আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ (ইংরেজি: ICC Test Championship) একটি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতা, যা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) কর্তৃক পরিচালিত হয়। মূলতঃ র‌্যাঙ্কিং পদ্ধতির মাধ্যমে দলগত পর্যায়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ নির্ধারিত হয়। ১২টি টেস্ট ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ (বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান এবং আয়ারল্যান্ড) এতে অংশ নেয়।তবে আফগানিস্তানআয়ারল্যান্ড পর্যাপ্ত পরিমাণ ম্যাচ না খেলায় এখনো মূল তালিকায় আসে নি।প্রতিযোগিতাটির মাধ্যমে সাধারণ র‌্যাঙ্কিং পদ্ধতির ধারণা জন্মানো হয় যাতে নিয়মিত টেস্ট ক্রিকেটের সময় নির্দেশিকা অনুসারে দলগুলো একে-অপরের সাথে আন্তর্জাতিক খেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রদর্শন করতে পারে। তবে নিজ মাঠ বা প্রতিপক্ষের মাঠে খেলার ফলে টেস্ট ক্রিকেট র‌্যাঙ্কিংয়ে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায় না।

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ
আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ লোগো
ব্যবস্থাপকআন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল
খেলার ধরনটেস্ট ক্রিকেট
প্রথম টুর্নামেন্ট২০০৩
শেষ টুর্নামেন্টচলমান
প্রতিযোগিতার ধরনসংগৃহীত পয়েন্ট
দলের সংখ্যা১০
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত (১২৫ পয়েন্ট)
সর্বাধিক সফল অস্ট্রেলিয়া (৮৩ মাস)

প্রতিটি টেস্ট সিরিজ শেষে দু’দলই গাণিতিক সূত্রের মাধ্যমে পয়েন্ট অর্জন করে থাকে। প্রতিটি দলের সর্বমোট পয়েন্টকে সর্বমোট খেলা দিয়ে বিভাজন করা হয়, যা টেস্ট ক্রিকেট রেটিং নামে পরিচিত। টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর নাম রেটিং অনুযায়ী সাজানো থাকে যা নিচের ছকে তুলে ধরা হয়েছে।

ভারত ক্রিকেট দল জুলাই, ২০১৮ সাল পর্যন্ত আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের শীর্ষস্থানে অবস্থান করছে।[1]

২০০১ সাল থেকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় টেস্ট দলকে দণ্ডাকৃতির আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ পুরস্কার প্রদান করা হয়। রেটিংয়ের শীর্ষে আরোহণকারী নতুন দলের কাছে এ দণ্ডটি হস্তান্তর হবে।[2] পুরস্কারের মূল্যমান £৩০,০০০ পাউন্ড-স্টার্লিং।[3]

চ্যাম্পিয়নশীপ নির্ধারণে সমীকরণ

র‌্যাঙ্কিংয়ে নিম্নলিখিত সমীকরণগুলো প্রয়োগ করা হয়:-

  • প্রতিটি দলের রানকে পয়েন্টভিত্তিতে তাদের খেলার ফলাফলে প্রাধান্য পাবে।
  • প্রতিটি দলের রেটিং হবে মোট পয়েন্টকে মোট খেলা ও সিরিজের খেলা দিয়ে ভাগ করে।
  • একটি সিরিজে কমপক্ষে দু’টি টেস্ট ম্যাচ থাকতে হবে।
  • একটি সিরিজের ফলাফল তিন বছর পর্যন্ত গণনা করা হবে।
  • সিরিজ যদি দুই বছর পূর্বেকার হয়, তাহলে এর গুরুত্ব হবে অর্ধেক এবং সাম্প্রতিক খেলাগুলোর মর্যাদা হবে সর্বাধিক।
  • নির্দিষ্ট একটি সিরিজের দলের রেটিং তৈরীর জন্য যা প্রয়োজনঃ
    • সিরিজের ফলাফল
      • প্রতিটি জয়ে ১ পয়েন্ট
      • ড্রয়ে অর্ধ-পয়েন্ট
      • সিরিজ জয়ী হলে অতিরিক্ত ১ পয়েন্ট
      • সিরিজ ড্র হলে অতিরিক্ত অর্ধ-পয়েন্ট
    • সিরিজের ফলাফলকে প্রকৃত রেটিং পয়েন্টে রূপান্তরকরণ

টেস্ট র‌্যাঙ্কিং

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ
অবস্থানদলের নামখেলার সংখ্যাপয়েন্টরেটিং
 ভারত৩২৩৬৩১১১৩
 নিউজিল্যান্ড২৩২৫৪৭১১১
 দক্ষিণ আফ্রিকা২৭২৯১৭১০৮
 ইংল্যান্ড৩৬৩৭৭৮১০৫
 অস্ট্রেলিয়া২৭২৬৪০৯৮
 শ্রীলঙ্কা৩৭৩৪৬২৯৪
 পাকিস্তান২৭২২৬৩৮৪
 ওয়েস্ট ইন্ডিজ২৯২৩৮১৮২
 বাংলাদেশ২২১৪৩৮৬৫
১০  জিম্বাবুয়ে১৪০১৬
 আফগানিস্তান*৫০২৫
 আয়ারল্যান্ড*
*দেশগুলো পর্যাপ্ত খেলায় অংশগ্রহণ না করায় আনুষ্ঠানিক টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে জায়গা পায়নি।
সূত্র: ক্রিকইনফো র‍্যাঙ্কিং, আইসিসি র‌্যাঙ্কিং, ২৩ আগস্ট, ২০১৯
"খেলা" বলতে মে মাসের পর থেকে ১২-১৪ মাসে অংশগ্রহণকৃত খেলার সংখ্যা + সিরিজের সংখ্যা। এছাড়াও, এর পূর্বেকার ২৪ মাসের অর্ধেক খেলার সংখ্যা।

র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানের ইতিহাস

World rankings for the top eight teams from 2003 to June 2011

জুন, ২০০৩ সাল থেকে আইসিসি প্রতি মাসের শেষে টেস্ট রেটিং নির্ধারণ করে থাকে। সর্বোচ্চ রেটিংয়ে আরোহণকারী দলটি ঐদিন থেকে পুরো মাসব্যাপী শীর্ষে থাকে। শীর্ষস্থানে অধিষ্ঠিত দলগুলোর অবস্থান ধারাবাহিকভাবে মাসভিত্তিক দেখানো হলো:-

টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ দলের ধারাবাহিকতা
দলের নাম শুরু শেষ সর্বমোট মাস সর্বোচ্চ রেটিং
 অস্ট্রেলিয়া জুন, ২০০৩আগস্ট, ২০০৯৭৪১৪৩
 দক্ষিণ আফ্রিকা আগস্ট, ২০০৯নভেম্বর, ২০০৯১২২
 ভারত নভেম্বর, ২০০৯আগস্ট, ২০১১২১১৩০
 ইংল্যান্ড আগস্ট, ২০১১আগস্ট, ২০১২১২১২৫
 দক্ষিণ আফ্রিকা আগস্ট, ২০১২মে, ২০১৪২১১৩৫
 অস্ট্রেলিয়া মে, ২০১৪জুলাই, ২০১৪১২৩
 দক্ষিণ আফ্রিকা জুলাই, ২০১৪চলমান২১১৩০
তথ্যসূত্র: আইসিসি র‌্যাঙ্কিং, ১৩ মে, ২০১৫ইং

আইসিসি আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৩ সালে র‌্যাঙ্কিং ব্যবস্থার প্রবর্তন করে। অস্ট্রেলিয়া এতে একচ্ছত্র প্রাধান্য বিস্তার করেছে যা ১৯৯৫ সাল থেকে তাদের এই অগ্রযাত্রা। ২০০৯ সালে থেকে অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান এবং ইংল্যান্ড দলও শীর্ষস্থানীয় দলের মর্যাদা পেয়েছে। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দল ২২ আগস্ট, ২০১১ইং তারিখে প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিং পদ্ধতিতে প্রথমবারের মতো শীর্ষস্থানের মর্যাদা পেয়েছে।

আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ

বেশ কিছু বছর ধরে ক্রিকেট বিশ্বকাপ, আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, আইসিসি বিশ্ব টুয়েন্টি২০ এবং আইসিসি ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের আদলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপ টুর্ণামেন্টের আয়োজন করার চিন্তা করা হচ্ছিল।

আইসিসি প্রধান নির্বাহী হারুন লরগাত প্রতি চার বছর পর পর সেরা চারটি ক্রিকেট দলকে নিয়ে সেমি-ফাইনাল এবং ফাইনাল খেলা আয়োজনের প্রস্তাবনা দিয়েছেন। খেলাধূলার সময়সীমা সবচেয়ে বড় আকারের হওয়ায় এ ধরনের ব্যবস্থা রাখা হয়। ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়নস্ ট্রফি প্রতিযোগিতাটি ইংল্যান্ডে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল।[4][5] কিন্তু খেলা সম্প্রচারকারী অংশীদার - ইএসপিএন স্টার স্পোর্টস কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা না পাবার ফলে তা বিলম্বিত হয়। মূলতঃ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে অধিকতর মুনাফা অর্জনই এর প্রধান কারণ। অবশেষে আইসিসি ঘোষণা করে যে উদ্বোধনী আসরটি ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে।[6]

বর্তমান টেস্ট ক্রিকেটার

ব্যাটসম্যান
আইসিসি শীর্ষ ১০ টেস্ট ব্যাটসম্যান
অবস্থাননামরেটিং
বিরাট কোহলি৯২২
কেন উইলিয়ামসন৯১৫
চেতেশ্বর পুজারা৮৮১
স্টিভ স্মিথ৮৫৭
জো রুট৭৬৩
ডেভিড ওয়ার্নার৭৫৬
হেনরি নিকোলস৭৫৫
এইডেন মার্করাম৭১৯
কুইন্টন ডি কক৭১৮
১০ ফাফ দু প্লেসিস৭০২
তথ্যসূত্র: আইসিসি র‌্যাঙ্কিংস, ৩ মার্চ, ২০১৯
বোলার
আইসিসি শীর্ষ ১০ টেস্ট বোলার
অবস্থানখেলোয়াড়ের নামরেটিং
প্যাট কামিন্স৮৭৮
জেমস অ্যান্ডারসন৮৬২
কাগিসো রাবাদা৮৫১
ভার্নন ফিল্যান্ডার৮১৩
রবীন্দ্র জাদেজা৭৯৪
মোহাম্মদ আব্বাস৭৭০
জেসন হোল্ডার৭৭০
ট্রেন্ট বোল্ট৭৬৯
টিম সাউদি৭৬৬
১০ রবিচন্দ্রন অশ্বিন৭৬৩
সূত্র: আইসিসি র‌্যাঙ্কিংস, ৩ মার্চ, ২০১৯
অল-রাউন্ডার
আইসিসি শীর্ষ ১০ টেস্ট অল-রাউন্ডার
অবস্থানখেলোয়াড়ের নামরেটিং
জেসন হোল্ডার৪৪০
সাকিব আল হাসান৪০৭
রবীন্দ্র জাদেজা৩৮৭
বেন স্টোকস৩৫৮
ভার্নন ফিল্যান্ডার৩২৬
রবিচন্দ্রন অশ্বিন৩২১
প্যাট কামিন্স৩১৬
মঈন আলী২৮৯
মিচেল স্টার্ক২৭২
১০ টিম সাউদি২৩১
সূত্র: আইসিসি র‌্যাঙ্কিংস, ৩ মার্চ, ২০১৯

তথ্যসূত্র

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.