গ্রাহাম গুচ

গ্রাহাম অ্যালেন গুচ, ওবিই, ডিএল (ইংরেজি: Graham Alan Gooch; জন্ম: ২৩ জুলাই, ১৯৫৩) লিটনস্টোনের হুইপস ক্রস এলাকায় জন্মগ্রহণকারী ইংল্যান্ডের সাবেক ও বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা। এসেক্স এবং ইংল্যান্ডের পক্ষ হয়ে অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। তিনি তার সময়কালে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিগণিত ছিলেন। ১৯৭৩ থেকে ২০০০ সাল মেয়াদকালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট ও সীমিত ওভারের খেলায় ৬৭,০৫৭ রান করে ফলপ্রসূ ভূমিকা রাখেন ‘জ্যাপ’ ডাকনামে পরিচিত গ্রাহাম গুচ[1]

গ্রাহাম গুচ
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নামগ্রাহাম অ্যালেন গুচ
জন্ম (1953-07-23) ২৩ জুলাই ১৯৫৩
হুইপস ক্রস, লেটনস্টন, ইংল্যান্ড
ডাকনামজ্যাপ, গুচি
উচ্চতা ফুট ০ ইঞ্চি (১.৮৩ মিটার)
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান, অধিনায়ক, ব্যাটিং কোচ
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় পার্শ্ব
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ৪৬১)
১০ জুলাই ১৯৭৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
শেষ টেস্ট৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ওডিআই অভিষেক
(ক্যাপ ৩৪)
২৬ আগস্ট ১৯৭৬ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ
শেষ ওডিআই১০ জানুয়ারি ১৯৯৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯৭৩-১৯৯৭এসেক্স
১৯৭৫-২০০০এমসিসি
১৯৮২/৮৩-১৯৮৩/৮৪ওয়েস্টার্ন প্রভিন্স
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট ওডিআই এফসি এলএ
ম্যাচ সংখ্যা ১১৮ ১২৫ ৫৮১ ৬১৪
রানের সংখ্যা ৮,৯০০ ৪,২৯০ ৪৪,৮৪৬ ২২,২১১
ব্যাটিং গড় ৪২.৫৮ ৩৬.৯৮ ৪৯.০১ ৪০.১৬
১০০/৫০ ২০/৪৬ ৮/২৩ ১২৮/২১৭ ৪৪/১৩৯
সর্বোচ্চ রান ৩৩৩ ১৪২ ৩৩৩ ১৯৮*
বল করেছে ২,৬৫৫ ২,০৬৬ ১৮,৭৮৫ ১৪,৩১৪
উইকেট ২৩ ৩৬ ২৪৬ ৩১০
বোলিং গড় ৪৬.৪৭ ৪২.১১ ৩৪.৩৭ ৩১.১৫
ইনিংসে ৫ উইকেট
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৩৯ ৩/১৯ ৭/১৪ ৫/৮
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১০৩/ ৪৫/ ৫৫৫/ ২৬১/
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭

নভেম্বর, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের ব্যাটিং কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

প্রারম্ভিক জীবন

পূর্ব লন্ডনের লেটনস্টোন এলাকায় অবস্থিত হুইপস ক্রস হসপিটালে গুচ জন্মগ্রহণ করেন। এরপর লন্ডনের নর্লিংটন স্কুল ফর বয়েজে শিক্ষাগ্রহণ করেন। ক্রিকেট খেলায় তিনি ভারি ব্যাট ব্যবহার করতেন। ১৯৭৩-১৯৯৭ সাল পর্যন্ত নিয়মিতভাবে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশ নিয়েছেন। প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে পঁচিশ জন ক্রিকেটারের একজনরূপে শতাধিক সেঞ্চুরি করেছেন।

লিস্ট এ ক্রিকেটে সবচেয়ে বেশী সর্বমোট ২২,২১১ রান করেছেন।[2]

খেলোয়াড়ী জীবন

১০-১৪ জুলাই, ১৯৭৫ সালে ২১ বছর বয়সে ইয়ান চ্যাপেলের নেতৃত্বাধীন সফরকারী অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে বার্মিংহামে অনুষ্ঠিত ১ম টেস্টে অভিষেক ঘটে গুচের। কিন্তু সূচনালগ্নটি মোটেই ভাল হয়নি তার। উভয় ইনিংসেই তিনি শূন্য রান করেছিলেন।[3] ঐ টেস্টে ইংল্যান্ড ইনিংস ও ৮৫ রানের বিরাট ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। পরের টেস্টে ৬ ও ৩১ রান করেন। ফলে দল থেকে বাদ পড়ে যান।

এসেক্সে ভাল ক্রীড়াশৈলী উপস্থাপন করায় ১৯৭৮ সালে পুণরায় দলে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বিদ্রোহী দলের সাথে খেলার জন্য তিনি তিন বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েন। তারপরও টেস্ট ক্রিকেটে ৮,৯০০ রান নিয়ে এপ্রিল, ২০১৫ সাল পর্যন্ত ইংল্যান্ডের শীর্ষস্থানীয় রান সংগ্রহকারীর ভূমিকায় আসীন রয়েছেন।[4]

ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট দলের বৈশ্বিক টেস্ট ক্রিকেট অঙ্গনে একাধিপত্য বিস্তারকালীন সময়ে তার খেলোয়াড়ী জীবন কাটে। এ সময়ে তার প্রায় চল্লিশ গড়ের ব্যাটিং সত্যিই উল্লেখযোগ্য অবদানরূপে বিবেচিত হয়। হেডিংলিতে ১৯৯১ সালে তার করা ১৫৪ রান অনেকগুলো সেরা সেঞ্চুরিগুলোর একটি হিসেবে ক্রিকেট বোদ্ধা ও সাবেক খেলোয়াড়গণ মনে করেন। তার এ ইনিংসের কল্যাণে ইংল্যান্ড দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে জয় পায়। ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে সংগৃহীত ২৫২ রানের মধ্যে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন তিনি। এ পর্যায়ে ম্যালকম মার্শাল, কার্টলি অ্যামব্রোসকোর্টনি ওয়ালসের বোলিং আক্রমণ সামাল দিয়েছিলেন গ্রাহাম গুচ।

লর্ডসে তিনি নিজস্ব সর্বোচ্চ ৩৩৩ রান করার পাশাপাশি দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি করে সর্বোচ্চ রানের কীর্তিগাঁথা অক্ষুণ্ণ রয়েছে।

১৯৮৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপ

১৯৮৭ সালে ভারত-পাকিস্তানে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত ৪র্থ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের দ্বিতীয় সেমি-ফাইনালে দলীয় ৭৯ রানে ২ উইকেটের পতনের পর অধিনায়ক মাইক গ্যাটিংয়ের সাথে জুটি বেধে ১৯ ওভারে ১১৭ রান করেন যা দলকে ফাইনালে উন্নীত করতে সহায়তা করেছিল। স্ট্যাম্পিংয়ের মাধ্যমে গুচ ১১৫ রান করে আউট হন। ঐ প্রতিযোগিতায় তিনি ৪৭১ রান করে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী হন ও ইংল্যান্ড রানার্স-আপ হয়েছিল।

সম্মাননা

টেস্টে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ইংরেজ ক্রিকেটার
খেলোয়াড়টেস্টরানসর্বোচ্চগড়সেঞ্চুরি
অ্যালাস্টেয়ার কুক১২৬৯,৯৬৪২৯৪৪৬.৫৬২৮
গ্রাহাম গুচ১১৮৮,৯০০৩৩৩৪২.৫৮২০
অ্যালেক স্টুয়ার্ট১৩৩৮,৪৬৩১৯০৩৯.৫৪১৫
ডেভিড গাওয়ার১১৭৮,২৩১২১৫৪৪.২৫১৮
কেভিন পিটারসন১০৪৮,১৮১২২৭৪৭.২৮২৩
জিওফ্রে বয়কট১০৮৮,১১৪২৪৬*৪৭.৭২২২
মাইকেল অ্যাথারটন১১৫৭,৭২৮১৮৫*৩৭.৬৯১৬
ইয়ান বেল১১৮৭,৭২৭২৩৫৪২.৬৯২২
কলিন কাউড্রে১১৪৭,৬২৪১৮২৪৪.০৬২২
ওয়ালি হ্যামন্ড৮৫৭,২৪৯৩৩৬*৫৮.৪৫২২

১৯৮০ সালে উইজডেন কর্তৃক উইজডেন বর্ষসেরা ক্রিকেটাররূপে পুরস্কৃত হন। ২০০৯ সালে রিচি বেনো, ফ্রাঙ্ক ওলি, ডেনিস কম্পটন, হ্যারল্ড লারউডের সাথে তাকেও আইসিসি ক্রিকেট হল অব ফেমে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।[5] ৮ নভেম্বর, ২০১১ তারিখে পূর্ব লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক পুরস্কার গ্রহণ করেন।

তথ্যসূত্র

  1. "Records / Combined First-class, List A and Twenty20 / Batting records / Most runs in career" (ইংরেজি ভাষায়)। ESPNcricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১০
  2. "10,000 or More Runs in List A Matches" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০১১-০৯-২৫
  3. Cricinfo - 1st Test: England v Australia at Birmingham, 10-14 July 1975
  4. Most Runs for England, stats.espncricinfo.com Retrieved on 4 September, 2011.
  5. "Benaud, Gooch, Compton, Larwood and Woolley inducted into Cricket Hall of Fame" (ইংরেজি ভাষায়)। ১২ সেপ্টেম্বর ২০১২ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৯ মার্চ ২০১৩

আরও দেখুন

বহিঃসংযোগ

ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
জন এম্বুরি
ডেভিড গাওয়ার
ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অধিনায়ক
১৯৮৮
১৯৮৯১৯৯৩
উত্তরসূরী
ডেভিড গাওয়ার
মাইক অ্যাথারটন
পূর্বসূরী
কিথ ফ্লেচার
কিথ ফ্লেচার
এসেক্স ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৮৬১৯৮৭
১৯৮৯১৯৯৪
উত্তরসূরী
কিথ ফ্লেচার
পল প্রিচার্ড
This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.