শায়ান চৌধুরী অর্ণব

শায়ান চৌধুরী অর্ণব (জন্ম: ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৮; অর্ণব নামেই অধিক পরিচিত[1]) একজন বাংলাদেশী সঙ্গীতজ্ঞ, গায়ক, গীতিকার এবং রেকর্ড প্রযোজক[2] প্রথমদিকে তিনি বাংলাদেশী বাংলা ব্যান্ডের সদস্য হিসেবে কাজ করলেও[1][3] পরবর্তীকালে প্রেয়ার হল নামে আলাদা একটি ব্যান্ড গঠন করেন।

শায়ান চৌধুরী অর্ণব
অর্ণব, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস এ্যাট ডালাস, আক্টোবর ২০১২
জন্ম
শায়ান চৌধুরী অর্ণব

(1978-01-27) জানুয়ারি ২৭, ১৯৭৮
ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয়তাবাংলাদেশি
শিক্ষাস্নাতোকোত্তর (কলা)
যেখানের শিক্ষার্থীকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
পেশা
  • সঙ্গীতঙ্গ
  • গায়ক
  • গানলেখক
কার্যকাল১৯৯৭বর্তমান
নিয়োগকারীপ্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা
প্রতিষ্ঠানআধখানা মিউজিক কোম্পানি
আদি নিবাসঢাকা
দাম্পত্য সঙ্গীসাহানা বাজপেয়ী (বি. ২০০১; বিচ্ছেদ. ২০০৮)
পিতা-মাতা
  • স্বপন চৌধুরী (বাবা)
আত্মীয়
  • তপন চৌধুরী (কাকা)
সঙ্গীত কর্মজীবন
উদ্ভবঢাকা
ধরন
বাদ্যযন্ত্রসমূহ
লেবেল
  • আধখানা মিউজিক কোম্পানি
  • বেঙ্গল মিউজিক কোম্পানি লিমিটেড
সহযোগী শিল্পী

একক সঙ্গীতজীবনে তার ছয়টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে।[1] ২০১৫ সালের এপ্রিলে মুক্তি পায় তার ষষ্ঠ একক অ্যালবাম খুব ডুব[4] সঙ্গীতের পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন নাটকে কণ্ঠ দিয়েছেন এবং টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে জিঙ্গেল করেছেন। জাগো (২০১০) বাংলা চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনার পাশাপাশি কণ্ঠশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন আহা! (২০০৭), মনপুরা (২০০৯) চলচ্চিত্রে।[1] ১৯৯৮ সালে তিনি কলকাতার বাংলা চলচ্চিত্রে গান করেন।[5] অর্ণব ২০১৩ সাভার ভবন ধস নিয়ে মৃত্তিকা গুণের লেখা মন খারাপের বৃষ্টি শিরোনামে একটি গান করেন।[6]

প্রাথমিক জীবন

শায়ান চৌধুরী অর্ণব ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের ঢাকায় জন্ম নেন। তার বাবা চিত্রশিল্পী স্বপন চৌধুরী। তিনি ঢাকার উইল্‌স্‌ লিট্‌ল্‌ ফ্লাওয়ার স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু করেন, তবে এর কিছুদিন পর দ্বিতীয় শ্রেণীতে অধ্যয়নের জন্য তাকে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় সাউথ পয়েন্ট স্কুলে পাঠানো হয়। অর্ণব পাঠ্য ভবন থেকে মাধ্যমিক এবং কলকাতা এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন থেকে স্নাতকোত্তর (এমএফএ) সম্পন্ন করেন।[1][2][7]

অর্ণবের চাচা তপন চৌধুরী বাংলাদেশের একজন সঙ্গীতশিল্পী।

সঙ্গীত জীবন

সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালীন সময়ে অর্ণব এস্রাজ শেখা শুরু করেন। পরবর্তীকালে ধীরে-ধীরে সঙ্গীতের বিভিন্ন ধারা, বিশেষ করে পাশ্চাত্য সঙ্গীতের উপর তিনি জ্ঞান অর্জন করেন। বিদ্যালয়ে থাকাকালীন তিনি গিটার এবং কিবোর্ড বাজানো শুরু করেন। শান্তিনিকেতনের বাউল গান তার পরবর্তী সঙ্গীতে ছাপ ফেলে। ১৯৯৭ সালে অর্ণব নিজের কিছু ভারতীয় সঙ্গীদের সাথে বাংলা নামে ব্যান্ডদল গঠন করেন। পরবর্তিতে বুনো এবং আনুশেহ্‌ অনাদিল দলটিতে যোগ দেয়।

শান্তিনিকেতন থেকে বিদায় নিয়ে অর্ণব বাংলাদেশে ফিরে এলে বাংলা একটি পরিপূর্ণ বাংলাদেশী ব্যান্ড হিসাবে পরিচিত পায় যা ছিলো অর্ণব ও অন্যান্য ব্যান্ড সদস্যদের বহুদিনের স্বপ্ন। অর্ণব বাংলা ব্যান্ড ছাড়াও তিনি প্রেয়ার হল নামের একটি ব্যান্ডেরও সদস্য।

২০১০ সাল থেকে তিনি আধখানা মিউজিক কোম্পানির অধিনে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। এখানে তিনি মিউজিক ভিডিও, প্রামাণ্যচিত্র এবং বিজ্ঞাপন ভিডিও ইত্যাদির নির্দেশনা দেন।[1] সেখান থেকেই তার সঙ্গীতের সফর শুরু হয়। পাঠভবনে ছাত্রদের গাছতলায় গুরুশিষ্য পরম্পরায় পড়ানো হতো। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেই ক্লাস মুলতুবি রাখা হত। এই সময় অর্ণব তার কিছু বন্ধুদের সাথে বসে গান লিখতেন ও তাতে সুরারোপ করতেন।

প্রাথমিক কাজ

ব্যান্ডের পাশাপাশি একক সঙ্গীতজীবনে অর্ণবের ছয়টি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে।[1] ২০০৫ সালে তার প্রথম একক স্টডিও অ্যালবাম চাইনা ভাবিস প্রকাশিত হয়।[8][9] তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম হোক কলরব প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে।[10] শান্তিনিকেতনে থাকার সময় নিজে ও বন্ধুদের নিয়ে তিনি যেই গানগুলি করেছিলেন সেগুলোই এই অ্যালবামে স্থান পেয়েছে। তার তৃতীয় অ্যালবাম "ডুব"। কাব্যিক ভাষায় গানের কথা ও জটিল সুরমুর্ছনার সুবাদে অর্ণব বাংলাদেশী শ্রোতাদের কাছে অনেক জনপ্রিয়। তার চতুর্থ অ্যালবাম "রোদ বলেছে হবে" । এটাই সম্ভবত তার অ্যালবাম গুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরীক্ষামুলক অ্যালবাম। তার পঞ্চম অ্যালবাম আধেক ঘুমে, যেটি একটি রবীন্দ্রসঙ্গীতধর্মী অ্যালবাম। তার সর্বশেষ অ্যালবাম খুব ডুব, যেটি ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়।

এছাড়া সাহানা বাজপেয়ীর রবীন্দ্রসঙ্গীত অ্যালবাম "নতুন করে পাবো বলে" এবং কৃষ্ণকলির অ্যালবাম "সূর্যে বাঁধি বাসা"-তেও তিনি সুরারোপ করেছেন।

ব্যক্তিগত জীবন

ব্যক্তিগত জীবনে অর্ণব ভারতীয়-বাংলাদেশী সঙ্গীতশিল্পী সাহানা বাজপেয়ীকে বিয়ে করেন ২০০১ সালে। তারা একসাথে পড়াশোনা করেছেন শান্তিনিকেতনের পাঠ্যভবনে। তাদের বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটে বিবাহের ৭ বছর পর ২০০৮ সালে। বর্তমানে ভারতের প্রবাসী হন ।

ডিস্কোগ্রাফি

২০১২ সালে ডালাসে বাংলাদেশ নাইটে নাজিয়ার সাথে অর্ণব
২০১৩ সালে কলকাতায় কনসার্টে অর্ণব

স্টুডিও অ্যালবাম

লাইভ অ্যালবাম

  • অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস লাইভ (২০১৩; ২০০৮ - আগস্ট ২০০৯ বিশ্ব সফর থেকে নেয়া গান)
  • অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস ২ (কাজ চলছে)[4]

অন্যান্য শিল্পীদের সমন্বিত

চলচ্চিত্রে কণ্ঠ

সঙ্গীত পরিচালনা

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

  1. "Singer Shayan Chowdhury Arnob Biography and Picture"bdalltime.com। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫
  2. "শায়ান চৌধুরী অর্ণব"। omnilexica.com। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫
  3. মাহফুজ রহমান (মার্চ ১৩, ২০১৪)। "অর্ণব ও তাঁর বন্ধুরা"দৈনিক প্রথম আলোঢাকা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ০১, ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  4. রবিউল ইসলাম জীবন (মার্চ ১৯, ২০১৫)। "'ডুব' থেকে 'খুব ডুব'"দৈনিক কালের কণ্ঠঢাকা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ০১, ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  5. "শায়ান চৌধুরী অর্ণব"priyo.com। ৪ মার্চ ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫
  6. "সাভার ট্র্যাজেডি নিয়ে অর্ণবের গান"দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ। মে ০৯, ২০১৩। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |তারিখ= (সাহায্য)
  7. জিয়া নাজমুল ইসলাম (মে ২৪, ২০১৪)। "Arnob: More Than A Musician"দ্য ডেইলি স্টার। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫
  8. "নতুন প্রজন্মের সংগীত তারকা অর্ণব"news-bangla.com। অক্টোবর ১৬, ২০০৮। ২৭ অক্টোবর ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫
  9. "দশ বছর কোনো টাকা পাননি অর্ণব!"দৈনিক সুপ্রভাত বাংলাদেশ। ডিসেম্বর ২২, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫
  10. "Interview with Arnob"নিউ এজ (বাংলাদেশ)ঢাকা। ২৩ নভেম্বর ২০০৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ২৩, ২০০৭
  11. "Arnob's new album"ঢাকা। মার্চ ৩১, ২০১৫। ৩ এপ্রিল ২০১৫ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ এপ্রিল ০১, ২০১৫ এখানে তারিখের মান পরীক্ষা করুন: |সংগ্রহের-তারিখ= (সাহায্য)
  12. "কলকাতা কলিং ছবিতে অর্ণবের গান"বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম। ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৪। সংগ্রহের তারিখ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.