অপ্সরা
অপ্সরা হলো হিন্দু এবং বৌদ্ধ পুরাণ অনুসারে মেঘ এবং জল থেকে উদ্ভুদ্ধ নারী আত্মা।

একজন অপ্সরা (সংস্কৃত: अप्सराः apsarāḥ, বহুবচন अप्सरसः apsarasaḥ, stem apsaras-, a feminine consonant stem, អប្សរា), এছাড়াও খেমের অনুসারে বিদ্যাধারী (ទេពអប្សរ), Accharā (পালি) বা A Bố Sa La Tư (ভিয়েতনামি), বিদ্যাধারী (ইন্দোনেশীয় এবং মালয়), Biraddali (Tausug), হপ্সরী বা Widodari (জাভানীয়) এবং অপ্সন (থাই: อัปสร) হিসাবে পরিচিত। "অপ্সরা" শব্দের ইংরেজি অনুবাদ "জলপরী," "স্বর্গীয় জলপরী," এবং "স্বর্গীয় কুমারী" অন্তর্ভুক্ত করে থাকে।
সংস্কৃত শব্দ অপ্ ( বাংলা অর্থ জল বা পানি) হতে এদের উৎপত্তি তাই এদের অপ্সরা বলা হয়। এরা নাচে-গানে পারদর্শী ছিলেন। এই কারণেই এদের ইন্দ্রের সভা গায়িকা ও নর্তকী হিসেবে দেখা যায়। অপ্সরাদের অধিপতি ছিলেন কামদেব। অপ্সরাদের সংখ্যা মোটামুটি ৬০ কোটি।
দেবাসুরের সমুদ্র মন্থনের সময়ে এরা সমুদ্রের ভিতর থেকে অসংখ্য নারীর সথে উঠে আসেন। কিন্তু কোন দেবদানবই তাদের গ্রহণ করতে রাজী হয় নি, তাই তারা সাধারণ নারী হিসেবেই গণ্য হতে থাকেন। এছাড়াও মনুসংহিতায় তাদের জন্ম সম্পর্কে বলা হয়েছে যে - সাতজন মনুর সৃষ্টি তারা।(মনুসংহিতা)
ঋগ্বেদ অণুযায়ী অপ্সরা হলেন গন্ধর্বের স্ত্রী। বেদে একমাত্র উর্বশীর নামেরই উল্লেখ রয়েছে। পরবর্তীকালের অন্যান্য পৌরাণিক গল্পে ইন্দ্রের সভানর্তকীদের সবাইকেই অপ্সরা বলা হয়েছে। দু’ধরনের অপ্সরা আছেন— লৌকিক এবং দৈবিক।
অপ্সরাদের সৌন্দর্য ও যৌন আবেদনের কথা সব সময়ে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়। অপ্সরারা মায়ারূপীনী, সেইজন্য নিজেদের দেহের পরিবর্তন করতে পারতো। অথর্ববেদে আছে, এরা পাশা খেলতে খুব ভালোবাসতো এবং পাশা খেলায় খুব পারদর্শী ছিল।(অথর্ববেদ)
কম্বোডিয়ার একটি বিখ্যাত নৃত্যকলা রয়েছে যা পশ্চিমে ‘অপ্সরা ডান্স’ নামে পরিচিত। চিনের বিখ্যাত বৌদ্ধ গুহাগুলি যেমন মোগাও কেভ, ইউলিন কেভ, ইয়ুংগাং এবং লংমেন গ্রোটোস ইত্যাদির গুহাচিত্রে বহু অপ্সরা অঙ্কিত রয়েছে। প্রচলিত ধারণা অণুযায়ী অপ্সরারা ইচ্ছে মতো রূপ ধারণ করতে পারেন এবং তারা জুয়া খেলায় ভাগ্য নির্ধারণ করেন।
একটি মত অণুযায়ী ইন্দ্রের সভায় ২৬ জন অপ্সরা রয়েছেন এবং এরা প্রত্যেকেই এক একটি শিল্পকলায় পারদর্শী।
অপ্সরাদের মধ্যে অন্যতমা হলেন উর্বশী, মেনকা, রম্ভা, তিলোত্তমা। এছাড়া ঘৃতাচী, অলম্বুষা, মিশ্রকেশী্, জানপদী, ও বিদ্যুৎপর্ণা, অদ্রিকা, পঞ্চচূড়া, সোমা, মরীচি, শুচিকা, অম্বিকা, ক্ষেমা, অসিতা, সুবাহু, সুপ্রিয়া, সুগন্ধা, সুরসা, বিশ্বাচী, পূর্বচিত্তি, প্রম্লোচা, বর্গা, প্রমথিনী, কাম্যা, শারদ্বতী, গুণবরা, ঋতুস্থলা, বুদ্বুদা, সৌরভেয়ী, ইরা, চিত্রাসেনা, সমীচী, চারুনেত্রা, পুঞ্জিকস্থলা, শুচিস্মিতা, বিশালনয়নার নামও নানা স্থানে উল্লেখিত হয়েছে।
দেবরাজ ইন্দ্র প্রায়েই অপ্সরাদের মর্তে পাঠাতেন মুনি-ঋষিদের প্রলোভিত করে ধ্যান-ভঙ্গ করার জন্য। কারণ ধ্যান সমাপ্ত হলে তারা প্রবল পরাক্রান্ত হয়ে ওঁর ইন্দ্রত্ব দাবী করে বসতে পারেন!
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
![]() |
উইকিমিডিয়া কমন্সে অপ্সরা সংক্রান্ত মিডিয়া রয়েছে। |
- Chinese Apsaras depicted in Dunhuang Caves
- Comparison of Khmer Apsaras and Devata
- Costumes and Ornaments after the Devata of Angkor Wat by Sappho Marchal - Book review
- Indian Devata at Rajarani Temple in Orissa
- Japanese traditions of celestial maidens Tennin (apsara), Hiten (flying apsara), Tennyo (celestial maiden) & Karyobinga (bird body with angel head)
- Apsara Dance at Siem Reap, Cambodia
- Sanghyang Dedari, Balinese dance depicting bidadari (vidhyadari) celestial maiden