সন্তোষ চন্দ্র ভট্টাচার্য

সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য (জন্ম: ১৯১৫ - মৃত্যু: ১৯৭১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের একজন শিক্ষক ছিলেন এবং তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের একজন শহীদ বুদ্ধিজীবী।[1] বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের আত্মসমর্পণের পূর্বে বহু বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে তিনিও পাক হানাদারদের হাতে নিহত হন।[2]

সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য
জন্ম১৯১৫
মৃত্যু১৯৭১
জাতীয়তাবাংলাদেশী
নাগরিকত্ব বাংলাদেশ
পরিচিতির কারণশিক্ষক, বুদ্ধিজীবী

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

১৯১৫ সালের ৩০শে আগষ্ট তিনি ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলায় এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৭ সালে ইতিহাসে সম্মানের সাথে ব্যাচেলর অব আর্টস এবং ১৯৩৮ সালে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। উভয় পরীক্ষায় তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছিলেন।

কর্মজীবন

১৯৩৯ সালে তিনি জগন্নাথ কলেজ এ প্রভাষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং সেখানে ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত পড়িয়েছেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বয়োঃজ্যেষ্ঠ প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন এবং মৃত্যু পর্যন্ত সেখানেই কর্মরত ছিলেন। সংস্কৃত ভাষায় পণ্ডিত এই গুণী বাংলা এবং ভারত উপমহাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি এক সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের প্রভোষ্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

পুরস্কার ও সম্মাননা

হত্যা

১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর দুপুরবেলা মাইক্রবাস নিয়ে কয়েকজন ছাত্র এসে সন্তোষচন্দ্র ভট্টাচার্যকে বলে "স্যার আমাদের সাথে যেতে হবে"। তাকে চোখ বাধা অবস্থায় বর্তমান মীরপুর শহীদ মিনারে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। সন্তোষচন্দ্রর লাশ যখন পাওয়া যায় তখন তার মুখের ভিতর কোন দাঁত ছিল না, মাথায় কোন চুলও ছিল না। [3]

বুদ্ধিজীবী হত্যার রায়

৩রা নভেম্বর, ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, চৌধুরী মুঈনুদ্দীন এবং আশরাফুজ্জামান খান কে ১৯৭১ সালের ১০ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সন্তোষচন্দ্রসহ ১৮ জন বুদ্ধিজীবীকে অপহরণের পর হত্যার দায়ে ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।[4][5]

তথ্যসুত্র

  1. শহীদ বুদ্ধিজীবীদের উপর ডেইলী স্টারের রিপোর্ট, ডিসেম্বর ১৪, ২০০৯
  2. সুবোধ সেনগুপ্ত ও অঞ্জলি বসু সম্পাদিত, সংসদ বাঙালি চরিতাভিধান, প্রথম খণ্ড, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, নভেম্বর ২০১৩, পৃষ্ঠা ৭৬৫, আইএসবিএন ৯৭৮-৮১-৭৯৫৫-১৩৫-৬
  3. ড. নীলিমা ইব্রাহিম, স্মৃতি ১৯৭১, দ্বিতীয় খণ্ড, পৃ ১৪৯, বাংলা একাডেমী, ঢাকা, ISBN = 9-840-72715-X
  4. বুদ্ধিজীবী হত্যার সাজা ফাঁসি, প্রথম আলো দৈনিক পত্রিকা, লেখক: কুন্তল রায় ও মোছাব্বের হোসেন, ৪ঠা নভেম্বর, ২০১৩।
  5. মুঈনুদ্দীন ও আশরাফুজ্জামান খানের মৃত্যুদণ্ড, আকবর হোসেন, বিবিসি বাংলা, ঢাকা, ৩রা নভেম্বর, ২০১৩।

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.