মিশর
মিশর (আরবি ভাষায: مصر মিস্ব্র্, কথ্য মিশরীয় আরবি مصر মাস্ব্র্, ইংরেজি ভাষায়: Egypt ইজিপ্ট্), সরকারী নাম মিশর আরব প্রজাতন্ত্র, উত্তর আফ্রিকার একটি প্রাচীন রাষ্ট্র। দেশটির বেশির ভাগ অংশ আফ্রিকাতে অবস্থিত, কিন্তু এর সবচেয়ে পূর্বের অংশটি, সিনাই উপদ্বীপ। সিনাই উপদ্বীপ আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে স্থলসেতুর মত কাজ করে। মিশরের অধিকাংশ এলাকা মরুময়। নীল নদ দেশটিকে দুইটি অসমান অংশে ভাগ করেছে। নীল নদের উপত্যকা ও ব-দ্বীপ অঞ্চলেই মিশরের বেশির ভাগ মানুষ বাস করেন। কায়রো দেশের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী।তবে আরব বসন্তে মিশরের ক্ষতি হয়।২০০৭ সালে বেকার ছিল ৪.৪%।কিন্তু আরব বসন্তের পরপর এর পরিমান হয় ১২.৮৩%।
মিশর আরব প্রজাতন্ত্র جمهورية مصر العربية গুম্হুরিয়াত্ মিস্ব্র্ আল্ ʿআরাবিয়াহ্ গুম্হুরিয়েত্ মাস্ব্র্ এল্ ʿআরাবিয়াহ্ |
||||||
---|---|---|---|---|---|---|
|
||||||
জাতীয় সঙ্গীত: বিলাদি, বিলাদি, বিলাদি |
||||||
![]() মিশরের অবস্থান |
||||||
রাজধানী এবং বৃহত্তম নগরী | কায়রো ৩০°২′ উত্তর ৩১°১৩′ পূর্ব | |||||
সরকারি ভাষা | আরবি | |||||
সরকার | অর্ধ-রাষ্ট্রপতি প্রজাতন্ত্র | |||||
• | রাষ্ট্রপতি | আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি | ||||
• | প্রধানমন্ত্রী | ইবরাহীম মাহলাব | ||||
প্রতিষ্ঠিত | ||||||
• | প্রথম রাজবংশ | প্রায় ৩১৫০ BCE | ||||
• | স্বাধীনতা প্রদান করেছে | ফেব্রুয়ারি ২৮ ১৯২২ | ||||
• | প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেছে | জুন ১৮ ১৯৫৩ | ||||
• | জাতীয় দিবস | ২৩শে জুলাই (২৩শে জুলাই ১৯৫২ উদযাপন করত) | ||||
• | জল/পানি (%) | ০.৬৩২ | ||||
জনসংখ্যা | ||||||
• | ২০০৯ আনুমানিক | ৭৭,৪২০,০০০[1] | ||||
• | ১৯৯৬ আদমশুমারি | ৫৯,৩১২,৯১৪ | ||||
মোট দেশজ উৎপাদন (ক্রয়ক্ষমতা সমতা) |
২০১৫ আনুমানিক | |||||
• | মোট | $১.০৪৭ ট্রিলিয়ন[2] (২৪তম) | ||||
• | মাথা পিছু | $১১,৮৪৯[2] (১০০তম) | ||||
মোট দেশজ উৎপাদন (নামমাত্র) | ২০১৫ আনুমানিক | |||||
• | মোট | $৩৩০.৭৬৫ বিলিয়ন[2] (৩৪তম) | ||||
• | মাথা পিছু | $৩৭৪০[2] (১১৫তম) | ||||
জিনি সহগ (2008) | 30.8[3] মাধ্যম |
|||||
মানব উন্নয়ন সূচক (2014) | ![]() মধ্যম · 108th |
|||||
মুদ্রা | মিশরীয় পাউন্ড (ইজিপি) | |||||
কলিং কোড | ২০ | |||||
ইন্টারনেট টিএলডি | .eg | |||||
১. | কথ্য ভাষা মিশরীয় আরবি |
নামের উৎস
প্রাচীন মিশরের ভাষায় দেশটির একটি নাম ছিল "কমেট" (
|
km.t) বা কালো মাটির দেশ। নীল নদের বন্যার সাথে বয়ে আনা উর্বর কালো মাটি যা মরুভূমির মাটি "deshret" (⟨dšṛt⟩) অথবা "লাল জমি" থেকে আলাদা।[5]
ইতিহাস
লিখিত ইতিহাস অনুসারে প্রায় ৩২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকেই একটি সংহত রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে মিশর বিদ্যমান। সেচভিত্তিক কৃষি, সাক্ষরতা, নগরজীবন, এবং বড় মাপের রাজনৈতিক সংগঠনবিশিষ্ট ইতিহাসের প্রথম সভ্যতাগুলির একটি নীল নদের উপত্যকাতে গড়ে উঠেছিল। সাংবাৎসরিক বন্যা মিশরকে একটি স্থিতিশীল কৃষিভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। আফ্রিকার সংযোগস্থলে সামরিক কৌশলগত স্থানে অবস্থিত ছিল বলে এবং ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা এবং ভারত ও চীনের মধ্যকার বাণিজ্যপথের উপর অবস্থিত ছিল বলে এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে পরিণত হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতক থেকে বিভিন্ন বিদেশি শক্তি দেশটি দখল করে এবং এখানে নতুন নতুন ধর্ম ও ভাষার প্রবর্তন করে। কিন্তু মিশরের সমৃদ্ধ কৃষি সম্পদ, গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অবস্থান এবং দীর্ঘমেয়াদী রাজনৈতিক ঐক্যের ফলস্বরূপ এখনও পুরনো ঐতিহ্য ও রীতিনীতিগুলি হারিয়ে যায়নি। বর্তমান মিশর আরবিভাষী মুসলিম রাষ্ট্র হলেও এটি অতীতের খ্রিস্টান, গ্রীক-রোমান ও প্রাচীন আদিবাসী ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি এখনও ধরে রেখেছে।
৬৪১ সালে আরব মুসলিমরা মিশরে আসলে মিশরের মানুষ দলে দলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। তখন থেকেই মিশর মুসলিম ও আরব বিশ্বের একটি অংশ। আধুনিক মিশরের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলী। দেশটি যখন উসমানীয় সাম্রাজ্যের একটি অংশ ছিল, তখন ১৮০৫ থেকে ১৮৪৯ সাল পর্যন্ত তিনি দেশটির বড়লাট ছিলেন। ১৮৮২ সালে ব্রিটিশ সেনারা মিশর দখল করে। এরপর প্রায় ৪০ বছর মিশর ব্রিটিশ উপনিবেশ ছিল। ১৯২২ সালে দেশটি একটি রাজতন্ত্র হিসেবে স্বাধীনতা অর্জন করলেও ব্রিটিশ সেনারা মিশরে থেকে যায়। ১৯৫২ সালে জামাল আব্দেল নাসের-এর নেতৃত্বে একদল সামরিক অফিসার রাজতন্ত্র উৎখাত করে এবং একটি প্রজাতন্ত্র হিসেবে মিশর প্রতিষ্ঠা করে। নাসের ১৯৫৬ সালের মধ্যে মিশর থেকে সমস্ত ব্রিটিশ সেনাকে সরিয়ে দেন। ১৯৭৯ সালে রাষ্ট্রপতি আনোয়ার আল-সাদাতের নেতৃত্বে মিশর প্রথম জাতি হিসেবে ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েলের সাথে একটি শান্তিচুক্তি স্বাক্ষর করে। বর্তমানে মিশর সমগ্র আরব বিশ্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। ২০০৫ সালে দেশটির প্রথম বহুদলীয় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
রাজনীতি
- মুসলিম ব্রাদারহুড
- আননূর পার্টি
ভূগোল
মিশরের ভূমি খুবই উর্বর যার ফলে প্রচুর শষ্য উৎপাদিত হয় এখানে। যার ফলে একে কৃষির তৃণভূমি বলা হয়।
ভাষা
আরবি ভাষা মিশরের সরকারি ভাষা। মিশরের জনগণেরর অধিকাংশই আরবি ভাষাতে কথা বলে। মিশরে আরবি ভাষার বেশ কিছু স্থানীয় কথ্য উপভাষা প্রচলিত। মিশরের জিপসি সম্প্রদায়ের প্রায় অর্ধেক লোক জিপসি দোমারি ভাষাতে কথা বলেন। এছাড়াও এখানে আর্মেনীয় ভাষা, গ্রিক ভাষা এবং নীল নুবীয় ভাষা প্রচলিত। কিছু ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে সীমিত পরিমাণে কপ্টীয় ভাষা ব্যবহার করা হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়।
খেলাধুলা
দেশটির জনপ্রিয় খেলা ফুটবল। ৭ বার আফ্রিকা কাপ অব নেশন্স জয়ী এই দেশকে ফুটবলে সেরা আফ্রিকান দেশ বলা যায়।
তথ্যসূত্র
- "Central Agency for Population Mobilisation and Statistics - Population Clock (July 2008)"। ৮ সেপ্টেম্বর ২০১০ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৯ ডিসেম্বর ২০০৯।
- "Egypt"। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-১০-০১।
- "GINI index"। World Bank। সংগ্রহের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩।
- "2015 Human Development Report" (PDF)। United Nations Development Programme। ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫।
- Rosalie, David (১৯৯৭)। Pyramid Builders of Ancient Egypt: A Modern Investigation of Pharaoh's Workforce। Routledge। পৃষ্ঠা 18।
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে মিশর সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
- সরকারী
- মিশরের সরকারি ওয়েবসাইট (আরবি, ইংরেজি)
- Egypt Information Portal (আরবি, ইংরেজি)
- Egypt Information and Decision Support Center (আরবি, ইংরেজি)
- Egypt State Information Services (আরবি, ইংরেজি, ফরাসী)
- রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রীপরিষদ সদসবৃন্দ
- সাধারণ তথ্য
- Country Profile from the BBC News
- সিআইএ প্রণীত দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক-এ মিশর-এর ভুক্তি
- Egypt at UCB Libraries GovPubs
- কার্লি-এ মিশর (ইংরেজি)
উইকিমিডিয়া অ্যাটলাসে মিশর- Egypt Maps - Perry-Castañeda Map Collection
ওপেনস্ট্রিটম্যাপে মিশর সম্পর্কিত ভৌগলিক উপাত্ত
- অন্যান্য
- Leonard William King, History of Egypt, Chaldæa, Syria, Babylonia, and Assyria in the Light of Recent Discovery, Project Gutenberg.
- Egyptian History (উরধু)
- By Nile and Tigris, a narrative of journeys in Egypt and Mesopotamia on behalf of the British museum between the years 1886 and 1913, by Sir E. A. Wallis Budge, 1920 (a searchable facsimile at the University of Georgia Libraries; DjVu &layered PDF format)
- Napoleon on the Nile: Soldiers, Artists, and the Rediscovery of Egypt.