সূরা আত-তাওবাহ্
সূরা আত-তাওবাহ্, (আরবি: سورة التوبة, "অনুশোচনা"), যা সূরা বার'আহ বা বার'আত (প্রত্যাখ্যান) নামেও পরিচিত[1] মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ কুরআনের নবম সূরা। এই সূরাটি মদিনায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এর আয়াত সংখ্যা ১২৯ টি।[2] আরবি তওবা অর্থ ক্ষমা (Ultimatum) - একে সূরা তওবা বলা হয়, কারণ এতে মুসলমানদের তওবা কবুল হওয়ার বর্ণনা রয়েছে। সূরাটির অন্য নাম হলো বারা'আত - একে বারা'আত বলা হয় কারণ, এতে কাফেরদের তথা অবিশ্বাসীদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ ও তাদের ব্যাপারে দায়িত্ব-মুক্তির উল্লেখ আছে।
![]() | |
শ্রেণী | মাদানী |
---|---|
নামের অর্থ | অনুশোচনা |
অন্য নাম | আল-বারাহ্ (শাস্তি থেকে অব্যাহতি) |
পরিসংখ্যান | |
সূরার ক্রম | ৯ |
আয়াতের সংখ্যা | ১২৯ |
পারার ক্রম | ১০ থেকে ১১ |
মঞ্জিল নং | ১৯ থেকে ২১ |
রুকুর সংখ্যা | ১৬ |
সিজদাহ্র সংখ্যা | নেই |
← পূর্ববর্তী সূরা | সূরা আল-আনফাল |
পরবর্তী সূরা → | সূরা ইউনুস |
আরবি পাঠ্য · বাংলা অনুবাদ |
বৈশিষ্ট্য
বিসমিল্লাহ-হীনতা
এই সূরার বৈশিষ্ট্য হলো এর শুরুতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম লেখা হয় না। কারণ কোরআন শরীফের বিভিন্ন অংশ ২৩ বছরের দীর্ঘ পরিসরে অবতীর্ণ হয়েছিল। কখনও একটি পূর্ণাঙ্গ সূরাও ভেঙে ভেঙে অবতীর্ণ হতো। জিব্রাইল (আ:) তা কোথায় বসাতে হবে, তা বলে দিতেন। যখন বিসমিল্লাহ অবতীর্ণ হতো তখন বোঝা যেত, আগের সূরার অবতরণ শেষ হয়েছে। কিন্তু সূরা তওবা অবতরণে কোনো বিসমিল্লাহ অবতীর্ণ হয়নি এবং রাসুল(সা:)ও তা লিখে যেতে নির্দেশ দেননি। এই অবস্থায় রাসুল(সা:) ইন্তেকাল করেন। পরবর্তিতে খলীফা ওসমান গনী [রাঃ] বিসমিল্লাহ দেখতে না পেয়ে একে অন্য সূরার অন্তর্ভুক্ত মনে করেন। অনেকে একে সূরা আনফালের অংশ মনে করেন। তাই আয়াত-সংখ্যার দিক দিয়ে বেশি হওয়াসত্ত্বেয় সাবধানতার খাতিরে কোরআন সংকলনের সময় একে সূরা আনফালের পরে স্থান দেয়া হয়েছে।[3]
যেহেতু অবতরণের সময়ই এর শুরুতে বিসমিল্লাহ ছিল না, তাই বিজ্ঞ 'আলেমদের বক্তব্য হলো, কেউ যদি সূরা আনফালের পরে সূরা তওবা পড়ে, তাহলে সে বিসমিল্লাহ পড়বে না; তবে কেউ যদি পরম্পরাহীনভাবে সূরা তওবাই প্রথমে পড়ে, তাহলে বিসমিল্লাহ জুড়ে নিবে। অনেকে বিসমিল্লাহ'র বদলে 'আঊযুবিল্লা-হি মিন না-র পড়ে থাকেন, যার কোনো ভিত্তি কোনো বিশুদ্ধ হাদিস থেকে প্রমাণিত নয়।[3]
অবিশ্বাসীদের সাথে সম্পর্কের আলোচনা
সূরা তওবার সর্বত্র কিছু যুদ্ধ (মক্কা বিজয়, হোনাইন যুদ্ধ, তাবুক যুদ্ধ), যুদ্ধ সংক্রান্ত ঘটনাবলী এবং এসংক্রান্ত হুকুম, মাসায়েল ইত্যাদির বর্ণনা রয়েছে। এসকল যুদ্ধের প্রেক্ষিতে আরবের সকল গোত্রের সাথে সকল চুক্তি বাতিলের নির্দেশ আসে। আমিন[4]
তথ্যসূত্র
- Nasr, Seyyed Hossein (২০১৫)। The Study Qur'an। New York: HarperCollins। পৃষ্ঠা 503। আইএসবিএন 978-0-06-112586-7।
- পবিত্র কোরআনুল করীম (বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তফসীর) - মূল: তাফসীরে মা'আরেফুল ক্বোরআন, হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মদ শাফী'; অনুবাদ ও সম্পাদনা: মাওলানা মহিউদ্দীন খান। সউদী আরবের শাসক বাদশাহ ফাহদ ইবনে আবদুল আজীজের নির্দেশে ও পৃষ্ঠপোষকতায় মুদ্রিত।
বহিঃসংযোগ
- সূরা আত-তাওবাহ্, quran.com এ বিভিন্ন ভাষার অনুবাদ সহ
- আবৃত্তি ইউটিউবে