রাজাসন ঢিবি

রাজাসন ঢিবি বাংলাদেশের ঢাকা জেলাধীন সাভার উপজেলার মজিদপুরে অবস্থিত ঐতিহাসিক ও পুরাতাত্বিক স্থাপনার ধ্বংসাবশেষ। এই ঢিবি সম্ভোগ রাজ্যের রাজা বা শাসক হরিশচন্দ্রের প্রাসাদেরই অস্তিত্বের সাক্ষ্য বহন করে। খৃস্টীয় সপ্তম-অষ্টক শতকে রাজা হরিশচন্দ্র এই এলাকায় বাস করতেন। এই ঢিবি ও আশপাশে বেশ কয়েকবার প্রত্নতাত্ত্বিক খনকার্য করা হয়েছিল, যার ফলে উদ্ধার হয় একটি বৌদ্ধ বিহারসহ অনেক পুরাতাত্ত্বিক বস্ত।[1] বর্তমানে এই ঢিবি সরকারি তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা।

রাজাসন ঢিবি
সাভারে অবস্থিত রাজাসন ঢিবির দৃশ্য
সাধারণ তথ্য
অবস্থানমজিদপুর
ঠিকানাসাভার উপজেলা
শহরঢাকা
দেশবাংলাদেশ
স্বত্বাধিকারীবাংলাদেশ প্রত্নতাত্বিক অধিদপ্তর

ইতিহাস

খৃস্টীয় সপ্তম-অষ্টক শতকে বর্তমান সাভার ছিল সম্ভোগ রাজ্যের অন্তর্গত। এটি তৎকালীন ব্যবসা-বাণিজ্যের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল। আরব ও মধ্য এশিয়া থেকে বণিকরা এখানে বাণিজ্য কাজে আসতেন। বংশী নদীর তীরবর্তী হওয়ায়, নদী পথেই বাণিজ্য চলতো। রাজা হরিশচন্দ্রের প্রাসাদটি অবস্থিত ছিল বর্তমান মজিদনগর এলাকায়। সে প্রাসাদের বহুলাংশই কালের বিবর্তনে ও অবহেলার দরুণ ধ্বংস হয়ে গেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় জানা যায়, এই এলাকা ছিল বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত।[2][3]

প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য

১৯১৮ সালে ড. নলিনীকান্ত ভট্টশালী রাজাসন ঢিবিতে প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য চালান। এতে পাওয়া যায় একটি বৌদ্ধ বিহার ও বেশ কিছু পুরাতাত্ত্বিক বস্ত, প্রাচীন মুদ্রা। ধারণা করা হয়, সপ্তম শতকে এই অঞ্চলে বৌধ ধর্মের একটি কেন্দ্র ছিল। বৌদ্ধ বিহারটির চার ধরনের নির্মাণ শৈলী দেখে ধারণা করা হয়, দীর্ঘকাল ধরেই তা ব্যবহৃত হয়েছিল। ১৯৯০-৯১ সালে এখানে আরেকবার প্রত্নতাত্তিক খননকার্য হয়, পাওয়া যায়,স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা এবং ব্রোঞ্জ নির্মিত ধ্যানী বুদ্ধ ও তান্ত্রিক মূর্তি।[4] ব্রোঞ্জের মূর্তি দেখে ধারণা করা হয়, এই অঞ্চল ছিল মহাযানী বৌদ্ধ মতাদর্শের অন্যতম কেন্দ্র। এছাড়া খননকার্যে পাওয়া যায় ধূতি পরিহিত, কিরিট মুকুট, চুড়ি, হার, কোমরবন্ধ, বাজুবন্ধ সজ্জিত লোকেশ্বর-বিষ্ণুমূর্তি, পদ্মপানি, ধ্যানী বুদ্ধ, অবলোকিতেশ্বর ও প্রজ্ঞা পারমিতা প্রভৃতি ভাস্কর্য নিদর্শন।[1]

গ্যালারি

তথ্যসূত্র

  1. "রাজা হরিশ্চন্দ্রের প্রাসাদ-ঢিবি"প্রথম আলো। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০১৬
  2. "হরিশচন্দ্র রাজার বাড়ি"। দৈনিক সমকাল। মার্চ ৫, ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০১৬
  3. "'বংশাবতীর পূর্ব তীরে সর্বেশ্বর নগরী'"। দৈনিক সংগ্রাম। সংগ্রহের তারিখ অক্টোবর ১০, ২০১৬
  4. [রত্নতত্ত্ব :উদ্ভব ও বিকাশ_ মোঃ মোশারফ হোসন, ১৯৯৮, পৃ. ১৯৭-১৯৮]
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.