানি।

১৯৯৪ বিশ্বকাপ

১৯৯৪ বিশ্বকাপে মারাদোনা শুধুমাত্র দুইটি খেলায় মাঠে নামেন। এর মধ্যে গ্রীসের বিপক্ষে তিনি একটি গোল করেন। ড্রাগ টেস্টে এফিড্রিন ডোপিং-এর কারণে তাকে বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কার করা হয়। নিজের আত্মজীবনীতে মারাদোনা ঐ টেস্ট সম্পর্কে বলেন যে তার ব্যক্তিগত প্রশিক্ষক তাকে এনার্জি ড্রিংক রিপ ফুয়েল দেওয়ার কারণে তিনি ড্রাগ টেস্টে ধরা পড়েছেন। তার দাবি ছিল, পানীয়টির যুক্তরাষ্ট্রীয় সংস্করণ আর্জেন্টিনীয় সংস্করণের মত নয়, যার মধ্যে ঐ রাসায়নিক দ্রব্যটি ছিল এবং তার প্রশিক্ষক অনিচ্ছাকৃতভাবে তা ব্যবহার করে। ফিফা তাকে ১৯৯৪ বিশ্বকাপ থেকে বহিষ্কার করে এবং আর্জেন্টিনাও দ্বিতীয় পর্ব থেকেই বিদায় নেয়। মারাদোনা আলাদাভাবে এও দাবী করেন যে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের পূর্বে ওজন কমানোর জন্য ঐ রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারে ফিফার সাথে তার একটি চুক্তি হয়েছিল।[41]

১৯৯৪ বিশ্বকাপের পর মারাদোনার ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি ঘটে। পুরো ক্যারিয়ারে তিনি ৯১ খেলায় ৩৪টি গোল করেন।

খেলার ধরণ

মারাদোনার দৈহিক গঠন মাঝারি ধরনের এবং তিনি দৈহিক চাপ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখেন। তার ছোট-ছোট পা তাকে দ্রুত দৌড়াতে সহায়তা করে। ১৯৮৬ বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের বিপক্ষে জোড়া গোল করে তিনি তার দৈহিক শক্তির পরিচয় দেন। মারাদোনা ছিলেন একজন কৌশলী খেলোয়াড়। সীমিত জায়গার মধ্যে তিনি নিজেকে কার্যকরীভাবে নিয়ন্ত্রন করতে পারতেন। খাটো হওয়া সত্ত্বেও, দৈহিক দিক থেকে তিনি ছিলেন শক্তিশালী। তিনি একজন ডিফেন্ডারের সাথে লম্বা সময় ধরে বল নিজের নিয়ন্ত্রনে রাখতে পারতেন, যতক্ষণ না তিনি দ্রুত শট নেওয়ার মত জায়গা খুঁজে পাচ্ছেন বা কোনো সতীর্থ আক্রমণাত্মক দৌড় শুরু করছেন, যাতে তিনি তাকে বল পাস করতে পারেন।

মারাদোনার জাদুকরি কিছু রণকৌশলের মধ্যে অন্যতম হল ডান উইঙ্গে পূর্ণ গতিতে ড্রিবলিং, প্রতিপক্ষের গোল লাইনে পৌছানো এবং সতীর্থদের সঠিক পাস প্রদান। তার আরেকটি জাদুকরি নৈপূন্য ছিল র‍্যাবোনা, যা হল পায়ের পিছনের অংশ ব্যবহার করে এক ধরনের রিভার্স-ক্রস পাস শট। এছাড়া মারাদোনা ছিলেন একজন বিপজ্জনক ফ্রি কিক গ্রহণকারী।

মারাদোনা ছিলেন একজন বাম পায়ের খেলোয়াড়। এমনকি বলের সাথে ডান পা ভাল অবস্থানে থাকলেও তিনি বাম পা ব্যবহার করতেন। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের সেমি ফাইনালে তার করা প্রথম গোলটি এর প্রমাণ বহন করে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে গোল অফ দ্য সেঞ্চুরি করার সময় তিনি একবারের জন্যেও তার ডান পা ব্যবহার করেন নি, যদিও তিনি মাঠের ডান পাশ দিয়ে আক্রমণ করেন। ১৯৯০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্বে ব্রাজিলের বিপক্ষে মারাদোনা ক্যানিজিয়ার যে গোলে সহায়তা করেন তা ডান পায়ে করেছিলেন, কারণ ব্রাজিলীয় ডিফেন্ডাররা তাকে এমন অবস্থায় রেখেছিলেন যে তিনি বাম পা ব্যবহার করতে পারেন নি।

অবসর এবং সম্মাননা

এফসি বার্সেলোনা জাদুঘরে রাখা মারাদোনার শার্ট।

সংবাদ কর্মীদের জ্বালাতনের শিকার হয়ে মারাদোনা একবার তাদের উপর চড়াও হয়েছিলেন এবং দাবি করেছিলেন যে সংবাদ কর্মীরা তার গোপনীয়তায় হস্তক্ষেপ করেছেন। তার সম্পর্কে তার প্রাক্তন সতীর্থ হোর্হে ভ্যালদানোর করা একটি উক্তি তার প্রতি অনেকের অনুভূতির সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেয়:

সে এমন একজন যাকে অনেকেই অনুকরণ করতে চায়, একটি বিতর্কিত চরিত্র, পছন্দকৃত, ঘৃণিত, যিনি সামাজিক উত্থান সৃষ্টি করেন, বিশেষ করে আর্জেন্টিনায়... ভূল তার ব্যক্তিগত জীবনের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। মাঠের ভেতরে মারাদোনার কোনো মিত্র নেই, কিন্তু সে তার জীবনকে তামাশায় পরিণত করেছে এবং সে বর্তমানে এক ধরণের ব্যক্তিগত অগ্নিপরীক্ষার মধ্যে রয়েছে যা অনুসৃত হওয়া উচিত নয়। [42]

১৯৯৯ সালে আর্জেন্টিনার কনেক্স ফাউন্ডেশন তাকে হীরক কনেক্স পুরস্কার প্রদান করে যা আর্জেন্টিনার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ সাংস্কৃতিক পুরস্কার। তাকে এই পুরস্কার দেওয়া হয় খেলাধুলায় আগের দশকে আর্জেন্টিনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হওয়ার কারণে।

২০০০ সালে, মারাদোনা তার আত্মজীবনী Yo Soy El Diego (আমি দিয়েগো) প্রকাশ করেন যা তার নিজ দেশে তাতক্ষণিক জনপ্রিয়তা পায়।[43]

২০০০ সালে, ফিফা মারাদোনাকে শতাব্দির সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত করে। যা নির্বাচিত হয় তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও অফিসিয়াল ম্যাগাজিনে ভোট এবং বিচারকের মাধ্যমে। অনলাইন ভোটে বিপুল ব্যবধানে জয়ী হয় মারাদোনা। তিনি পান ৫৩.৬% ভোট, যেখানে পেলে পেয়েছিলেন ১৮.৫৩% ভোট। তাসত্ত্বেও, অনুষ্ঠানের কিছুদিন আগে, ফিফা অপ্রত্যাশিতভাবে সাংবাদিকদের নিয়ে “ফুটবল ফ্যামিলি” নামে একটি কমিটি গঠন করে, যা শতাব্দির সেরা খেলোয়াড় হিসেবে পেলেকে নির্বাচিত করে। পরবর্তীতে ফিফা দুই জনকেই পুরস্কার প্রদান করে। এছাড়া মারাদোনা আইএফএফএইচএস-এর ভোটেও পঞ্চম স্থান অর্জন করে।[44]

২০০১ সালে, আর্জেন্টিনীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ফিফা কর্তৃপক্ষের কাছে ১০ নম্বর জার্সিটি বন্ধ করে দেওয়ার আবেদন জানায়। অবশ্য, ফিফা এই আবেদন গ্রহণ করেনি, তবুও আর্জেন্টিনীয় কর্মকর্তারা নিশ্চয়তা দেন যে ফিফা তাদেরকে এমনটি করার সংকেত দিয়েছে।[45]

২০০২ সালে সমর্থকদের ভোটে ১৯৮৬ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মারাদোনার করা দ্বিতীয় গোলটি ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসে সেরা গোল নির্বাচিত হয়। এছাড়া তিনি বিশ্বকাপের সর্বকালের সেরা দলেও জায়গা পান। ২০১০ সালের ২২ মার্চ, লন্ডন ভিত্তিক সংবাদপত্র দ্য টাইমস তাকে বিশ্বকাপের সেরা দশ জন খেলোয়াড়ের তালিকায় প্রথম স্থান প্রদান করে।[46] ২০০৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর, আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্স মারাদোনার প্রতি সম্মান জানিয়ে তার নামে তাদের স্টেডিয়ামের নামকরণ করে।

২০০৩ সালে, মারাদোনা লিবিয়ান ফুটবলার আল-সাদি গাদ্দাফির “কৌশলগত উপদেষ্টা” হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন, যিনি কর্নেল মুয়াম্মার গাদ্দাফির তৃতীয় সন্তান এবং সে সময় ইতালীয় ক্লাব পেরুজা ক্ল্যাসিওর হয়ে খেলতেন।[47]

২০০৫ সালের ২২ জুন, ঘোষণা করা হয় যে মারাদোনা খেলাধুনা বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বোকা জুনিয়র্সে ফিরে আসছেন। ২০০৫ সালের ১ আগস্ট থেকে তার চুক্তির মেয়াদ শুরু হয়।[48] কাজে যোগদানের পর তার পরামর্শগুলোর অন্যতম ছিল আল্ফিও বাসিলকে দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া, যা খুব কার্যকর হিসেবে ধরা দেয়। মারাদোনা দলের খেলোয়াড়দের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। বোকা জুনিয়র্স ২০০৫ আপের্তুরা, ২০০৬ ক্লাউসুরা, ২০০৫ কোপা সাউদামেরিকানা, ২০০৫ রিকোপা সাউদামেরিকানা জিতে।

ওজন হারানোর পর, ২০০৬ সালে সকার এইড প্রীতি ফুটবল খেলায় মারাদোনা।

২০০৫ সালের ১৫ আগস্ট, আর্জেন্টিনীয় টেলিভিশনের টকশো La Noche del 10 (নম্বর ১০ এর রাত) এর উপস্থাপক হিসেবে মারাদোনার অভিষেক হয়। উদ্বোধনী রাতে তার প্রধান অতিথি ছিলেন পেলে। অনুষ্ঠানে তারা বন্ধুত্বপূর্ণ আলাপ করেন, যেখানে অতীত অনৈক্যতার কোনো চিহ্ন ছিল না। এই অনুষ্ঠানের অধিকাংশ অতিথি ছিলেন ফুটবল জগতের। যাদের মধ্যে জিনেদিন জিদান, রোনালদো এবং এর্নান ক্রেসপো উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ফিদেল কাস্ত্রো এবং মাইক টাইসনের মত ব্যক্তিও এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

২০০৬ সালের ২৬ আগস্ট, ঘোষণা করা হয় যে মারাদোনা বোকা জুনিয়র্সে তার পদ ছেড়ে দিচ্ছেন। তার সাথে এএফএ-এর মতানৈক্য সৃষ্টি হয়, কারণ এএফএ বাসিলকে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ হিসেবে নির্বাচিত করে।

পুরস্কার বিজয়ী সার্বিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা এমির কুস্তুরিকা মারাদোনার জীবনের উপর ভিত্তি করে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তিনা চলচ্চিত্রটির নামকরণ করেন মারাদোনার নামে।

২০০৬ সালের মে মাসে, মারাদোনা যুক্তরাজ্যের সকার এইডে অংশগ্রহণ করেন।[49]

২০০৬ সালের সেপ্টেম্বরে, মারাদোনা তার বিখ্যাত নীল-সাদা ১০ নম্বর জার্সিতে আর্জেন্টিনা দলের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। এটি ছিল তিন দিনের ইনডোর বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতা।

কোচিং ক্যারিয়ার

ক্লাব

মারাদোনা তার প্রাক্তন আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সের মিডফিল্ড সতীর্থ কার্লোস ফ্রেনের পাশাপাশি কোচ হিসেবে কাজ করার প্রয়াস চালান। তারা তেক্সতিল মান্দিইউ (১৯৯৪) এবং রেসিং ক্লাবের (১৯৯৫) হয়ে দায়িত্ব পালন করেন, কিন্তু খুব কমই সফলতা পান। ২০১১ সালের মে মাসে, তিনি দুবাইয়ের ক্লাব আল ওয়াসলের কোচ হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। সফলতা না পাওয়ায় ২০১২ সালের ১০ জুলাই তাকে বরখাস্ত করা হয়।[50][51][52][53]

আন্তর্জাতিক

২০০৯ সালে আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে মারাদোনা।

২০০৮ সালে আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের কোচ আল্ফিও বাসিল পদত্যাগ করলে এই গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য তাত্‍ক্ষণিকভাবে মারাদোনা নিজের প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। কিছু সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা যায়, এই পদের জন্য তার প্রধান প্রতিদ্বন্দি ছিলেন দিয়েগো সাইমন, কার্লোস বিয়াঞ্চি, মুগুয়েল অ্যাঞ্জেল রুসো এবং সার্হিও বাতিস্তা

২০০৮ সালের ২৯ অক্টোবর, এএফএ চেয়ারম্যান হুলিও গ্রন্দোনা নিশ্চিত করেন যে ২০০৮ সালের ডিসেম্বর থেকে মারাদোনা জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করবেন। ২০০৮ সালের ১৯ নভেম্বর, স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার খেলায় মারাদোনা প্রথমবারের মত দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। খেলায় আর্জেন্টিনা ১–০ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে।[54]

জাতীয় দলের কোচ হিসেবে প্রথম তিনটি খেলায় জয় লাভের পর বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের বলিভিয়ার বিপক্ষে খেলায় আর্জেন্টিনা ৬–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়। এটি ছিল দলের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে পরাজয়। ২০১০ বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের আর দুইটি খেলা অবশিষ্ট ছিল। সে সময় আর্জেন্টিনার অবস্থান ছিল পঞ্চম। ফলে, বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার অংশগ্রহণ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। কিন্তু শেষ দুই খেলায় জয়ের ফলে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।[55][56]

আর্জেন্টিনার বাছাইপর্বে যোগ্যতা অর্জনের পর, খেলা পরবর্তী সংবাদ সম্মলনে মারাদোনা সংবাদ কর্মীদের প্রতি অবমাননাকর ভাষা ব্যবহার করেন।[57] এর ফলে ফিফা তাকে ফুটবল সম্পর্কিত সকল কার্যকলাপ থেকে দুই মাসের জন্য নিষিদ্ধ করে, যার মেয়াদ শেষ হয় ২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি এবং তাকে ২৫,০০০ সুইজ ফ্রাঙ্ক জরিমানা করা হয় এবং ভবিষ্যতে এমনটি না করার সতর্কবার্তা দেওয়া হয়।[58] ১৫ ডিসেম্বর চেক রিপাবলিকের বিপক্ষে প্রীতি খেলাটি তার নিষিদ্ধের কারণে বাতিল করা হয়। নিষিদ্ধ হওয়ার সময়টুকুতে আর্জেন্টিনা একটি মাত্র খেলায় অংশগ্রহণ করে, কাতালোনিয়ার বিপক্ষে ক্যাম্প ন্যু-তে আর্জেন্টিনা ২–৪ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়।

২০১০ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা জয় দিয়ে শুরু করে। গ্রুপ পর্বের প্রথম খেলায় তারা নাইজেরিয়াকে ১–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে। এরপর তারা দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪–১ গোলের ব্যবধানে পরাজিত করে, খেলায় গঞ্জালো হিগুয়েইন হ্যাট্রিক করেন।[59][60] গ্রুপ পর্বের শেষ খেলায় আর্জেন্টিনা গ্রীসের বিপক্ষে ২–০ গোলের ব্যবধানে জয় লাভ করে এবং দ্বিতীয় পর্বে উত্তির্ণ হয়ে মেক্সিকোকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায়।[61] মেক্সিকোকে ৩–১ গোলের ব্যবধানে হারানোর পর কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির মুখোমুখি হয় তারা। কিন্তু খেলায় ৪–০ গোলের ব্যবধানে পরাজিত হয়ে তারা প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে পড়ে।[62] প্রতিযোগিতায় আর্জেন্টিনা পঞ্চম স্থান অর্জন করে।

জার্মানির বিপক্ষে পরাজয়ের পর মারাদোনা আর্জেন্টিনার কোচ হিসেবে তার ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে বলেন, “আমি আগামীকালই দায়িত্ব ছেড়ে দিতে পারি।”[63] ২০১০ সালের ১৫ জুলাই, আর্জেন্টিনীয় ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন থেকে বলা হয় যে মারাদোনাকে চার বছরের জন্য নতুন করে চুক্তি করার প্রস্তাব দেওয়া হবে। যার মেয়াদ থাকবে ২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ পর্যন্ত।[64] অবশ্য ২৭ জুলাই এএফএ ঘোষণা করে যে এর পরিচালনা পরিষদ সর্বসম্মতিক্রমে তার চুক্তি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।[65] ২৯ জুলাই, মারাদোনা দাবী করেন, এএফএ প্রেসিডেন্ট হুলিও গ্রন্দোনা এবং জাতীয় দলের পরিচালক কার্লোস বিলার্দো তাকে মিথ্যা বলেছেন এবং তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন এবং কার্যকরীভাবে তাকে দায়িত্ব থেকে বরখাস্ত করেছেন। তিনি বলেন, “তারা চাইছিলেন আমি যেন থেকে যাই, কিন্তু আমার কর্মীদের সাত জনকে তারা রাখবেন না, যদি তিনি আমাকে একথা বলেন, তবে এর অর্থ হল তিনি চাননা যেন আমি কাজ চালিয়ে যাই।”[66]

ব্যক্তিগত জীবন

পরিবার

মারাদোনার বাবার নাম দিয়েগো মারাদোনা সিনিয়র এবং মা’র নাম দালমা সালভাদর ফ্রাঙ্কো। তার বাবা একজন আমেরিকান[67][68] এবং মা ক্রোয়েশিয়ান।[69] ১৯৮৪ সালের ৭ নভেম্বর, বুয়েনোস আইরেসে ফিয়ান্সি ক্লদিয়া ভিয়াফানিয়ের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন মারাদোনা। তাদের দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে: দালমা নেরেয়া (জন্ম ২ এপ্রিল ১৯৮৭) এবং হিয়ানিয়া দিনোরাহ (জন্ম ১৬ মে ১৯৮৯), যিনি ২০০৯ সালে মারাদোনার প্রথম দৌহিত্র বেনজামিন আগুয়েরো জন্ম দেন।[70] নিজের আত্মজীবনীতে মারাদোনা লিখেছিলেন যে তিনি ক্লদিয়ার কাছে সর্বদা বিশ্বস্ত ছিলেন না। যদিও তিনি তাকে তার জীবনের ভালোবাসা হিসেবেই উল্লেখ করেছেন।

মারাদোনা এবং ভিয়াফানিয়ের বিচ্ছেদ হয় ২০০৪ সালে। তাদের কন্যা দালমা পরবর্তীতে বলেছিলেন যে এটিই ছিল সকলের জন্য সবচেয়ে ভালো সমাধান, কেননা তার বাবা-মা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন। তাদেরকে অনেক অনুষ্ঠানে একসাথে দেখা গেছে, যার মধ্যে ২০০৬ ফিফা বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার খেলাগুলো অন্যতম।

বিবাহবিচ্ছেদ অগ্রসর হওয়ার সময়, স্বীকার করেন যে তিনি দিয়েগো সিনাগ্রার বাবা (জন্ম ২০ সেপ্টেম্বর ১৯৮৬)। দিয়েগো জুনিয়র ২০০৩ সালের মে মাসে প্রথম মারাদোনার সাথে সাক্ষাত করেন।[71] দিয়েগো সিনাগ্রাও একজন ফুটবলার যিনি বর্তমানে ইতালিতে খেলছেন।[72]

বিচ্ছেদের পর, ক্লদিয়া একজন থিয়েটার প্রযোজক হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠা করেন এবং দালমা চেষ্টা করতে থাকেন অভিনেত্রী হিসেবে ক্যারিয়ার গঠনের। তিনি লস অ্যাঞ্জেলেসের অ্যাক্টর’স স্টুডিওতে উপস্থিত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন।[73][74]

তার কনিষ্ঠ কন্যা হিয়ানিয়া বিয়ে করেন ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার সার্জিও অ্যাগুয়েরোকে। তাদের একটি পুত্র সন্তান আছে যার নাম বেনজামিন (জন্ম ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)।

মারাদোনার মা, দালমা ২০০৯ সালের ১৯ নভেম্বর মারা যান। সে সময় মারাদোনা দুবাইয়ে ছিলেন এবং তাকে দেখার জন্য সময়মত আর্জেন্টিনা পৌছার চেষ্টাও করেন, কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে যায়। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ৮১ বছর। মারাদোনার পুত্র দিয়েগো ফেরন্যান্দো তার প্রাক্তন সঙ্গিনী ভেরনিকা ওজেদার গর্ভে জন্মগ্রহণ করে ।

মাদক কেলেঙ্কারি এবং স্বাস্থ সংক্রান্ত বিষয়াবলি

১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত মারাদোনা কোকেইনের প্রতি আসক্ত ছিলেন। তিনি ১৯৮৩ সালে বার্সেলোনায় থাকার সময় থেকে মাদক ব্যবহার শুরু করেন।[75] নাপোলিতে খেলার সময় তিনি নিয়মিত মাদক ব্যবহার করতে শুরু করেন। যা তার ফুটবল দক্ষতায় হস্তক্ষেপ করতে শুরু করে।[76] দিনের পর দিন তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হতে থাকে। ২০০০ সালের ৪ জানুয়ারি, উরুগুয়ের পুন্তা দেল এস্তে-এ ছুটি কাটানোর সময় তাকে দ্রুত একটি স্থানীয় ক্লিনিকের জরুরি কক্ষে নেয়া হয়। একটি সংবাদ সম্মেলনে চিকিত্‍সকগন বিবৃত করেন যে তার হৃৎপিন্ডের পেশীতে ক্ষতি ধরা পড়েছে। পরবর্তীতে জানা যায় যে তার রক্তে কোকেইন পাওয়া গেছে এবং মারাদোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে পুলিশের কাছে ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে। এই ঘটনার পর তিনি মাদক পুনর্বাসন পরিকল্পনা অনুসরণের জন্য আর্জেন্টিনা ছেড়ে কিউবাতে চলে যান।

২০০৪ সালের ১৮ এপ্রিল, চিকিত্‍সকগন প্রতিবেদন প্রকাশ করেন যে অতিরিক্ত কোকেইন সেবনের কারণে মারাদোনা মায়োকার্ডিয়াল ইনফ্রাকশনের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। বুয়েনোস আইরেসের একটি হাসপাতালে তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তার অসংখ্য ভক্ত ক্লিনিকের চারপাশে ভিড় করে। ২৩ এপ্রিল তার শ্বাসযন্ত্র খুলে দেওয়া হয়, তবুও ২৯ এপ্রিল মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। তিনি কিউবায় ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেন, তবে তার পরিবার এর বিরোধিতা করে, তার আইনি অবিভাবকত্ব পরীক্ষা করার জন্য একটি বিচার বিভাগীয় পিটিশন দায়ের করা হয়।

মারাদোনার ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার প্রবণতা ছিল। তার খেলুড়ে ক্যারিয়ারের শেষ থেকে গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি করার আগে পর্যন্ত তিনি বৃদ্ধিমূলক স্থূলতায় ভুগছিলেন। ২০০৫ সালের ৬ মার্চ কলম্বিয়ায় তার অস্ত্রোপচার করা হয়। তার সার্জন বলেন যে মারাদোনাকে এক ধরনের তরল ডায়েট অনুসরণ করে চলতে হবে, তার স্বাভাবিক ওজন ফিরে পাওয়ার জন্য। [77] যখন মারাদোনা জনসমক্ষে আসতে শুরু করেন, তখন তাকে আগের চেয়ে পাতলা গড়নে দেখা যায়।[78]

২০০৭ সালের ২৯ মার্চ, মারাদোনা পুনরায় বুয়েনোস আইরেসে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাকে হেপাটাইটিস এবং অ্যালকোহোলের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে চিকিত্‍সা করা হয়। তাকে ১১ এপ্রিল হাসপাতাল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়, কিন্তু এর দুই দিন পরই আবার ভর্তি হন। এর পরবর্তী কিছু দিনে তার স্বাস্থ সম্পর্কে কিছু গুজব ছড়িয়ে পড়ে, এমনকি একই মাসে তিনবার তার মৃত্যুর গুজব ছড়ায়।[79]

অ্যালকোহোল সম্পর্কিত সমস্যার কারণে একটি মানসিক ক্লিনিকে স্থানান্তরের পর তাকে ৭ মে মুক্তি দেওয়া হয়।[80]

২০০৭ সালের ৮ মে, আর্জেন্টিনীয় টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানে মারাদোনা উপস্থিত হন এবং বলেন যে তিনি বিগত আড়াই বছর যাবত্‍ মাদক ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছেন।[81]

রাজনৈতিক দর্শন

২০০৭ সালে মারাদোনা আর্জেন্টিনার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট নেস্তর কির্শনারকে একটি সাক্ষরকৃত শার্ট উপস্থাপন করেন।

শুধুমাত্র সাম্প্রতিক সময়ে, মারাদোনা বামপন্থী মতাদর্শের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়েছেন। এর আগে তিনি আর্জেন্টিনার নব্যউদারনীতিবাদী প্রেসিডেন্ট কার্লোস মেনেম-এর সমর্থন করতেন, বিশেষ করে তার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া অর্থনীতিবিদ দমিনগো কাভায়ো। কিউবায় চিকিত্‍সাধীন অবস্থায় থাকাকালে সেখানকার নেতা ফিদেল কাস্ত্রোর সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মারাদোনার বাম পায়ে কাস্ত্রোর প্রতিকৃতি ট্যাটু আছে এবং ডান হাতে আছে স্বদেশী চে গুয়েভারা ট্যাটুকৃত প্রতিকৃতি।[82] মারাদোনা নিজের আত্মজীবনী এল দিয়েগো উত্‍সর্গ করেছেন কয়েকজন মানুষের প্রতি, যাদের মধ্য ফিদেল কাস্ত্রো অন্যতম। বইটিতে তিনি লিখেছেন, “ফিদেল কাস্ত্রোর প্রতি, এবং তার মাধ্যমে কিউবার সকল মানুষের প্রতি।”[83]

মারাদোনা ভেনিজুয়েলার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট হুগো চাভেজেরও সমর্থক ছিলেন। ২০০৫ সালে, চাভেজের সাথে সাক্ষাত করার নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে তিনি ভেনিজুয়েলা ভ্রমন করেন। সাক্ষাতের পর মারাদোনা বলেন যে তিনি এসেছেন একজন “মহান ব্যক্তির” সাথে সাক্ষাত করতে, কিন্তু তার পরিবর্তে তিনি সাক্ষাত করলেন এমন একজন ব্যক্তির সাথে যিনি মহানের চেয়েও বেশি।

“আমি চ্যাভেজে বিশ্বাসী, আমি চ্যাভিস্তা। ফিদেল যা করে, চ্যাভেজ যা করে, আমার কাছে সেগুলোই ঠিক।”[84]

২০০৫ সালে আর্জেন্টিনার মার দেল প্লাটায় সামিট অফ দ্য আমেরিকাস-এ তিনি আর্জেন্টিনায় জর্জ ডব্লিউ বুশের উপস্থিতির বিরোধিতা করেন। তিনি একটি টি-শার্ট পরেছিলেনা যাতে লেখা ছিল “STOP BUSH” (এখানে "Bush" এর "s" এর স্থানে ছিল একটি স্বস্তিকা।) এবং তিনি বুশকে “আবজর্না” হিসেবেও উল্লেখ করেন।[85][86]

২০০৭ সালের আগস্টে, চ্যাভেজের একটি সাপ্তাহিক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, “আমি সবকিছুকেই ঘৃণা করি যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসে। আমি ঘৃণা করি আমার সর্বশক্তি দিয়ে।” [87]

২০০৭ সালের ডিসেম্বরে, মারাদোনা ইরানের জনগনকে সমর্থন জানানোর জন্য একটি সাক্ষরকৃত শার্ট উপস্থাপন করেন। এটি ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জাদুঘরে প্রদর্শিত হবে।[88]

অর্থনৈতিক সমস্যা

২০০৯ সালের মার্চে ইতালীয় কর্মকর্তাগন ঘোষণা করেন যে মারাদোনার ইতালীয় সরকারের কাছে করের ৩৭ মিলিয়ন ইউরো ঋণ রয়েছে। এর মধ্যে ২৩.৫ মিলিয়ন ইউরো তারা মূল ঋণের উপর জমা সুদ। প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় যে তিনি শুধুমাত্র ৪২,০০০ ইউরো শোধ করেছেন, দুইটি বিলাসবহুল ঘড়ি এবং একটি মাকড়ি সেটের জন্য।[89][90]

গ্রেফতার

বান্ধবী অলিভার মামলায় ম্যারাডোনা ২৩ মে ২০১৯ সালে গ্রেফতার হন। ম্যারাডোনা-অলিভার ছয় বছরের সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭৬ কোটি টাকার মামলা করেন অলিভা। সে মামলায় মেক্সিকো থেকে ফেরার পথে গ্রেপ্তার হন।[91]

ক্যারিয়ার পরিসংখ্যান

ক্লাব

  • ঘরোয়া ফুটবল প্রতিযোগিতায় প্রতি খেলায় তার গোল করার গড় পরিমান ০.৫২৬।

আন্তর্জাতিক

  • চারটি বিশ্বকাপে (১৯৮২, ১৯৮৬, ১৯৯০ এবং ১৯৯৪) আর্জেন্টিনার হয়ে টানা ২১টি খেলায় মাঠে নামেন মারাদোনা।
  • ১৬টি খেলায় জাতীয় দলের অধিনায়ক হিসেবে মাঠে নেমেছেন, যা একটি বিশ্বকাপ-রেকর্ড.
  • বিশ্বকাপের ২১টি খেলায় ৮টি গোল করেন এবং অন্য ৮টি গোলে সহায়তা করেন। যার মধ্যে ১৯৮৬ বিশ্বকাপে করেন ৫টি গোল এবং ৫টি সহায়তা।

পরিসংখ্যান

[92]

মৌসুম ক্লাব লীগ লীগ কাপ মহাদেশীয় অন্যান্য মোট
উপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোলউপস্থিতিগোল
১৯৭৬আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সপ্রিমেরা দিভিশন১১১১
১৯৭৭৪৯১৯৪৯১৯
১৯৭৮৩৫২৫৩৫২৫
১৯৭৯২৭২৬২৭২৬
১৯৮০৪৫৪৩৪৫৪৩
১৯৮১বোকা জুনিয়র্স৪০২৮৪০২৮
১৯৮২–৮৩বার্সেলোনালা লিগা২০১১৩৫২৩
১৯৮৩–৮৪১৬১১২৩১৫
১৯৮৪–৮৫নাপোলিসিরি এ৩০১৪৩৬১৭
১৯৮৫–৮৬২৯১১৩১১৩
১৯৮৬–৮৭২৯১০১০৪১১৭
১৯৮৭–৮৮২৮১৫৩৯২১
১৯৮৮–৮৯২৬১২১২৫০১৯
১৯৮৯–৯০২৮১৬৩৬১৮
১৯৯০–৯১১৮২৬১০
১৯৯২–৯৩সেভিয়ালা লিগা২৬২৯
১৯৯৩–৯৪নিওয়েল’স ওল্ড বয়েজপ্রিমেরা দিভিশন
১৯৯৫–৯৬বোকা জুনিয়র্স২৪২৪
১৯৯৬–৯৭
১৯৯৭–৯৮
মোট আর্জেন্টিনা ২৪২১৫০২৪৩১৫০
স্পেন ৬২২৭১২৮৭৪৬
ইতালি ১৮৮৮১৪৫২৯২৫২৫৯১১৫
ক্যারিয়ারে সর্বমোট ৪৯২২৫৮৫৭৩৬৩৩১৩৫৮৯৩১১
  • অন্যান্য – লীগ কাপ (স্পেন) এবং সুপার কাপ (ইতালি)[93]
আর্জেন্টিনা জাতীয় দল
সালউপস্থিতিগোল
১৯৭৭
১৯৭৮
১৯৭৯
১৯৮০১০
১৯৮১
১৯৮২১০
১৯৮৩
১৯৮৪
১৯৮৫১০
১৯৮৬১০
১৯৮৭
১৯৮৮
১৯৮৯
১৯৯০১০
১৯৯১
১৯৯২
১৯৯৩
১৯৯৪
মোট৯১৩৪

ম্যানেজার

দল জাতীয় দল কার্যকাল শুরু কার্যকাল শেষ রেকর্ড
খেলাজয়ড্রপরাজয়জয় %
ম্যান্দিইউ দি করিয়েন্তেস জানুয়ারি ১৯৯৪ জুন ১৯৯৪ ১২8.33
রেসিং ক্লাব মে ১৯৯৫ নভেম্বর ১৯৯৫ ১১18.18
আর্জেন্টিনা নভেম্বর ২০০৮ জুলাই ২০১০ ১৯১৪73.68
আল ওয়াসল এফসি মে ২০১১ জুলাই ২০১২ ২২১০31.82

সম্মাননা

খেলোয়াড়

ক্লাব

আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্স

রানার-আপ

  • আর্জেন্টিনীয় প্রিমেরা দিভিশন: ১৯৮০ মেত্রোপলিতানো

বোকা জুনিয়র্স

বিজয়ী
  • আর্জেন্টিনীয় প্রিমেরা দিভিশন: ১৯৮১ মেত্রোপলিতানো

রানার-আপ

  • আর্জেন্টিনীয় প্রিমেরা দিভিশন: ১৯৯৭ আপের্তুরা

বার্সেলোনা

বিজয়ী

নাপোলি

বিজয়ী
  • সিরি এ (২): ১৯৮৭, ১৯৯০
  • কোপা ইতালিয়া: ১৯৮৭
  • উয়েফা কাপ: ১৯৮৯
  • সুপারকোপা ইতালীয়: ১৯৯০

রানার-আপ

  • সিরি এ (২): ১৯৮৮, ১৯৮৯
  • কোপা ইতালিয়া: ১৯৮৯

জাতীয় দল

আর্জেন্টিনা

বিজয়ী
  • ফিফা বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপ: ১৯৭৯
  • ৭৫তম বার্ষিকী ফিফা কাপ: ১৯৭৯
  • ফিফা বিশ্বকাপ: ১৯৮৬
  • আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি ট্রফি: ১৯৯৩

রানার-আপ

ম্যানেজার

ক্লাব

আল-ওয়াসল

রানার-আপ

  • গাল্ফ ক্লাব চ্যাম্পিয়নস লীগ: ২০১২

একক

  • আর্জেন্টিনীয় প্রিমেরা দিভিশনের শীর্ষ গোলদাতা (৫): ১৯৭৮ মেত্রোপলিতানো, ১৯৭৯ মেত্রোপলিতানো, ১৯৭৯ ন্যাসিওনাল, ১৯৮০ মেত্রোপলিতানো, ১৯৮০ ন্যাসিওনাল
  • ফিফা বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপ গোল্ডেন বল: ১৯৭৯
  • ফিফা বিশ্ব যুব চ্যাম্পিয়নশিপ সিলভার শু: ১৯৭৯
  • বর্ষসেরা খেলোয়াড় (গুয়েরিন স্পোর্তিভো): ১৯৭৯
  • আর্জেন্টিনার বর্ষসেরা ফুটবলার (৪): ১৯৭৯, ১৯৮০, ১৯৮১, ১৯৮৬
  • দক্ষিণ আমেরিকান বর্ষসেরা ফুটবলার (২): (অফিসিয়াল পুরস্কার) ১৯৭৯, ১৯৮০
  • অলিম্পিয়া দি অরো (২): ১৯৭৯, ১৯৮৬
  • গুয়েরিন দ'অরো (সিরি এ বর্ষসেরা ফুটবলার): ১৯৮৫
  • অঞ্জে দি ব্রোঞ্জ (২): ১৯৮৫, ১৯৮৮
  • ফিফা বিশ্বকাপ গোল্ডেন বল: ১৯৮৬
  • ফিফা বিশ্বকাপ সিলভার বুট: ১৯৮৬
  • ফিফা বিশ্বকাপ সর্বোচ্চ সহায়তা: ১৯৮৬
  • ফিফা বিশ্বকাপ অল-স্টার দল (২): ১৯৮৬, ১৯৯০
  • অঞ্জে দ'অর (২): ১৯৮৬, ১৯৮৭
  • আর্জেন্টাইন স্পোর্টস রাইটার্স বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ: ১৯৮৬
  • এল'ইকুইপ চ্যাম্পিয়ন অফ চ্যাম্পিয়নস: ১৯৮৬
  • ইউনাইটেড প্রেস আন্তর্জাতিক বর্ষসেরা অ্যাথলেট পুরস্কার: ১৯৮৬
  • ওয়ার্ল্ড সকার পুরস্কার বর্ষসেরা ফুটবলার: ১৯৮৬
  • দক্ষিণ আমেরিকান বর্ষসেরা খেলোয়াড় (৪): (অফিসিয়াল পুরস্কার নয়) ১৯৮৬, ১৯৮৯, ১৯৯০, ১৯৯২
  • ক্যাপোক্যানোনিয়েরে (সিরি এ সর্বোচ্চ গোলদাতা): ১৯৮৭–৮৮
  • কোপা ইতালিয়া সর্বোচ্চ গোলদাতা: ১৯৮৭–৮৮
  • ফিফা বিশ্বকাপ ব্রোঞ্জ বল: ১৯৯০
  • অঞ্জে দ'অর (ফরাসি সংবাদপত্র অঞ্জে মন্দিয়াল বর্ষসেরা খেলোয়াড়): ১৯৯৪
  • ফিফা বিশ্বকাপ অল-টাইম দল: ১৯৯৪
  • মার্কা লেইয়েন্দা: ১৯৯৯
  • বিংশ শতাব্দির সেরা দল: ১৯৯৮
  • ওয়ার্ল্ড সকার বিংশ শতাব্দির সেরা খেলোয়াড়গন: (#২) ১৯৯৯
  • ফিফা শতাব্দির সেরা খেলোয়াড়: ২০০০
  • ফিফা বিশ্বকাপ শতাব্দির সেরা গোল (১৯৮৬ (২–১) ইংল্যান্ডের বিপক্ষে; দ্বিতীয় গোল): ২০০২
  • ফিফা বিশ্বকাপ ড্রিম টিম: ২০০২
  • ফিফা ১০০ জীবিত ফুটবলার: ২০০৪
  • ওয়ার্ল্ড সকার সর্বকালের সেরা একাদশ: ২০১৩
  • নাপোলি সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা
  • ফুটবল সেবার জন্য গোল্ডেন বল (ফ্রান্স ফুটবল): ১৯৯৬
  • আর্জেন্টাইন স্পোর্টস রাইটার্স শতাব্দীর সেরা ক্রীড়াবিদ: ১৯৯৯
  • আর্জেন্টিনীয় সিনেট "দমিনগো ফাউস্তিনো সারমিয়েন্তো" জীবনকাল কৃতিত্বের জন্য স্বীকৃতি: ২০০৫

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Maradona tricks and skills videos of the best soccer, football players ever"Football-tricks.com। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  2. "Diego Maradona dominated 1986 World Cup after position switch – Jonathan Wilson – SI.com"Sportsillustrated.cnn.com। ২৭ মে ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  3. "Diego Maradona: 'The Soccer Guru'"The Viewspaper। ২৫ জুন ২০১০। ২ ডিসেম্বর ২০১৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  4. "Diego Maradona – Profile of Soccer Player Diego Maradona"Worldsoccer.about.com। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  5. "The Best of The Best"Rec.Sport.Soccer Statistics Foundation.com। ১৯ জুন ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  6. "The 100 greatest players of all time"The Football Pantheon। ২০ সেপ্টেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  7. "Castrol Debate: Pele Versus Maradona"goal.com। ২৩ অক্টোবর ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  8. "Ruud Gullit: Diego Maradona is the best ever in my opinion"goal.com। ২৯ জুলাই ২০১২।
  9. "Lionel Messi: Diego Maradona is the greatest of all-time"SoccerAnchor। ৭ সেপ্টেম্বর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  10. "Rummenigge: Maradona better than Pele"The Times of India। ১২ নভেম্বর ২০০৮।
  11. "Gary Lineker: Diego has been the best player without a doubt, better than Pele"SoccerBlog। ২৫ মার্চ ২০০৬।
  12. "Considered by many as the greatest football player to have ever walked the face of the earth"ফিফা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  13. Chang, Jen (১৮ এপ্রিল ২০০৫)। "Mario Kempes: Maradona is absolutely the best"ইএসপিএন সকারনেট। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  14. "Ryan Giggs: Maradona is the best of all time"tribalfootball। ১১ অক্টোবর ২০১১। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  15. "Rio Ferdinand: In my eyes Maradona is the best footballer ever"ফিফা। ৭ নভেম্বর ২০০৮।
  16. "FIFA Player of the Century" (PDF)Touri.com। ২৬ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  17. "Maradona or Pele?"CNN Sports Illustrated। ১০ ডিসেম্বর ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  18. "Diego Maradona goal voted the FIFA World Cup™ Goal of the Century"ফিফা। ৩০ মে ২০০২। সংগ্রহের তারিখ ৮ জুলাই ২০১৩
  19. James Dart, Paul Doyle and Jon Hill (১২ এপ্রিল ২০০৬)। "The greatest rags-to-riches stories ever"। সংগ্রহের তারিখ ১৮ আগস্ট ২০০৬
  20. "The Hand of God"Fundus.org। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৩
  21. "A SUMMARY OF MARADONA's LIFE"vivadiego.com। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৩
  22. "That's one hell of a diet, Diego"Guardian Newspapers Limited। ৮ জানুয়ারি ২০০৬। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৩
  23. "Backgrounder: Diego Maradona"CBC Sports। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৩
  24. "Snapshot: Maradona is toast of the town after signing for Napoli"দ্য টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৩
  25. "SPORTS PEOPLE; Maradona Fined"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। ১৩ জানুয়ারি ১৯৯১। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৩
  26. Landolina, Salvatore (১৪ জানুয়ারি ২০১১)। "Diego Maradona Backs Ezequiel Lavezzi To Earn Napoli Number 10 Shirt"Goal.com। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৩
  27. "Sport in Short: Football – Sport"দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। যুক্তরাজ্য। ১৫ জুলাই ১৯৯২। সংগ্রহের তারিখ ১৬ জুলাই ২০১৩
  28. MacPherson, Graeme (৩০ অক্টোবর ২০০৮)। "Maradona to receive Hampden welcome"The Herald। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৩
  29. "1982 – Story of Spain '82"Planet World Cup। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৩
  30. "Castrol World Cup Legends: Diego Maradona – 1986"Goal.com। ১০ জুন ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৩
  31. "1986 FIFA World Cup Mexico: Italy – Argentina"ফিফা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ জুলাই ২০১৩
  32. McCarthy, David (১৮ নভেম্বর ২০০৮)। "Terry Butcher: Maradona robbed England of World Cup glory"ডেইলি রেকর্ড। স্কটল্যান্ড। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৩
  33. Motson, John (2006)। Motson's World Cup Extravaganza। পৃষ্ঠা ১০৩। Robson, 2006
  34. "The 100 greatest players of all time"The Football Pantheon। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৩
  35. "Castrol Worldcup Statistics – Diego Maradona"Castrolfootball.com। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৩
  36. Darby, James (১০ জুন ২০১০)। "WorldCup Legends: Maradona"Goal.com। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৩
  37. "Argentina's Road to the World Title" (পিডিএফ)ফিফা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৩
  38. title=Adidas Golden Ball Winners ফিফা। সংগৃহীত ৩০ জুলাই ২০১৩}}
  39. title=Pelé and Maradona – two very different number tens ফিফা। ২৫ জানুয়ারি ২০০১। সংগৃহীত ৩০ জুলাই ২০১৩
  40. "Messi's goal better than Maradona's goal of the century?"worldrec.info। ২৮ এপ্রিল ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জুলাই ২০১৩
  41. Hylands, Alan। "Diego Maradona"about.com। সংগ্রহের তারিখ ৩১ জুলাই ২০১৩
  42. "Interview with Jorge Valdano"el-mundo.es (স্পেনীয় ভাষায়)। ২০০১। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৩
  43. "Maradona 'tells all' in autobiography"Associated Press। ২০ ডিসেম্বর ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৩
  44. "IFFHS' Century Elections"Rec.Sport.Soccer Statistics। ৩০ জানুয়ারি ২০০০। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৩
  45. "Argentina can't retire Maradona's shirt"Espn soccernet। ২৬ মে ২০০২। ২৫ মার্চ ২০০৩ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২১ আগস্ট ২০১৩
  46. Hamilton, Fiona (২২ মার্চ ২০১০)। "The ten greatest World Cup playersbr No 1 Diego Maradona Argentina"The Times। লন্ডন। সংগ্রহের তারিখ ১ এপ্রিল ২০১০
  47. White, Duncan (২৯ অক্টোবর ২০১১)। "Jay Bothroyd puts good times with playboy Saadi Gaddafi, son of dead Libya tyrant Colonel Gaddafi, behind him"দ্য টেলিগ্রাফ। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  48. "El Diez emprende dosnuevos desafíos"ESPN Deportes। ২৮ জুলাই ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  49. "Maradona scores but England win UNICEF match"ফিফা/ইয়াহু। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  50. Casey, Michael (১০ জুলাই ২০১২)। "Diego Maradona Fired: Al Wasl Sacks Argentine Coach"দ্য হাফিংটন পোস্ট। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  51. Jaafar, Karim (১০ জুলাই ২০১২)। "Dubai club Al Wasl fires coach Diego Maradona"CBC। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  52. "Maradona sacked by United Arab Emirates club Al-Wasl"দ্য টেলিগ্রাফ। যুক্তরাজ্য। ১১ জুলাই ২০১২। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  53. Orihuela, Rodrigo (১০ আগস্ট ২০১৩)। "Diego Maradona Fired as Dubai's Al Wasl Soccer Coach"Bloomberg। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  54. Campbell, Andy (১৯ নভেম্বর ২০০৮)। "Scotland 0–1 Argentina"। বিবিসি স্পোর্ট। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  55. "Last-gasp Palermo wins it in the rain"। ইএসপিএন। ১০ অক্টোবর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  56. "Late winner puts Argentina in World Cup finals"। সিএনএন। ১৪ অক্টোবর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  57. World Cup 2010 (১৫ অক্টোবর ২০০৯)। "Diego Maradona Tells Press To 'Suck It' After Argentina Triumph Over Uruguay"। Goal.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  58. "Maradona hit with two-month ban"। লন্ডন: বিবিসি স্পোর্ট। ১৫ নভেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  59. Dawkes, Phil (১২ জুন ২০১০)। "Argentina 1–0 Nigeria"। বিবিসি স্পোর্ট। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  60. Stevenson, Jonathan (১৭ জুন ২০১০)। "Argentina 4–1 South Korea"। বিবিসি স্পোর্ট। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  61. "Maradona's men in top spot"ইএসপিএন সকারনেটইএসপিএন। ২২ জুন ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  62. Longman, Jeré (৩ জুন ২০১০)। "Germany Shows Its Strength"দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  63. "World Cup 2010: Sad Maradona considers quitting"বিবিসি স্পোর্ট। ৪ জুলাই ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  64. "Argentina to offer Diego Maradona newfour-year deal"বিবিসি স্পোর্ট। ১৫ জুলাই ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  65. "Diego Maradona departs as manager of Argentina"দ্য গার্ডিয়ান। লন্ডন। ২৭ জুলাই ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  66. "'Betrayed' Maradona lashes out at AFA"ইএসপিএন সকারনেট। ২৯ জুলাই ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  67. "Hand of God: The Life of Diego Maradona, Soccer's Fallen Star"Globe Pequot। ৩ জুলাই ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  68. "True Stories – Maradona 1/7"। YouTube। ৪ জুলাই ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  69. "MARADONA HRVAT: "Maradona je iz Praputnjaka, a ne s Korčule"" (ক্রোয়েশীয় ভাষায়)। ২৭ জুন ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  70. La Liga (১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)। "Diego Maradona Becomes A Grandfather As Sergio Aguero Junior Is Born"। Goal.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  71. "ESPN Deportes – "El amor al ídolo"ESPN Deportes। ৯ জুন ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  72. "Diego Sinagra"। Resport.it। ৬ অক্টোবর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  73. "Había una vez... un elenco para la selección"Clarin.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  74. "Dalma Maradona: diario de una princesa"Clarin.com। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  75. May, John (১৯ এপ্রিল ২০০৪)। "Maradona's fall from grace"বিবিসি স্পোর্ট। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  76. "The New York Times: SOCCER; Maradona Sentenced"AP via New York Times। ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯৯১। সংগ্রহের তারিখ ২৪ আগস্ট ২০১৩
  77. "Maradona has surgery on stomach"। বিবিসি। ৬ মার্চ ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৩
  78. Associated Press। "Maradona's gastric bypass inspires obese Colombians"। ইএসপিএন। সংগ্রহের তারিখ ২৫ আগস্ট ২০১৩
  79. Calegari, Rodrigo (২৬ এপ্রিল ২০০৭)। "Malas lenguas"Diario Olé (স্পেনীয় ভাষায়)।
  80. "Maradona leaves alcoholism clinic"। বিবিসি। ৭ মে ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৩
  81. "Maradona says he no longer drinks"ইএসপিএন সকারনেট। ৮ আগস্ট ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৩
  82. Taylor, Chris (৬ নভেম্বর ২০০৫)। "A big hand"দ্য অবজার্ভার। যুক্তরাজ্য: দ্য গার্ডিয়ান। সংগ্রহের তারিখ ১৯ জুন ২০০৬
  83. Maradona, Diego (২০০৫)। El Diego। লন্ডন: Yellow Jersey। আইএসবিএন 0-224-07190-4। অজানা প্যারামিটার |coauthors= উপেক্ষা করা হয়েছে (|author= ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে) (সাহায্য)
  84. Carroll, Rory (২০ আগস্ট ২০০৭)। "Maradona and Chávez laugh over 'hand of god' goal on chat show"দ্য গার্ডিয়ান। যুক্তরাজ্য। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৩
  85. "Chávez and Maradona Lead Massive Rebuke of Bush"দ্য নেশন। ৫ নভেম্বর ২০০৫। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৩
  86. "Image of Maradona wearing the STOP BU卐H shirt"Commondreams.org। ২৩ জুন ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৩
  87. "Ex-soccer star Maradona tells Chavez he hates U.S."। রয়টার্স। ১৯ আগস্ট ২০০৭। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৩
  88. Naughton, Philippe (৩ এপ্রিল ২০০৮)। "Diego Maradona makes a fan of President Ahmadinejad of Iran"The Sunday Times। লন্ডন। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৩
  89. "Police seize Maradona's earrings"বিবিসি। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৩
  90. "Maradona still owes 37 million euros, taxman says"wsn.com। ২৮ মার্চ ২০০৯। সংগ্রহের তারিখ ২৬ আগস্ট ২০১৩
  91. "বান্ধবীর মামলায় গ্রেপ্তার ম্যারাডোনা"প্রথম আলো। ২৪ মে ২০১৯। সংগ্রহের তারিখ ২৪ মে ২০১৯
  92. "Club Statistics"expertfootball.com। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৩
  93. "Diego Armando Maradona – International Appearances"। Rec.Sport.Soccer Statistics Foundation। সংগ্রহের তারিখ ২৮ আগস্ট ২০১৩

বহিঃসংযোগ

চিত্রসমূহ

পুরস্কার ও স্বীকৃতি
পূর্বসূরী
কার্ল-হেইঞ্জ রুমেনিগে
ফিফা বিশ্বকাপ সিলভার বুট
১৯৮৬
উত্তরসূরী
টমাস স্কুরাভি
পূর্বসূরী
প্রেবেন এল্কজের
ফিফা বিশ্বকাপ ব্রোঞ্জ বল
১৯৯০
উত্তরসূরী
হৃস্টো স্টোইচকভ
পূর্বসূরী
স্টিভ ক্লাম
ইউনাইটেড প্রেস ইন্টারন্যাশনাল
বর্ষসের অ্যাথলেট

১৯৮৬
উত্তরসূরী
বেন জনসন
পূর্বসূরী
হুগো পোর্তা
অলিম্পিয়া দি অরো
১৯৮৬
উত্তরসূরী
গ্যাব্রিয়েলা স্যাবাতিনি
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
পাওলো রসি
বিশ্ব ফুটবল স্থানান্তর রেকর্ড
১৯৮২–১৯৮৭
উত্তরসূরী
রুড গুলিট
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.