মোহাম্মদ আবদুল আজিজ

মোহাম্মদ আবদুল আজিজ (জন্ম: অজানা- মৃত্যু: ১৯৯৯) বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক খেতাব প্রদান করে। [1]

মো. আবদুল আজিজ
মৃত্যু১৯৯৯
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব পাকিস্তান (১৯৭১ সালের পূর্বে)
 বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণবীর প্রতীক
একই নামের অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের জন্য দেখুন আবদুল আজিজ।

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

মোহাম্মদ আবদুল আজিজের জন্ম কুমিল্লা জেলার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ষাটশালা গ্রামে। তার বাবার নাম এম আবদুল মজিদ এবং মায়ের নাম সুফিযা মজিদ। তার স্ত্রীর নাম নীলুফার আজিজ। তাদের দুই ছেলে।

কর্মজীবন

মো. আবদুল আজিজ ১৯৭১ সালে ঢাকা কলেজের বিএ (পাস) ক্লাসের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। ছাত্র রাজনীতিও করতেন। তখন ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সহসভাপতি ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে এপ্রিল মাসের শেষে ভারতে যান। মে মাসের মাঝামাঝি সময় যুদ্ধে যোগ দেন। সায়েদাবাদের অপারেশন ছিল তার প্রথম অপারেশন। পরে অপারেশন করেন গ্রিন রোডসহ আরও কয়েকটি স্থানে। [2]

মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা

১৯৭১ সালের জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে ৭ জুন জাতিসংঘের একটি পর্যবেক্ষক দল ঢাকায় আসার কথা জানতে পারেন মুক্তিযোদ্ধারা। তারা কয়েক দিন ঢাকায় থাকবেন এবং সে সময় ঢাকা শহর ও আশপাশ এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা অপারেশন করা হবে। বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধ চলছে, এটা তাদের কাছে প্রমাণ করতেই এমন উদ্যোগ। এরপর ভারত থেকে ঢাকায় আসে একদল গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা। তারা কয়েকটি দলে বিভক্ত ছিলোর যার মধ্যে একটি দলে ছিলেন মো. আবদুল আজিজ। তিনিসহ ৪২ জনের দল মনতলি ক্যাম্প হয়ে ৬ জুন নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার গোপালদী যান এবং সেখানে ১০টি দলে বিভক্ত হয়ে যার যার লক্ষ্যস্থলে রওনা হয়। আক্রমণের সময় নির্ধারণ করা হয় রাত দুইটা। প্রতি দলের জন্য একটি টার্গেটের পাশাপাশি বিকল্প টার্গেটও দেওয়া হয়েছিল। দলে ছিলেন ঢাকার অলি, আজিজুল ইসলাম (বীর বিক্রম) । লক্ষ্য ছিল যাত্রাবাড়ী ইলেকট্রিক সাবস্টেশন। রাত ১২টার দিকে যাত্রাবাড়ী পৌঁছে মুক্তিযোদ্ধারা দেখতে পেলেন সেখানে ২০ জন পাকিস্তানি সেনা-পুলিশ পাহারায়। আছে দুটি এলএমজি পোস্ট। মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে মাত্র একটা স্টেনগান। তাই বাধ্য হয়েই যেতে হয় বিকল্প টার্গেট সায়েদাবাদ সেতুর নিচ দিয়ে নিয়ে যাওয়া মেইন ইলেকট্রিক কেব্ল লাইন ধ্বংস করতে। সেখানে পৌঁছাতে সময় ঘনিয়ে গেল। সেতুর নিচে সবাই যখন কেবেল এক্সপ্লোসিভ লাগাতে ব্যস্ত, ঠিক তখনই বিকট আওয়াজ হয়। অন্য কোন একটি দলের অপারেশনের আওয়াজ ছিলো সেটি। এ দলের কাছে ছিল ৩০ পাউন্ড এক্সপ্লোসিভ। অভিজ্ঞতার অভাবে সব এক্সপ্লোসিভ কেবেল লাগিয়ে টাইম ফিউজে আগুন দিয়ে দৌড় দেন আবদুল আজিজ। অনেক দূর যাওয়ার পরও যখন দেখলেন বিস্ফোরণ হচ্ছে না তখন সেখানে আবার ফিরে যাবেন কি না ভাবতে ভাবতে বিদ্যুৎ চমকের আলো ছড়িয়ে ঘটল প্রচণ্ড বিস্ফোরণ। পাঁচ পাউন্ড হলেই যেখানে কাজ হতো। সেখানে ছিলো ৩০ পাউন্ড। সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। পরে দেখা গেল সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচল বন্ধ। সেতুর বিভিন্ন স্থানে মারাত্মক ফাটল ধরেছে। তিনটি ফাটল বেশ বড়। ফুটো হয়ে গেছে সেতুতে।[3]

পুরস্কার ও সম্মাননা

তথ্যসূত্র

  1. দৈনিক প্রথম আলো, "তোমাদের এ ঋণ শোধ হবে না"| তারিখ: ২৩-০৭-২০১২
  2. একাত্তরের বীরযোদ্ধাদের অবিস্মরণীয় জীবনগাঁথা, খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা সম্মাননা স্মারকগ্রহন্থ। জনতা ব্যাংক লিমিটেড। জুন ২০১২। পৃষ্ঠা ৪৯৫। আইএসবিএন 9789843351449।
  3. একাত্তরের বীরযোদ্ধা, খেতাব পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথা (দ্বিতীয় খন্ড)। প্রথমা প্রকাশন। মার্চ ২০১৩। পৃষ্ঠা ১৫৮। আইএসবিএন 9789849025375।

বহি:সংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.