হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের দিনাজপুরে বাঁশেরহাট নামক স্থানে অবস্থিত একটি সরকারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। বাংলাদেশের ২য় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং তেভাগা আন্দোলন এর জনক ও এ অঞ্চলের জনদরদী কৃষকনেতা হাজী মোহাম্মদ দানেশ এর নামানুসারে এর নামকরণ করা হয়। এটি উত্তর বাংলার সেরা বিদ্যাপীঠ যা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মাঝে শীর্ষস্থানীয়।
![]() | |
ধরন | সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় |
---|---|
স্থাপিত | ১৯৭৯ ( বিশ্ববিদ্যালয় চালু ১১সেপ্টেম্বর ১৯৯৯) |
আচার্য | রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ |
উপাচার্য | প্রফেসর ড. মু. আবুল কাসেম |
ডিন | ৯ Institute=1(Institute of Research and Training(IRT) |
শিক্ষায়তনিক কর্মকর্তা | 293 জন |
প্রশাসনিক কর্মকর্তা | ৫৫০ জন |
শিক্ষার্থী | ১১০০০ |
অবস্থান | , |
শিক্ষাঙ্গন | ১৩৫ একর(৫৫'হেক্টর), শহর হতে ০৯ কিলোমিটার উত্তরে এবং ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়কের পশ্চিমে |
সংক্ষিপ্ত নাম | হাবিপ্রবি (HSTU) |
অধিভুক্তি | বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন |
ওয়েবসাইট | www.hstu.ac.bd |
ইতিহাস
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু ১৯৭৬ সালে এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন ট্রেনিং ইনিস্টিটিউট (AETI) হিসেবে যা কৃষিতে ডিপ্লোমা ডিগ্রী প্রদান করতো। ১৯৮৮ সালের ১১ নভেম্বর এটিকে স্নাতক পর্যায়ে কৃষি কলেজে উন্নীত করা হয়। এটি তখন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ এর অধিভুক্ত কলেজ ছিল। ১১ সেপ্টেম্বর ১৯৯৯ এই কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার ঘোষণা দেয়া হয়। এটিই বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। ২০০০ সালে কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করার লক্ষে “বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প” গ্রহণ করা হয়। ৮ জুলাই ২০০১ হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাশ করা হয়। ২০০২ সালের ৮ এপ্রিল মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। ১৬ই এপ্রিল আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী প্রফেসর ড: মো: মোশাররফ হোসাইন মিঞাঁ এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য। এটি উত্তরবঙ্গ তথা রংপুর বিভাগের প্রথম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মাধ্যম ইংরেজি। কোর্স-ক্রেডিট-সেমিস্টার পদ্ধতিতে পরিচালিত । বর্তমানে ৯ টি অনুষদের অধীনে ২৩ টি বিষয়ে সনদ প্রদান করা হয়, এর মধ্যে স্নাতক পর্যায়ে ৮ টি অনুষদে ২২ টি বিষয় এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে একটি অনুষদে ২৮ টি বিষয় রয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের আয়তন ১৩৫ একর।
ক্যাম্পাস
ক্যাম্পাস এর পাশেই ঢাকা -দিনাজপুর মহাসড়ক অবস্থিত ৷ দিনাজপুর শহর হতে ক্যাম্পাস এর দূরত্ব মাত্র ১০ কি.মি.। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে সবুজ গাছপালার সমারোহ। আছে লাল-সাদা ইটের দৃষ্টিনন্দন সুবিশাল ভবন, আছে শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার, জিমন্যাশিয়াম, টিএসসি, ক্যান্টিন আছে।
অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ৫টি অ্যাকাডেমিক ভবন, একটি প্রশাসনিক ভবন, ৫টি ছাত্র হোস্টেল(একটি বিদেশী শিক্ষার্থীদের), ৩টি ছাত্রী হোস্টেল, আধুনিক সাজসজ্জা বিশিষ্ট ১০০ আসনের একটি ভিআইপি সেমিনার কক্ষ, ৬০০ ও ২৫০ আসন বিশিষ্ট আরও দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অডিটরিয়াম। এছাড়াও একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে পূর্ণাঙ্গ করতে রয়েছে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ক্লাব,২টি মসজিদ, ১৩৬টি আবাসিক ইউনিট/ভবন,১টি শিশুপার্ক, পোষ্ট অফিস, রূপালী ব্যাংক শাখা, মেঘনা ব্যাংক শাখা, শ্রমিক ব্যারাক, সার্বাক্ষণিক ইন্টারনেট সুবিধা, নিজস্ব বৈদ্যুতিক লাইন,বৃহৎ খেলার মাঠ, ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা। গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ এন্ড ট্রেনিং (আই.আর.টি.)। আছে একটি ভি. আই. পি গেস্ট হাউস, হাবিপ্রবি স্কুল, ডাক্তার ও এ্যাম্বুলেন্সসহ ১২ শয্যার একটি মেডিক্যাল সেন্টারও। গবেষণালব্ধ থিসিস, রিপোর্ট, জার্নালের পাশাপাশি রয়েছে ২৫ হাজার বইয়ের সমৃদ্ধ লাইব্রেরি। দুষ্প্রাপ্য গাছ-গাছালির আকর্ষণীয় সংগ্রহ নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি সমৃদ্ধ বোটানিক্যাল গার্ডেন এবং বিভিন্ন বিভাগের তত্ত্বাবধানে গবেষণার জন্য জামপর্স্নাজম সেন্টার।
একাডেমিক কার্যক্রম
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার পদ্ধতিতে পাঠদান করা হয়। প্রতি সেমিস্টার সমাপ্ত হয় ২১ সপ্তাহে। যেখানে ইংরেজি মাধ্যমে ক্লাস ও পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। পাশাপাশি বাস্তব জ্ঞান অর্জনের জন্য রয়েছে বিভিন্ন বিষয়ের উপর শিক্ষা সফর। মেধাবীদের জন্য রয়েছে বিভিন্ন পদক ও বৃত্তির ব্যবস্থা। একাডেমিক কার্যক্রম বছরে ২টি সেমিস্টারে ক্রেডিট পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়।
অনুষদ ও ডিসিপ্লিন সমূহ
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯টি অনুষদের অধীন ২৩টি স্নাতক ডিগ্রী এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট অনুষদের অধীন ৩২টি স্নাতকোত্তর ডিগ্রী প্রদান করে।
স্নাতকোত্তর ডিসিপ্লিন সমূহ
- কৃষি অর্থনীতি
- উদ্যানবিদ্যা
- মৃত্তিকাবিজ্ঞান
- পতঙ্গবিজ্ঞান
- উদ্ভিদ রোগবিদ্যা
- জিনতত্ত্ব এবং উদ্ভিদ প্রজনন
- ফসল শারীরবিদ্যা এবং বাস্তুবিদ্যা
- কৃষি সম্প্রসারণ
- কৃষি রসায়ন
- কৃষি বনায়ন ও পরিবেশ
- পরিসংখ্যান
- জৈব রসায়ন এবং জৈবাণুবিজ্ঞান
- মৎস্য জীববিজ্ঞান ও জিনতত্ত্ব
- মৎস্য ব্যবস্থাপনা
- খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ
- খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি
- খাদ্য বিজ্ঞান ও পুষ্টি
- জৈবাণুবিজ্ঞান
- রোগবিদ্যা ও পরজীববিদ্যা
- ডেইরি ও পোল্ট্রি বিজ্ঞান
- অঙ্গব্যবচ্ছেদবিদ্যা ও জীবদেহের তন্তুবিন্যাসবিদ্যা
- সাধারণ প্রাণী বিজ্ঞান ও পুষ্টি
- জিনতত্ত্ব এবং পশু প্রজনন
- চিকিৎসা, শল্য এবং ধাত্রীবিদ্যা
- শারীরবিদ্যা ও ঔষধসংক্রান্ত বিজ্ঞান
- ব্যাবস্থাপনা
- অর্থশাস্ত্র
- বিপণন
- হিসাবরক্ষণ
- ফার্ম পাওয়ার এন্ড মেশিনারিজ
- ইরিগেশন এন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট
- ইংরেজী
স্নাতক ডিসিপ্লিন সমূহ
প্রকৌশল অনুষদ
- খাদ্য এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রকৌশল
- কৃষি প্রকৌশল
- স্থাপত্যবিদ্যা
- পুরকৌশল
- যন্ত্রকৌশল
কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ
- কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল
- ইলেক্ট্রনিক্স ও যোগাযোগ প্রকৌশল
- তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল
ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ
- মার্কেটিং
- একাউন্টিং
- ম্যানেজমেন্ট
- ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং
কৃষি অনুষদ
- এগ্রিকালচার
মৎস্য অনুষদ
- ফিসারিজ
ভেটেরিনারি এবং প্রাণী অনুষদ
- ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন
বিজ্ঞান অনুষদ
- পদার্থবিদ্যা
- রসায়ন
- গণিত
- পরিসংখ্যান
সমাজবিজ্ঞান ও মানবিক অনুষদ
- ইংরেজি
- অর্থনীতি
- সমাজবিজ্ঞান
- ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ
আবাসন
বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সঙ্কট বিদ্যমান। বর্তমানে ছেলেদের জন্য ৪ টি হল ও মেয়েদের জন্যে ৩ টি হল বিদ্যমান। ছেলেদের জন্যে শেখ রাসেল হল, শেখ রাসেল (সম্প্রসারিত) হল, শহীদ জিয়াউর রহমান হল(ডি-২), তাজউদ্দীন আহমেদ হল এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল । মেয়েদের জন্যে বেগম ফজিলাতুন্নেচ্ছা মুজিব হল, কবি সুফিয়া কামাল হল ও আইভি রহমান হল। বিদেশি ছাত্রদের জন্য আলাদা আবাসন রয়েছে ।
ছবির গ্যালারী
- প্রশাসনিক ভবন
- একাডেমিক ভবন
- একনজরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন
- ক্যাম্পাসে বাংলাদেশের মানচিত্র
- বিশ্ববিদ্যালয় প্রধান ফটক
- পাঠাগার ভবন
- কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার,হাবিপ্রবি
- কেন্দ্রীয় লাইব্রেরী,হাবিপ্রবি