সরভাজা

সরভাজা হল কৃষ্ণনগরের একটি বিখ্যাত মিষ্টি। দুধের সর ও ঘি দিয়ে তৈরি এই মিষ্টির সুনাম বাংলা তথা ভারতীয় উপমহাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। দুর্গাপুজো, কালীপুজোয় যেমন ভোগ, আমিষ খাওয়া রেওয়াজ, তেমনই জগদ্ধাত্রী পুজো মানেই হরেক রকম মিষ্টি আর কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোতে সরভাজা চাহিদা অন্য সময়ের থেকে বেশি থাকে।

সরভাজা
একটি পাত্র ভর্তি রসগোল্লা
অন্যান্য নামকৃষ্ণনগরের সরভাজা
উৎপত্তিস্থলকৃষ্ণনগর, পশ্চিমবঙ্গ
অঞ্চল বা রাজ্যপশ্চিমবঙ্গ
প্রধান উপকরণদুধের সর, ঘি
রন্ধনপ্রণালী: সরভাজা  মিডিয়া: সরভাজা

ইতিহাস

কৃষ্ণনগরের সরভাজা

ঘরের দরজা-জানলা বন্ধ করে খুব গোপনে সরভাজা তৈরির পাক তৈরি হত। এটাই রীতি। কারণ, মিষ্টি তৈরির এই গোপন পদ্ধতি যেন ফাঁস না হয়ে যায়।[1] কিন্তু সে খবর ঠিকই ছড়িয়ে পড়ত শহরে। কথিত রয়েছে, মাছির ঝাঁক তখন ঘিরে ধরত অধরচন্দ্র দাসের বাড়ি। কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত সরপুরিয়া ও সরভাজা তখন তৈরি হচ্ছিল তার সেই ঘরে।

এই মিষ্টি কিন্তু খুব বেশি প্রাচীন নয়। মাত্র একশো বছর আগের কথা। তখনই এই মিষ্টিকে ঘিরে কৃষ্ণনগরের আরও একটি পরিচয় তৈরি হচ্ছিল আস্তে আস্তে। তারপরে সেই মিষ্টি সত্যিই কৃষ্ণনগরের বৈশিষ্ট্য হয়ে ওঠে। মাটির পুতুল, জগদ্ধাত্রী পুজো, মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের পরিবারের কথার সঙ্গে সঙ্গে সরপুরিয়া, সরভাজার কথাও ছড়িয়ে পড়ছিল। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে সে কথা বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে। নানা দোকানেই তৈরি হতে থাকে সরপুরিয়া, সরভাজা। শহরের নেদেরপাড়ায় অধরবাবুর পরিবারের লোকেরাই দু’টি মিষ্টির দোকান করেন। কার হাতের মিষ্টি ভাল, তাই নিয়ে তর্কাতর্কিও ছিল স্বাভাবিক। শহরের আরও কিছু দোকানেও এই মিষ্টি তৈরি করা শুরু হয়ে যায়। সিনেমা, সাহিত্যেও এই মিষ্টি নিজের স্থান করে নেয়।

উপকরণ

সরভাজা তৈরি করতে প্রয়োজন হয় ময়দা, দুধের সর, চিনি (গুঁড়ো করা), দুধ, বেকিং পাউডার, ঘি এবং মেওয়া।

রস তৈরির উপকরণ

সরভাজার সর তৈরিতে ব্যবহার করা হয় চিনি, জল, দারচিনি, এলাচ।

প্রস্তুত প্রনালী

রস
- জলের মধ্যে চিনি, দারচিনি ও এলাচ দিয়ে ফুটিয়ে ঘন রস তৈরি করা হয়।
সরভাজা
- ময়দা, বেকিং পাউডার, গুঁড়ো চিনি, সামান্য নুন, দুধের সর, ঘি ও মেওয়া একসঙ্গে মিশিয়ে একটি মিশ্রণ প্রস্তুত করতে হয়। এর পর অল্প অল্প করে দুধ দিয়ে এই মিশ্রণ ভাল করে মেখে চাপা দিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিতে হয়। মাখা থেকে ১/২ ইঞ্চি পুরু করে রুটি তৈরি করতে হয়। এবারে চৌকো চৌকো করে কেটে নিয়ে ডুবোতেলে বাদামি করে ভেজে নিয়ে গরম রসে ডুবান হয়। অন্তত ২-৩ ঘণ্টা রসে ফেলে রাখা হয়।

তদ্যসূত্র

  1. "সরভাজা-সরপুরিয়া 'রেসিপি' জানাতে চায় না কৃষ্ণনগর"। আনন্দবাজার প্রত্রিকা। ১৪ এপ্রিল ২০১০। সংগ্রহের তারিখ ২৫ নভেম্বর ২০১৭ অজানা প্যারামিটার |1= উপেক্ষা করা হয়েছে (সাহায্য)
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.