শঙ্খনিধি হাউজ
শঙ্খনিধি হাউস পুরান ঢাকার টিপু সুলতান রোডে অবস্থিত একটি শতবর্ষী পুরাতন ভবন। এই ভবনটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঐতিহ্যবাহী ৩২ টি ভবনের তালিকা এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশন ও রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ এর ৯৩ টি ঐতিহাসিক নান্দনিক ভবনের তালিকার অন্তর্ভুক্ত। [1]

শঙ্খনিধি হাউজ | |
---|---|
![]() শঙ্খনিধি হাউজের দ্বিতল ভবন | |
ধর্ম | |
অন্তর্ভুক্তি | হিন্দুধর্ম |
জেলা | ঢাকা জেলা |
অবস্থান | |
দেশ | বাংলাদেশ |
স্থাপত্য | |
সৃষ্টিকারী | লালমোহন সাহা |
ইতিহাস
বিশ শতকের শুরুর দিকে লালমোহন সাহা বণিক, ভজহরি সাহা বণিক ও গৌর নিতাই সাহা বণিক ব্যাবসায় বেশ উন্নতি লাভ করেন। বিত্তশালী হওয়ার পর তারা বণিক উপাধি বর্জন করে ‘শঙ্খনিধি’ (শঙ্খের বাহক) উপাধি গ্রহণ করেন। ১৯২০-১৯২৬ সালের দিকে তারা ঢাকার কিছু ভূসম্পত্তির মালিক হন এবং সেখানে কিছু ভবন নির্মিত হয়। ঢাকার টিপু সুলতান রোড থেকে ওয়ারীর র্যাঙ্কিন স্ট্রিট পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে এই ভবনগুলো গড়ে ওঠে। বণিক ভ্রাতৃত্রয়ের মধ্যে লালমোহন সাহা ১৯২১ সালে শঙ্খনিধি হাউস নির্মাণ করেন।[2][3]
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ভবনের হিন্দু অধিবাসীগণ ভারতে চলে যায় এবং ভবনটি ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিকারে আসে। মন্ত্রণালয় ভবনটি অযৌক্তিকভাবে ব্যক্তি মালিকানায় হস্তান্তর করে। ১৯৮০ সালে শঙ্খনিধি হাউস প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৯১ সালে শঙ্খনিধি হাউসের একাংশ ও নাচঘর ভেঙে ফেলা হয়।[2]
স্থাপত্যশৈলী
শঙ্খনিধি হাউস একটি দ্বিতল ভবন। এতে গোথিক-ইন্ডিয়ান ও ইন্দো-সারাসিন রীতির প্রভাব দেখা যায়। এর সম্মুখভাগে একটি কারুকাজ করা সুদৃশ্য ফটক রয়েছে। কেন্দ্রে রয়েছে ষড়ভুজাকৃতি স্তম্ভ। ভবনের দুইপাশে তিনটি করে প্রবেশ পথ বিদ্যমান। দেয়ালের পলেস্তারায় দৃষ্টিনন্দন লতাপাতা ও ফুলের নকশা নজর কাড়ে। ভবনের উত্তরদিকে রয়েছে একটি মন্দির।
বর্তমান অবস্থা
বর্তমানে শঙ্খনিধি হাউস অরক্ষিত অবস্থায় দখলদারদের কবলে পড়ে নিজের জৌলুস হারিয়ে কোনোমতে টিকে আছে। দখলদারদের কেউ কেউ গ্যারেজ ও দোকানপাট বসিয়েছে, কেউ বা সপরিবারে বসবাস করছে।[4] ২০১১ সালের ডিসেম্বরে দখলদাররা উত্তরদিকের মন্দির ভাঙতে শুরু করে এবং দোতলার ছাদ সম্পূর্ণ ভেঙে ফেলে। বর্তমানে (সেপ্টেম্বর ২০১৬) মন্দিরের দরজা তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।

চিত্রশালা
- শঙ্খনিধি হাউজের একাংশ
- ভবনের ভিতরের দৃশ্য
- অযত্নে থাকা শঙ্খনিধি হাউজ
- শঙ্খনিধি ফটকের স্তম্ভ
- শঙ্খনিধি ভবনের একাংশ
তথ্যসূত্র
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে শঙ্খনিধি হাউজ সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
বহিঃসংযোগ
- প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী শঙ্খনিধি বাড়ি বাংলাদেশ প্রতিদিন, ২৯ এপ্রিল ২০১৮, পেছনের পাতা।