চন্দ্রাবতী মন্দির

চন্দ্রাবতী মন্দির বাংলাদেশের কিশোরগঞ্জ জেলায় অবস্থিত বাংলা আদি মহিলা কবি খ্যাত চন্দ্রাবতীর স্মৃতিবাহী একটি স্থাপনা। চন্দ্রাবতী বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে প্রথম বাঙালি মহিলা কবি হিসেবে সুবিখ্যাত। চন্দ্রাবতী মন্দির বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তর কর্তৃক তালিকাভুক্ত একটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা। প্রকৃতপক্ষে মন্দিরটি একটি শিব মন্দির। কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলাধীন মাইজখাপন ইউনিয়নের কাচারীপাড়া গ্রামে ফুলেশ্বরী নদীর তীরে শিবমন্দিরটির অবস্থান।[1]

চন্দ্রাবতী মন্দির
বিকল্প নামচন্দ্রাবতী শিবমন্দির
সাধারণ তথ্য
অবস্থানকিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা
ঠিকানাকাচারীপাড়া গ্রাম, মাইজখাপন ইউনিয়ন
শহরকিশোরগঞ্জ
দেশবাংলাদেশ
স্থানাঙ্ক২৪.৪৯৫৬৬২° উত্তর ৯০.৮০০৮৮৪° পূর্ব / 24.495662; 90.800884
স্বত্বাধিকারীবাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর
উচ্চতা৩২ ফিট
যে কারণে পরিচিতচন্দ্রাবতী

ইতিহাস

ষোড়শ শতকের মনসা মঙ্গলের বিখ্যাত কবি দ্বিজ বংশীদাসের কন্যা ও বঙ্গের আদি মহিলা হলেন চন্দ্রাবতী। চন্দ্রাবতী শিবমন্দিরটি বস্তত তাঁর বহু কাহিনী ও ঘটনাকে ধারণ করে। ষোড়শ শতকের দ্বিতীয় ভাগে কবি চন্দ্রাবতীর জন্য নির্মিত হয় এই মন্দিরটি। কবি চন্দ্রাবতী ছিলেন অত্যন্ত প্রতিভাধারী ও সম্ভাবনাময় সাহিত্যিক। নয়নঘোষ প্রনীত পালাগান ‘চন্দ্রাবতী’ থেকে জানা যায় যে, কৈশোরে চন্দ্রাবতী ও স্থানীয় এক ব্রাহ্মনযুবক জয়ানন্দের মধ্যে মনের আদান-প্রদান হয়। তাদের এ ভালবাসার কথা চন্দ্রাবতীর পিতা বংশীদাস মেনে নেন। কথা অনুযায়ী তাদের মধ্যে তিনি বিয়ের ব্যবস্থাও করেন। কিন্তু পরিশেষ জয়ানন্দ কথা অনুযায়ী বিয়ে না করে অপর এক মুসলিম রমণী কমলাকে বিয়ে করেন। এই বিয়ের জন্য জয়ানন্দ ধর্মান্তরিত হন। এই ঘটনায় চন্দ্রাবতী ভীষণভাবে ভেঙে পড়েন। তিনি পিতার কাছে এসময় তাঁর উপাসনার জন্য একটি মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য অনুরোধ করেন। এছাড়া চন্দ্রাবতী সিদ্ধান্ত নেন তিনি চিরকুমারী থাকবেন। তাঁর পিতা কন্যার আবদার অনুযায়ী ফুলেশ্বরী নদী তীরে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সে অবধি এটি চন্দ্রাবতী মন্দির নামে দাঁড়িয়ে আছে ফুলেশ্বরী নদীতীরে।[1]

বিবরণ

চন্দ্রাবতী মন্দিরিটি আকৃতিতে অষ্টভুজাকৃতির। মন্দিরের উচ্চতা প্রায় ৩২ ফুট। এর আত বাহুর প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৮ ফুট। মন্দিরের নিচতলায় আছে একটি কক্ষ ও তাতে প্রবেশের পথ। কক্ষের ভেতরে রয়েছে ৭টি কুলুঙ্গি। মন্দিরের দ্বিতীয় তলাতে আছে একটি প্রশস্ত কুলুঙ্গি এবং পোড়ামাটির সুদৃশ্য কাজ। দ্বিতীয় তলা থেকেই মন্দিরটি ক্রমশ সরু হয়ে ৩২ ফুট পর্যন্ত উচ্চতায় গিয়ে শেষ হয়েছে। এর চূড়ায় রয়েছে ১৯৯০ এর দশকে প্রত্নতত্ত্ব মন্দিরটির কিছু অংশ সংস্কার করে।[1]

তথ্যসূত্র

  1. "জেলার ঐতিহাসিক ও দর্শণীয় স্থান"। কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসন। ১৭ অক্টোবর ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৫ অক্টোবর ২০১৬

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.