ফেরেশতা

ফিরিশতা বা ফেরেশতা(আরবি: ملاءكة)(ইংরেজি: Angels) ইসলামী বিশ্বাসমতে স্বর্গীয় দূত। আরবিতে ফেরেশতাদের একবচনে মালাইক ও বহুবচনে মালাক বলে। তাদের সম্পর্কে বলা হয়, তারা মানুষের ন্যায় আল্লাহর আরেক সৃষ্টি। তারা দিনরাত ক্লান্ত না হয়ে আল্লাহ্‌-র পবিত্রতা ও মহিমা বর্ণনা করেন[1] এবং আল্লাহর অবাধ্য হবার কোনো ক্ষমতা তাদের নেই। ফেরেশতারা নূর তথা আলোর তৈরি।[2] তারা খাদ্য ও পানীয় গ্রহণ করেন না। তারা পবিত্র স্থানে অবস্থান করেন। তারা যেকোনো স্থানে গমনাগমন ও আকৃতি পরিবর্তনের ক্ষমতা রাখেন। ইসলাম, খ্রিস্টান ও ইহুদী ধর্ম ছাড়া হিন্দু ধর্মেও ফেরেশতা তথা স্বর্গীয় দূতদের অস্তিত্ত্বের কথা বলা হয়েছে।

কুরআনে ফেরেশতাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে,

"তারা আল্লাহ তা’আলা যা আদেশ করেন, তা অমান্য করে না এবং যা করতে আদেশ করা হয়, তাই করে।"[কুরআন 66:6]


শ্রেণীবিন্যাস

ফেরেশতাদের সংখ্যা অগণিত। কোনো কোনো ইসলামী চিন্তাবিদ কাজের উপর ভিত্তি করে ফেরেশতাদের চৌদ্দটি শ্রেণীতে ভাগ করে থাকেন। যাদের মধ্যে চারজনকে উচ্চমর্যাদার ফেরেশতা বলা হয়ে থাকে।

  1. হামালাত আল-আরশ: যেসমস্ত ফেরেশতা আল্লাহর আরশ ধরে রাখে।
  2. জিবরাইল [আ.]: এই ফেরেশতার নাম তিনবার ইসলাম ধর্মের ধর্মগ্রন্থ কুরআন শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে। কুরআনে তাকে পবিত্র আত্মা বা রুহুল কুদুস বলা হয়েছে।[3] আল্লাহর আদেশ-নিষেধ এবং সংবাদ আদান-প্রদান যেসব ফেরেশতার দায়িত্ব, জিব্রাইল তাদের প্রধান। বলা হয়, জিব্রাইল-ই আল্লাহর নবীদের বা বাণীবাহকদের কাছে ওহী পৌছিয়ে দিতেন।
  3. মিকাইল [আ.]: কুরআনে এই ফেরেশতার নাম উল্লেখ করা হয়েছে।[4] ইনি বৃষ্টি ও খাদ্য উৎপাদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত।
  4. ইসরাফিল [আ.]: এই ফেরেস্তা কিয়ামত বা মহাপ্রলয় ঘোষণা করবেন। তার নাম কুরআন শরীফে নেই কিন্তু হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে।
  5. আজরাইল [আ.]: তাকে কুরআনে মালাক আল-মাউত নামে অভিহিত করা হয়েছে।[5]

ইনি মৃত্যুর ফেরেশতা ও প্রাণ হরণ করেন।

  1. সাতটি বেহেশতের ফেরেশতাগণ।
  2. হাফাজা বা তত্ত্বাবধায়ক ফেরেশতাগণ।
  3. মুনকার ও নাকীর: কবরে প্রশ্নকারী ফেরেশতাদ্বয়।
  4. দারদায়িল[6]
  5. মালিক: জাহান্নাম বা নরক তত্ত্বাবধানকারী ফেরেশতা।
  6. রেদওয়ান: জান্নাত বা স্বর্গ তত্ত্বাবধানকারী ফেরেশতা।
  7. জাবানিয়া: জাহান্নামে দায়িত্ব পালনকারী ফেরেশতাগণ।
  8. নিয়ম শৃঙ্খলা পালনকারী ফেরেশতাগণ।

এছাড়াও বিশেষ দুজন ফেরেশতা কিরামুন ও কাতিবীন প্রতিজন মানুষের ভালো-মন্দ কাজের হিসাব রাখেন।[7]

আল কুরআনে ফেরেশতাগণ

  • জিবরাইল [আ.] ও মিকাইল [আ.]-এর নাম আল কুরআনের সুরা বাকারাহ'র ৯৭-৯৮ নং আয়াতে উল্লেখ রয়েছে।[8]
  • মালিক ফেরেশতার নাম ৪৩ নং সূরা আয-যুখরফে ৭৭ নং আয়াতে উল্লেখ আছে।[9]

তথ্যসূত্র

  1. কুরআন 21:20
  2. "Angels"। ১০ এপ্রিল ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ ডিসেম্বর ২০১৬
  3. কুরআন 16:102
  4. কুরআন 2:98
  5. কুরআন 32:11
  6. "Darda'il on Dinul-islam.org"। ২৫ জুলাই ২০১১ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১১
  7. কুরআন 82:10–11
  8. কুরআন 2:97–98
  9. কুরআন 43:77
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.