জান্নাত
জান্নাত (আরবি: جنّة) হল ইসলামিক পরিভাষা অনুযায়ী, পার্থিব জীবনে যে সকল মুসলিম আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলবে এবং পরকালীন হিসাবে যার পাপের চেয়ে পুণ্যের পাল্লা ভারী হবে ও আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করবে তাদের জন্য আল্লাহ যে সকল স্বর্গ প্রস্তুত রেখেছেন।[1] এটি একটি আরবি শব্দ, যার শাব্দিক অর্থ হল "বাগান" বা "উদ্যান"| প্রচলিত বাংলা ভাষায় একে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেহেশত বলা হয়ে থাকে|[2]
ইসলাম |
---|
এর ধারাবাহিক নিবন্ধের অংশ: |
|
আরো দেখুন
|
![]() |
কুরআনে বর্ণিত জান্নাতের নামসমূহ
- ফিরদাউস – জান্নাতের সর্বচ্চো বাগান (আল-কাহফ,[3] আল-মু'মিনূন[4])
- দারুস সালাম – শান্তির নীড় (ইউনুস,[5] আল আনআম[6])
- জান্নাতুল মাওয়া –বসবাসের জান্নাত (আন-নাজম[7])
- দারুল খুলদ – চিরস্থায়ী বাগান (আল-ফুরকান[8])
- জান্নাতুল আদন – অনন্ত সুখের বাগান (আত-তাওবাহ্:[9] 72,আর-রাদ[10])
- জান্নাতুল আখিরাহ – আখেরাতের আলয়(আল-আনকাবূত)[11])
- জান্নাতুন নাঈম –নেয়ামত পূর্ণ কানন/বাগান (সূরা আল-মায়িদাহ [12] ইউনুস,,[13] al-Ḥajj[14]
- দারুল মুকামাহ – বাড়ি (ফাতির[15])
- জান্নাত–সবচেয়ে সাধারণভাবে ব্যবহৃত কুরআন ও হাদীসে শব্দ(আল-বাকারা,[16] আল ইমরান,[17][18] আল -মায়িদা[19])
- আল-হুসনা
- আল-গুফরা
জান্নাতের দরজাসমূহ
- বাব আস-সালাহ
- বাব আল-জিহাদ
- বাব আস-সাদাকাহ
- বাব আর-রাইয়ান
- বাব আল-হাজ্জ
- বাব আল-কাদিমিন আল-গায়িধ
- বাব আল-ইমান
- বাব আয-যিকির
জান্নাতের বর্ণনা
জান্নাতের প্রশস্ততা
জান্নাতের প্রশস্ততা সম্পর্কে কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
তোমরা দ্রুত অগ্রসর হও তোমাদের প্রতিপালকের ক্ষমার দিকে ও সেই জান্নাতের দিকে যার বিস্তৃতি হচ্ছে আসমানসমূহ ও যমীনের সমান, যা মুত্তাকীদের জন্য তৈরী করা হয়েছে। (সূরা আল ইমরান- ১৩৩)[20] |
” |
জান্নাত দেখার পরই সঠিকভাবে বোঝা যাবে যে জান্নাত কত বিশাল এবং তার নেয়ামত কত অসংখ্য। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
তুমি যখন দেখবে তখন দেখতে পাবে ভোগ বিলাসের নানান সামগ্রী আর এক বিশাল রাজ্য। (সূরাহ আদ্-দাহ্রঃ ২০)[20] |
” |
জান্নাতে শত স্তর আছে আর প্রত্যেক স্তরের মাঝে এত দূরত্ব আছে যতটা দূরত্ব আছে আকাশ ও যমিনের মাঝে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জান্নাতে শত স্তর আছে। প্রত্যেক স্তরের মাঝে দূরত্ব হল আকাশ ও যমীনের দূরত্বের সমান। আর ফেরদাউস তার মধ্যে সর্বোচ্চ স্তরে আছে। আর সেখান থেকেই জান্নাতের চারটি ঝর্ণা প্রবাহমান। এর উপরে রয়েছে আরশ। তোমরা আল্লাহ্র নিকট জান্নাতের জন্য দু'আ করলে জান্নাতুল ফেরদাউসের জন্য দু'আ করবে'। (তিরমিজী- কিতাবুল জান্নাহ)[21]
জান্নাতে একটি বৃক্ষের ছায়া এত লম্বা হবে যে কোন অশ্বারোহী ঐ ছায়ায় শত বছর পর্যন্ত চলতে পারবে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘জান্নাতে এমন একটি বৃক্ষ আছে যার ছায়ায় কোন আরোহী শত বছর পর্যন্ত চলতে পারবে। আর তোমরা ইচ্ছা করলে তিলাওয়াত করতে পার ‘এবং দীর্ঘ ছায়া"। আর জান্নাতে তোমাদের কারও একটি ধনুকের পরিমাণ জায়গাও ঐ জায়গা অপেক্ষা উত্তম যেখানে সূর্য উদিত হয় আর সূর্য অস্তমিত হয় (অর্থাৎ পৃথিবীর চেয়ে)"। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৩২৫২, ৩২৫৩)[22]
সর্বশেষ জান্নাতে প্রবেশকারীকে এ দুনিয়ার চেয়ে দশগুণ বড় জান্নাত দান করা হবে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন', জাহান্নামে থেকে সবশেষে বের হয়ে আসা ব্যক্তিকে আমি চিনি। সে হামাগুড়ি দিয়ে জাহান্নাম থেকে বের হয়ে আসবে। তাকে বলা হবে, "যাও জান্নাতে প্রবেশ কর"। নবী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "সে গিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে। সে দেখবে, লোকেরা স্ব স্ব স্থান অধিকার করে আছে। অতঃপর তাকে বলা হবে, "আচ্ছা সে যুগের (জাহান্নামের শাস্তি) কথা তোমার স্মরণ আছে কি?" সে বলবে, "হ্যাঁ, মনে আছে"। তাকে বলা হবে, "তুমি কি পরিমাণ জায়গা চাও তা ইচ্ছা কর"। সে ইচ্ছা করবে। তখন তাকে বলা হবে, "তুমি যে পরিমাণ ইচ্ছা করেছো তা এবং দুনিয়ার দশগুণ জায়গা তোমাকে দেয়া হল"। একথা শুনে সে বলবে, "আপনি আমার সাথে ঠাট্টা করছেন? অথচ আপনি হলেন সর্ব শক্তিমান"। বর্ণনাকারী ইবনে মাসঊদ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, "এ সময় আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এমনভাবে হাসতে দেখেছি যে, তাঁর মাড়ির দাঁত পর্যন্ত প্রকাশ হয়ে পড়েছে'। (সহীহ মুসলিম - কিতাবুল ঈমান)[23]
জান্নাতে সর্বশেষ ব্যক্তি প্রবেশ করার পরও অনেক জায়গা বাকী থাকবে যা পূর্ণ করার জন্য আল্লাহ্ তা'আলা নতুন জীব সৃষ্টি করবেন। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন', জান্নাতে যতটুকু স্থান আল্লাহ্ চাইবেন ততটুকু স্থান খালি থেকে যাবে। অতঃপর আল্লাহ্ তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী অন্য এক জীব সৃষ্টি করবেন'। (সহীহ মুসলিম - কিতাবুল জান্নাহ)[24]
জান্নাতের অট্টালিকাসমূহ
কুরআন মাজীদে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
মু'মিন পুরুষ আর মু'মিন নারীর জন্য আল্লাহ্ অঙ্গীকার করেছেন জান্নাতের যার নিম্নদেশ দিয়ে ঝর্ণাধারা প্রবাহিত, তাতে তারা চিরদিন থাকবে, আর জান্নাতে চিরস্থায়ী উত্তম বাসগৃহের; আর সবচেয়ে বড় (যা তারা লাভ করবে তা) হল আল্লাহ্র সন্তুষ্টি। এটাই হল বিরাট সাফল্য। (সূরা তওবা |
” |
জান্নাতের অট্টালিকাসমূহ সোনা-রূপার ইট দিয়ে নির্মিত হবে। সহীহ হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, আবু হুরাইরাহ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, "আমি জিজ্ঞেস করলাম, "ইয়া রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সৃষ্টিকে কী দিয়ে সৃষ্টি করা হয়েছে?" রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "পানি দিয়ে"। আমি জিজ্ঞেস করলাম, "জান্নাত কী দিয়ে নির্মিত?" তিনি বললেন, "একটি ইট রৌপ্যের এবং আরেকটি ইট স্বর্ণের। তার গাঁথুনি হল সুগন্ধিযুক্ত মেশক আম্বর। তার কংকর মোতি ও ইয়াকুতের। তার মাটি জাফরানের। যে ব্যক্তি সেখানে প্রবেশ করবে সে জীবন উপভোগ করবে, তার কোন কষ্ট হবে না। চিরকাল জীবিত থাকবে, মৃত্যু হবে না। জান্নাতীদের কাপড় কখনো পুরানো হবে না। আর তাদের যৌবন কখনো বিনষ্ট হবে না"। (তিরমিজী- কিতাবুল জান্নাহ)[25]
জান্নাতের কোন কোন অট্টালিকায় স্বর্ণের বাগান থাকবে। আবার কোন কোনটিতে রূপার বাগান থাকবে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন', দুইটি জান্নাত এমন রয়েছে যে, এর যাবতীয় পাত্রসমূহ ও তার মধ্যে যা কিছু আছে সবই রৌপ্য নির্মিত। আবার দুইটি জান্নাত এমন আছে যে এর সমস্ত আসবাবপত্র এবং এর মধ্যে যা কিছু আছে সবই স্বর্ণ নির্মিত। জান্নাতে আদনের অধিবাসীদের মধ্যে এবং তাদের প্রতিপালককে দর্শনের মধ্যে কেবল তাঁর বড়ত্ব ও মহানত্বের চাদরখানা ব্যতীত আর কোন আড়াল থাকবে না'। (সহীহ মুসলিম - কিতাবুল ঈমান)[26]
জান্নাতের অট্টালিকাসমূহে সাদা মোতির নির্মিত বড় বড় সুন্দর গম্বুজ নির্মাণ করা হয়েছে। আনাস বিন মালেক রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে মেরাজের হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন', অতঃপর আমাকে জান্নাতে নিয়ে যাওয়া হল, যাতে সাদা মোতির নির্মিত গম্বুজ আছে। আর তার মাটি হল মেশক আম্বরের'। (সহীহ মুসলিম - কিতাবুল ঈমান)[27]
জান্নাতের তাঁবুসমূহ
জান্নাতীদের প্রত্যেকের অট্টালিকায় তাঁবু থাকবে যেখানে হুরেরা অবস্থান করবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
তাঁবুতে সুরক্ষিত থাকবে সুলোচনা সুন্দরীরা। (আর রাহমান - ৭২)[20] |
” |
জান্নাতের তাঁবু ষাট মাইল প্রশস্ত হবে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন', জান্নাতের মধ্যে ফাঁপা মোতির একটি তাঁবু থাকবে। এর প্রশস্ততা হবে ষাট মাইল। এর প্রতি কোণে থাকবে হুর-বালা। এদের এক কোণের জন অপর কোণের জনকে দেখতে পাবে না। ঈমানদার লোকেরা তাদের কাছে যাবে। এতে থাকবে দু'টি বাগান, যার সকল পাত্র এবং ভেতরের সকল বস্তু হবে রূপার তৈরি'। (সহীহ বুখারী, হাদিস সংখ্যা- ৪৮৭৯)[28]
জান্নাতের বৃক্ষসমূহ
জান্নাতের বৃক্ষসমূহ কাঁটা বিহীন হবে ও তাদের ছায়া অনেক লম্বা হবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
আর ডানদিকের দল, কত ভাগ্যবান ডানদিকের দল! তারা থাকবে কাঁটা বিহীন বরই গাছগুলোর মাঝে। কলা গাছের মাঝে যাতে আছে থরে থরে সাজানো কলা, বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে ছায়া, অবিরাম প্রবাহমান পানির ধারে, আর পর্যাপ্ত ফলমূল পরিবেষ্টিত হয়ে। (সূরাহ আল-ওয়াক্বি'আহঃ ২৭-৩২)[20] |
” |
জান্নাতের বৃক্ষসমূহ সর্বদা শস্য-শ্যামল থাকবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ | ” |
জান্নাতের বৃক্ষসমূহের শাখাগুলো লম্বা ও ঘন হবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ | ” |
'রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, জান্নাতের প্রতিটি বৃক্ষের মূল হবে স্বর্ণের'। (তিরমিজী- কিতাবুল জান্নাহ)[29]
জান্নাতের ফলসমূহ
কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
তাতে আছে ফলমূল, আর খেজুর আর ডালিম । (সূরা আর-রহমান - ৬৮)[20] |
” |
জান্নাতের প্রত্যেক জান্নাতীর পছন্দমত সর্ব প্রকার ফলমূল মজুদ থাকবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
মুত্তাকীরা থাকবে ছায়া আর ঝর্ণাধারার মাঝে, আর তাদের জন্য থাকবে ফলমূল-যেটি তাদের মন চাইবে। (তাদেরকে বলা হবে) তোমরা তৃপ্তির সাথে খাও আর পান কর, তোমরা যে কাজ করেছিলে তার পুরস্কারস্বরূপ। সৎকর্মশীলদের আমি এভাবেই প্রতিফল দিয়ে থাকি। (সূরাহ আল-মুরসালাতঃ ৪১-৪৪)[20] |
” |
জান্নাতের ফল সর্বদা জান্নাতীদের নাগালের মধ্যে থাকবে। আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
জান্নাতের বৃক্ষরাজির ছায়া তাদের উপর থাকবে, আর ফলের গুচ্ছ একেবারে তাদের নাগালের মধ্যে রাখা হবে। (আদ-দাহর ১৪)[20] |
” |
জান্নাতের ফলের ছড়া অনেক বড় হবে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে সূর্য গ্রহণের সলাত সম্পর্কে বর্ণিত হাদীসে এসেছে যে, সাহাবাগণ রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু 'আলায়হি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করল, "ইয়া রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু 'আলায়হি ওয়া সাল্লাম! আমরা আপনাকে দেখলাম, আপনি এ স্থানে দাঁড়িয়ে কোন কিছু হাত বাড়িয়ে নিতে যাচ্ছেন। আবার একটু পরে দেখলাম হাত ফিরিয়ে নিলেন"। রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু 'আলায়হি ওয়া সাল্লাম বললেন, "আমি জান্নাত দেখতে পেলাম। অতএব জান্নাতে থেকে ফলের একটা ছড়া নিতে যাচ্ছিলাম। যদি তা নিয়ে নিতাম তবে তোমরা তা পৃথিবী কায়েম থাকা পর্যন্ত খেতে পারতে"। (সহীহ মুসলিম)[30]
জান্নাতের নদীসমূহ
জান্নাতের নদীসমূহের পানির রং ও স্বাদ সর্বদা একই রকমের থাকবে। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
মুত্তাক্বীদেরকে যে জান্নাতের ও'য়াদা দেয়া হয়েছে তার উপমা হলঃ তাতে আছে নির্মল পানির ঝর্ণা, আর আছে দুধের নদী যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু মদের নদী আর পরিশোধিত মধুর নদী। (সূরাহ মুহাম্মদঃ ১৫)[20] |
” |
আবু হুরাইরাহ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "সাইহান, জাইহান, ফোরাত ও নীল জান্নাতের নদী"। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল জান্নাত)[31]
হাকীম বিন মোয়াবিয়া তার পিতা থেকে তিনি নবী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, "জান্নাতে পানির সাগর, মধুর সাগর, দুধের সাগর ও শরাবের সাগর রয়েছে। এগুলো থেকে পরে আরো নহরের শাখা-প্রশাখা বের হবে"। (তিরমিজী)[32]
আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "আল্লাহ্ স্বীয় দয়ায় যাকে খুশি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন এবং জাহান্নামীদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। (অতঃপর দীর্ঘদিন পর বলবেন) দেখ যে ব্যক্তির অন্তরে বিন্দু পরিমাণ ঈমান আছে তাকে জাহান্নাম থেকে বের কর। তখন তারা এমন অবস্থায় বের হবে যে তাদের শরীর কয়লার ন্যায় জ্বলে গেছে। তখন তাদেরকে হায়াত বা হায়া নামক নদীতে নিক্ষেপ করা হবে। তখন তারা এমনভাবে সজীব হয়ে উঠবে, যেমন বন্যার আবর্জনার মাঝে চারাগাছ সজীব হয়ে উঠে। তোমরা কি কখনো দেখনি যে কেমন হলুদ রং বিশিষ্ট হয়ে ওঠে"। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল ঈমান)[33]
কাওসার নদী
আনাস ইবনু মালিক রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু সূত্রে নবী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম হতে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, "আমি জান্নাতে ভ্রমণ করছিলাম, এমন সময় এক নহরের কাছে এলে দেখি যে তার দু'ধারে ফাঁপা মুক্তার গম্বুজ রয়েছে। আমি বললাম, "হে জিব্রীল! এটা কী?" তিনি বললেন, "এটা ঐ কাউসার যা আপনার প্রতিপালক আপনাকে দান করেছেন"। তার ঘ্রাণে অথবা মাটিতে ছিল উত্তম মানের মিশ্ক এর সুগন্ধি"। (সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা-৬৫৮১)[34]
আবদুল্লাহ বিন ওমর রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "কাওসার জান্নাতের একটি নদী। যার উভয় তীর স্বর্ণ নির্মিত। তার পানি ইয়াকুত ও মোতির উপর প্রবাহমান। তার মাটি মেশকের চেয়েও বেশি সুগন্ধময়। তার পানি মধুর চেয়ে অধিক মিষ্টি এবং বরফের চেয়ে অধিক সাদা"। (তিরমিজী)[35]
আনাস বিন মালেক রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কাওছার কি? তিনি বললেন, "এটি একটি নদী, যা আল্লাহ্ তা'আলা আমাকে জান্নাতে দান করবেন। তা দুধ অপেক্ষা সাদা এবং মধু থেকেও সুমিষ্ট। এর মাঝে রয়েছে বহু পাখি। এগুলোর গর্দান হবে উটের গর্দানের মত"। উমর রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বললেন, "এগুলো তো খুব মোটা-তাজা হবে"। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "এগুলোর আহারকারী আরো সুখী হবে"। (তিরমিজী- কিতাবুল জান্নাহ)[36]
জান্নাতের ঝর্ণাসমূহ
কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
তাদের সামনে ঘুরে ঘুরে রুপার পাত্র পরিবেশন করা হবে আর সাদা পাথরের পানপাত্র। সেই সাদা পাথরও হবে রুপার তৈরি। তারা এগুলোকে যথাযথ পরিমাণে ভর্তি করবে। তাদেরকে পান করানোর জন্য এমন পাত্র পরিবেশন করা হবে যাতে আদার মিশ্রণ থাকবে। সেখানে আছে একটা ঝর্ণা, যার নাম সালসাবীল। (সূরাহ আদ্-দাহ্রঃ ১৫-১৮)[20] |
” |
মহান আল্লাহ্ বলেন,
“ |
(অপরদিকে) নেক্কার লোকেরা এমন পানপাত্র থেকে পান করবে যাতে কর্পুরের সংমিশ্রণ থাকবে। আল্লাহ্র বান্দারা একটি ঝর্ণা থেকে পান করবে। তারা এই ঝর্ণাকে (তাদের) ইচ্ছেমত প্রবাহিত করবে। (সূরাহ আদ্-দাহ্রঃ ৫-৬)[20] |
” |
সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ বলেন,
“ |
পুণ্যবান লোকেরা থাকবে অফুরন্ত নি'মাতের মাঝে। উচ্চ আসনে বসে তারা (চারদিকের সবকিছু) দেখতে থাকবে। তুমি তাদের মুখে আরাম আয়েশের উজ্জ্বলতা দেখতে পাবে। তাদেরকে পান করানো হবে সীল-আঁটা উৎকৃষ্ট পানীয়। তার সীল হবে মিশ্কের, প্রতিযোগীরা এ বিষয়েই প্রতিযোগিতা করুক। তাতে মেশানো থাকবে 'তাসনীম, ওটা একটা ঝর্ণা, যা থেকে (আল্লাহ্র) নৈকট্যপ্রাপ্তরা পান করবে। (সূরাহ আল-মুতাফ্ফিফীনঃ ২২-২৮)[20] |
” |
আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
তাদের জন্য আছে নির্ধারিত রিয্ক- ফলমূল; আরা তারা হবে সম্মানিত। (তারা থাকবে) নি'য়ামাতের ভরা জান্নাতে উচ্চাসনে মুখোমুখী হয়ে তাদের কাছে চক্রাকারে পরিবেশন করা হবে স্বচ্ছ প্রবাহিত ঝর্ণার সুরাপূর্ণ পাত্র। নির্মল পানীয়, পানকারীদের জন্য সুপেয়, সুস্বাদু। নেই তাতে দেহের জন্য ক্ষতিকর কোন কিছু, আরা তারা তাতে মাতালও হবে না। (সূরাহ আস্-সা-ফ্ফাতঃ ৪১-৪৭)[20] |
” |
আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
দু'টো বাগানেই আছে অবিরাম ও প্রচুর পরিমাণে উৎক্ষিপ্তমান দু'টো ঝর্ণাধারা। অতএব (হে জ্বিন ও মানুষ!) তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের কোন কোন নি'মাতকে অস্বীকার করবে? (সূরাহ আর্-রহমানঃ ৬৬-৬৭)[20] |
” |
এছাড়া জান্নাতের ঝর্ণা সম্পর্কে কুরআনে বর্ণিত হয়েছে যে,
“ |
সেখানে থাকবে প্রবাহমান ঝর্ণা (সূরাহ আল-গাশিয়াহঃ ১২)[20] |
” |
মহান আল্লাহ্ বলেন,
“ |
নিশ্চয়ই মুত্তাকীরা থাকবে নিরাপদ স্থানে, বাগান আর ঝর্ণার মাঝে (সূরাহ আদ্-দুখানঃ ৫১-৫২)[20] |
” |
মহান আল্লাহ্ বলেন,
“ |
মুত্তাকীরা থাকবে ছায়া আর ঝর্ণাধারার মাঝে, আর তাদের জন্য থাকবে ফলমূল-যেটি তাদের মন চাইবে। (সূরাহ আল-মুরসালাতঃ ৪১-৪২)[20] |
” |
জান্নাতীদের গুণাবলী
- জান্নাতীরা ষাট হাত লম্বা হবে
আবু হুরাইরাহ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "জান্নাতে প্রবেশকারী প্রত্যেক ব্যক্তি আদম আলাইহিস সলাতু ওয়াস সালামের ন্যায় ষাট হাত লম্বা হবে। (প্রথমে মানুষ ষাট হাত ছিল) পরবর্তীতে তারা খাট হতে লাগল, শেষে বর্তমান অবস্থায় এসে পৌঁছেছে"। (সহীহ মুসলিম)[37]
- জান্নাতীদের চেহারা ও বয়স
মোয়াজ বিন জাবাল রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ নবী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশের সময় তাদের চেহারায় কোন দাড়ি-গোঁফ থাকবে না। চক্ষুদ্বয় লাজুক হবে। বয়স হবে ত্রিশ থেকে তেত্রিশ এর মাঝামাঝি"। (তিরমিজী)[38]
- জান্নাতীদের খাবার হজম প্রক্রিয়া
জাবের বিন আবদুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "জান্নাতীরা পানাহার করবে কিন্তু থুথু ফেলবে না এবং পায়খানা-প্রস্রাবও করবে না। নাকে পানি আসবেনা"। সাহাবাগণ আরয করলেন, "তাহলে তাদের খাবার কোথায় যাবে?" তিনি উত্তরে বললেন, "ঢেকুর ও ঘামের মাধ্যমে তা হজম হবে। জান্নাতীরা এমনভাবে আল্লাহ্র প্রশংসা ও তাসবীহ্ পাঠ করবে যেমন তারা শ্বাস গ্রহণ করে"। (সহীহ মুসলিম)[39]
জান্নাতীদের জন্য আল্লাহ্র নি'য়ামাত
জান্নাতীদের খাবার ও পানীয়
- জান্নাতীদের প্রথম খাবার ও পানীয়
রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর গোলাম সাওবান রাযিয়াল্লাহু তা'আলা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট দাঁড়িয়ে ছিলাম। ইতোমধ্যে ইহুদীদের পাদ্রীদের মধ্য থেকে একজন পাদ্রী আসল এবং জিজ্ঞেস করল, "যে দিন আকাশ ও যমিন প্রথম পরিবর্তন করা হবে তখন মানুষ কোথায় থাকবে?" রাসূলুল্লাহ্ সল্লল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "পুলসেরাতের নিকটবর্তী এক অন্ধকার স্থানে"। অতঃপর ইহুদী আলেম জিজ্ঞেস করল, "সর্ব প্রথম কে পুলসিরাত পার হবে?" তিনি বললেন, "গরীব মুহাজিরগণ (মক্কা থেকে মদীনার হিযরতকারী)"। ঐ ইহুদী পাদ্রী আবার জিজ্ঞেস করল, "জান্নাতীরা জান্নাতে প্রবেশ করার পর সর্ব প্রথম তাদেরকে কী খাবার পরিবেশন করা হবে?" রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "মাছের কলিজা"। ইহুদী জিজ্ঞেস করল, "এর পর কী পরিবেশন করা হবে?" রাসূলুল্লাহ সল্লল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "এরপর জান্নাতীদের জন্য জান্নাতে পালিত গরুর গোশত পরিবেশন করা হবে"। এরপর ইহুদী জিজ্ঞেস করল, "খাওয়ার পর পানীয় কী কী পরিবেশন করা হবে?" রাসূলুল্লাহ সল্লল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "সালসাবীল নামক ঝর্ণার পানি"। ইহুদী পাদ্রী বলল, "তুমি সত্য বলেছ..."। (সহীহ মুসলিম- কিতাবুল হায়েজ)[40]
- এ পৃথিবী হবে জান্নাতীদের রুটি
আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূলুল্লাহ্ সল্লল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেনঃ কিয়ামতের দিন এ পৃথিবী একটি রুটির ন্যায় হবে। আল্লাহ্ স্বীয় হস্তে তা এমনভাবে উলট পালট করবেন যেমন তোমাদের কেউ সফররত অবস্থায় তার রুটিকে উলট পালট কর। আর ঐ রুটি দিয়ে জান্নাতীদেরকে মেহমানদারী করা হবে"। (সহীহ মুসলিম)[41]
- সকাল সন্ধ্যায় জান্নাতীদের খাবার পরিবেশন করা হবে
কুরআনুল কারীমে আল্লাহ্ তা'আলা বলেন,
“ |
এবং সকাল সন্ধ্যায় তাদের জন্য রিযিকের ব্যবস্থা থাকবে। (সূরাহ মারইয়ামঃ ৬২)[20] |
” |
- জান্নাতের শরাব পান করার পর কোন প্রকার মাতলামি ভাব দেখা দিবে না। (সূরাহ আস্-সা-ফ্ফাতঃ ৪১-৪৭)[20]
- জান্নাতীদেরকে এমন শরাব পান করানো হবে যার মধ্যে আদার স্বাদ থাকবে। (সূরাহ আদ্-দাহ্রঃ ১৫-১৮)[20]
- জান্নাতীদের পানের জন্য সুস্বাদু পানি, সুমিষ্ট দুধ, সুস্বাদু শরাব, পরিষ্কার স্বচ্ছ মধুর নদীও জান্নাতে বিদ্যমান থাকবে। (সূরাহ মুহাম্মদঃ ১৫)[20]
- জান্নাতীদের মেহমানদারীর জন্য অন্যান্য ফল ব্যতীত খেজুর, আঙ্গুর, আনার, বরই, আনজীর ইত্যাদি ফলও থাকবে। (সূরাহ আর-রহমানঃ ৬৮)[20], (সূরাহ আল-ওয়াক্বি'আহঃ ২৭-৩২)[20]
- জান্নাতীদের সেবায় 'শারাবান ত্বাহুরা' (পবিত্র পরিচ্ছন্ন পানীয়) পেশ করা হবে। (সূরাহ আদ্-দাহ্রঃ ২১)[20]
- উটের গর্দানের মত পাখির গোশত জান্নাতীদের পরিবেশন করা হবে। (তিরমিজী- কিতাবুল জান্নাহ)[36]
জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত ব্যক্তি
আলী ইবনে আবু তালিব রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমি একদা রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে ছিলাম। হঠাৎ করে আবু বকর ও ওমর রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুও চলে আসলেন। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, "তারা উভয়ে বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যুবরণকারী মুসলমানদের সর্দার হবে - তারা পূর্ববর্তী উম্মতের লোক হোক আর পরবর্তী উম্মতের। তবে নবী ও রাসূলগণ ব্যতীত। হে আলী! তুমি এ সংবাদ তাদেরকে দিও না"। (তিরমিজী- আবওয়াবুল মানাকেব)[42]
- হাসান ও হুসাইন রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু
আবু সাঈদ খুদরী রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সল্লল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "হাসান ও হুসাইন রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু জান্নাতী যুবকদের সর্দার হবে"। (তিরমিজী- আবওয়াবুল মানাকেব)[43]
- আশারা মুবাশ্শারা
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম দশজনকে দুনিয়াতেই তাদের জান্নাতী হওয়ার সুসংবাদ দিয়েছেন। তাদেরকে আশারা মুবাশ্শারা বলা হয়। আবদুর রহমান বিন আওফ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "আবু বকর জান্নাতী, ওমর জান্নাতী, ওসমান জান্নাতী, আলী জান্নাতী, তালহা জান্নাতী, যুবাইর জান্নাতী, আবদুর রহমান আওফ জান্নাতী, সা'দ বিন আবূ ওক্কাস জান্নাতী, সাঈদ বিন যুবাইর জান্নাতী, আবু ওবাইদা ইবনুল জার রাহ জান্নাতী"। (তিরমিজী- আবওয়াবুল মানাকেব)[44]
- খাদীজা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা
আয়েশা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, "রাসূলুল্লাহ্ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম খাদিজা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহাকে জান্নাতে একটি ঘরের সুসংবাদ দিয়েছেন"। (সহীহ মুসলিম)[45]
- উম্মে সুলাইম ও বেলাল রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু
জাবের বিন আবদুল্লাহ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, "রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমাকে জান্নাত দেখানো হল, আমি আবু তালহা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এর স্ত্রীকে (উম্মে সুলাইম) সেখানে দেখতে পেলাম। অতঃপর আমি সামনে অগ্রসর হয়ে কোন মানুষের চলার আওয়াজ পেলাম। হঠাৎ দেখলাম বেলাল রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কে"। (সহীহ মুসলিম)[46]
- তালহা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু
যুবায়ের রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, "উহুদের যুদ্ধের দিন রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই জোড়া কাপড় পরিধান করে ছিলেন। তিনি একটি পাথরের উপর আরোহণ করতে ছিলেন কিন্তু তিনি তাতে চড়তে পারছিলেন না। তখন তিনি তালহা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহুকে তাঁর নিচে বসালেন এবং তার ওপর আরোহণ করে তিনি তাতে চড়লেন। যুবায়ের বলেন, এসময় আমি নাবী সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি তিনি বলেনঃ তালহার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে গেছে"। (তিরমিজী- আবওয়াবুল মানাকেব)[47]
- আবদুল্লাহ বিন সালাম রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু
সা'দ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, "আমি রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কোন জীবিত ব্যক্তির ব্যাপারে একথা বলতে শুনি নাই যে সে জান্নাতী, তবে শুধু আবদুল্লাহ বিন সালামকে একথা বলেছেন"। (সহীহ মুসলিম)[48]
তথ্যসূত্র
- Ibn Warraq, Virgins? What virgins?, The Guardian; 12 January 2012
- Annemarie Schimmel. Islam and The Wonders of Creation: The Animal Kingdom. Al-Furqan Islamic Heritage Foundation, 2003. Page 46
- কুরআন 18:107
- কুরআন 23:11
- কুরআন 10:25
- কুরআন 6:127
- কুরআন 53:15
- কুরআন 25:15
- কুরআন 3:72
- কুরআন 13:23
- কুরআন 29:64
- কুরআন 5:65
- কুরআন 10:9
- কুরআন 22:56
- কুরআন 35:35
- কুরআন 2:35
- কুরআন 3:133
- কুরআন 5:72
- বাংলা কুরআন
- জান্নাতের স্তর
- সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা- ৩২৫২, ৩২৫৩
- সহীহ মুসলিম, জান্নাতের সর্বশেষ ব্যক্তি
- সহীহ মুসলিম, জান্নাতে খালি থেকে যাবে
- তিরমিজী, জান্নাতের অট্টালিকাসমূহ
- মুসলিম, জান্নাতের অট্টালিকাসমূহ
- মুসলিম, জান্নাতের সাদা গম্বুজ
- সহীহ বুখারী, হাদিস সংখ্যা- ৪৮৭৯
- জান্নাতে স্বর্ণের বৃক্ষ
- জান্নাতের ফল
- মুসলিম, জান্নাতের নদী
- তিরমিজী, জান্নাতের নদী
- মুসলিম, হায়াত নদী
- সহীহ বুখারী, হাদীস সংখ্যা-৬৫৮১
- তিরমিজী, কাওসার নদী
- তিরমিজী,কিতাবুল জান্নাহ, কাওসার নদী
- জান্নাতীর দৈর্ঘ্য
- জান্নাতীদের চেহারা ও বয়স
- জান্নাতীদের খাবার হজম প্রক্রিয়া
- জান্নাতীদের প্রথম খাবার ও পানীয়
- এ পৃথিবী হবে জান্নাতীদের রুটি
- তিরমিজী, আবু বকর ও ওমর রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু জান্নাতী
- তিরমিজী, হাসান ও হুসাইন রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু জান্নাতী
- তিরমিজী, আশারা মুবাশ্শারা
- মুসলিম, খাদীজা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহা জান্নাতী
- মুসলিম, উম্মে সুলাইম ও বেলাল রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু জান্নাতী
- তিরমিজী, তালহা রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু জান্নাতী
- মুসলিম, আবদুল্লাহ বিন সালাম রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু জান্নাতী