জাহাজমারা ইউনিয়ন
জাহাজমারা বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত হাতিয়া উপজেলার একটি ইউনিয়ন।
জাহাজমারা | |
---|---|
ইউনিয়ন | |
জাহাজমারা | |
স্থানাঙ্ক: ২২°৯′ উত্তর ৯১°৪′ পূর্ব | |
দেশ | |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | নোয়াখালী জেলা |
উপজেলা | হাতিয়া উপজেলা |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৫৮ |
সরকার | |
• চেয়ারম্যান | এডভোকেট মাছুম বিল্লাহ |
আয়তন | |
• মোট | ১৪০ কিমি২ (৫০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা | |
• মোট | ১,৫০,০০০ |
• জনঘনত্ব | ১১০০/কিমি২ (২৮০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৭৬% (২০১৯) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৩৮৯০ |
আয়তন
জাহাজমারা ইউনিয়নের আয়তন ২১৩.২৩ বর্গ কিলোমিটার। এটি আয়তনের দিক থেকে নোয়াখালী জেলার সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন।[1]
জনসংখ্যা
২০১১ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী জাহাজমারা ইউনিয়নের জনসংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ৫০ হাজার। এটি হাতিয়া উপজেলার সবচেয়ে জনবহুল ইউনিয়ন।
অবস্থান ও সীমানা
হাতিয়া উপজেলার মূল দ্বীপের সর্ব-দক্ষিণে জাহাজমারা ইউনিয়নের অবস্থান। এ ইউনিয়নের উত্তরে বুড়িরচর ইউনিয়ন ও সোনাদিয়া ইউনিয়ন, পশ্চিমে হাতিয়া চ্যানেল ও ভোলা জেলার মনপুরা উপজেলার সাকুচিয়া উত্তর ইউনিয়ন, দক্ষিণে হাতিয়া চ্যানেল ও নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন এবং পূর্বে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত।
প্রতিষ্ঠাকাল
জাহাজমারা ইউনিয়নটি পূর্বে বুড়িরচর ইউনিয়নের অন্তর্গত ছিল। ১৯৫৮ সালে ইউনিয়নটি বুড়িরচর হতে আলাদা হয়ে স্বতন্ত্র ইউনিয়ন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন মোহাম্মদ আছাদুল হক মিয়া বুড়িরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি ১৯৫৮ সাল হতে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত একাধারে জাহাজমারা ইউনিয়নের কাউন্সিলর প্রেসিডেন্ট, মৌলিক গণতন্ত্রের সময় ইউনিয়ন কাউন্সিলর চেয়ারম্যান এবং স্বাধীনতাকালীন রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান সহ মোট ১৫ বছর ক্ষমতায় ছিলেন। সেই হিসেবে তিনি জাহাজমারা ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা।।[2]
নামকরণ
জাহাজমারা ইউনিয়নের দক্ষিণ পূর্বে এবং পশ্চিমের মেঘনা নদী অত্যন্ত খরস্রোতা ও ডুবোচরের কারণে এখানে প্রায়ই জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটতো। ফলে এখানে প্রচুর জাহাজ মারা যেত, যার ফলে নামকরণ করা হয় জাহাজমারা। ১৭৮০ সালে জেমস রেনেল ম্যাকপার্শ্বনকে ডুবচর হিসেবে উল্লেখ করেন সে হিসাবে ইউনিয়নটির বয়স আনুমানিক ৫০০-৬০০ বছর হবে এবং জনবসতি গড়ে উঠে ২২০-২৩০ বছর আগে।।[3]
প্রশাসনিক কাঠামো
জাহাজমারা ইউনিয়ন হাতিয়া উপজেলার আওতাধীন ১০নং ইউনিয়ন পরিষদ। এ ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম হাতিয়া থানার আওতাধীন, তবে জাহাজমারা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র (থানা) এর মাধ্যমে এ ইউনিয়নের প্রশাসনিক কার্যক্রম চলে। এটি জাতীয় সংসদের ২৭৩নং নির্বাচনী এলাকা নোয়াখালী-৬ এর অংশ। এটি ১১টি মৌজায় বিভক্ত। যথা:
- জাহাজমারা
- চর বিরবিরি
- পূর্ব চর বিরবিরি
- মোহাম্মদপুর
- ম্যাকপার্শ্বন
- চর হেয়ার
- নতুন সুখচর
- মোক্তারিয়া
- রাস্তার চর
- চর ইউনুছ
- চর মিজান।[4]
শিক্ষা ব্যবস্থা
জাহাজমারা ইউনিয়নের সাক্ষরতার হার ৭৬%। এ ইউনিয়নে ১টি কলেজ, ৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৬টি মাদ্রাসা, ৬টি প্রাইভেট একাডেমি ও ২৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।।[5]
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
- কলেজ
- হাতিয়া কমিউনিটি কলেজ
- মাদ্রাসা
- জাহাজমারা ছেরাজুল উলুম আলিম মাদ্রাসা
- জাহাজমারা মহিলা মাদ্রাসা
- বিরবিরি আকবরিয়া দাখিল মাদ্রাসা
- মাধ্যমিক বিদ্যালয়
- জাহাজমারা উচ্চ বিদ্যালয়
- চর ঈশ্বর রায় আফাজিয়া উচ্চ বিদ্যালয় (শাখা ক্যাম্পাস)
- চর কিং বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় (শাখা ক্যাম্পাস)
- আল ফারুক মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়
- বিরবিরি সেন্টার বাজার উচ্চ বিদ্যালয়।[6]
যোগাযোগ ব্যবস্থা
হাতিয়া উপজেলা পরিষদ থেকে জাহাজমারা ইউনিয়নে সড়ক পথে যোগাযোগ করা যায়। উপজেলা পরিষদ থেকে এ ইউনিয়নের দূরত্ব প্রায় ২৪ কিলোমিটার।
খাল ও নদী
জাহাজমারা ইউনিয়নের পাশ দিয়ে মেঘনা নদী বয়ে চলেছে। এছাড়া বঙ্গোপসাগরের হাতিয়া চ্যানেল এ ইউনিয়নের পাশ দিয়ে বহমান এবং ইউনিয়নের অভ্যন্তরে অসংখ্য খাল রয়েছে।
হাট-বাজার
জাহাজমারা ইউনিয়নের প্রধান হাট-বাজার:-
১। জাহাজমারা বাজার
২। বিরবিরি বাজার
৩। সেন্টার বাজার
৪। আমতলী বাজার
৫। নতুন সুখচর বাজার
৬। সিডিএসপি বাজার
৭। মোহাম্মদপুর বাজার এবং মেঘপাশান বাজার।
দর্শনীয় স্থান
- কাটাখালী ম্যানগ্রোভ বন,
- কাটাখালী খাল
- মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনা
- মোক্তারিয়া ঘাট
- জাহাজমারা দিঘী
- আলাদি গ্রাম
- জাহাজমারা রেঞ্জ (বন বিভাগ)
- আমতলী কেওড়া বন
- বিরবিরির রাতার বাজার।[6]
কৃতী ব্যক্তিত্ব
জনপ্রতিনিধি
- বর্তমান চেয়ারম্যান: এডভোকেট মাছুম বিল্লাহ
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
- https://web.archive.org/web/20151208044832/http://www.bbs.gov.bd/WebTestApplication/userfiles/Image/National%20Reports/Union%20Statistics.pdf
- মোঃ রিপাজ উদ্দিন। সম্ভাবনাময় হাতিয়া বাংলার সিঙ্গাপুর। পৃষ্ঠা ১৪৬।
- মোঃ রিপাজ উদ্দিন। সম্ভাবনাময় হাতিয়া বাংলার সিঙ্গাপুর। পৃষ্ঠা ১৪৬।
- মোঃ রিপাজ উদ্দিন। সম্ভাবনাময় হাতিয়া বাংলার সিঙ্গাপুর। পৃষ্ঠা ১৪৭।
- মোঃ রিপাজ উদ্দিন। সম্ভাবনাময় হাতিয়া বাংলার সিঙ্গাপুর। পৃষ্ঠা ১৪৭।
- মোঃ রিপাজ উদ্দিন। সম্ভাবনাময় হাতিয়া বাংলার সিঙ্গাপুর। পৃষ্ঠা ১৪৮।