উগান্ডা

উগান্ডা প্রজাতন্ত্র (ইংরেজি: Uganda ইউগ্যান্ডা বা ইউগন্ডা; গান্ডা: Yuganda ইউগান্ডা; সোয়াহিলি: Uganda উগান্ডা) পূর্বাঞ্চলীয় আফ্রিকায় বিষুবরেখার উপর অবস্থিত একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। কাম্পালা উগান্ডার রাজধানী ও বৃহত্তম নগরী। দেশটি পূর্বে কেনিয়া, উত্তরে সুদান, পশ্চিমে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ-পশ্চিমে রুয়ান্ডা এবং দক্ষিণে তানজানিয়া দ্বারা বেষ্টিত। দক্ষিণাঞ্চলের কিছু উল্লেখযোগ্য ভূমি ভিক্টোরিয়া হ্রদের তীর ঘেঁষে অবস্থিত। এই অংশটিই একাধারে কেনিয়া এবং তানজানিয়ার সাথে সীমান্ত রক্ষা করে চলেছে। উগান্ডা নামটির উৎপত্তি হয়েছে বুগান্ডা রাজত্ব থেকে। রাজধানী কাম্পালাসহ দেশের দক্ষিণাংশ নিয়ে এই রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

উগান্ডা প্রজাতন্ত্র[1]
Jamhuri ya Uganda  (সোয়াহিলি)
পতাকা জাতীয় মর্যাদাবাহী নকশা
নীতিবাক্য: "ঈশ্বর এবং আমার দেশের জন্য"
"kwa mungu na nchi yangu"
জাতীয় সঙ্গীত: "ওহ উগান্ডা, সৌন্দর্যের ভূমি"
 উগান্ডা-এর অবস্থান (dark blue)

 Africa-এ (light blue & dark grey)
 the African Union-এ (light blue)

 উগান্ডা-এর অবস্থান (dark blue)

 Africa-এ (light blue & dark grey)
 the African Union-এ (light blue)

উগান্ডার অবস্থান
রাজধানীকাম্পালা
বৃহত্তম শহর capital
সরকারি ভাষা ইংরেজি
সোয়াহিলি
জাতীয়তাসূচক বিশেষণ উগান্ডান
সরকার Unitary dominant-party semi-presidential republic
   রাষ্ট্রপতি Yoweri Museveni
   উপ-রাষ্ট্রপতি Edward Ssekandi
   প্রধানমন্ত্রী Ruhakana Rugunda
আইন-সভা Parliament
Independence
   from the United Kingdom 9 October 1962 
   Current constitution 8 October 1995 
আয়তন
   মোট ২৪১ কিমি (৭৯তম)
৯৩ বর্গ মাইল
   জল/পানি (%) 15.39
জনসংখ্যা
   টেমপ্লেট:UN Population আনুমানিক টেমপ্লেট:UN Populationটেমপ্লেট:UN Population (৩৫তম)
   ২০১৪ আদমশুমারি 34,634,650[2]
   ঘনত্ব 157.1/কিমি
৪০৬.৯/বর্গ মাইল
মোট দেশজ উৎপাদন
(ক্রয়ক্ষমতা সমতা)
২০১৯ আনুমানিক
   মোট $102.659 billion[3]
   মাথা পিছু $২,৫৬৬[3]
মোট দেশজ উৎপাদন (নামমাত্র) ২০১৯ আনুমানিক
   মোট $৩০.৭৬৫ billion[3]
   মাথা পিছু $৭৬৯[3]
জিনি সহগ (২০১২) ৪১.০১[4]
মাধ্যম
মানব উন্নয়ন সূচক (২০১৭) 0.516[5]
নিম্ন · ১৬২তম
মুদ্রা উগান্ডীয় শিলিং (ইউজিএক্স)
সময় অঞ্চল ইএটি (ইউটিসি+৩)
গাড়ী চালনার দিক left
কলিং কোড +২৫৬a
ইন্টারনেট টিএলডি .ug
ক. কেনিয়া এবং তানজানিয়া থেকে +০০৬

উগান্ডা দেশটির ভূপ্রকৃতি বিচিত্র। এখানে সাভান্না তৃণভূমি, ঘন অরণ্য, উঁচু পর্বত এবং আফ্রিকার বৃহত্তম হ্রদ ভিক্টোরিয়া হ্রদের অর্ধেকেরও বেশি অবস্থিত। উগান্ডার জনগণ জাতিগতভাবে বিচিত্র। উগাণ্ডার রয়েছে বুদ্ধিবৃত্তিক ও শিল্পকলাসমৃদ্ধ এক সংস্কৃতি। উন্নয়নশীল এই দরিদ্র রাষ্ট্রটি মূলত কৃষিপ্রধান। ১৯শ শতকের শেষের দিকে ইউরোপীয় ঔপনিবেশিকদের আগমনের পূর্বে এখানে অনেকগুলি শক্তিশালী রাজত্ব ছিল, যাদের মধ্যে বুগান্ডা ও বুনিয়োরো উল্লেখযোগ্য। ১৮৯৪ সালে উগান্ডা একটি ব্রিটিশ প্রোটেক্টোরেটে পরিণত হয়। ১৯২৬ সালে এর বর্তমান সীমানা নির্ধারিত হয়। ১৯৬২ সালে এটি ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ১৯৭০-এর দশকে ও ১৯৮০-র দশকের শুরুর দিকে উগান্ডা দুইটি রক্তঝরানো স্বৈরশাসন (ইদি আমিন ও মিল্টন ওবোতে) এবং দুইটি যুদ্ধের শিকার হয়। ১৯৮৬ সালে দেশটি বাস্তবদাবাদী নেতা ইয়োওয়েরি মুসেভেনির অধীনে স্থিতিশীল হয়। মুসেভিনি উগান্ডাতে গণতান্ত্রিক ও অর্থনৈতিক সংস্কার চালু করেন।

ইতিহাস

বর্তমান উগান্ডায় প্রাচীনতম মানব বসতি স্থাপন করেছিল আদিম শিকারী মানুষেরা। আজ থেকে আনুমানিক ২০০০ বা ১৫০০ বছর আগে বান্টু ভাষাভাষী জনগণ প্রধানত মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকা থেকে দেশটির দক্ষিণাংশে অভিবাসী হয়ে এসে বসবাস শুরু করে। এই জনগোষ্ঠীর লোকদের লোহার কাজ সম্বন্ধে বিশেষ জ্ঞান ছিল এবং তারা সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনসমূহের নীতিও জানতো। ১৪শ ও ১৫শ শতকে রাজত্ব বিস্তারকারী কিতারা সাম্রাজ্য এখানকার প্রাচীনতম রাজনৈতিক বা রাষ্ট্রীয় সংগঠন। এই সাম্রাজ্যের পর দেশটিতে উত্থান ঘটে বুনিইওরো-কিতারা, বুগান্ডা এবং আনকোলে সম্রাজ্যের। পরবর্তী শতকগুলোতে এভাবেই ক্ষমতার পালাবদল অব্যাহত ছিল।

১২০ খ্রিষ্টাব্দের দিকে নাইলোটিক জনগোষ্ঠীর লোকেরা এ অঞ্চলে প্রবেশ করতে শুরু করে। নাইলোটিকের মধ্যে মূলত লুও এবং অ্যাটেকার গোষ্ঠীর লোকেরা উত্তর দিক থেকে এসে এখানে বসতি স্থাপন করেছিল। তাদের পেশা ছিল গবাদি পশু লালন-পালন এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক কৃষিকাজ। এই কৃষকগোষ্ঠী মূলত দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চরে বসতি স্থাপন করে। লিওদের কিছু অংশ বুনিইওরো রাজত্বে আগ্রাসন চালিয়ে সেখানকার বান্টু লোকদের সাথে মিলিত হয়। এভাবেই সেখানে বাবিটো বংশধারা জন্ম হয় যারা বুনিইওরো-কিতারা রাজত্বের গোড়াপত্তন করে। এই রাজত্বের রাজাদেরকে বলা হতো ওমুকামা। ষোড়শ শতক পর্যন্ত লুওদের অভিবাসন অব্যাহত ছিল। তাদের কিছু অংশ বান্টুদের সাথে মিলে পূর্ব-উগান্ডায় বসতি স্থাপন করেছিল, আর অন্যেরা ভিক্টোরিয়া হ্রদের পশ্চিম তীরে কেনিয়া ও তানজানিয়ায় বসবাস শুরু করে। আটেকার জনগোষ্ঠী মূলত উত্তর-পূর্ব এবং পূর্বাঞ্চলীয় অংশে বসতি স্থাপন করে, অবশ্য তাদের কেউ কেউ লুওদের সাথে মিলে কিওগা হ্রদ শোভিত অঞ্চলসমূহে চলে যায়।

রাজনীতি

প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ

ভূগোল

উগান্ডার ভূ-সংস্থানিক মানচিত্র

উগান্ডা পূর্ব আফ্রিকার বৃহৎ হ্রদ অঞ্চলের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত। এডওয়ার্ড হ্রদ, আলবার্ট হ্রদ এবং ভিক্টোরিয়া হ্রদ দেশটিকে ঘিরে রেখেছে। দেশটির আয়তনের প্রায় ১৮% হ্রদ এবং অন্যান্য জলাভূমি নিয়ে গঠিত। ১২% এলাকা জাতীয় উদ্যান হিসেবে সংরক্ষিত। বাকী ৭০% এলাকা বনভূমি এবং তৃণভূমি।

উত্তর-পূর্ব উগান্ডার জলবায়ু অর্ধ-ঊষর; এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বার্ষিক ২০ ইঞ্চি বা ৫০০ মিমি-র চেয়ে কম। অন্যদিকে দক্ষিণ-পশ্চিম উগান্ডাতে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৩০০ মিমি-র বেশি। ডিসেম্বার-ফেব্রুয়ারি এবং জুন-জুলাই মাসে দুইটি শুষ্ক মৌসুম পরিলক্ষিত হয়। উগান্ডা বিষুবরেখার উপর অবস্থিত হলেও উচ্চতার কারণে এখানকার জলবায়ু তুলনামূলকভাবে মৃদু। দেশটির বেশিরভাগ এলাকা মালভূমির উপর অবস্থিত।

অর্থনীতি

জনসংখ্যা

সামরিক বাহিনী

উগান্ডার সামরিক বাহিনী উগান্ডা পিপল্‌স ডিফেন্স ফোর্সেস নামে পরিচিত। ১৯৮০-র দশকের মধ্যভাগে ইওয়েরি মুসেভেনি ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স আর্মি নামের যে গেরিলা দলটিকে প্রশিক্ষণ দিয়ে তৎকালীন সরকারকে উৎখাত করেছিলেন, তারাই উগান্ডার বর্তমান সামরিক বাহিনী গঠন করেছে। এই বাহিনীতে ৪০ থেকে ৪৫ হাজার সদস্য সক্রিয় আছে। সামরিক বাহিনীতে অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক নয়। ১৯৮৬ সাল থেকে সামরিক বাহিনী রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে আসছে। তবে সম্প্রতি নতুন সংবিধানের আওতায় বেসামরিক প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষমতা বেড়েছে এবং রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীর প্রভাব কিছুটা খর্ব হয়েছে।

সংস্কৃতি

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. Article 5, Chapter 2, Constitution of Uganda, 1995, accessed 17 January 2017
  2. "Republic of Uganda – Census 2014 – Final Report – Table 2.1 page 8" (PDF)। ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ তারিখে মূল (PDF) থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১৮ জুলাই ২০১৯
  3. "Uganda"। International Monetary Fund। সংগ্রহের তারিখ ১৩ জুলাই ২০১৯
  4. "Gini index (World Bank estimate)"। World Bank। সংগ্রহের তারিখ ১৭ জানুয়ারি ২০১৭
  5. "2016 Human Development Report" (PDF)। United Nations Development Programme। ২০১৬। সংগ্রহের তারিখ ২১ মার্চ ২০১৭

বহিঃসংযোগ

    This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.