আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে

আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে (ইংরেজি: Assam Bengal Railway) বা আসাম বাংলা রেলপথ ছিল ব্রিটিশ ভারতের অন্যতম প্রধান রেল সংস্থা। অধুনা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অন্তর্গত চট্টগ্রাম শহরে এই রেল সংস্থার প্রধান কার্যালয় অবস্থিত ছিল। ১৮৯২ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত এই সংস্থা কার্যকরী ছিল।[1].১৯৪২ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত চালু বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ে এই রেল সংস্থা থেকেই উদ্ভূত হয়।[2][3][4]

আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে
Assam Bengal Railway
শিল্পরেল
প্রতিষ্ঠাকাল১৮৯২
বিলুপ্তিকাল১৯৪২
সদরদপ্তরচট্টগ্রাম, ব্রিটিশ ভারত
বাণিজ্য অঞ্চল
বেঙ্গল প্রেসিডেন্সিআসাম
পরিষেবাসমূহরেল পরিবহন

ইতিহাস

আসামের ব্রিটিশ মালিকানাধীন চা-বাগানগুলির সুবিধার্থে ১৮৯২ সালে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে চালু হয়।[5] ১৯৪২ সালে এই সংস্থার মালিকানা ভারত সরকারের হাতে ন্যস্ত করা হয়। তারপর এটিকে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত করে আসাম অ্যান্ড বেঙ্গল রেলওয়ে গঠন করা হয়।[5]

১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল।[2][6][7] ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়। এই সংস্থার প্রায় ২,৬০৩.৯২ কিলোমিটার রেলপথ নবগঠিত পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়। এই অংশের নাম হয় ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে এবং এর মালিকানা যায় পাকিস্তান সরকারের হাতে। ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের নাম পালটে পাকিস্তান রেলওয়ে রাখা হয়।[6]

উত্তরসূরি

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ের যে অংশটি ভারতের অসম রাজ্য ও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে পড়ত, সেই অংশটি নিয়ে আসাম রেলওয়ে গঠিত হয়। ১৯৫২ সালে আসাম রেলওয়ের সঙ্গে বোম্বাই, বরোদা অ্যান্ড সেন্ট্রাল ইন্ডিয়া রেলওয়ের ফতেহগড় জেলা ও অবধ তিরহুত রেলওয়ে যুক্ত করে ভারতীয় রেলের উত্তর পূর্ব রেল বিভাগটি গঠিত হয়। ১৯৫৮ সালে এই বিভাগ থেকে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল অঞ্চলটি পৃথক করে একটি আলাদা বিভাগ গঠিত হয়।[5][8]

বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়ের যে অংশটি স্বাধীনতার পর পূর্বতন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল সেটির নামকরণ করা হয় ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ে। ১৯৬১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি, ইস্টার্ন বেঙ্গল রেলওয়ের নাম পালটে রাখা হয় পাকিস্তান রেলওয়ে। ১৯৬২ সালে আবার নাম পালটে তা হয় পাকিস্তান ইস্টার্ন রেলওয়ে।[9] With the emergence of Bangladesh, it became Bangladesh Railway.[10]

১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ভারতের স্বাধীনতার পর ভারতে স্থিত আসাম অ্যান্ড বেঙ্গল রেলওয়ের ব্রডগেজ অংশটি ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং মিটারগেজ অংশটি নিয়ে আসাম রেলওয়ে গঠিত হয়।[11] এই রেলের প্রধান কার্যালয় হয় পান্ডুতে। ১৯৫২ সালের ১৪ এপ্রিল, ২৮৫৭ কিলোমিটার দীর্ঘ আসাম রেলওয়ে ও অবধ অ্যান্ড তিরহুত রেলওয়ে যুক্ত হয়ে ভারতীয় রেলের ছয়টি নবগঠিত বিভাগের অন্যতম উত্তরপূর্ব রেল বিভাগ গঠিত হয়।[12][13] এই দিনই পূর্বতন বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম রেলওয়েও শিয়ালদহ বিভাগটি (যেটি আগে ইস্ট ইন্ডিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল) পূর্ব রেলের সঙ্গে যুক্ত হয়।[14]

লাইনসমূহ

আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে ১৮৯১ সালে পূর্ববঙ্গে রেলপথ নির্মাণ শুরু করে। ১৮৯৫ সালে চট্টগ্রামকুমিল্লার মধ্যে রেলপথ চালু হয়। ১৮৯৬-১৮৯৮ নাগাদ কুমিল্লা-আখাউড়া-কালাউড়া-বদরপুর বিভাগটি চালু হয় এবং শেষে ১৯০৩ সালে লামডিং পর্যন্ত লাইন সম্প্রসারিত হয়।[10][15][16] ১৯০০ সাকে আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে পূর্বদিকে গুয়াহাটি পর্যন্ত একটি শাখা রেলপথ চালু করে। ১৯০২ সালে তা তিনশুকিয়া পর্যন্ত সম্প্রসারিত হয় এবং ১৯০৩ সালে তা ডিবরু-সাদিয়া রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়।[5]

আরও দেখুন

পাদটীকা

  1. "সংরক্ষণাগারভুক্ত অনুলিপি"। ২০১৩-০৯-২৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১৫-০৩-০৪
  2. Assam Bengal Railway ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ মে ২০১৩ তারিখে, Banglapedia: The National Encyclopedia of Bangladesh, Asiatic Society of Bangladesh, Dhaka, Retrieved: 2007-01-11
  3. Eastern Bengal Railway ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ মে ২০১৩ তারিখে, Banglapedia: The National Encyclopedia of Bangladesh, Asiatic Society of Bangladesh, Dhaka, Retrieved: 2007-01-11
  4. East Indian Railway ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১২ মে ২০১৩ তারিখে, Banglapedia: The National Encyclopedia of Bangladesh, Asiatic Society of Bangladesh, Dhaka, Retrieved: 2007-01-11
  5. R.P. Saxena। "Indian Railway History timeline"। ২০১২-০২-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-২৪
  6. History ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৫ নভেম্বর ২০০৭ তারিখে, Bangladesh Railway, People's Republic of Bangladesh, Retrieved: 2007-01-11
  7. Rao, M.A. (1988). Indian Railways, New Delhi: National Book Trust, p.37
  8. "History"। Northeast Frontier Railway। ২০১৪-০৫-০২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-২৪
  9. "History"। Bangladesh Railways। ২০০৭-১১-১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-২৪
  10. "Railway"। Banglapaedia। ২০১২-০৩-০৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০১২-০২-২৪
  11. Rao, M.A. (1988). Indian Railways, New Delhi: National Book Trust, p.39
  12. "Chapter 1 - Evolution of Indian Railways-Historical Background"। Ministry of Railways, India website।
  13. Rao, M.A. (1988). Indian Railways, New Delhi: National Book Trust, pp.42-3
  14. "Sealdah division-Engineering details"। The Eastern Railway, Sealdah division। ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৪ মার্চ ২০১৫
  15. "Report on the administration of North East India (1921-22)"p. 46। Google Books/ Mttal Publishers Distributors। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৬
  16. S.N. Singh, Amarendra Narain, Purnendu Kumar। "Socio Economic and Political Problems of Tea Garden Workers: A Study of Assam, Published 2006, ISBN 81-8324-098-4"p. 105। Mittal Publications, New Delhi। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-১২-১৬

বহিঃসংযোগ

টেমপ্লেট:Railway lines in Eastern India

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.