আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ (ইংরেজি: ICC Under-19 Cricket World Cup) বিভিন্ন দেশের জাতীয় ক্রিকেট দলের অনূর্ধ্ব-১৯ বছরের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট প্রতিযোগিতাবিশেষ। ১৯৮৮ সালে অস্ট্রেলিয়ায় ক্রিকেটের অন্যতম অংশ হিসেবে সর্বপ্রথম অণুষ্ঠিত হয়েছিল। পরবর্তীতে ১৯৯৮ সাল থেকে দ্বি-বার্ষিকভিত্তিতে নিয়মিতভাবে অণুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রতিযোগিতায় প্রধান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা হিসেবে রয়েছে আইসিসি

আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ
ব্যবস্থাপকআইসিসি
খেলার ধরনএকদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
প্রথম টুর্নামেন্ট১৯৮৮
শেষ টুর্নামেন্ট২০১৮
প্রতিযোগিতার ধরনরাউন্ড রবিন
নক-আউট
দলের সংখ্যা১৬
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ভারত
সর্বাধিক সফল ভারত
(৪ বার শিরোপা)
সর্বাধিক রান আয়ারল্যান্ড ইয়ন মর্গ্যান (৬০৬)
সর্বাধিক উইকেট অস্ট্রেলিয়া মইজেস হেনরিক্স
 আয়ারল্যান্ড গ্রেগ থম্পসন (২৭)
২০১৬ আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ

প্রথম প্রতিযোগিতায় মাত্র আট দল অংশ নেয়। কিন্তু পরবর্তী প্রতিযোগিতাগুলোয় ১৬-দলের অংশগ্রহণ ঘটে। অস্ট্রেলিয়া ও ভারত - প্রত্যেকেই তিনবার শিরোপা জয় করে। পাকিস্তান ২-বার এবং ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১-বার শিরোপা পায়। নিউজিল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কা চূড়ান্ত খেলায় অংশগ্রহণ করলেও শিরোপা জয়ে ব্যর্থ হয়। জুন, ২০১৬ সালে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ড (বিসিসিআই) ঘোষণা করে যে, ভারতীয় খেলোয়াড়গণ প্রতিযোগিতায় বয়সের শর্তাদি পালন করলেও কেবলমাত্র একবারই অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলবে।[1]

ইতিহাস

১৭৮৮ সালে ক্যাপ্টেন আর্থার ফিলিপের ১১টি জাহাজ নিয়ে সিডনী হার্বারে প্রত্যাবর্তনের ২০০ বছর উদযাপন উপলক্ষে ১৯৮৮ সালে ম্যাকডোনাল্ড'স বাইসেন্টিনিয়াল ইয়ুথ ওয়ার্ল্ড কাপ অণুষ্ঠিত হয়েছিল। ৭টি টেস্ট ক্রিকেটভূক্ত দেশসহ আইসিসি'র সহযোগী সদস্য একাদশ দলসমূহ রাউন্ড-রবিন পদ্ধতিতে খেলায় অংশ নেয়। অস্ট্রেলিয়া পাকিস্তানকে চূড়ান্ত খেলায় পরাভূত করেছিল।[2]

প্রতিযোগিতায় উল্লেখযোগ্যসংখ্যক খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করেছিলেন যারা পরবর্তীকালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হন। ইংল্যান্ডের অধিনায়ক নাসের হুসেন এবং মাইকেল অ্যাথারটন, ভারতের স্পিনার ভেঙ্কটাপতি রাজু, নিউজিল্যান্ডের অল-রাউন্ডার ক্রিস কেয়ার্নস, পাকিস্তানের মুশতাক আহমেদ এবং ইনজামাম-উল-হক, শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়াসুরিয়া এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্রায়ান লারা, রিডলি জ্যাকবসজিমি এডামস[3]

৫২.৩৩ রান গড়ে ৪৭১ রান নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ব্রেট উইলিয়াম সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী এবং ১৯ উইকেট নিয়ে ওয়েন হোল্ডওর্থ (অস্ট্রেলিয়া) ও মুশতাক আহমেদ যথাক্রমে ১২.৫২ ও ১৬.২১ রান দিয়ে সংগ্রহ করেন।[4]

২০১০ সালে প্রতিযোগিতাটি নিউজিল্যান্ডে জানুয়ারি মাসে অণুষ্ঠিত হয়। অস্ট্রেলিয়া ২৫ রানের ব্যবধানে পাকিস্তানকে চূড়ান্ত খেলায় পরাজিত করেছিল। ২০১২ সালের প্রতিযোগিতাটি অস্ট্রেলিয়ায় আগস্ট মাসে অণুষ্ঠিত হয়। ২৬ আগস্ট, ২০১২ তারিখে অণুষ্ঠিত চূড়ান্ত খেলায় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া ভারতের কাছে ৬ উইকেটে পরাজিত হয়। বিজয়ী দলের অধিনায়ক উন্মুক্ত চাঁদ ১১১* রান করে ম্যান অব দ্য ম্যাচ, অস্ট্রেলিয়ার উইলিয়াম বশিষ্ট ম্যান অব দ্য সিরিজ নির্বাচিত হন। সর্বাধিক রান করেন বাংলাদেশের আনামুল হক, ইংল্যান্ডের সর্বাধিক উইকেট পান রিস টপলী

২০১৪ সালের প্রতিযোগিতাটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রথমবারের মতো অণুষ্ঠিত হয়। পূর্ণাঙ্গ দেশবিহীন সদস্য হিসেবে একমাত্র আফগানিস্তান দল প্রথমবারের মতো ও প্রতিযোগিতার ইতিহাসে নেপালের পর দ্বিতীয়বারের মতো কোয়ার্টার ফাইনালে উত্তীর্ণ হতে সক্ষমতা দেখায়। চূড়ান্ত খেলায় দক্ষিণ আফ্রিকা দল পাকিস্তানকে পরাভূত করে প্রথমবারের মতো শিরোপা লাভ করে। সাবেক দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার টারটিয়াস বসের সন্তান করবিন বস ম্যান অব দ্য ম্যাচ এবং আইদেন মারক্রাম ম্যান অব দ্য সিরিজ পুরস্কারে ভূষিত হন। পুরো প্রতিযোগিতায় দক্ষিণ আফ্রিকা দল কোন খেলায় পরাজিত হয়নি।

বিজয়ী দেশসমূহ

সাল স্থান চ্যাম্পিয়ন রানার-আপ প্লেট চ্যাম্পিয়ন ধরন চূড়ান্ত মাঠ
১৯৮৮  অস্ট্রেলিয়া  অস্ট্রেলিয়া  পাকিস্তান খেলা হয়নি রাউন্ড রবিন অ্যাডিলেড ওভাল
১৯৯৮  দক্ষিণ আফ্রিকা  ইংল্যান্ড  নিউজিল্যান্ড  বাংলাদেশ নক-আউট ওয়ান্ডেরার্স
২০০০  শ্রীলঙ্কা  ভারত  শ্রীলঙ্কা  দক্ষিণ আফ্রিকা নক-আউট সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ড
২০০২  নিউজিল্যান্ড  অস্ট্রেলিয়া  দক্ষিণ আফ্রিকা  জিম্বাবুয়ে নক-আউট বার্ট সাটক্লিফ ওভাল
২০০৪  বাংলাদেশ  পাকিস্তান  ওয়েস্ট ইন্ডিজ  বাংলাদেশ রাউন্ড-রবিন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম
২০০৬  শ্রীলঙ্কা  পাকিস্তান  ভারত    নেপাল আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়াম
২০০৮  মালয়েশিয়া  ভারত  দক্ষিণ আফ্রিকা  ওয়েস্ট ইন্ডিজ রাউন্ড-রবিন কিনরারা একাডেমি ওভাল
২০১০  নিউজিল্যান্ড  অস্ট্রেলিয়া  পাকিস্তান  বাংলাদেশ রাউন্ড-রবিন বার্ট সাটক্লিফ ওভাল
২০১২  অস্ট্রেলিয়া  ভারত  অস্ট্রেলিয়া  শ্রীলঙ্কা রাউন্ড-রবিননক-আউট টনি আয়ারল্যান্ড স্টেডিয়াম
২০১৪  সংযুক্ত আরব আমিরাত  দক্ষিণ আফ্রিকা  পাকিস্তান  বাংলাদেশ রাউন্ড-রবিননক-আউট ডিএসসি ক্রিকেট স্টেডিয়াম
২০১৬  বাংলাদেশ  ওয়েস্ট ইন্ডিজ  ভারত  আফগানিস্তান রাউন্ড-রবিন ও নক-আউট শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম

| ২০১৮

আরও দেখুন

  • Williamson, Martin। "The Under-19 World Cup"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-০৫

তথ্যসূত্র

  1. "India players barred from playing multiple U-19 World Cups". ESPN Cricinfo. Retrieved 24 June 2016.
  2. "Under-19 World Cup in Australia, February–March 1988"। Cricinfo। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-০৫
  3. "Australia 1998"। ICC। ২০০৭-০৪-২৯ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-০৫
  4. "McDonald's Bicentennial Youth World Cup 1987/88"। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৭-০৪-০৫

বহিঃসংযোগ

This article is issued from Wikipedia. The text is licensed under Creative Commons - Attribution - Sharealike. Additional terms may apply for the media files.