রাজশাহী মেডিকেল কলেজ

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ রাজশাহী শহরে অবস্থিত একটি সরকারি মেডিকেল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি রাজশাহী চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় নামেও পরিচিত। শুরু থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত । প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫৮ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয়।[1] বতর্মানে ১৮ টি অনুষদের মাধ্যমে স্নাতক পর্যায়ে এমবিবিএস এবং বিডিএস এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এমএস, এমফিল, এমডি, এমপিএইচ এবং ডিপ্লোমা ডিগ্রি প্রদান করা হয়। স্নাতক পর্যায়ে আসন সংখ্যা ২০০। এছাড়া সাকর্ভুক্ত দেশগুলোর ছাত্রছাত্রীদের জন্যও কিছু আসন বরাদ্দ রয়েছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ
রামেক/রাচিম
রাজশাহী মেডিকেল কলেজের লোগো
স্থাপিত১৯৫৮
অধ্যক্ষঅধ্যাপক ডা.নওশাদ আলী
অবস্থান,
সংক্ষিপ্ত নামRMC (রামেক/রাচিম)
ওয়েবসাইটhttp://www.rmc.gov.bd

ইতিহাস

১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির সাথে সাথে রাজশাহী বিভাগ তদানীন্তন বিভাগীয় শহর জলপাইগুড়ি থেকে পৃথক হয়ে যায় এবং মেডিকেল স্কুল, হাসপাতাল সহ বড় বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভারতের মধ্যে চলে যায় ফলে রাজশাহী বিভাগ মেডিকেল শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে পড়ে।

পরবর্তীকালে ১৯৪৯ সালে কিছু শিক্ষানুরাগী, স্বনামধন্য সমাজসেবী, রাজনৈতিক বরেণ্য ব্যক্তিবর্গসহ প্রশাসন এর সাথে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ সম্পূর্ণ বেসরকারিভাবে রাজশাহী শহরে একটি মেডিকেল স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে স্টেট মেডিকেল ফ‍্যাকাল্টি ঢাকা এর অধীনে চার বছর মেয়াদী এল.এম.এফ ডিপ্লোমা কোর্স চালু করেন। প্রথম বছরে ৮০ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়। সাহেব বাজারের কো-অপারেটিভ বিল্ডিং স্কুল এর শ্রেণীকক্ষে স্কুলের ক্লাসরুম হিসাবে ব্যবহৃত হত।বর্তমান টিবি ক্লিনিক ভবনের নীচতলায় মেডিকেল স্কুলের বিভাগুলো স্থাপিত হয়েছিল।এনাটমি বিভাগের শব ব্যবচ্ছেদের জন্য বরেন্দ্র জাদুঘর ভবন প্রাঙ্গণের পশ্চিমদিকে একটি ভবন তৈরি করা হয়েছিল। রাজশাহী কলেজের বিপরীতে আলমগীর হোস্টেল ছেলেদের ও সিভিলসার্জন অফিসের বিপরীতে 'কছিরন ভিলা' মেয়েদের হোস্টেল হিসাবে ব্যবহৃত হত। ১৯৫৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকার এটিকে সরকারি মেডিকেল কলেজে রূপান্তরিত করেন। ১৯৫৮ সালে এটি পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল কলেজে পরিণত হয়। সেই থেকে শুরু হলো রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (RMC) এর পথ চলা। ঢাকা মেডিকেল কলেজের পর এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় মেডিকেল কলেজ । প্রথমে এনাটমি ও ফিজিওলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ছিলেন যথাক্রমে কলেজের ১ম অধ্যক্ষ লেঃ কর্ণেল গিয়াস উদ্দীন আহমেদ ও অধ্যাপক ডাঃ নায়েব আলী।মাত্র ৫ জন অফিস স্টাফ নিয়ে কলেজের যাত্রা শুরু হয়। প্রথম ব্যাচে ২ জন ছাত্রী সহ মোট ৪৩ জন ছাত্র ভর্তি হয়। কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরটি প্রায় ৯০ একর জমির উপর অবস্থিত । মেডিকেল স্কুলের জন্য তৈরি ভবনটিই বর্তমান কলেজ বিল্ডিং যা ৩০ বিঘা জমির উপর নির্মিত । মেডিসিন, সার্জারি ও অবস্-গাইনি বিভাগ নিয়ে তিনতলা বিশিষ্ট ৫৩০ শয্যার হাসপাতালটি ১৯৬৫ সালের এপ্রিল মাসে চালু হয় । হাসপাতাল ভবনটি প্রায় ৬০ একর জমির উপর নির্মিত যা পূর্বে কৃষি ফার্ম ছিল। ২০ শয্যা বিশিষ্ট সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ও ১৫০ শয্যার সদর হাসপাতাল কলেজের অন্তর্ভুক্ত ছিল । পরে সদর হাসপাতাল ডেন্টাল ইউনিটে রূপান্তরিত করা হয় ।

বর্তমান কলেজে এম বি বি এস, বি ডি এস ও বিভিন্ন বিষয়ে পোস্ট গ্রাজুয়েট কোর্স চালু আছে। বিডিএস কোর্স ১৯৯০ সালে এবং পোস্ট গ্রাজুয়েট কোর্স ১৯৯৮ সালে চালু হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজে বিভিন্ন দেশ থেকে অনেক ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ভারত, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ভুটান, ইরাক, ইরান উল্লেখযোগ্য। জেনারেল মেডিকেল কাউন্সিল, গ্রেট ব্রিটেন ১ লা জুলাই ১৯৯২ সালে এই কলেজকে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে এই কলেজের বহু সংখ্যক চিকিৎসক, ছাত্র-ছাত্রী ও কর্মচারী অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শহীদ মিনার নির্মিত হয়। ২০০৬ সালে শিক্ষক সমিতির উদ্যোগে শহীদ মিনারের পার্শ্বে মুক্তিযুদ্ধে শহীদ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৬ জনের নাম দিয়ে একটি স্মৃতিফলক স্থাপিত হয়। [2]

কলেজ অবকাঠামো ও হোস্টেল

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ভবন

কলেজ ভবনে কম্পিউটার মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর সহ ৪টি গ্যালারি, ৯টি ল্যাবরেটরি, ২টি মিউজিয়াম, ২টি ব্যবচ্ছেদ কক্ষ, ১টা পোস্ট-মর্টেম ঘর, ১ টা লাইব্রেরি ও ২টা ছাত্র-ছাত্রীদের কমনরুম রয়েছে। ১৯৯০ সালে মূল ভবনের পূর্বদিকে নতুন ফার্মাকোলজি ভবন তৈরি করা হয়। এই ভবনের পূর্বদিকে ১৯৯৫ সালে একটি সুন্দর ও অত্যাধুনিক ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ১০০০ আসন বিশিষ্ট অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হয় যা বর্তমানে 'কাইছার রহমান চৌধুরী অডিটোরিয়াম' নামে নামকরণ করা হয়েছে। মূল ভবনের উত্তর-পূর্বদিকে আরেকটি নতুন ভবন নির্মাণ করা হয় ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের জন্য। ২০১০ সালে এটি চালু করা হয়। এছাড়া কলেজ চত্বরে একটি সেবিকা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র রয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত নতুন সংস্করনের বই সহ প্রায় ১৯৫০০ টি বই ও দেশি-বিদেশি ৬০টি জার্নাল রাখা হয়। মেডিকেল এডুকেশন ইউনিটে ইন্টারনেট ব্রাউজিংসহ তথ্য প্রযুক্তির সকল সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। কলেজের রিসার্চ সেল এখানকার শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের গবেষণা কাজে সাহায্য করে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতি 'TAJ' নামে একটি মেডিকেল জার্নাল ৬ মাস অন্তর অন্তর প্রকাশ করে যা BMDC কর্তৃক স্বীকৃত।

ছাত্রদের জন্য শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কাজী নুরন্নবী ও শহীদ শাহ মঈনুল আহসান চৌধুরী পিংকু ছাত্রাবাস ও ছাত্রীদের জন্য পলিন, ফাল্গুনি ও আয়েশা সিদ্দিকা ছাত্রীনিবাস আছে। এর মধ্যে আয়েশা সিদ্দিকা ছাত্রীনিবাসটি ২০০৬ সালে উদ্বোধন করা হয়। শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের জন্য শহীদ জামিল আখতার রতন ছাত্রাবাস ও মেয়েদের জন্য আলাদা ইন্টার্নি হোস্টেল, স্টাফ কোয়ার্টার ও জিমনেশিয়াম আছে। ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত করার জন্য একটি বাস আছে।

এই কলেজে প্রথম ক্যান্টিন চালু হয় হাসপাতাল কিচেনের পাশে। পরে ১৯৬৩ সালে প্যাথলজি বিভাগের উত্তর পাশে একটি টিনের ছাউনিতে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৮২ সালে এখানে একটি পাকা একতলা ভবনে চালু হয় যা 'চারু মামার ক্যান্টিন' নামে পরিচিত। এছাড়া পিংকু ছাত্রাবাসের পাশে ২০০৬ সালে একটি ক্যান্টিন নির্মিত হয়েছে।[2]

হাসপাতাল অবকাঠামো

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেট

হাসপাতালের তিনতলা বিশিষ্ট ৫৩০ শয্যার ভবনটি ১৯৬৫ সালের এপ্রিল মাসে চালু হয়। মূল ভবনের মাঝখানে ফাঁকা জায়গাতে আরও একটি নতুন চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে যা ২০১২ সালে চালু করা হয়।এতে আরও ৩৫২ বেড ও ৬ টি অপারেশন থিয়েটার যুক্ত করা হয় , ফলে হাসপাতালের মোট বেড সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৬২।হাসপাতলে অপারেশন থিয়েটার এর উত্তর পাশে আরও একটি ভবন নির্মাণ করে তাতে ১০ বেড বিশিষ্ট আইসিইউ চালু করা হয় ২০১২ সালে [3] এবং উক্ত ভবনেই ২০১৪ সাল থেকে বার্ণ ইউনিট চালু করা হয়।[4] বর্তমানে হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১২০০।[5]

১৯৮৪ সালে স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় করোনারি কেয়ার ইউনিট স্থাপিত হয়। ১৯৯০ সালে এই কেয়ার ইউনিট কার্ডিওলজি বিভাগ হিসাবে পূর্ণতা লাভ করে। ২০১৪ সালে এই বিভাগকে আরও বর্ধিতভাবে হাসপাতালের নবনির্মিত ভবনে স্থানান্তর করা হয়। এখানে ২০০৭ সাল থেকে নিয়মিতভাবে করোনারি অ্যাঞ্জিওগ্রাম ও পেসমেকার প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে।

১৯৯১ সালে কিডনি রোগ বিভাগ ও নিউরোসার্জারি বিভাগ খোলা হয়। কিডনি রোগ বিভাগে ২০০৪ সাল থেকে হেমোডায়ালাইসিস চালু হয়েছে। ১৯৯৩ সালে শিশু সার্জারি ও ১৯৯৪ সালে নিউরোমেডিসিন চালু করা হয়। ১৯৯৬ সালে ক্যান্সার এর অত্যাধুনিক চিকিৎসার জন্য কোবাল্ট-৬০ মেশিন চালু হয়েছে।

১৯৬৯ সালে রাজশাহীতে রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা সেবা প্রদানের জন্য এই ক্যাম্পাসে পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্র চালু হয়। ২০০২ সালে নির্যাতিতা মেয়েদের চিকিৎসা ও আইনি সহায়তা দেবার জন্য OCC সেন্টার চালু হয়।২০০৫ সালে হাসপাতালের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগে সিটি স্ক্যান ও এম আর আই চালু করা হয়। ২০০৭ সালে এন্ডোস্কপি ও কলোনস্কপি চালু হয়।

ডেন্টাল ইউনিট

১৯৮৯ সালে রাজশাহীতে একটা পূর্ণাঙ্গ ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রাথমিক অবস্থায় এটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সাথে ডেন্টাল ইউনিট হিসেবে চালু হয়। প্রথমে এর আসন সংখ্যা ছিল ২০। ২০০৫ সালে আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৫০-এ উন্নীত করা হয়। ১৯৯৪ সালে ডেন্টাল ইউনিটকে সদর হাসপাতালের জায়গায় স্থানান্তর করা হয়। [6][7]

প্রথম ব্যাচে ৯ জন ছাত্র ছাত্রী ভর্তি হয়েছিল। ভূতপূর্ব সদর হাসপাতালে ডেন্টাল কলেজের নতুন চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে ২০১০ সালে।[8] ডেন্টাল ইউনিটকে রাজশাহী ডেন্টাল কলেজে রূপান্তরিত করার কাজ প্রক্রিয়াধী।

জনবল কাঠামো

১৯৬৫ সালে হাসপাতাল টি যখন ৫৫০ শয্যার ছিলো তখন যে জনবল কাঠামো ছিলো, বর্তমানে (২০১৯ সালে) ১২০০ শয্যা তে উন্নীত করা হলেও জনবল কাঠামো বাড়ানো হয় নি। হাসপাতাল টি তে চিকিৎসক পদ আছে ২৩৩টি যার মধ্যে ৩০টি পদ শূন্য আছে। এমন কি দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর মোট ৯১১ পদের মধ্যে ১৪৬ টি শূন্য আছে। আগের ৫৫০ শয্যার জনবল দিয়েই ১২০০ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি কর্যক্রম চলাতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।

সংগঠন

  • রোটারাক্ট ক্লাব
  • সন্ধানী ক্লাব
  • মেডিসিন ক্লাব
  • হাসিমুখ ফাউন্ডেশন।

কৃতি শিক্ষার্থী

তথ্যসূত্র

  1. "www.rmc.ac.bd"। ৩১ জানুয়ারি ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২২ অক্টোবর ২০১০
  2. অধ্যাপক ডাঃ, মামুন-উর-রশিদ। "সোনালী পঞ্চাশে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ,"। বনলতা (২০০৮): ১৭-১৯।
  3. "Minister inaugurates extension building, Dental Building, ICU in Rajshahi Medical College Hospital"Ministry of Health and Welfare। সংগ্রহের তারিখ 0৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১৬ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  4. "Burn unit set up at RMCH"Dhaka Tribune। সংগ্রহের তারিখ ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬
  5. "সাধারণ তথ্য"। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  6. "রাজশাহীর ডেন্টাল ইউনিট কলেজ হয়নি ২১ বছরেও"। প্রথম আলো (Prothom-Alo)। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  7. "রাজশাহী ডেন্টাল কলেজের ভবন নির্মাণ সম্পন্ন হলেও অজ্ঞাত কারণে চালু হচ্ছেনা"। দৈনিক সংগ্রাম (The Daily Sangram। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  8. "তিনটি সরকারি ডেন্টাল কলেজ স্থাপনের সিদ্ধান্ত"। কালের কণ্ঠ(The Daily Kaler Kantha)। সংগ্রহের তারিখ ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

আরও পড়ুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.