কুরআন

কুরআন মাজীদ অথবা কুরআ-ন মাজী-দ (আরবি: القرآن আল্-কুর্'আন্[টী১]) ইসলাম ধর্মের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ, যা আল্লাহর বাণী বলে মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন।[1] এটি আরবী সাহিত্যের সর্বোৎকৃষ্ট কর্ম হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।[2][3][4][5] কুরআনকে প্রথমে অধ্যায়ে (আরবীতে সূরা) ভাগ করা হয় এবং অধ্যায়গুলো (সূরা) আয়াতে বিভক্ত করা হয়েছে।

কুরআন
Information
ধর্মইসলাম
যুগ৬০৯–৬৩২

মুসলমানদের বিশ্বাসমতে আল্লাহর ফেরেশতা জিব্রাইল এর মাধ্যমে ইসলামিক নবী মুহাম্মাদ (সঃ) এর কাছে মৌখিকভাবে কুরআনের আয়াতগুলো অবতীর্ণ করেন,[6][7] দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে সম্পূর্ণ কুরআন অবতীর্ণ হয়। কুরআনের প্রথম আয়াত অবতীর্ণ হয় ৬০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২২ ডিসেম্বর যখন মুহাম্মাদের (সঃ) বয়স ৪০ বছর[8] এবং অবতরণ শেষ হয় মুহাম্মাদের (সঃ) তিরোধানের বছর অর্থাৎ ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে।[1][9][10] মুসলমানরা বিশ্বাস করে থাকেন কুরআন হচ্ছে মুহাম্মাদের (সঃ) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অলৌকিক ঘটনা যা তার নবুয়তের প্রমাণস্বরূপ[11] এবং ঐশ্বরিক বার্তা প্রেরণের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার চূড়ান্ত পর্যায় যা আদম থেকে শুরু হয়ে মুহাম্মাদের (সঃ) মধ্য দিয়ে শেষ হয়। তবে সুফিবাদের অনুসারীরা বিশ্বাস করে থাকেন মুহাম্মাদের (সঃ) সকল কর্মকান্ডে উম্মতের কাছে বোধগম্য করে তোলার জন্যই কুরআন অবতীর্ণ করা হয়। কুরআনের আয়াতসমূহে কুরআন শব্দটি ৭০ বার এসেছে।[12]

ইসলামী ইতিহাস অনুসারে দীর্ঘ তেইশ বছর ধরে খণ্ড খণ্ড অংশে এটি ইসলামের নবী মুহাম্মাদের (সঃ) নিকট অবতীর্ণ হয়। ইসলামের অনুসারীরা কুরআনকে একটি পুর্ণাঙ্গ জীবন বিধান বলে বিশ্বাস করে। কুরআনে সর্বমোট ১১৪টি সূরা আছে। আয়াত বা পঙক্তি সংখ্যা ৬,৬৬৬ টি; মতান্তরে ৬,২৩৬ টি। এটি মূল আরবি ভাষায় অবর্তীর্ণ হয়।[13][14][15][16] মুসলিম চিন্তাধারা অনুসারে কুরআন ধারাবাহিকভাবে অবর্তীর্ণ ধর্মীয় গ্রন্থগুলোর মধ্যে সর্বশেষ এবং গ্রন্থ অবতরণের এই ধারা ইসলামের প্রথম বাণীবাহক আদম থেকে শুরু হয়। কুরআনে অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার উল্লেখ রয়েছে যার সাথে বাইবেলসহ অন্যান্য ধর্মীয়গ্রন্থের বেশ মিল রয়েছে, অবশ্য অমিলও কম নয়। তবে কুরআনে কোনও ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা নেই। ইসলামী ভাষ্যমতে কুরআন অপরিবর্তনীয় এবং এ সম্পর্কে মুসলিমরা কুরআনের সূরা আল-হিজরের (১৫ নং সূরা), ৯ নং আয়াতের কথা উল্লেখ করে থাকে, এবং তা হল:

কুরআন পাণ্ডুলিপি। ব্রুকলিন মিউজিয়াম
ব্রিটিশ মিউজিয়ামে ১১ শতকের উত্তর আফ্রিকার কুরআন.
ইরানের মাশহাদে কুরআন, যা আলি কৃর্তক লিখিত

বুৎপত্তি ও অর্থ

কুরআন এ কুর'আন শব্দটি কয়েকটি অর্থে প্রায় ৭০ বার এসেছে। আর, আরবি ব্যাকরণে "কুর'আন" শব্দটি একটি "মাসদার",যা ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ৭৫:১৭,১৮ আয়াতে এটি,(قرأ) ক্বরা'আ ('পাঠ করা' বা 'আবৃত্তি করা') ক্রিয়ার ক্রিয়াবাচক বিশেষ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই ক্রিয়াপদটিকেই কুরআন নামের মূল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।[18] এই শব্দটির "মাসদার" (الوزن) হচ্ছে غفران তথা "গুফরান"। এর অর্থ হচ্ছে অতিরিক্ত ভাব, অধ্যবসায় বা কর্ম সম্পাদনার মধ্যে একাগ্রতা। উদাহরণস্বরুপ, (غفر) নামক ক্রিয়ার অর্থ হচ্ছে "ক্ষমা করা"; কিন্তু এর আরেকটি মাসদার রয়েছে যার যা হলো (غفران), এই মাসদারটি মূল অর্থের সাথে একত্রিত করলে দাঁড়ায় ক্ষমা করার কর্মে বিশেষ একাগ্রতা বা অতি তৎপর বা অতিরিক্ত ভাব। সেদিক থেকে কুরআন অর্থ কেবল পাঠ করা বা আবৃত্তি করা নয় বরং একাগ্র ভঙ্গীতে পাঠ বা আবৃত্তি করা। কুরআনের মধ্যেও এই অর্থেই কুরআন শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে। কুরআনের সূরা আল-কিয়ামাহের (৭৫ নং সূরা) ১৮ নং আয়াতে এই শব্দটি উল্লেখিত আছে:"অতঃপর, আমি যখন তা পাঠ করি (ক্বুরা'নাহু), তখন আপনি সেই পাঠের (কুরআ'নাহ্‌) অনুসরণ করুন।"[19]

কুরআনে যেখানেই এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে সেখানেই এর যথার্থ বিশেষ্য বা বিশেষণ পাওয়া যায়। ক্বরা'আ ক্রিয়াপদ কুরআনে পুনঃপুনঃ ব্যবহৃত হয়েছে।১৭:৯৩ আয়াতে এর অর্থ 'পাঠ করা'; কিন্তু এর বহুল প্রচলিত অর্থটি হল,'আবৃত্তি করা' (তিলাওয়াঃ),৭৫: ১৬,১৭। মুহাম্মদ (সাঃ) এর আবৃত্তি সমন্ধেও এই শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে। তিনি তাঁর নিজের উপর অবতীর্ন ওহী আবৃত্তি করেন (৭ঃ২০৪; ১৬ঃ৯৮; ১৭ঃ৪৫; ৮৪ঃ২১; ৮৭ঃ৬)। শব্দটি মুমিনদের আবৃত্তি সমন্ধেও ব্যবহৃত হয়েছে , তারা সালাতে ওহী আবৃত্তি করেন (৭৩ঃ২০)। এথেকে বোঝা যায়, কুরআন শব্দের অর্থ হল 'আবৃত্তি করা' যা মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত হয়ে আবৃত্তি করেছেন (৭৫ঃ১৮; ৮৬ঃ৬) এবং মানুষের সম্মুখেও আবৃত্তি করেছেন। যদিও কুরআন বলতে সাধারভাবে তাঁর উপর অবতীর্ণ ওহীর সমষ্টীকে বুঝায়।তবে শব্দটি (কুরআন) তাঁর উপর অবতীর্ন পৃথক পৃথক ওহী (১০ঃ১৫; ১২ঃ৩; ৭২ঃ১; ২ঃ১৮৫) সমন্ধে বা খন্ডে খন্ডে অবতীর্ণ (১৭ঃ১০৬; ২০ঃ১; ৭৬ঃ২৩; ২৫ঃ৩২ ; ৫৯ঃ২১) আল্লাহর ওহী সমন্ধে বলা হয়েছে যা তিঁনি আল্লাহ কতৃক পেয়েছিলেন (২৭ঃ৬; ২৮ঃ৮৫)।

আল কিতাব (ধর্ম গ্রন্থ বা পুস্তক) শব্দটি আল-কুরআনের প্রতিশব্দ হিসাবে একই অর্থে ব্যবহৃত হয়। আল-কিতাব সমন্ধে বলা হয়েছে "ইহা এক কল্যানময়ী রাত্রিতে (৪৪ঃ২) অবতীর্ন হইয়াছে" (৪০ঃ২; ৪৫ঃ২)। ১৫ঃ১ আয়াতে বলা হয়েছে, "এইগুলি আল-কুরআন এবং সুস্পষ্ট অর্থবোধক আল-কিতাবের অলৌকিক নিদর্শনসমূহ।" বিষয়বস্তু হিসেবে কুরআনকে প্রায়ই 'যি'কর' বলা হয়েছে। এখানে এর অর্থ উপদেশ, সাধারণ বানী (২১ঃ২৬,৪২; ৩৮ঃ৮৭)। যি'করকে 'অবতীর্ণ' (২১ঃ৫০; ৩৮ঃ৮) এবং 'মহান পবিত্র গ্রন্থ' (৪১ঃ৪১) বলা হয়েছে। আবার ৩৬ঃ ৬৯ আয়াতে কুরআন সমন্ধে বলা হয়েছে, "ইহা এক (মহান) যি'কর এবং সুস্পষ্ট অর্থবোধক কুরআন"।২১ঃ৭ আয়াতে আহ্'লুল-কিতাবকে আহ্'লুয যি'কর বলা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে আল-হি'কমাঃ শব্দটি উল্লেখ করা যেতে পারে। ২ঃ১২১,১৫১; ৩ঃ১৬৪; ৬২ঃ২ -এ আল-কিতাবের সাথে হি্'কমাঃ উল্লেখ করা হয়েছে। ২ঃ২৩৯; ৪ঃ১১৩ -এ কুরআনের সঙ্গে হি'কমাতের অবতীর্ন হওয়ার উল্লেখ আছে। কুরআনে, কুরআনকে "আল-ফুরকা'ন"-ও বলা হয়েছে।

"সূরাঃ" শব্দটি আরবী সূর (নগর প্রাচীর) হইতে গৃহীত একবচনজ্ঞাপক…. যোগ করিয়া গঠিত। সূরার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নির্দিষ্ট অংশকে আয়াত বলা হয়। হিব্রু 'ওত' শব্দের ন্যায় ইহা বিশেষ অর্থে নিদর্শন, বিশ্বাসের নিদর্শন (২ঃ২৪৮; ৩ঃ৪১; ২৬ঃ১৯৭) বিশেষত আল্লাহর অস্তিত্ব ও ক্ষমতার নিদর্শন (১২ঃ১০৫; ৩৬ঃ৩৩) বুঝায়। তাই এটি দ্বারা অলৌকিক ঘটনাকে'ও (মু'জিযাঃ) বুঝায় (৩ঃ৪৯; ৪৩ঃ৪৬)। মুহাম্মদ (সাঃ) যে আল্লাহর নবী এর প্রমাণস্বরুপ মক্কার পৌত্তলিকরা তার নিকট অলৌকিক ক্রিয়া (মু'জিযাঃ) দেখানোর দাবী করত। যেহেতু প্রেরিত ওহীগুলোই তার অন্যতম মু'জিযাঃ (৬ঃ১৫৮; ৭ঃ২০৩; ২০ঃ১৩৩; ২৯ঃ৫০) সেজন্যই এগুলোর নাম আয়াত হয়েছে। আয়াতগুলো উর্ধ-জগত হতে (২ঃ৯৯; ২৮ঃ৮৭) আল্লাহর নবীর নিকট (২ঃ২৫২; ৩ঃ৫৮; ৪৫ঃ৫) পাঠানো হত এবং পূর্ববর্তী নবীগনের ন্যায় (২৮ঃ৫৯) তিনিও উহা লোকদেরকে আবৃত্তি করে শোনাতেন (২ঃ১৫১; ৩ঃ১৬৪; ৬৫ঃ১১)।

আরও বলা হয়েছে যে, আল্লাহ্ তাঁর আয়াতসমূহের ব্যাখ্যা করেন, (২ঃ১৮৭) ; "মুমিনগণ রাত্রিতে ইহা পাঠ করেন" (৩ঃ১১৩); "একমাত্র কাফিরগণই আমার আয়াতগুলির সত্যতা অস্বীকার করে" (২৯ঃ৪৭)। আবার কিছু যায়গায় গুরুত্ব বোঝানোর জন্য আয়াতসমূহের প্রতিই দৃষ্টি আকর্ষন করা হয়েছে। যেমন,"সূরার ভিতর সুস্পষ্ট আয়াত-সমূহ নাযিল করিয়াছি"(২৪ঃ১); "একটি কিতাব যাহা আমি পাঠাইয়াছি, যেন তাহারা ইহার আয়াতগুলি সমন্ধে চিন্তা করিতে পারে" (৩৮ঃ২১); "এইগুলি হইল জ্ঞানময় কিতাবের আয়াত" (১০ঃ১; ৩১ঃ১) ; " এইগুলি সুস্পষ্ট অর্থবোধক কিতাবের আয়াত (১২ঃ১; ২৬ঃ১; ২৮ঃ১) ; "এইগুলি আল-কিতাব ও স্পষ্ট বিবরণদানকারী কু'রআনের আয়াত" (১৫ঃ১) ; "এইগুলি আল-কু'রআন ও স্পষ্ট বিবরণদানকারী" (কিতাব) (২৭ঃ১)। "একটি কিতাব যার আয়াতগুলি দৃড়রূপে প্রথিত ", (১১ঃ১, ১৩,১)। কিতাবে সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ এবং বিভিন্ন অর্থবোধক আয়াতসমূহ আছে (৩ঃ৭)। যেমন, " এবং যদি আমি একটি আয়াত বাতিল করে অথবা ভুলাইয়া দেই তবে সেই স্থানে তদপেক্ষা উত্তম অথবা অনুরূপ একটি আয়াত আনয়ন করি" (২ঃ১০৬)। "যদি আমি এক আয়াত অন্য আয়াত দ্বারা বদল করি (১৬ঃ১০১)।

এইসব বিবরন হতে মুহাম্মদ (সাঃ) এর উপর অবতীর্ণ ওহীর বিষয়বস্তু সমন্ধে জানা যায় "উহা সুরক্ষিত ফলক বা লাওহ' মাহ্'ফুজ' হইতে অবতীর্ণ হইয়াছে" (৮৫ঃ২২)। " ইহা একটি সুরক্ষিত পুস্তকে রহিয়াছে" (৫৬ঃ৭৯)। "ইহা আমার নিকট মূল কিতাবে রহিয়াছে" (৪৩ঃ৪; ৩ঃ৭)। আল-কুরআন সমন্ধে বলা হয়েছে, "ইহা একটি উপদেশ-গ্রন্থ যাহা সম্মানিত, উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন এবং পবিত্র পত্রসমূহে মহান ন্যায়নিষ্ঠ লেখকদের হস্তে লিপিবদ্ধ" (৮০; ১১-১৬)। ৫২ঃ৮২ আয়াতে বিস্তারিত পত্রে লিখিত কিতাবের শপথ করা হয়েছে এবং ৬৮ঃ১ -এ বলা হয়েছেঃ "কালাম ও যাহা দ্বারা লেখা হয় তাহার শপথ" এবং ৯৬ঃ৪-৫ এ বলা হয়েছে "কালাম দ্বারা তিনি মানবকে শিক্ষা দিয়েছেন যাহা সে জানিত না" তাঁকে আরও বলা হয়েছে, "তোমার রাব্ব- এর কিতাব হইতে যাহা তোমার প্রতি ওয়াহ্'য়িরূপে পাঠানো হইয়াছে তাহা পাঠ কর"। "আল্লাহর কথা কেহ পরিবর্তন করিতে পারে না " (১৮ঃ২৭)। ৪ঃ১৬৪; ৪০ঃ৭৮ - এ বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাঁহাকে কতক নবীর কথা বলিয়াছেন এবং কতক নবীর কথা বলেন নাই।

রাসূল (সাঃ) এর উপর অবতীর্ণ ওহী থেকেই উম্মুল কিতাব (৪৩ঃ৪) এর মূল বিষয়বস্তু ধারণা করে নেয়া যায়। সেগুলো হল, আল্লাহর সত্তা, বিশ্ব সৃষ্টি - বিশেষত মানব সৃজন, ভাল ও মন্দ আত্না-সমূহের সৃষ্টি, শেষ বিচার, জান্নাত,জাহান্নাম, পূর্ববর্তী নবী গনের অভিজ্ঞতা, আল্লাহর ইবাদত ও সামাজিক জীবন সম্বন্ধীয় যাবতীয় আইন-কানুন এবং বিশেষ বিশেষ আইন (৪ঃ১০৩, ১২৭,১৩৮; ৩৩ঃ৬)। বার মাসের উল্লেখ প্রসঙ্গে (৯ঃ৩৬) এবং ২২ঃ৪ -এ শয়তান কতৃক মানবকে প্রলুব্ধ করার প্র‍য়াস প্রসঙ্গে বিশ্ব সৃজন-তত্বের আভাষ দেয়া হয়েছে। এমনকি, বিশ্বে যা কিছু সংঘটিত হয়েছে এবং সংঘটিত হবে তার সব কিছুই ঐ উম্মুল কিতাবে আছে (১০ঃ৬১; ২৭ঃ৭৫; ৩৪ঃ৩; ৬ঃ৩৮,৫৯; ১১ঃ৬; ২০ঃ৫১; ১৭ঃ৫৮)।

কুরআনের অনেকগুলি নামের মধ্যে বিশেষ চারটি নাম হল আল-কুরআন, আল-ফুরকান, আল-কিতাব ও আয-যিক্'র। ‘আল-কুরআন’ নামের অর্থ 'যাহা পঠিত হয়'। এটি বহু আয়াত ও সূরার সংকলন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, কুরআনের প্রথম আয়াতের প্রথম শব্দটি হল ‘ইকরা’-'পাঠকর'। ‘আল-ফুরকান’ নামের অর্থ পার্থক্যকারী, সত্য ও মিথ্যার, আলো ও অন্ধকারের এবং ন্যায় ও অন্যায়ের পার্থক্যকারী। ‘আল্-কিতাব’ অর্থ লিখিত গ্রন্থ যা যথাযথভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। ‘আয-যিক্'র’ নামের অর্থ উপদেশ যা আল্লাহ্-তা‘আলা স্বীয় বান্দাগণকে দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনের নিমিত্তে দিয়েছেন।

মুসলমানদের মতে এটি আল্লাহর বাণী বা বক্তব্য, যা ইসলামের নবী ও রাসূল মুহাম্মাদের উপর আরবি ভাষায় অবতীর্ণ হয়। তাদের মতে এটি একটি মুজিজা বা অলৌকিক গ্রন্থ যা মানব জাতির পথনির্দেশক। মুসলমানদের বিশ্বাস, কুরআনে মানব জীবনের সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে এবং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।[20]

ইতিহাস

নবীর যুগ

সংকলন

মহানবী স. এর জীবদ্দশায় তার তত্ত্বাবধানে প্রথম পূর্ণ কুরআন লিপিবদ্ধ হয়। কিন্তু এগুলো এক জায়গায় একত্রিত করা হয়নি। প্রথম খলিফা হযরত আবু বকর রা.-এর যুগে দ্বাদশ হিজরি সালে ইয়ামামার যুদ্ধে সত্তর জন হাফেজে কুরআন শাহাদাত বরণ করেন।এতে হযরত ওমর রা. উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তিনি খলিফা আবু বকর রা.-কে বলেন, "এভাবে জিহাদে হাফেজগন শহীদ হতে থাকলে কুরআনের অনেক অংশ বিলুপ্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। অতএব, আপনি কুরআন মাজিদ একত্রে সংকলনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।" প্রথমে আবু বকর রা. রাজি না হলেও ওমর রা. এর অনুরোধে রাজি হন। কুরআন সংরক্ষণের এ দ্বায়িত্ব রাসূল স. এর যুগের ওহি লেখক সাহাবি যায়েদ ইবনে সাবেত রা. এর উপর প্রদান করা হয়। যায়েদ ইবনে সাবেত রা. নিজে হাফেজে কুরআন ছিলেন। তিনি কুরআন সংকলন করার ব্যাপারে দুটি পদ্ধতি অবলম্বন করেন। একটি হলো-কুরআনের আয়াতটি সংশ্লিষ্ট সাহাবা মুখস্থ বলবেন, অপরটি হলো তিনি মহানবী স. এর যুগে লিখিত ঐ আয়াতটি প্রদর্শন করবেন। তিনি লিখিত ছাড়া কুরআনের আয়াত সত্যায়নের জন্য যথেষ্ট মনে করেননি। তিনি বহু যাচাই বাছাই করতঃ সাহাবায়ে কেরামের নিকট রক্ষিত রাসুলুল্লাহ স. এর জীবদ্দশায় লিখিত বিভিন্ন পাণ্ডুলিপি থেকে সে সময়ের আবিষ্কৃত বিশেষ কাগজে গ্রন্থাকারে কুরআন লিপিবদ্ধ করেন। লিপিবদ্ধ কুরআনটি হযরত আবু বকর রা.-তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। তার ওফাতের পর এটি হযরত ওমর রা.-এর হেফাজতে থাকে। তার শাহাদাতের পর তারই ওসিয়ত অনুসারে কুরআনের এ প্রতিলিপিটি নবি করিম স. এর স্ত্রী বিবি হাফসা রা.-এর নিকট গচ্ছিত থাকে। তৃতীয় খলিফা উসমান রা. -এর যুগে ইসলামি সম্রাজ্যের ব্যাপক প্রসার ঘটে। ইসলামের এ প্রসারের ফলে বিভিন্ন জাতিভাষাবাষি লোকেরা দলে দলে ইসলাম কবুল করে। তাদের অনেকেই কুরআনের গঠন পদ্ধতি অনুসরণ করে কুরআনের বিশেষ শব্দ উচ্চারণ করতে পারত না। বিশেষ করে আরমেনিয়া এবং আজারবাইজান যুদ্ধে সমবেত মুসলমানদের কুরআন পাঠ পদ্ধতির বিভিন্নতা দেখে বিশিষ্ট সাহাবি হুযাইফা রা. খলিফা উসমান রা.-কে বিষয়টি অবহিত করেন। তিনি অবিলম্বে এ নিয়ে নেতৃস্থানীয় সাহাবাদের সাথে পরামর্শ করে চার জন বিশিষ্ট সাহাবা সমন্বয়ে একটি বোর্ড গঠন করেন। এ চার জন সাহাবা হচ্ছেন-

হযরত উসমান রা.-এর উদ্দোগে হিজরি ২৪ সালে শেষবারের মতো কুরআন সংকলনের এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এ বোর্ড হযরত হাফসা রা.-এর নিকট সংরক্ষিত মূল কপিটি সংগ্রহ করেন।উক্ত বোর্ড পূর্বলিখিত প্রতিলিপিটি অনুসরণ করে পাঠ ও উচ্চারনের বিভিন্নতা দূর করার জন্য শুধু কুরাইশি উচ্চারণ ও ভাষায় তার আরও সাতটি প্রতিলিপি প্রস্তুত করেন। বর্ণিত আছে যে, সাতটি প্রতিলিপি তৈরি করে মক্কা, শাম, ইয়েমেন,বাহরাইন, বসরাকুফা প্রদেশে একটি করে প্রেরণ করা হয়। আর রাজধানী মদিনাতে একটি কপি খলিফার নিকট সংরক্ষিত রাখা হয়।[22] এরপর বিভ্রান্তি নিরসনের জন্য বিক্ষিপ্তভাবে সংরক্ষিত প্রতিলিপিগুলো সকলের কাছ থেকে সংগ্রহ করে বিনষ্ট করে দেওয়া হয়। এভাবে ইসলামের তৃতীয় খলিফা হযরত উসমান রা.-এর পত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে পবিত্র কুরআন সংকলিত ও বিভিন্ন প্রদেশে প্রেরিত হয় বিধায় তাকে "جمع القرآن " বা কুরআন সংগ্রহকারী বলা হয়।

ইসলামে গুরুত্ব

অননুকরণীয়তা

ইসলামী পরিভাষা অনুযায়ী, কুরআনের অলৌকিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, এই বিশ্বাসকে ইজায বলা হয়। মুসলমানরা বিশ্বাস করে আল কুরআন একটি ঐশি গ্রন্থ যা কোনো মানুষের পক্ষে রচনা করা সম্ভব নয়।

নামাজে কুরআন তেলাওয়াত

নামাজে বিশুদ্ধভাবে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত করা আবশ্যক। নামাজে কিরাআত তিলাওয়াতের বিষয়াবলী জানা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অপরিহার্য দায়িত্ব। ফরজ নামাজের প্রথম দুই রাকাআতে সুরা ফাতিহার সঙ্গে সুরা মিলানো ওয়াজিব। কমপক্ষে তিন আয়াত বা তিন আয়াতের সমপরিমাণ বড় এক আয়াত তিলাওয়াত করতে হবে।

ইসলামী শিল্পকলায়

পাঠ ও বিন্যাস

কুরআনের নাযিল হওয়া প্রথম চার আয়াত; ৯৬তম সূরা আলাক

কুরআনে বিভিন্ন দৈর্ঘ্যের মোট ১১৪টি সূরা রয়েছে। সকল সূরা মিলিয়ে মোট আয়াতের (আয়াত আরবি শব্দ, এর সাহিত্যিক অর্থ নিদর্শন) সংখ্যা প্রায় ৬,২৩৬ (মতান্তরে ৬৩৪৮টি অথবা ৬৬৬৬টি)।[23] প্রত্যেকটি সূরার একটি নাম রয়েছে। নামকরণ বিভিন্ন উপায়ে করা হয়েছে; তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সূরার অভ্যন্তরে ব্যবহৃত কোনো শব্দকেই নাম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া এমন নামও পাওয়া যায় যা সূরার অভ্যন্তরে ব্যবহৃত হয় নি যেমন সূরা ফাতিহা। ফাতিহা শব্দটি এ সূরার কোথাও নেই। সূরাগুলোর একটি সুনির্দিষ্ট সজ্জা রয়েছে। সজ্জাকরণ তাদের অবতরণের ধারাবাহিকতা অনুসারে করা হয় নি। বরং দেখা যায় অনেকটা বড় থেকে ছোট সূরা অনুযায়ী সাজানো। অবশ্য একথাও পুরোপুরি সঠিক নয়। সজ্জার প্রকৃত কারণ কারও জানা নেই। অনেক ক্ষেত্রে বড় সূরাও ছোট সূরার পরে এসেছে। তবে একটি সূরা বা তার বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন ঘটনার প্রেক্ষিতে ধারাবাহিকতার সাথেই অবতীর্ণ হয়েছিল বলে মুসলমানদের ধারণা। কুর’আনের সজ্জাটি মানুষের মুখস্থকরণের সুবিধার সৃষ্টি করেছে।

বিভাজন: হিজ্‌ব বা মানজিল

কুরান

হিজ্‌ব বা মানজিল হচ্ছে কুরআনের প্রথম সূরা (সূরা ফাতিহা) ব্যতীত অন্য সূরাগুলো নিয়ে করা একটি শ্রেণি। হিজ্‌ব মুফাস্‌সিল একটি গুরুত্বপূর্ণ তাৎপর্য বহন করা। এতে ৭টি মানজিলের মাধ্যমে সবগুলো সূরাকে একসাথে করা হয়েছে।[24] মানজিলগুলো হচ্ছে:

  • মানজিল ১ = ৩ টি সূরা, যথা, ২—৪
  • মানজিল ২ = ৫ টি সূরা, যথা, ৫—৯
  • মানজিল ৩ = ৭ টি সূরা, যথা, ১০—১৬
  • মানজিল ৪ = ৯ টি সূরা, যথা, ১৭—২৫
  • মানজিল ৫ = ১১ টি সূরা, যথা, ২৬—৩৬
  • মানজিল ৬ = ১৩ টি সূরা, যথা, ৩৭—৪৯
  • মানজিল ৭ = ৬৫ টি সূরা, যথা, ৫০—১১৪

পারা

কুরআনে মোট ৩০ টি পারা বা অধ্যায় রয়েছে। ১১৪টি পূর্নাঙ্গ সূরা রয়েছে। সূরাগুলো বিভিন্ন আকারের হলেও কুরআনের পারাগুলো প্রায় সমান আকারের। কুরআন মুখস্থকরণের ক্ষেত্রে সাধারণতম পারা অনুযায়ী শিক্ষা করানো হয়। যে সকল স্থানে সমগ্র কুরআন পাঠের আয়োজন করা হয় সেখানেও এই পারা অনুযায়ী করা হয়।

বিষয়বস্তু

সাহিত্যিক গঠন

কুরান

ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি সাহিত্য এবং ইসলাম শিক্ষা বিভাগের অধ্যাপক ইসা বাউলাতা কুরআনের সাহিত্যিক গঠনপ্রণালি সম্বন্ধে নিম্ন প্রকারের মন্তব্য করেছেন।[25]

কুরআনের ব্যাখ্যা কোরআন নিজেই দেয়।।

অনুবাদ

ইসলামের প্রথম যুগে সাহাবী সালমান আল-ফারিসী সূরা ফাতিহাকে ফারসি ভাষায় অনুবাদের মাধ্যমে সর্বপ্রথম কুরআন অনুবাদের সূচনা করেন। ইতোপূর্বে নবী মুহাম্মাদ আবিসিনিয়ার সম্রাট নাজ্জাশী বা নিগাস ও বাইজানটাইন সম্রাট হিরাক্লিয়াসের নিকট পাঠানো চিঠিতে কুরআনের আংশিক অনুবাদ প্রেরণ করেন। এরপর ৮৮৪ খ্রিষ্টাব্দে আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর ইবনে আব্দুল আজিজের সময়ে দ্বিতীয়বারের মত কুরআন অনারব ভাষায় অনুবাদের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়, যা হিন্দু রাজা মেহরুকের অনুরোধে তৎকালীন সিন্ধু বা ভারতীয় উপমহাদেশের অধিবাসীদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। এরপর ১০ম থেকে ১২শ শতাব্দীর মধ্যবর্তী সময়ে সামানি সম্রাট প্রথম মনসূরের শাসনামলে তার উদ্যোগে ফারসি ভাষায় তাফসীরে ইবনে কাসীর-সহ কুরআনের পূর্নাঙ্গ অনুবাদ তৈরি করা হয়। এরপর বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাষায় কুরআন এক বা একাধিকবার আংশিক বা পূর্নাঙ্গভাবে অনূদিত হয়েছে। বর্তমানে পৃথিবীর প্রধান ভাষাগুলোর প্রায় সবগুলোতেই কুরআনের পূর্নাঙ্গ অনুবাদ উপলব্ধ।

বাংলা ভাষায় কুরআনের প্রধান অনুবাদসমূহ

পঠন

পঠনের নিয়ম

=> এটি তারতিলের সাথে সুর করে তিলাওয়াত করতে হয়।

বৈকল্পিক পাঠ

লিখন ও মুদ্রণ

লিখন

মুদ্রণ

সমালোচনা

অন্যান্য সাহিত্যের সঙ্গে সম্পর্ক

আরও দেখুন

টীকা

  • ^[টী১] সাহিত্যিক আরবি উচ্চারণ আঞ্চলিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে থাকে। প্রথম স্বরের শব্দ "ও" বা "উ" হতে পারে, আর দ্বিতীয় স্বরের শব্দ "অ্যা" বা "আ" হতে পারে। উদাহরণে : মিশরে উচ্চারণ হবে "কোর'আন" আর সংযুক্ত আরব আমিরাতে উচ্চারণ হবে "কুর'অ্যান"।

তথ্যসূত্র

  1. Nasr, Seyyed Hossein (২০০৭)। "Qurʼān"Encyclopædia Britannica Online। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-১১-০৪
  2. Margot Patterson, Islam Considered: A Christian View, Liturgical Press, 2008 p.10.
  3. Mir Sajjad Ali, Zainab Rahman, Islam and Indian Muslims, Guan Publishing House 2010 p.24, citing N. J. Dawood's judgement.
  4. Alan Jones, The Koran, London 1994, আইএসবিএন ১৮৪২১২৬০৯১, opening page.
    "Its outstanding literary merit should also be noted: it is by far, the finest work of Arabic prose in existence."
  5. Arthur Arberry, The Koran Interpreted, London 1956, আইএসবিএন ০৬৮৪৮২৫০৭৪, p. 191.
    "It may be affirmed that within the literature of the Arabs, wide and fecund as it is both in poetry and in elevated prose, there is nothing to compare with it."
  6. Lambert, Gray (২০১৩)। The Leaders Are Coming!। WestBow Press। পৃষ্ঠা 287। আইএসবিএন 9781449760137।
  7. Roy H. Williams; Michael R. Drew (২০১২)। Pendulum: How Past Generations Shape Our Present and Predict Our Future। Vanguard Press। পৃষ্ঠা 143। আইএসবিএন 9781593157067।
    • Chronology of Prophetic Events, Fazlur Rehman Shaikh (2001) p. 50 Ta-Ha Publishers Ltd. *Quran 17:105
  8. Living Religions: An Encyclopaedia of the World's Faiths, Mary Pat Fisher, 1997, page 338, I.B. Tauris Publishers.
  9. কুরআন 17:106
  10. Peters, F.E. (২০০৩)। The Words and Will of GodPrinceton University Press। পৃষ্ঠা 12–13। আইএসবিএন 978-0-691-11461-3।
  11. Brannon M. Wheeler (১৮ জুন ২০০২)। Prophets in the Quran: An Introduction to the Quran and Muslim Exegesis। A&C Black। পৃষ্ঠা 2। আইএসবিএন 978-0-8264-4957-3।
  12. Chejne, A. (1969) The Arabic Language: Its Role in History, University of Minnesota Press, Minneapolis.
  13. Nelson, K. (1985) The Art of Reciting the Quran, University of Texas Press, Austin
  14. Speicher, K. (1997) in: Edzard, L., and Szyska, C. (eds.) Encounters of Words and Texts: Intercultural Studies in Honor of Stefan Wild. Georg Olms, Hildesheim, pp. 43–66.
  15. Taji-Farouki, S. (ed.) (2004) Modern Muslim Intellectuals and the Quran, Oxford University Press, Oxford
  16. "Qur'ān, Chapter 15, Verse 9"। ২ এপ্রিল ২০০৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৬ এপ্রিল ২০০৭
  17. BYU Studies, vol. 40, number 4, 2001. Page 52
  18. মাআরিফুল কুরআনের বাংলা অনুবাদ।
  19. আল-ইহকাম, আল-আমিদি
  20. ইতকান(পৃষ্ঠা-৭৯),১ম খন্ড,জালালুদ্দিন সুয়ুতি
  21. ইতকান(পৃষ্ঠা-৮০),১ম খন্ড,জালালুদ্দিন সুয়ুতি
  22. Sydney Nettleton Fisher, The Middle East: a history, p.55
  23. Jaffer, Abbas (২০০৯)। An introduction to Qurʼanic sciences = ʻUlūm al-Qurʼan (ইংরেজি ভাষায়)। ICAS Press। পৃষ্ঠা 16। আইএসবিএন 9781904063308।
  24. ইসা বাউলাতা, Literary Structure of Qur'an, এনসাইক্লোপিডিয়া অফ দ্য কুরআন, vol.3 p.192, 204

বহিঃসংযোগ

অনুবাদসমূহ

তথ্যানুসন্ধান

  • quran.gov.bd গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রনয়নকৃত কুরআন ওয়েবসাইট
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.