মহেন্দ্রলাল সরকার
মহেন্দ্রলাল সরকার (১৮৩৩ - ১৯০৪) ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য কালটিভেশন অফ সাইন্স-এর প্রতিষ্ঠাতা। তিনি পেশায় চিকিৎসক ছিলেন। তিনি ১৮৭৬ সালে এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করে ভারতে বিজ্ঞান প্রসারের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার পরামর্শে সরকারি বিবাহবিধি প্রণয়নে মেয়েদের বিবাহের বয়স ন্যূনপক্ষে ১৬ বছর নির্ধারণ করেছিলেন। ১৮৮৮ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক সম্মেলনে তিনি সভাপতিত্ব করেন। এই সম্মেলনে অসমের চা শ্রমিকদের দুরবস্থা সম্বন্ধে প্রস্তাব নেয়া হয়। মহেন্দ্রলাল শ্রমিকদের অপমানসূচক 'কুলি' শব্দ ব্যবহারে আপত্তি করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেলো, অনারারি ম্যাজিস্ট্রেট, কলকাতার শেরিফ (১৮৮৭) এবং বঙ্গীয় ব্যবস্থাপক সভার সদস্য ছিলেন।[1]

বাল্যকাল
মহেন্দ্রলাল সরকার কলকাতার কাছে একদা ব্রিটিশ বাংলা প্রেসিডেন্সির পাইকপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। খুব ছোট বয়সে তিনি অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছিলেন। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে তিনি পিতৃহারা ও আট বছর বয়সে মাতৃহারা হন। বাবাকে হারাবার পর মহেন্দ্রলাল সরকারকে মা কলকাতার নেবুতলায় মাতুলালয়ে নিয়ে চলে যান এবং সেখানেই বড় হয় ওঠেন।
বাংলা শিক্ষার জন্য তিনি গিয়েছিলেন "গুরুমশাই" এর কাছে। আর এক গুরু ঠাকুরদাস দে মহাশয় তাকে ইংরেজী ভাষাটা খুব ভাল করে শেখান। । ইংরেজীতে জ্ঞান লাভ করার সুবাদেই তিনি ১৮৪০ সালে হেয়ার স্কুলে ভর্তি হন। ১৮৪৯ সালে তিনি জুনিয়র স্কলারশিপ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তখন হিন্দু কলেজে বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ না থাকায় তাকে মেডিসিন নিয়ে পড়ার জন্য কলকাতা মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। মেডিকেল কলেজে পাঠরত অবস্থায় তার জ্ঞানের উৎকর্ষতা এতোটাই প্রতিভাত হয়েছিল যে তাকে দ্বিতীয় বর্ষে ছাত্রছাত্রীদের একাধিক বক্তৃতা দিতে আহ্বান করেছিলেন অধ্যাপকরা। কলেজ জীবনে তিনি অনেক কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন এবং ১৮৬০ সালে মেডিসিন, শল্যচিকিৎসা ও Midwifery তে অনার্স সহ চূড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। ১৮৬৩ সালে তিনি এমডি ডিগ্রি লাভ করেছিলেন। তিনি এবং জগৎবন্ধু বসু ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় এমডি চন্দ্রকুমার দে মহাশয়ের পরে।
তথ্যসূত্র
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে মহেন্দ্রলাল সরকার সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
- সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৫৬০, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬