নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় নীলফামারী শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত [1]। নীলফামারীর প্রধান শহর থেকে জলঢাকা অভিমুখী সড়কে বিদ্যালয়টির প্রধান ফটক অবস্থিত। বিদ্যালয়টির বিপরীত পার্শ্বে নীলফামারী পি টি আই অবস্থিত। বিদ্যালয়টির সীমানার মধ্যেই নীলফামারী জেলা শিক্ষা অফিস, জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অফিস, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস এবং পৌরসভার পানির ট্যাংকি অবস্থিত। বিদ্যালয়ের পশ্চিম পার্শ্বে পৌর ভবন এবং দক্ষিণ পার্শ্বে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের বাস ভবন অবস্থিত। পৌরসভা সংলগ্ন বড়মাঠ বিদ্যালয়টির প্রধান খেলার মাঠ। এছাড়াও বিদ্যালয়ের সীমানার ভিতরে আরও একটি খেলার মাঠ রয়েছে। ২০০৮ সালে নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় তার প্রতিষ্ঠার ১২৫ বছরপূর্তি অত্যন্ত জাঁকজমকভাবে পালন করে। [2]

নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়
নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
ঠিকানা
নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় সড়ক
নীলফামারী
নিলফামারী জেলা, ৫৩০০
 বাংলাদেশ
তথ্য
প্রতিষ্ঠাকাল১৮৮২
প্রতিষ্ঠাতাব্রিটিশ সরকার
অধ্যক্ষমোঃ গোলাম রব্বানী
শিক্ষকমণ্ডলী৫০
শ্রেণী৬-১০
বয়সসীমা১১-১৬
শিক্ষার্থী সংখ্যা১,১০০
ভাষার মাধ্যমবাংলা
বিদ্যালয়ের কার্যসময়১০ ঘণ্টা
ক্যাম্পাসনীলফামারী
ক্যাম্পাসের আকার১৩.২৩ একর (৫৩,৫০০ মি)
ক্যাম্পাসের ধরনশহর
ক্রীড়াফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, হ্যান্ডবল
শিক্ষা বোর্ডদিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড

প্রতিষ্ঠাকাল

১৮৮২ সালে ইংলিশ হাইস্কুল হিসাবে এটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে জাতীয়করন করা হয়।

ইতিহাস

বর্তমান নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৮৮২ সালে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ইংলিশ হাইস্কুল হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তখন নীলফামারী মহকুমায় চাকুরীরত কর্মচারী, ব্যবসায়ী, ও বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিদের দ্বারা এটি উন্নতি লাভ করে। তৎকালীন জমিদার রেবতি মোহন চৌধুরী ও তমিজ উদ্দিন চৌধুরী নীলফামারীতে শিক্ষার আলো ছড়ানোর জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে ১৩.২৩ একর জমি দান করেন যার উপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত। ১৯১৪ সালে তদানিন্তন স্কুল কমিটি বিদ্যালয়ের পুরাতন লাল ভবনটি নির্মাণ করেন। পরবর্তিতে ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত সরকার বিভিন্ন মেয়াদে সহায়তা করেছেন এবং ১৯৬৮ সালে বিদ্যালয়টিকে নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হিসাবে জাতীয়করণ করা হয়েছিল।

আয়তন

বিদ্যালয়টির মোট আয়তন ১৩.২৩ একর। একটি পুরাতন লাল ভবন, দুটি নতুন একাডেমিক ভবন, একটি বিজ্ঞান ভবন,প্রধানশিক্ষকের বাসভবন, একটি মসজিদ ও একটি তিনতলা বিশিষ্ট ছাত্রাবাস নিয়ে বিদ্যালয়ের অবকাঠামো গঠিত। বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের একটি বড় কক্ষে নিজস্ব লাইব্রেরি ও তার পাশের কক্ষে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল কর্তৃক স্থাপিত একটি অত্যাধুনিক কম্পিউটার ল্যাব অবস্থিত। এছাড়াও বিদ্যালয়ের নিজস্ব পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞান ল্যাবরেটরি রয়েছে।

একাডেমিক কার্যক্রম

বিদ্যালয়টির একাডেমিক কার্যাবলী উন্নয়নের জন্য নিয়মিত এস,বি,এ গ্রহণ, নম্বরপত্র প্রদান, অভিভাবক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এর মাধ্যমে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হয়। বিদ্যালয়টিতে দুটি শিফট চালু রয়েছে। প্রভাতি শিফট সকাল ৭.০ টায় শুরু এবং দুপুর ১১.৪৫ এ সমাপ্ত হয়। দিবা শিফট দুপুর ১২.০০ টায় শুরু এবং বিকাল ৪.৪৫ এ সমাপ্ত হয়। বিদ্যালয়টিতে ৬ষ্ঠ শ্রেনী হতে ১০ম শ্রেনী পর্যন্ত মোট ১১০০ জন এর কাছাকাছি ছাত্র রয়েছে।

সহ শিক্ষা কার্যক্রম

খেলাধুলা, শিক্ষা সংস্কৃতি সহ বিবিধ ও সামাজিক কার্যাবলীতে অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ছাত্রদের অংশগ্রহণ ও সাফল্য অনস্বীকার্য। এছাড়াও সহশিক্ষা কার্যক্রমে বিদ্যালয়টির ব্যাপক সুনাম রয়েছে। প্রতিবছর বার্ষিক ক্রীড়া, বিজ্ঞান মেলা,শিক্ষা সফর, মিলাদ ও স্বরসতী পূজা সহ যাবতীয় ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি ও নববর্ষের অনুষ্ঠান জাঁকজমকের সাথে পালন করা হয়। অনুষ্ঠানগুলিতে জেলার বরেণ্য ব্যাক্তিবর্গ ও জেলা প্রশাসক মহোদয় অংশ গ্রহণ করেন।

দরিদ্র তাহবিল

বিদ্যালয়ের একটি দরিদ্র তহবিল রয়েছে, যেখান থেকে গরিব ও মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি প্রদান করা হয়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিতে বিনাবেতনে ও অর্ধবেতনে পড়ার সুযোগ রয়েছে।

পরীক্ষার ফলাফল

নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিগত পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল বরাবরই ভাল। ২০০৮ সাল থেকে এই বিদ্যালয়ের ছাত্ররা এস. এস. সি. পরীক্ষায় শতভাগ উত্তীর্ণ হচ্ছে।

পরীক্ষার বছর মোট পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণের হার এ প্লাস প্রাপ্তি
২০০২ ১৭৮ ১৪৬ ৮২%
২০০৩ ১৭১ ১৩২ ৭৭%
২০০৪ ১৫৮ ১০৯ ৬৯% ০৬
২০০৫ ১৮৩ ১৫১ ৮২% ১৮
২০০৬ ১১২ ১০৯ ৯৮% ৩৭
২০০৭ ১২৩ ১১৮ ৯৬% ৩৮
২০০৮ ৮৮ ৮৮ ১০০% ৪৮
২০০৯ ১০৫ ১০৫ ১০০% ৭৬
২০১০ ১০১ ১০১ ১০০% ৬৪
২০১১ ১১৫ ১১৫ ১০০% ৬৮
২০১২ ১৩২ ১৩২ ১০০% ৭৬
২০১৩ ১৮৫ ১৮৫ ১০০% ১০৯[3]
২০১৪ ২০৮ ২০৮ ১০০% ১৭১[4]

শিক্ষকমণ্ডলী

এই বিদ্যালয়ে প্রায় ৫০ জন শিক্ষক রয়েছে।

অন্যান্য

জেলার প্রধান হিসাবে মাননীয় জেলা প্রশাসক মহোদয় বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নিয়মাবলি এবং সভাপতির পরামর্শ মোতাবেক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় পরিচালনা করেন। প্রকৃত পক্ষে এই বিদ্যালয়ে কোন স্থানীয় ও আনুষ্ঠানিক কমিটি নাই।

অর্জন

নীলফামারী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় ১৯৮৯ ও ১৯৯২ সালে রাজশাহী বোর্ডের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল এবং রাষ্ট্রপতি পুরস্কার পেয়েছে। এছাড়াও অতীতে জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন খেলাধুলা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহণ করে পুরস্কার পাওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.